নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি শাহেদ শাহরিয়ার,একটু আবেগি আর খানিকটা যৌক্তিক।
ছোট বেলায়,মা- বাবা রাস্তায় বেরোলে সাবধান করে দিত," কুকুর দেখলে,দৌঁড়াবে না,একপাশ দিয়া হাটবে,নাহয় কাঁমড়ালে পেটে বাচ্চা হবে!সে ভয়ে মা-বাবার অন্য আদেশ না শুনলেও ওই একটা আদেশ ছিল শতভাগ শিরোধার্য। কুকুরের কাঁমড়ে বাচ্চা পেটে না আসুক,জলাতঙ্কের একটা সম্ভাবনাতো ছিল,যদিও সেটা আমাদের জানা ছিল না; অনেক বাবা- মাও ভুল ধারণাটাকেই সত্যি ভাবতেন।ভাবনাটা একদিক থেকে ভালই ছিল,ছেলে-পুলেরা পেটে কুকুরের বাচ্চা হবার শংকায়,কুকুর দেখলে রাস্তার কিনারা ঘেষেই ভদ্র বাবুর বেশেই হাটতো।
সেটা ওই সময়কার একটা শংকা ছিল,ভাল শংকা!এখন এমনো হাজারো শংকা নিয়ে আমাদের পথ চলতে হয়; শুধু পথ চলা নয়,আমাদের উঠা- বসা,নাওয়া- খাওয়া,কথা- বার্তা,ঘুম- জাগরণে সবকিছুতেই এখন শংকা বিরাজমান!কোথাও চলতে গেলে ভাবতে হয়: যে রাস্তায় যাচ্ছি ওটা আমাকে ঠিক গন্তব্য পর্যন্ত পৌঁছতে দিবে কিনা,না মাঝ রাস্তায় হাইজেকার আমার সর্বস্ব কেড়ে- কুরে নিবে।গাড়িতে চড়লে দোয়াএ কু'নত স্বয়ংক্রিয়ভাবেই মুখ দিয়ে চলে আসে,অনেক নাস্তিকও তখন মনে মনে ' আল্লাহ','ভগবান' ঝপে,কখন জানি গন্তব্যে গিয়ে নামব,না খাদে পরে কিংবা মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহতের তালিকায় নিজের নামটা উঠে,এটা আমাদের চলার সময়ের শংকা!
কোথাও গিয়ে বসতে গেলে,ভাবতে হয়: জায়গাটা নিরাপদ কিনা,কার দখলে আছে না জেনে বসাটাও মুশকিল!তার ওপর যদি সাথে কোন নারী থাকে তবেতো কেল্লাপতে!হোক সঙ্গিনী মা- বোন কিংবা বান্ধবী।যারা সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে গেছেন তারা হয়তো দেখেছেন,উপকূলের পাশেই ছোট ছোট কামরায় মিনি রেস্তোরা ব্যবসা চলে,সেখানে বেশির ভাগ কপোত- কপতিই ঢুকে।যারা নিঃশংকায় সেথায় যায়,বের হয়েই শংকায় পরতে হয়,কারণ- ততক্ষণে ওনার আমলনামা ইন্টারনেটে ভেসে বেড়াচ্ছে! অনেক সময় লাইসেন্সধারী নীল পোশাকে চাঁদাবাজেরও হাতে পরার সম্ভাবনা আছে,অবশ্য ওনারা সৎ, চাঁদা পেলেই চলে যান। এত শংকা কাটিয়ে কোথাও বসার জায়গা পেলে এবার খাবার নিয়ে ভাবতে হয়,স্থানটা যদি পর্যটন জাতীয় কিছু হয়,তবে দ্বিগুন দাম দিয়ে খেতে হবে,সাথে ভ্যাটের পয়সাটাও দিতে হবে,যেটা আদৌ সরকার পর্যন্ত পৌঁছাতেই পারে না!
যাহোক,ভ্যাট দিয়েই নাহয় খেলাম,কিন্তু যেটা খাচ্ছি,তা কি দু'দিন আগের কিনা,সেটা জানার ওপায় নাই,থাকলে গতন্ত্যর নাই।বাসী হলে কিছু পেট সয়ে নিবে,বিষ দেয়া থাকলেও আমরা সয়েই নিই।কালার ফুড এতটাই খেয়েছি যে,লিপিস্টিকও এখন খাবারের তালিকায় চলে আসছে!
ঘুরাঘুরি পর্বের শংকা কাটিয়ে যদি বাসায় ফেরা যায়,তবে আঁধারের ভয়!একটা সময় ছিল যখন আমরা দরজা খুলেই ঘুমাতে পারতাম,তারপর একটা শংকার জন্ম নিয়েছে,দরজায় তাই হুক কিংবা তালা দিয়েই এখন শুতে হয়!কিন্তু বর্তমান শংকার কোন আপডেট ভার্সন নেই,যদি হায়াত থাকে তবে হয়তো আমি আপনি গলার সাথে পরদিন সকালে ধরটা নিয়েই উঠব,দরজায় যত দামি তালাই লাগাই না কেন লাভ নেই!এজন্য আপনি কাউকে দোষারোপও করতে পারেবন না,এটা আপনার কপালে ছিল, তাই দোষ যদি হয়ই তা আপনার কপালের! কারোতো গরজ পরেনি আপনার বেড রুমে পাহারা বসায়!
আল্লাহর রহমতে যদি বেঁচে যাই,তবেতো আমাকে আপনাকে সমাজের বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে হবে: নৈতিক- অনৈতিক,সামাজিক- রাজনৈতিক,ধর্মীয় অথবা ব্যবসায়িক।অনৈতিক অনেক কথায় এখন সমাজে নৈতিক,তাই এ বিষয়ে শংকা কম,কিন্তু খুব একটা নৈতিক কথা বার্তা আপনাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাবে আপনি শংকিত হবেনই!এই ধরুন,আপনার নৈতিক কথায় যাদের কর্মে ছেদ পরে তারা বলতে দ্বিধা করবে না: ' অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ!' নৈতিকতার সাথে যদি আপনার ধার্মিকতার স্বভাব থাকে তবে আপনাকে প্রচলিত 'চার' কিংবা 'দু' অক্ষরের একটা নামেও ভূষিত করতে,আর একবার পদবী পেলেই আপনার জীবনের দপারফা!
এত্তকিছুর ভয়ে আপনি কথা বলা হয়তো বন্ধ রেখে অন্য উপায় বেছে নিতে পারেন,কলম ধরতে পারেন,কেননা: ' অসির চেয়ে মসি বড়'। আপনি হয়তো সালমান রুশদির পথ কিংবা তসলিমার পথ অনুসরন করতেই পারেন,অথবা জাকির নায়েকের পথও ধরতে পারেন।কিন্তু আপনার ধরের মূল্য নির্ধারন আপনি করতে পারেবন না,সেটা নির্ধারণের জন্য অনেকেই আছেন,হোক মুফতি হান্নান কিংবা সাধ্বী প্রাচী!,যেখানে আছেন,সেখানেই আপনি নেই হয়ে যাবেন!!যদি বাঁচেন তবে আপনাকে যাযাবর হিসাবেই বাঁচতে শিখতে হবে,কারণ আপনার সবি বাজেয়াপ্ত: বই,সম্পদ,এমনকি নিজের দেশও!
অতঃপর,সময়ই আপনাকে আপনার শংকা বাতলে দেবে,শংকাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করুন,এক একটা শংকায় আপনাকে আগত শংকা সত্যি হওয়া থেকে বাঁচাতে পারে।
২| ১৭ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১১
শাহেদ শাহরিয়ার জয় বলেছেন: #লেভিয়াথান,ধন্যবাদ,আপনিও যথার্থই বলেছেন!
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০০
লেভিয়াথান বলেছেন: যথার্থ !! কথায় বলেনা, হোপ ফর দ্যা বেস্ট এন্ড গেট রেডী ফর দ্যা ওর্স্ট ।
সচেতনতামূলক পোস্ট