নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে \"আমার কবিতা নামে\" আমি ব্লগিং করি মূলত নিজের ভেতরে জেগে উঠা ব্যর্থতা গুলোকে ঢেকে রাখার জন্য । দুনীতিবাজ, হারামখোর ও ধর্ম ব্যবসায়িদের অপছন্দ করি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন

আমার পরিচয় একজন ব্লগার, আমি সাহসী, আমি নির্ভীক, আমি আপোষহীন । যা বিশ্বাস করি তাই লিখি তাই বলি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপহরণ - সাখাওয়াত বাবনে\'র কল্পকাহিনী (১২তম পর্ব )

০৭ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:০৬



সাধারণত পতনের সূত্র হচ্ছে, ভারি বস্তু অপেক্ষা কৃত হালকা বস্তুর চেয়ে দ্রুত গতিতে পতিত হবে । কিন্তু এখানে সেই সূত্রের কোন প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছিনা । কেননা আমার পতন পেট্রোল শিপের চেয়েও অনেক দ্রুত হচ্ছে । শরীরে স্পেস স্যুট থাকার ফলে ওজন প্রায় একশ কেজি বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু তাই বলে সেটা তো আর নিরেট ধাতব পদার্থে তৈরি পেট্রোল শিপের চেয়ে বেশি হয়ে যায়নি ? তাহলে পদার্থ বিজ্ঞানের কোন সূত্র বলে এমটা ঘটছে ?

নিচের দিকে নামতে নামতে এক সময় মনে হলো আমি স্কুল , কলেজের বাচ্চাদের মতো স্কাইপভিং করছি । কোন প্রাইভেট বিমান থেকে জাম্প দিয়ে নেমে এসেছি খোলা আকাশে । বাতাসের পালকে ভর করে ভেসে যাচ্ছি অজানায় । সব কিছুর যেমন শেষ আছে, ঠিক তেমনি আমার দীর্ঘ পতনের সময়টা ও এক সময় শেষ হয়ে এলো। ভূত্বকের অনেকটা কাছাকাছি চলে এসেছি । তবুও দূরত্বটা কম করে চার হাজার কিলোমিটারের নিচে হবে না । উপর থেমে নিচের দৃশ্যপট ধীরে ধীরে পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে । কিন্তু নিজের দিকে গতিটা ধীরে ধীরে শ্লথ হয়ে আসছে । এক সময় সেটা এমন পর্যায়ে চলে গেলো যে, মনে হতে লাগলো, আমি স্লো মোশনে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছি । এখানেও পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র কাজ করছে না । পৃথিবীতে শেখা বিজ্ঞানের সব সূত্র, সব সংজ্ঞা এখানে অকার্যকর ! তাহলে কি যে নতুন জগতে, যে নতুন গ্রহে প্রবেশ করতে যাচ্ছি সেখানে পৃথিবীর কোন সূত্র ই চলে না ।

উপতের দিকে তাকিয়ে দেখি পেট্রোল শিপটার পতনের গতি অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে । সেটা খুব দূত নেমে আসছে নিচের দিকে । মাথার উপর নীল আকাশ তার মাঝে ভেসে থাকা লাল মেঘের ভেলা অনেকটাই পৃথিবীর মতো । কিছু নীল সাদা মেঘ ছড়িয়ে দিতে পারলে পৃথিবীর আকাশের সাথে এর আর কোন পার্থক্য খুজে বের করা যাবে না ।

নিচের সবকিছু বেশ পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি । সমতল ভূমি, পর্বত মালা, দূরে দূরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র নদ, নদী,জলাভূমি। এ যেন হুবহু পৃথিবীর প্রতিচ্ছবি এ গল্প পৃথিবীর মানুষের কাছে করলে নির্ঘাত তারা আমায় পাগল মনে করবে । অথবা মনে করবে, স্পেস ঘুরার সুযোগ পেয়ে আমি মিথ্যা বলে বেড়াচ্ছি ।

আরও ঘণ্টা খানেক নেমে যাবার পড়েই আরও এক বিস্ময়ের মুখোমুখি হলাম । এ যেন এক ঝুলন্ত উদ্যান । বিশাল বিশাল পাথর কোন রকম বাধন ছাড়াই আকাশের শূন্য ঝুলে রয়েছে । ঝুলে রয়েছে না বলে যদি বলি ভেসে রয়েছে, তাহলে মনে হয় আরও সঠিক ভাবে বলা হয় । এটা এটা কি করে সম্ভব । শুধু শূন্যের মধ্যে কোন সে মন্ত্র বলে এতো বিশাল বিশাল পাথরের চাই ভেসে থাকতে পারে ! হায় খোদা ! আর কত বিস্ময় অপেক্ষা করছে আমার জন্য । অদ্ভুত এক অনুভূতিতে পুরো শরীর কেপে কেপে উঠতে লাগলো । এমনটা তো কেবল মাত্র গল্প, উপন্যাস বা সিনেমাতেই সম্ভব । পাথরগুলোর পাশ দিয়ে নেমে যাবার সময় দেখলাম, কালচে নীলাভ পাথরগুলোর চারপাশে ছোট ছোট এক ধরনের শৈবাল জাতীয় উদ্ভিদ জন্মে রয়েছে । সেগুলোর উপর ঘাসের বুকে জমে থাকা শিশিরের মতো বিন্দু বিন্দু মুক্তার মতো আলো ঝলমল করছে । এগুলো যদি ফুল হয় তাহলে বলতেই হয় এ উদ্ভিদের সাথে পৃথিবীর অদ্ভিদের কোন মিল নেই ।

খুব সন্তর্পণে পাথরগুলোর সাথে সংঘর্ষ এড়িয়ে নিচে দিকে নেমে যেতে লাগলাম । নেমে যেতে থাকলাম না বলে এখন মনে হচ্ছে, কেউ আমাকে নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছে । আরও একটি বিষয় বেশ অবাক করলো, পাথরগুলোর পাশ দিয়ে যাবার সময় অদ্ভুত একটা সুর শুনতে পেলাম । প্রথমে মনে হলো, সুরটা পাথরগুলোর শরীর থেকে ঝরনার মতো গড়িয়ে গড়িয়ে বের হচ্ছে । কিন্তু না , একটু পরে বুঝতে পারলাম সে সুরের উৎস অন্য কোথাও । পুরোটা এলাকা যেন সুরের মাধুর্যে মোহাবিষ্ট হয়ে আছে । পাথরগুলো সুরের ঝংকার সব ভুলে নিশ্চল হয়ে গেছে । এ যেন অদৃশ্য কোন যাদুকরের খেলা । নিজে অদৃশ্য থেকে সুরের মহিমায় নিয়ন্ত্রণ করছেন সব । এমন মোলায়েম সুর আমি কস্মিনকালেও শুনিনি । সুরের মহিমায় আমার পুরো শরীর দুলে দুলে উঠতে লাগলো । শরীর,মন,প্রাণের সকল ক্লান্তি মুহূর্তে দূর হয়ে গেলো । বেশ চাঙ্গা মনে হতে লাগতে লাগলো ।

পাথরগুলো থেকে দূরে সরে আসতেই সুরেএ ঝংকার একটু একটু করে হারিয়ে গেল । জমিনের যতো নিকট বর্তী হচ্ছিলাম ততোই তার সৌন্দর্য দেখে বিমহিতো হতে লাগলাম । এতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পৃথিবীতে নেই । যে পৃথিবীকে আমরা এতো সবুজ শ্যামল জেনে এসেছে , এ সৌন্দর্যের কাছে তা মলিন হয়ে যাবে ।

বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পর্বতমালার বুক চিরে বয়ে চলা ঝর্ণার কুল কুল শব্দে যা পর নাই অবাক হলাম । ঘন সবুজ সমভূমিগুলোকে মনে হচ্ছিল বিস্তীর্ণ জোড়া শস্য ক্ষেত । একে বেকে চলে যাওয়া সড়কের পাশে দাড়িয়ে পরিচ্ছন্ন অট্টালিকাগুলো যেন আমাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকছিল । হায় ঈশ্বর এ আমি কি দেখছি ? এ যে পৃথিবীর অনুকরণে গড়ে তোলা কোন শহর । তাহলে কি এখানেও পৃথিবীর মতো মানুষ বসবাস করে ? প্রশ্নটা মনে আসার সাথে সাথে তীব্র একটা টান অনুভব করলাম । মনে হলও হুট করে মাধ্যাকর্ষণ শক্তিটা বেড়ে যাওয়ায় আমি তীব্র গতিতে নিজের দিকে নেমে যেতে লাগলাম । যে ভাবে নেমে যাচ্ছি, তাতে মাটিতে আছড়ে পরলে মারা না খেলেও নির্ঘাত হাত পা ভেঙ্গে যাবে । কিন্তু না , পদার্থ বিজ্ঞানের আরো একটা সূত্র ভেঙ্গে ফেলে আমাকে অবাক করে দিয়ে মাটি ছোঁয়ার ঠিক কয়েক সেকেন্ড আগে পতনটা ধীর হয়ে গেলো ।

অবাক বিস্ময় নিয়ে আমি নিরাপদে সুউচ্চ সব অট্টালিকার মধ্যে দিয়ে চলে যাওয়া ধুসর লাল রংয়ের সড়কের উপর পৃথিবীর অনুকরণে গড়ে উঠা আরেক পৃথিবীর মাটিতে পা ছোঁয়ালাম । না , জানি আর কত বিস্ময় অপেক্ষা করছে আমার জন্য । যারা এতোটা সুন্দর করে গড়ে তুলেছে তাদের পৃথিবী এবার তাদের সাথে মোলাকাত করার পালা । উপড়ের দিকে মুখ করে দেখলাম , পাশের ই একটা অট্টালিকার ছাদে প্রায় নি:শব্দে নেমে এলো আমার পেট্রোল শিপটি । কোমরে থাকা লেজার গানটি পরীক্ষা হাটতে শুরু করলাম , অজানার উদ্দেশ্যে ।

বেলচ............

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১২

জুল ভার্ন বলেছেন: যথারীতি ভালো হয়েছে। আরও ভালো লেগেছে বেলচ =p~

০৮ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:২৪

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ...............।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.