নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগ আমার বাসার ড্রয়িং রুমের মত, আমি এখানে যেকোনো কিছু দিয়ে সাজাতে পারি আপনার পছন্দ না হলে বলতে পারেন আমার কোন আসবাবটির অবস্থান বা ডিজাইন আপনার পছন্দ হয় নি এবং কেন হয় নি। তবে তা অবশ্যই ভদ্র ভাষাতে। ভাষার ব্যবহার করতে জানা অনেক বড় একটি গুন

শেখ এম উদ্‌দীন

আমি বাংলাদেশি ....আমি বাঙালী....আমি মুসলিম....আমি বাংলার জন্য জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত ।

শেখ এম উদ্‌দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

যৌতুকঃ এক নিরাময় অযোগ্য সামাজিক ব্যাধি

২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:২৩

যৌতুক এর অভিশাপ হতে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা কয়েক দশকের। এর পরেও প্রতিদিন সংবাদপত্রের পাতাতে এমন দু-একটি সংবাদ আমাদের বিবেক এর দ্বারে কষাঘাত করছে প্রতি নিয়ত। এই সকল প্রকাশিত ঘটনার ভিকটিম বেশীর ভাগই দরিদ্র বা খেঁটে খাওয়া শ্রেণীর হয়। তাহলে কি মধ্যবিত্ত বা উচ্চ বিত্তের সমাজ এখন যৌতুক মুক্ত? এই প্রশ্নের জবাবের পূর্বে দুটি বাস্তব ঘটনা সম্পর্কে জানি-

ঘটনা একঃ ১৯৯৪ সালের কোন এক বিকালে রেখার (ছদ্মনাম) জন্য এক সুপাত্রের সন্ধান আনলেন তার মামা। ছেলে পক্ষের কোন দাবী নেই বলে এঙ্গেজমেন্ট এর পরে ছেলের বড় ভাই রেখার বাবার নিকট হতে ছেলের আত্মসম্মান রক্ষার্থে একটি মোটর বাইক চেয়ে বসলেন। রেখার বাবা অপারগতা স্বীকার করার পরে তিনি বললেন আপনি ফার্নিচার না দিয়ে বাইক দিলে আমাদের সম্মান রক্ষা হয়! পরিবারের সকলের চাপে এবং এই যোগ্য পাত্র হাত ছাড়া করার ভয়ে রেখার বাবা বিয়ের অন্যান্য তৈজস পত্রের সাথে একটি বাইক দিয়ে জামাতার সম্মান রক্ষা করেন। কিন্তু এই লোভী মানুষগুলোর লোভ যে কত ভয়াবহ তা আজ পর্যন্ত তিনি হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছেন।

ঘটনা দুইঃ দেশের শীর্ষ স্থানীয় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম এস সম্পন্ন করা এক সুপাত্র র‍্যাবতির (ছদ্মনাম) পাণি গ্রহনের জন্য আগ্রহী হল। পাত্রের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে র‍্যাবতির বাবা খুব প্রীত হলেন কারন পাত্রের ফলাফল অনেক ভালো এবং ভবিষ্যতে বিদেশের উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে দেশে অনেক ভালো অবস্থানে যাওয়ার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে এই পাত্রের। র‍্যাবতির বাবার মনের ভাব বুঝতে পেরে পাত্রের বাবা তার পুত্রের বিয়ের পণ মাত্র ১০ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করলেন। ভালো পাত্র বলে অনেক কষ্টে এই টাকা যোগাড় করে তিনি ঐ সুপাত্রের বায়না পত্র সম্পাদন করে তাকে তাঁর কন্যার জন্য ক্রয় করলেন। এতে কিন্তু র‍্যাবতির মনে এক ফোটাও শান্তি নাই কারন তার পণের টাকা যোগাড় করতে তার বাবা সর্বস্বান্ত হয়েছেন । র‍্যাবতির নিত্যদিনের চিন্তা একটি আর তা হল পরের বোন গুলোর বিয়ে দেবার সময় এই পণের টাকা তার বাবা কোথায় পাবেন?

এই দুটি ঘটনা দুই ধর্মাবলম্বী মানুষদের এবং একটি আরেকটির প্রায় একযুগের অধিক পরের হলেও এর গুনগত মানের কোন পরিবর্তন এই একযুগে হয়েছে বলে আমার মনে হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে দ্বিতীয় ঘটনার নায়কের জন্য আমি যেমন লজ্জিত তেমনি একজন পুরুষের মাণ সম্মান শ্বশুর বাড়ির একটি বাইকের মধ্যে নিহিত জেনেও আমি বিব্রত। কেউ হয়ত বলবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রটির ঘটনা বিচ্ছিন্ন কারন এমন ঘটনা হাজারে একটি হয় আমি বলব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য দশ হাজারে এমন একটি ঘটনাও লজ্জা জনক। এমন ঘটনার নায়কদের সনদ বাতিল করা যায় কিনা তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের ভাবা উচিৎ বলে আমি মনে করি। আমাদের সমাজে আনাচে কানাচে এমন অনেক রেখা এবং র‍্যাবতিরা স্বামী নামক এক পুরুষ (!) এর ঘরে যাওয়ার জন্য বা তাদের সাথে সংসার করার জন্য এমন অভিনব যৌতুকের স্বীকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এদের অনেকেই হয়ত সামাজিক অবস্থানের ভয়ে এই স্বামী দেবতার উর্বর মস্তিস্কের আবিষ্কৃত নিত্য নতুন যৌতুকের যোগান দিয়ে যাচ্ছেন। এরা নিজেরাও জানে না যে এই যে যৌতুকের জালে তাঁরা জড়িয়েছেন তা থেকে মৃত্যু ব্যতিত অন্য কেউ তাঁদের রেহাই দিতে পারবে কিনা।

প্রতিটি কন্যাই তার পিতার নিকট রাজকন্যা সেই রাজকন্যার বিয়ে যদি দিতেই হয় তাহলে এমন কোন সুপাত্রের কাছে দিন যে আপনার এই রাজকন্যাকে তার সাধ্য অনুযায়ী রানীর মত করে রাখবে। যেই রাজ পুত্রের কাছে আপনার কন্যা বিয়ে দিতে রাজপ্রাসাদ আপনার তৈরি করে দিতে হয় সেই রাজপুত্র আর যাই হোক পুরুষ নয়। তাই কন্যাদানের পূর্বে ভাল করে ভেবে নিন আপনি আপনার কন্যাকে কোন পুরুষের সাথে বিয়ে দিচ্ছেন নাকি পুরুষের বেশধারী কোন অলস হায়েনার কাছে বিয়ে দিচ্ছেন? কারন কোন পুরুষ শ্বশুর মহাশয়ের ধনে তো নয়ই নিজের পিতার ধনেও পোদ্দারি করতে লজ্জিত হয়। সে সত্তাই পুরুষ যে নিজেকে নিজের নামে পরিচিত করে এবং নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব গুলো নিজের পরিশ্রমের উপার্জন দিয়ে পালনের চেষ্টা করে।

কন্যা কে পাত্রস্থ করার পূর্বে পাত্র পুরুষ কিনা তা জেনে নিলেই হয়ত এই নিরাময়ের অযোগ্য ব্যাধির নিরাময় সম্ভব।


(এই লেখাটি প্রথম শ্রেণীর সকল দৈনিকে পাঠালেও যৌতুক হট টপিক না বলে তাঁরা ছাপাতে গরিমসি করে!! অথচ এরা সবাই নারীর পক্ষেই কথা বলার দাবী করে #:-S )

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৫৭

স্বপ্নাতুর পুরব বলেছেন: ব্যধির নিরাময় তো আছেই । তবে আপনার কথাগুলো ভালো লাগলো । যৌতুকের প্রতি বরপক্ষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ লোভাতুর লকলকে জিহ্বা ।

২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:১২

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: খুব ছোটবেলাতে যৌতুকের জন্য খুকুর হত্যা আমার মনকে নাড়া দিয়েছিল। আজ প্রায় ২০ বছর পরেও একই পরিস্থিতি এবং নিত্য নতুন যৌতুক আদায়ের প্রক্রিয়া আমাকে এমন ভাবে বলতে বাধ্য করল ভাই। একজন বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট যদি যৌতুক নেয় তাহলে নিম্ন পর্যায়ের কি দশা?
আমার বাসার খালা তার মেয়েকে বিয়ে দিতে তিন লক্ষ টাকা যৌতুক দিয়েছেন তাও নিজের বোনের ছেলের কাছে বিয়ে দিয়েছেন!! কত টুকুন নিরাময় করতে পেরেছি আমরা?
তবে নিরাময় হোক এটাই মন থেকে চাচ্ছি।

২| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:২০

স্বপ্নাতুর পুরব বলেছেন: কী অদ্ভূত একটা বিষয় ! এতোবড় অন্যায় একটা বিষয় সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত ! ভাবতেই ঘৃণা লাগে । একবার চিন্তা করে দেখেন- যারা যৌতুক নেয় তারা যে মানুষ হিসেবে মোটেই সুবিধার নয় তা সবাই বুঝি । কিন্তু বাধ্য হয়ে আমরা নিজের বোন, কন্যাকে তবু সেই লোভীদের হাতেই তুলে দেই । কতটা অসহায় মেয়ে পরিবার !

৩| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:২৪

স্বপ্নাতুর পুরব বলেছেন: যৌতুক নিরাময়ের যতোটা প্রচারণা হয়েছে তার ঢের গুণ বেড়েছে যৌতুক গ্রহণের মনমানসিকতা । নাই চাইলেও দিতে হয় । নিরাময় তো করতেই হবে । তবে ঘটনা কী জানেন- কোন অপরাধ-অন্যায়টা কমেছে? বরং দিনে দিনে বেড়েই চলেছে । লাগামহীন ভাবে পাগলা ঘোড়া ছুটেছেই । থামবার কোনো জো নেই, থামানোর যে চেষ্টা করা হচ্ছে না তা কিন্তু না । কিন্তু থামছে কৈ? তাহলে বুঝে নিতে হবে আমরা যে উপায়ে, যে পদ্ধতিতে এসব অন্যায়-অপরাধকে থামানোর চেষ্টা করছি তাতে তো কমছেই না, বরং বাড়ছে । অনেকটা কেরোসিন দিয়ে আগুণ নেভানোর মতো ।

২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: ঃ(
যত দিন না আমরা নৈতিকতা শিক্ষা দিব, যত দিন না আমরা মেকী ভালমানুষের জগত থেকে বের হয়ে আসব ততদিন এমন চলবেই।
শপথ নেই নিজের বোন বা সন্তান কে এমন কোন লোভীর কাছে বিয়ে দিব না হোক না সে যত শিক্ষিত "দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য"।

৪| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৫৫

ঢাকাবাসী বলেছেন: যৌতুক প্রথা বহাল তাকুক এটা খোদ সরকারই চায়। যৌতুক দাবী করার কারণে আজ পর্যন্ত কারো শাস্তি হতে দেখিনি! নারী অধিকার নিয়ে সবাই ডায়ালগ মারেন আর টক শো করেন বাড়ীতে বৌ পেটানোর মানসিকতা, যৌতুক চাইবার মানসিকতা। পুরুষ শাসিত সমাজকে পরিবর্তন করার মানসিকতা নেই ।

২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:০১

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: যারা এ নারী অধিকার নিয়ে আলোচনা বেশি করে তারাই দেখেবেন ছেলের বিয়েতে ফ্ল্যাট বা গাড়ি উপহার নেন। তবে উনারা যৌতুক নেন না :প

৫| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:০৩

ভিটামিন সি বলেছেন: আপনার লেখা আমাদের মানবিক, সামাজকি মুল্যবোধকে জাগ্রত করুক। আমার ব্যাক্তিগত অবস্থান যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে। যৌতুক দেবো না, যৌতুক নেবো না। আমি বিয়ে করেছি ২০১০ সালে এবং এখন পর্যন্তও আমি জানিনা আমার পত্নীকে তার বাবা-মা কি গয়না দিয়ে আমার বাড়িতে পাঠিয়েছে। যদিও বিয়ের ৪৭ দিন পর প্রবাসে চলে আসি এবং গত ৫ বছরে মোট ৫মাস ১৭দিন দেশে ছিলাম ৫ বার দেশে গিয়ে। এই সময়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে পেয়েছি ৩টি শার্ট, একটি প্যান্ট ও একটি পাঞ্জাবি। তবে শ্বশুরের বাসায় বেড়াতে গেলে প্রতিবারই বাস, সিএনজি ভাড়া বাবদ ১০০০ টাকা দিয়ে দেয়। আমার শ্বশুর সরকারি চাকুরীজীবি (জনগনের চাকর)। আশা করি যারা এই পোষ্ট পড়বেন এবং এখনো বিয়ে করেননি, তারা সবাই আমার মতো হবেন। আসুন যৌতুক নামের সামাজিক ব্যাধি সমাজ থেকে দুর করি। আমি আমাকে দিয়ে, আপনি আপনাকে দিয়ে শুরু করুন।

২১ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:১০

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: আমার মা একটি কথা বলতেন "আপ ভালো তো জগত ভালো।" আমি আপনি ভালো হলেই দেশটা ভালো হয়ে যাবে। আমি আপনি যৌতুক না নিলে দেশ থেকে যৌতুক প্রথা বিলুপ্ত হবে বলে আমিও বিশ্বাস করি।

৬| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮

স্বপ্নাতুর পুরব বলেছেন: দেখুন যারা যৌতুক নেবেনা তারা নেবেই না । ভালো মানুষগুলো কখনও এটাকে সাপোর্ট করেনা । কিন্তু যারা খারাপ তারা তো যৌতুক নিবেই । তাদের শোধরাবেন কী দিয়ে???

২১ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:১২

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: যৌতুক যার নিতেই হবে সে তো কাপুরুষ তার কাছে মেয়ে/ বোন/ ভাগ্নি/ ভাস্তি বিয়ে না দিলেই তো সমস্যার সমাধান।
আমাদের গার্ডিয়ান দের বুঝতে হবে ভালো ছেলে কখনো যৌতুক চায় না তাই যৌতুকের জন্য ভালো ছেলে হাতছাড়া হবার ভয়ে যৌতুক দেবার প্রশ্নই আসে না।

৭| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:২৪

স্বপ্নাতুর পুরব বলেছেন: আমার বোনের জন্য আমাদের আশেপাশে ভালো একটা ছেলে খুঁজতেছি । যে ছেলে যৌতুক নেবেনা, শিক্ষিত, ভদ্র । কিন্তু সেরকম জুটেনা । সবাই যৌতুক চায় । তো....

২১ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:০২

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: যার সাথে তার মিলন হওয়ার কথা তার সাথে যৌতুক বাদেই হবে। অপেক্ষা করতে হবে। শিক্ষিত লোক কখনো যৌতুক চায় না। কিছু সার্টিফিকেট থাকার মানেই শিক্ষিত নয়। সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই তার জন্য ভালো কিছু রেখেছেন। ধৈর্য ধরতে হবে।

৮| ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ ভোর ৬:৫২

ভিটামিন সি বলেছেন: @স্বপ্নাতুর পুরব: অপক্ষো করুন। বোনটির জন্য ভালো বর মিলে যাবে যৌতুক ছাড়াই। যৌতুক যাতে না দিতে হয় তার জন্য একটু চেষ্টা করে বোন যোগ্য থেকে যোগ্যতর করে তুলুন। তার প্রতিভাকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দিন। পরিচর্যা করুন।

২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:১৪

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: সহমত। তবে যোগ্যতার উচ্চতা যৌতুক ঠেকাতে যথেষ্ট নয় যদি না অভভাবকগণ পাত্র এর বদলে সার্টিফিকেট ধারী কোন হায়েনার হাতে তাদের কন্যাকে তুলে দেন। তাই পাত্র নির্বাচনে ও যথেষ্ট সতর্কতা প্রয়োজন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.