নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগ আমার বাসার ড্রয়িং রুমের মত, আমি এখানে যেকোনো কিছু দিয়ে সাজাতে পারি আপনার পছন্দ না হলে বলতে পারেন আমার কোন আসবাবটির অবস্থান বা ডিজাইন আপনার পছন্দ হয় নি এবং কেন হয় নি। তবে তা অবশ্যই ভদ্র ভাষাতে। ভাষার ব্যবহার করতে জানা অনেক বড় একটি গুন

শেখ এম উদ্‌দীন

আমি বাংলাদেশি ....আমি বাঙালী....আমি মুসলিম....আমি বাংলার জন্য জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত ।

শেখ এম উদ্‌দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি শিক্ষণীয় ঘটনা এবং একজন মুসলমানের সফলতা

২৪ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৭:১৮

#KnowYourHeroes #ABUDAHDAHRA

হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছিলেন- “আমার সাহাবী গণ নক্ষত্রের মত; তাঁদের মধ্যে যাকেই তোমরা তোমাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে অনুসরণ করবে তোমরা সঠিক পথে পরিচালিত হবে”।

বিশাল সমুদ্রে আকাশের নখত্র যেমন একটি জাহাজের নাবিক কে জাহাজ পরিচালনার পথ বাতলে দেয় তেমনি সাহাবী (রাঃ) গণের জীবন আদর্শ একজন মুসলিমকে এই পাপ পঙ্কিলতা পূর্ণ পৃথিবীর পাপ হতে বেঁচে পরকালে সফল হবার জন্য পথপ্রদর্শকের মত কাজ করে। এমনি এক সাহাবার নাম হযরত আবু দাহ দাহ (রাঃ)। আমরা অনেকেই হয়ত উনার নাম জানি না। কিন্তু উনি যে দৃষ্টান্ত রেখে গিয়েছেন তা হয়ত অনেক কে হেদায়েতের পথ দেখানোর জন্য যথেষ্ট।

মদিনার উপকণ্ঠে এক ইয়াতিম বালকের একটি ছোট খেজুর বাগান ছিল। ছেলেটি সেই খেজুরের বাগানের আয় দিয়েই চলত। তার বাগানের পাশেই আরেক মুসলমান ব্যক্তির অনেক বড় একটি খেজুর বাগান ছিল। ইয়াতিম বালকটি একবার তার বাগানের চারপাশে বেড়া দেবার জন্য কাজ করতে গিয়ে দেখল তার প্রতিবেশীর একটি খেজুর গাছ তার বাগানের অংশ হলে সে সহজে একটি ভালো বেড়া দিতে পারবে। ইয়াতিম বালক ঐ ব্যক্তির নিকট গিয়ে সব কিছু খুলে বলে ঐ গাছটি তাকে দেয়ার জন্য অনুরোধ করল। কিন্তু ঐ ব্যক্তি গাছটি দিবে না বলে বলে দিল। এবার সে বলল এমনি না দিলে ঐ গাছটি সে ক্রয় করতে চায়। এবারো ঐ ব্যাক্তি গাছ দিতে অস্বীকৃতি জানাল। ছেলেটি ব্যাপারটি হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে জানাল। নবিজী (সঃ) ঐ ব্যক্তিকে ডেকে পাঠালেন। ঐ ব্যক্তি আসার পরে নবিজী (সঃ) তাঁকে বললেন, তোমার ঐ খেজুর গাছটি আমাকে দান কর। ঐ ব্যক্তি অস্বীকৃতি জানালেন। এবার নবিজী বললেন ঐ গাছটি কত মূল্য হলে তুমি বিক্রয় করবে বল, আমি তোমাকে ঐ পরিমাণ মূল্য পরিশোধ করব। কিন্তু এবারও সে গাছ বিক্রয় করবে না বলে জানিয়ে দিল। এবার নবিজী বললেন তুমি যদি আমাকে এই গাছটি দেও আমি অনুরূপ একটি খেজুর গাছ তোমাকে জান্নাতে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আশ্চর্য জনক ভাবে এবারও ঐ ব্যক্তি গাছ দিতে অস্বীকৃতি জানাল।

হযরত আবু দাহ দাহ (রাঃ) এতক্ষণ তাঁদের কথোপকথন শুনছিলেন। কথার শেষে তিনি নবীজির কাছে জানতে চাইলেন “হে আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) আমি যদি ঐ গাছটি ক্রয় করে আপনাকে দান করি তাহলেও কি আমি জান্নাতে একটি অনুরূপ গাছ পাব”? আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) বললেন “হ্যাঁ আবু দাহ দাহ এই কথা তোমার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য”। সাথে সাথে আবু দাহ দাহ (রাঃ)ঐ ব্যক্তিকে প্রস্তাব করল এই মর্মে যে উনার একটি খেজুর বাগান রয়েছে যা ঐ ব্যক্তির বাগানের চেয়ে অনেক বড় এবং সেখানে ৫০০ খেজুর গাছ রয়েছে। ঐ ব্যক্তি কি ঐ বাগানের বদলে তার সেই খেজুর গাছ খানা আবু দাহ দাহ (রাঃ) এর নিকট বিক্রয় করবে কিনা। এই প্রস্তাবে ঐ ব্যক্তি সানন্দে রাজী হয়ে গেল। আবু দাহ দাহ (রাঃ) তখন গাছটি দান করে সাথে সাথেই ঐ স্থান ত্যাগ করল। কারন ঐ বাগানই তাঁর একমাত্র সম্পদ ছিল এবং তিনি ও তাঁর পরিবার ঐ বাগানেই বসবাস করতেন। যেহেতু এখন তিনি ঐ বাগান বিক্রয় করে ফেলেছেন সেহেতু তাঁর পরিবারের ঐ বাগানে থাকার কোন অধিকার নেই। তিনি দ্রুত বাগানে যেয়ে বাইরে থেকে তাঁর সন্তানদের খেলাধুলার আওয়াজ পাচ্ছিলেন। তিনি হাঁক ছেড়ে তাঁর স্ত্রী উম্মে দাহ দাহ কে বললেন “যত দ্রুত সম্ভব আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র এবং বাচ্চাদের নিয়ে এই বাগান ছেড়ে আমাদের চলে যেতে হবে”। কারন হিসেবে স্ত্রীকে তিনি পরিপূর্ণ ঘটনাটি খুলে বললেন।

নাহ আমাদের বর্তমান সময়ের মুসলিম রমণীদের (ব্যতিক্রম ব্যতিত) মত উম্মে দাহ দাহ এই কর্মকে অর্বাচীনের কর্ম কিংবা বোকামি বলে স্বামীকে কথা শুনালেন না। কারন তিনি ছিলেন একজন সাহাবার জীবন সঙ্গিনী। যাঁদের ঈমানের স্তর পর্যন্ত পৌঁছানো আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য ব্যাপার। উম্মে দাহ দাহ স্বামীর এই কথা শুনে বলে উঠলেন “হে আবু দাহ দাহ তুমি কতই না সফল একটি বিনিময় করলে, তুমি কতই না সফল হলে”। সাথে সাথে তিনি সন্তানদের মুখ থেকে অর্ধ খাওয়া খেজুর ফেলে দিলেন কারন ঐ খেজুরের মালিক তখন ঐ ব্যক্তি।

আল্লাহ্‌ তাঁদের ঈমানকে কত মজবুত করে দিয়েছিলেন। সুবহানআল্লাহ।

এই ঘটনা হতে অন্তত দুটি ব্যাপারে আমরা শিক্ষা নিতে পারি-
প্রথমতঃ একজন ইমানদার মুসলমানের নিকট সর্বদাই দুনিয়ার সকল ধন, আরাম আয়েশের তুলনাতে আখেরাতের গুরুত্ব অনেক বেশি হবে।

দ্বিতীয়তঃ সে ব্যক্তিই সফল কাম যিনি হযরত আবু দাহ দাহ (রাঃ) এর মত উত্তম বিনিময় করেন। পক্ষান্তরে ঐ ব্যক্তিই দুর্ভাগা যে জান্নাতের খেজুর গাছের প্রতিশ্রুতি পেয়েও দুনিয়ার সামান্য একটি খেজুর গাছের মোহ ছাড়তে পারল না।


আল্লাহ্‌ আমাদের সকলকে এই ঘটনা হতে ভালো কিছু শেখার এবং তা নিজেদের জীবনে পালন করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:১৬

ফাহিম আবু বলেছেন: ভাল লাগল !

২৪ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:৩২

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: যাযাকুমুল্লাহ খাইরান

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.