নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুকান্ত কুমার সাহা

I like to seek knowledge.

সুকান্ত কুমার সাহা › বিস্তারিত পোস্টঃ

তেলের দাম ও আমার পক্ষপাত

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০৪

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানী তেল তথা ক্রুড ওয়েলের দাম অনেক কমে গেছে; যা কিছুদিন আগেও ছিল প্রতি ব্যারেল ১১৫ ইউএস ডলার এবং বর্তমানে তা ৪০ ডলারের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। এখন এই মূল্য পতনে আমাদের দেশেও জ্বালানি তেলের দাম কমানোর কথাবার্তা শুরু হয়েছে বা চিন্তাভাবনা হচ্ছে। এখানে যুক্তি হিসেবে দেখানো হচ্ছে, আমাদের পাশের দেশ ভারত ও মিয়ানমারে দাম কমানোটাকে। এই প্রেক্ষিতে, আমি আমার ব্যক্তিগত মত তুলে ধরতে চাই। পাশাপাশি আমি আমার মতের পক্ষে কিছু কারণও তুলে ধরতে চেষ্টা করবো- যা অনেকের মনঃপুত নাও হতে পারে।

প্রথমেই আমি বলবো, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানী তেলের দাম কমাটা- একটা সাময়িক অবস্থা; যা আসলে পৃথিবীর শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর একটা ‘মাস্টার গেম’ এবং এই গেমে যখন তখন পরিবর্তন আসতে পারে।

তাই আমি আমি মন করি, বাংলাদেশে তেলের দাম কমানো উচিত না এবং এটাকে স্থিতাবস্থায় রাখা হোক! যার কারণগুলো উল্লেখ্য করছিঃ

১)আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম আবারো যেকোনো সময় বেড়ে যেতে পারে; যদিও তেলের দাম আবার বাড়ার সময়সীমা ২০২০ সালের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু সেটা সম্পূর্ণই ধারণার উপর নির্ভর করে বলা হচ্ছে। এই সম্পর্কিত রিপোর্টগুলো আমি আন্তর্জাতিক পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে পড়েছি; যেখানে চীনের উৎপাদন বা গ্রোথ কমে যাওয়া, ওপেকের বাইরে থেকে প্রচুর সরবরাহ আসা, আইএসের কালো বাজারে বিক্রয় করা তেল সহ বিকল্প জ্বালানীর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কে বলতে পারে আগামীকাল মধ্যপ্রাচ্যে বা পৃথিবীতে কি ঘটবে বা সৌদিআরব কি ব্যবস্থা নিবে? ওপেক কি তার উৎপাদনের ‘বর্তমান অবস্থাটাই’ বজায় রাখবে নাকি উৎপাদন কমাবে? আমি ধারণা করি, সৌদিআরব উৎপাদন কমালেই বা রাজী হলেই তেলের দাম আবারও বেড়ে যাবে; যদিও সেটা আগের অবস্থায় যাবে না বা গেলেও সময় লাগবে।

২)তেলের দাম কমে যাওয়ায় বর্তমানে বিপিসি’র লাভ হচ্ছে ধারণা করি; যা আসলে সরকারেরই লাভ। এতদিন বাংলাদেশ সরকার বেশী দামে তেল কিনে কম দামে দেশের ভিতরে ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে সরবরাহ করত। তাতে করে সরকারের অনেক লস হত; যা সে সাবসিডি হিসেবে সরকারের অন্য আয় থেকে ব্যয় করত। যেহেতু সরকারকে দাম কমে যাওয়ার কারণে আর সাবসিডি দিতে হবে না তাই তার অনেক টাকা বেঁচে যাবে যা সরকার অন্যান্য জন গুরুত্বপূর্ণ খাত যেমন- কৃষি, চিকিৎসা, কল্যাণ ভাতায় ব্যবহার করতে পারবে।

৩)আমাদের জাতীয় চরিত্র অনুযায়ী বলতে পারি- তেলের দাম কমানো হলে তা কখনোই তৃণমূলের জনগণের কাছে পৌঁছাবে না। যদিও তেলের দাম বাড়ার সময় তা সম্পূর্ণই তারা প্রদান করেছিল। যেমন: বাস/ট্রাক ভাড়া কমবে না; বাস-ট্রাকের মালিকপক্ষ তখন বলবে, তেলের দামের উপর বাস/ট্রাক ভাড়া নির্ভর করে না; যদিও তেলের দাম বাড়ার সময় তারা এটাকেই ভাড়া বাড়ানোর কারণ বলেছিল। আবার দেশে উৎপাদিত পণ্যের দামও কমবে না। অপরদিকে আগামীকাল যদি তেলের দাম আবারও আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে যায় এবং সেই অনুযায়ী দেশেও তা বাড়ানো হয়; তখন দেখা যাবে বাস/ট্রাক ভাড়া আবারও বেড়ে যাচ্ছে এটাকেই হাতিয়ার করে।

৪) সত্যিই যদি দেখা যায় যে বিশ্ববাজারে একটা লম্বা সময়ের জন্য তেলের দাম আর বাড়ছে না এবং আমাদের বিপিসি’র প্রচুর লাভ হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমি বলবো, বিপিসিকে একটা লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়াতে দেওয়া হোক এবং তার আয় আমাদের তেল-গ্যাস উত্তোলন খাতে বিনিয়োগ করতে দেওয়া হোক একটা বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে। যেমনটা করে থাকে বিদেশী তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলো।

৫) এক্ষেত্রে ভারতের উদাহরণ কার্যকরী নয় এই কারণে যে, ভারতে যদি তেলের দাম প্রতি লিটারে এক টাকা কমে যায়; তাহলে দেখা যাবে সেই অনুযায়ী বাস/ট্রাক ভাড়া সহ আনুষঙ্গিক নাগরিক ব্যয়ও কমে যাচ্ছে যা আমাদের দেশে কখনোই হয় না।

তাই সবকিছু বুঝে শুনেই- আমি দাম না কমানোর পক্ষ নিলাম।

ধন্যবাদ !!!

২৯/০১/২০১৫ দুপুর: ১.৩০

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৪

ভিটামিন সি বলেছেন: সব কিছুতেই মনে করলে চলে না জ্বনাব। যেখানে আপনি বলেছেন, (আমি এখনও কোথা্ও পড়িনি) তেলের দাম আবার বাড়ার সম্ভাবনা আগামী ২০২০ সালে; মাঝখানে ৫ বছর। এই ৫ বছর দেশের জনগন বাড়তি দাম পরিশোধ করবে কেন? আমরা কি এতটাই উন্নত জাতি যে বিশ্ববাজারের দামের চেয়ে বেশী দামে তেল কিনতে পারবো, এমন অর্থনৈতিক স্বয়ং সম্পূর্ণতা আমাদের হয়ে গেছে? সরকার হলো জনগনের প্রতিষ্ঠান, জনগন বাঁচলে সরকার বাঁচবে। সেখানে জনগনকে চাপে রেখে তাদের কাছ থেকে বেশি অর্থ আদায় করা কোন মতেই সমর্থণ করি না। এখন দাম কম, এখন কমান। যদি কালকেই বেড়ে যায়, তাহলে আগামীকালই বাড়াবেন। গাড়ি ভাড়া বা অন্যান্য যেসব বিষয় তেলের দামের উপর নির্ভরশীল, তাকিন্তু সরকারী ঘোষণার পরই বাড়ে (এখনও কমতে দেখি নাই)। সুতরাং তেলের দাম কমিয়ে সরকারী ঘোষনা / আইন আসলে সবাই তা মানতে বাধ্য। স্বর্ণের দাম বাড়ার সাথে দেশের বাজারে তার দাম বেড়ে যায়, কমলে একটু সময় নিয়ে হলেও কমে। তাই বলে বাজার বসে থাকে না যে স্বর্ণের দাম আবার আগামী ৫ বছর পর বেড়ে যাবে, তাই এখন বাজার কমলেও দেশে দাম কমানো হবে না। আপনার ভাবনাটা আপনার একান্তই ব্যাক্তিগত। আমি যতদুর জানি, দেশের তেল ব্যবহারকারী হলো প্রান্তিক জনগন যারা কুপি বাতি ব্যবহার করেন (বিদ্যুৎ সুবিধা বঞ্চিত যে জন), কৃষক যারা এখনো সেচের জন্য ডিজেল চালিত মেশিন ব্যবহার করেন (বিদ্যুৎ সুবিধা বঞ্চিত যে জন), বাস-ট্রাক (ডিজেল চালিত মোটর গাড়ী), বিভিন্ন ফ্যাক্টরী যারা ডিজেল ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে (গ্যাস সুবিধা এখনো পায় নাই) আর কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। এসব ব্যবহারিক ক্ষেত্রের কথা চিন্তা করেই দাম কমানো উচিত। কারণ দাম কমলে তার সুবিধা ভোগ করবে প্রান্তিক জনগন (যেমন আমি)। আপনার মতো উপরতলার লোকের তো বোতল নিয়ে গিয়ে দোকান থেকে কেরোসিন কিনতে হয় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.