নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নব নব সৃষ্টি

সোলায়মান সুমন

সৃষ্টির আনন্দে ঈশ্বর এ মন

সোলায়মান সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পের ভাবনারা

১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৩৯



মাটির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে কিছু জীবন। বিচিত্র তাদের গল্প। জীবন, সে যেন এক বিস্ময়ের আলো। তবে এ বিস্ময় কোথায় যেন এক সূত্রে গাঁথা। এ সূত্রের সমিকরণ বড়ই গোলমেলে। সহজে মেলানো যায় না। এই জটিল সূত্রের জটিল সমিকরণ আমাকে ভাবায়। সেই ভাবনাগুলো গল্প হয়ে ওঠে। ’৪৭-এর ক্ষত কেন আজো বাঙালি বয়ে বেড়ায় বিভৎস স্বপ্নের মতÑ পিতা থেকে পুত্র, পুত্র থেকে পৌত্র। কারা বাধ্য করে স্বার্থপর রাজনীতির এসব বিভৎস ক্যান্সারকে এভাবে বহন করতে? কেন আজো মানুষ জন্মগত অভিশাপের বোঝা বয়ে নিয়ে বেড়ায়? কেন সে এ অন্যায় মেনে নিতে বাধ্য হয়? কেন নষ্ট রাজনীতির ক্ষত নিয়ে গহীন গ্রামের ছোট্ট কুটিরে সাধারণ কৃষক ধুকে ধুকে মরে? কেন ধর্মের নামে অধার্মিকেরা পুড়িয়ে ফেলে মানুষের শান্তি ? এসব ভাবায়Ñ ভীষণ ভাবে। নাড়া দেয় আমার বিবেকের সূক্ষ্ম তন্তুকে। ওরা ছায়ার মত আমার চারিপাশে জেগে থাকে। শয়নে, স্বপনে, জাগরণে ওরা আমার অস্তিত্বকে ক্লান্ত করে ফেলে। ওদের যেন বিরাম নেই, বিশ্রাম নেই। শুধুই বিরক্ত করে চলে। মস্তিষ্কের কোষে কোষে যানজট সৃষ্টি করে। ওদের কাগজ বন্দি করে আমার মুক্তি পথ খুঁজি বার বার। কিন্তু বার বার ওরা ফিরে আসেÑ ভাইরাসের মত ওরা এক থেকে দুই, দুই থেকে বহু বাড়তে থাকে জ্যামেতিক গণনায়।

সৃজনের দিক্ষা নিতে বার বার ছুটে যাই সেই সব মানুষের কাছে যারা জীবন মন্থন করে বেঁচে থাকার মন্ত্র শেখা যায়। কখনো কখনো ওদের ঈশ্বরের চেয়ে মহান মনে হয়। চাঁপাই নবাবগঞ্জের বাবু ড্যাংয়ের সাঁওতাল পল্লীর নিচু নিচু কালো মানুষগুলো বড় হৃদয় দিয়ে কীভাবে আকাশের চেয়ে উঁচু হয়ে উঠেছে। সমাজের বঞ্চনাকে মেনে নিয়ে হাসি মুখে বাঁচতে শিখেছে? নিজেদের অধিকারের পৃথিবী টুকু অন্যদের হাতে তুলে দিয়ে ভিখিরি হয়েছে। ওরা শুধুই দিতে শিখেছেÑ ছিনিয়ে নিতে শিখেনি অন্যদের মত। এই আকাশ সম উদারতাই ওদের প্রচলিত ঈশ্বরের চেয়ে মহান করেছে। ওরা বাংলার আদি বাসিন্দা হয়েও ভূমিহীন, নিঃস্ব। উচ্ছেদের আতঙ্কে কাটে দিন। ওরা আপন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে লালন করে, ভালবাসে, সম্মান করে। এজন্যই শত শত বছরের ঝড়ের পরও তাদের শেকড়কে সজীব করে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তাদের কাছে অনেক কিছু শেখার আছে, যারা নিজের জাত, ধর্ম, বংশমর্যাদা নিয়ে অনেক গৌরব করেন তাদের বলছি, একবার হলেও তাদের কাছে যান। হৃদয় দিয়ে ওদের অনুভব করুন। তবেই আপনি কে তার উত্তর পাবেন। আমি তাদের কাছ থেকে লেখার অনুপ্রেরণা পাই। তারাই আমাকে বলে, ‘তুই লেখ মোদের কথা।’

চারিদিকে ভোগ আর ভোগের স্বপ্নে বিভোর মানুষ। পুঁজিবাদী সমাজ এভাবেই মানুষকে দেখতে ভালবাসে। তাই মানুষগুলো ছুটছে তো ছুটছেইÑ সব কিছু পেছনে ফেলে। মূল্যবোধ, সম্পর্ক, জীবনের স্বর্ণালি সময়। সবকিছু। একসময় পেছন ফিরে দেখে সব কিছু হারিয়ে সে সর্বস্বান্ত এক। এ মানুষগুলোকেও বৃথা থামানো চেষ্টায় কলম হাতে নেই। আবার এ কথাও ভাবি আজ থেকে বহু বছর পরের মানুষেরা বলবে, সেই কালবেলায় কিছু মানুষও ছিল যারা একেবারে ভোগসর্বস্ব না হয়ে কিছু কাজ করাতে চেয়েছিল শিল্পের জন্য, সমাজের জন্য, জীবনের জন্য। আমি যদি তাদের সামান্য একজন হয়ে উঠতে পরি।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:০১

হাসান মাহবুব বলেছেন: এই বস্তুতান্ত্রিক পৃথিবীতে এখনও কেউ এমন করে ভাবে দেখতে ভালো লাগে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.