নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নব নব সৃষ্টি

সোলায়মান সুমন

সৃষ্টির আনন্দে ঈশ্বর এ মন

সোলায়মান সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডুব সত্যি ডুবে গেল

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ২:৩৭

‘ডুব’ সিনেমা নিয়ে আমার প্রত্যাশা ছিল অনেক। কারণ পরিচালকের ইন্টেনশন। তাছাড়া ইরফান খান আমার ভীষণ প্রিয় অভিনেতাদের একজন। বিশেষ করে ‘দ্যা লাইফ অব দ্যা পাই’ ‘বিল্লু’ ‘পিকু’ সিনেমায় তিনি অনবদ্য অভিনয় করেছেন। ইরফান একজন ন্যাচারাল অভিনেতা। সে কথা বলিউডের বাঘা বাঘা অভিনেতা স্বীকার করেছেন। তিনি বাংলাদেশের বাংলা সিনেমায় অভিনয় করছেন বিষয়টা বেশ কৌতূহলের। রোকেয়া প্রাচী বাংলা সিনেমার ধ্রুপদী অভিনেত্রি। পোর্ণ মিত্র কলিউডের চার্মিং গার্ল হিসেবে ইতোমধ্যে পরিচিত হয়েছেন। অঞ্জন দত্ত অভিনীত ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’ সিনেমায় তিনি একজন বয়স্ক অভিনেতার(অঞ্জন দত্ত) বিপরীতে অভিনয় করেছেন। যদিও ‘ডুব’ আর ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’ সিনেমার প্রেক্ষাপট এক কিন্তু ডুবে সে একজন জেদি কিশোরীর এবং একধরনের নৈতিক স্খলনের ভেতর দিয়ে তাঁর চরিত্রটি এগিয়েছে।‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’ সিনেমায় সে একজন গান পাগল মফস্বলের অতি সাধারণ মেয়ে। গায়িকা হবার স্বপ্ন নিয়ে সে আসে কলকাতার একজন বিখ্যাত গায়কের কাছে। শুরু হয় অসম প্রেমের কাহিনী। তৃষ্ণা একজন টিপিক্যাল অভিনেত্রি। একধরনের বিশেষ চরিত্রেই তিনি সাবলিল। পরিচালক তাঁকে বার বার সে ধরনের চরিত্রই দেন। এখনেও তাই।

এবার আসি গল্পে। গল্পের শুরুতে দেখি মূল চরিত্র বিখ্যাত পরিচালক জাভেদ হাসান তাঁর স্ত্রী মায়ার ( রোকেয়া প্রাচী) সাথে আটপৌরে জীবনে অনেকটাই ক্লান্ত। মায়া মধ্যবিত্ত আট-দশটা সাদাসিদে টিপিক্যাল গৃহিণীর মত। তবে কন্যা সাবেরির (তৃষ্ণা) সাথে জাভেদের সম্পর্কটা একটা ভিন্ন মাত্রায় গিয়ে পৌচেছে। মেয়ের সাথে বাবার বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। জাভেদ তাঁর মনের কথাগুলো খুব সহজেই বলতে পারে মেয়ে সাবেরিকে। সেও তার বাবাকে অনেকটাই বুঝে। বাবা-মেয়ের এই সম্পর্কটাকে বড় ঈর্ষা করে জাভেদ হাসানের কন্যা সাবেরির এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী নীতু (পর্ণো মিত্র)। যে কি না সর্বক্ষেত্রে জাভেদের কন্যার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। কিন্তু বিখ্যাত পরিচালক জাভেদের কন্যা হওয়ার কারণে সাবেরি সবখানে বেশি গুরুত্ব পেত। অথচ নীতু বিশ্বাস করে সে সাবেরির চেয়ে সর্বক্ষেত্রে বেশি যোগ্য। তাই নীতু সিদ্ধান্ত নেয়, বিখ্যাত পরিচালক জাভেদের কন্যা হিসেবে না পারলেও তার স্ত্রী হিসেবে জাভেদের নামের পাশে নিজের জায়গা করে নেবে। নীতু নানা কৌশলে জাভেদের সংসারে ফাটল ধরায়। প্রথমে সংবাদপত্রে তার ও জাভেদের সম্পর্ক নিয়ে একটা মিথ্যা বিবৃতি দেয়। সেই ইস্যুকে নিয়ে মায়া ও তার স্বামী জাভেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি শুরু হয়। মায়া ছেলে মেয়েকে নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করে। জাভেদের এই একাকিত্বের সুযোগ নিয়ে নীতু তার অনেক কাছে চলে আসে। এক পর্যায়ে জাভেদ হাসান নীতুকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। এভাবে সাবেরির উপর নীতু প্রতিশোধ নেয়।
হুমায়ুন আহমেদের জীবনের ছায়া অবলম্বনে কাহিনীটি নির্মিত। কিন্তু কোনোভাবেই একে বায়োপিক বলা যাবে না। বায়োপিকের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো এখানে অনুপস্থিত। তবে তাঁর প্রথম বিয়ে যে ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে হয়েছিল সে প্রসঙ্গটি এখানে এসেছে। হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় বিয়েকে কেন্দ্র করে যে ক্রাইসিসগুলো তৈরি হয়েছিল তার অনেকটাই দর্শক এখানে খুঁজে পাবেন এবং লেখকের মৃত্যুর পর তাঁর লাশ নিয়ে যে টানা-হেঁচড়া চলেছে সে বিষয়টিও দর্শক এখানে দেখবেন।

যদিও সিনেমার কাহিনী সুন্দর কিন্তু নির্মাণের অদক্ষতার কারণে গল্পটি দাঁড়াতে পারেনি। পরিচালক মোস্তফা সারয়ার ফারুকী পূর্বের সিনেমাগুলোর মত এবারও ব্যর্থ হয়েছেন। কোনো চরিত্রই ঠিকমত বিকোশিত হয়নি। কাহিনীর ধারাবাহিকতা নেই। যে দুটি চরিত্রের দ্বন্দ্বকে (সাবেরি ও নীতু) কেন্দ্র করে এই সিনেমার কাহিনী এগিয়েছে তাদের সিনেমার কোথাও মুখোমুখি হতে দেখি না। শুধু সিনেমার শেষ দৃশ্যে স্কুলের রিইউনিয়নে তারা দুজনে বসে বাদাম চিবায় নীরবে। এটুকুই দর্শক দেখে। একজন দর্শক হিসেবে যে বিষয়টি আমাকে বেশি বিব্রত করেছে তা হচ্ছে ইরফান খানের বাংলা উচ্চারণ। হিন্দি টোনে তিনি বাংলা উচ্চারণ করেছেন পুরো সিনেমা জুড়ে। যা একজন বাঙালি লেখক, সিনেমা পরিচালকের মুখে সত্যি বেমানান ও হাস্যকর। এখানে পরিচালক একজন বাঙালিকে দিয়ে ডাবিং করাতে পারতেন। হুট করে যেভাবে জাভেদ হাসানের মৃত্যু দৃশ্যটা আসে তা একেবারে খাপছাড়া মনে হয়।

কিছু কিছু দার্শনিক সংলাপ দর্শককে মুগ্ধ করবে। ক্যামেরার কাজও বেশ ভাল। সিনেমাটির এটুকুই ইতিবাচক দিক। কোনো এক মুভি ক্রিটিকের লেখায় পড়েছিলাম, অভিনেতা যত বড়ই হোক, পরিচালক দক্ষ না হলে অভিনেতা ব্যর্থ হতে বাধ্য। তা-ই ঘটেছে এখানে। তারপরও বলব মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সমাজকে হলে ফেরাতে এ ধরনের সুস্থধারার ছবি নির্মণের আরো বেশি বেশি উদ্যোগ নেয়া উচিত।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৯

দুখু বাঙাল বলেছেন: আপনার ফেবু লিংক দেখে এসেছি। তাই কিছু বলতে হচ্ছে
সিনেমাটি আমি দেখিনি। তাই সেই ব্যপারে কিছু বলতে পারবো না। তবে আপনার রিভিউ লিখা সম্পর্কে বলবো, মুভি রিভিউ লেখা মানে মুভির কাহিনী লেখা নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.