নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আত্মনাং বিধিই হোক যাপিত জীবনের প্রেরণার উৎস।

তাজা কলম

সেই কবে ... সভ্যতার আদিলগ্নে সূচিত হয়েছিল নিজেকে জানার অদম্য বাসনা। গ্রিক দর্শনের ‘know thyself’ কিংবা ভারতবর্ষের প্রাচীন দার্শনিকদের, “আত্মনাং বিধি”–র উত্তর আজো মেলেনি লাখো লাখো বছরের মানব ইতিহাসে। এই আত্মঅন্বেষণই তাজাকলমের জীবন তপস্যা। তবে নিজেকে জানার সাধনা বৈরাগ্যের পথে নয় বরং মানুষের সাথে থেকে, মানুষকে ভালোবেসে, মানুষের মাঝেই তাজা কলম খুজেঁ পেতে চায় আপন অস্তিত্বের ভূভাগ। তবুও তাজা কলম পৃথিবীতে এক গৃহী সন্নাসী কারন সে নিয়ত খুজেঁ ফিরছে শূণ্য খেকে আসা এবং শূণ্যতেই বিলীন হওয়া মানব জীবনের গুঢ় রহস্য। বিশেষ অনুরোধ: এ ব্লগে প্রকাশিত লেখাগুলো কপিরাইটের আওতাভূক্ত । লেখকের অনুমতি ছাড়া এখানে প্রকাশিত কোন লেখা কিংবা লেখার অংশ বিশেষ কেহ অন্য কোথাও প্রকাশ করলে বেআইনি কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রয়োজনে লেখকের সাথে যোগাযোগ করুন।

তাজা কলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিজ্ঞান, ইসলাম, মানবিক মূল্যবোধ এবং নাস্তিকতা

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০০

যখনই ধর্মবিষয়ক ভাবনা আসে, মনে পড়ে যায় চন্ডিদাসের সেই প্রাতঃস্মরণীয় পংক্তি 'সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই'। মানুষই যদি না হতে পারি, মানবতাকে যদি সবার উপরে স্থান দিতে না পারি তবে কীসের নাস্তিক, কীসের আস্তিক? অথচ এই দ্বন্দ্বের কারণে কতো রক্তপাত, কত প্রাণের বলি! কি আস্তিক কি নাস্তিক সবাইকেই আগে হয়ে উঠতে হবে মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ।

পৃথিবীর তাবদ ধর্মগ্রন্থই এই মানবিক মূল্যবোধকেই প্রাধান্য দেয়। এমন কি নাস্তিক যে তাকেও মানুষ হয়ে উঠতে হবে নীতিশাস্ত্র যথাযথ অনুসরণ করে।

নাস্তিকতা কিংবা আস্তিকতা দুটোই মূলতঃ বিশ্বাসের বিষয়। আপনি কাউকেই জোর করে আস্তিক কিংবা নাস্তিক বানাতে পারেন না। বিশ্বাস জিনিষটা ভেতর থেকে আসতে হবে, যেমনটি অবিশ্বাসও। এক্ষেত্রে অবিশ্বাসও একধরণের বিশ্বাস। যেহেতু ঈশ্বর নেই কিংবা ঈশ্বর আছে কোন প্রপঞ্চই বিজ্ঞানের আলোকে প্রমাণ করা সম্ভব নয়, অন্ততঃ এ সময়ে।

নাস্তিকতার সপক্ষে যারা বিজ্ঞানকে টানাটানি করে তারা ভ্রান্ত। কারণ বিজ্ঞান কখনোই ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ কিংবা অপ্রমাণের প্রয়াস চালায় না। বিজ্ঞান মূলতঃ জাগতিক বস্তুগত বিষয়ের ব্যাখ্যা প্রদান করে। বিশেষ করে বিজ্ঞান যখন প্রাচীন দর্শনশাস্ত্র থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র বিষয় হয়ে উঠে তখনই সে হয়ে যায় ধর্মনিরপেক্ষ।

অন্যদিকে জাকির নায়েকের মতোন একদল নাদান ধর্মপ্রচারক আছেন যারা বিজ্ঞানের আলোকে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে তৎপড়। তারা মূলতঃ বিজ্ঞানের অপব্যাখ্যা দেন।

ধর্ম মূলতঃ বিশ্বাসের বিষয়, এজন্যই কোরানের শুরুতেই সুরা বাকারায় বলা হয়েছে, "এ গ্রন্থ তাহাদেরই জন্য, যাহারা অদৃশ্যে বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছে।"

কেউ ঈশ্বরে বিশ্বাস স্থাপন করে কিংবা না করে, তা তার একান্ত নিজস্ব বিষয়। ধর্ম পালনে কিংবা বিশ্বাসে কোনরূপ জোর জবরদস্তি চলতে পারে না। কোরানে সুষ্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, 'ধর্মে কোন জবরদস্তি নাই' (সুরা বাকারাহ-, আয়াত -২৫৬) । মানবিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ ইসলামে বিধর্মী, নাস্তিক কিংবা অবিশ্বাসীদের হত্যা করার বিধানও নেই। তবে আত্মরক্ষার্থে কোরান বিরোধী শক্তিকে আক্রমণ করতে সমর্থন করে। কোরানে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক আয়াত - " সর্বাত্মক যুদ্ধ করো আল্লাহর পথে ওদের বিরূদ্ধে যারা তোমাদের সহিত যুদ্ধ করে, তবে সীমালঙ্ঘন করিও না; আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালোবাসেন না। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৯০-৯১)।

সত্যিকার ইসলাম মূলতঃ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকেই প্রাধান্য দেয়। কাফের (বিধর্মী কিংবা নাস্তিক)-দের উদ্দ্যেশ্য করে সুরা আল কাফিরুনে স্পষ্টতঃই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে,

(১) বলুন, হে কাফেরকূল,
(২) আমি এবাদত করিনা, তোমরা যার এবাদত কর।
(৩) এবং তোমরাও এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি
(৪) এবং আমি এবাদতকারী নই, যার এবাদত তোমরা কর।
(৫) তোমরা এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি।
(৬) তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্যে এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে।

সূতরাং নাস্তিক কিংবা কাফেরদের কর্মফল তাদের কাছেই যার বিচার করবেন আল্লাহ স্বয়ং। দুনিয়াতেই যদি নাস্তিকদের হত্যা করে খুন করা হয় তাহলে রোজ হাশর কি জন্য, কি জন্যই বা বেহেশত দোজখে শাস্তির ব্যবস্থা।

কাফের কিংবা নাস্তিকদের প্রসংগে কোরানের এ সুস্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও উগ্রবাদি মুসলমানদের কেউ কেউ বিভ্রান্ত। এদের অনেকেই মনে করে নাস্তিকদের হত্যা করা ইসলামসম্মত। এ বিষয়ে তারা নবী(সঃ)-এর জীবিতবস্থার কিছু ঘটনা, যা মূলতঃ হাদিছের মাধ্যমেই এসেছে সেগুলোর উদ্ধৃতি দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যেতে পারে হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর ইন্তেকালের তিনশত বৎসর পর হাদিছ সংগ্রহ শুরু হয়। এই হাদিছগুলোর মাঝে অনেকগুলোই গ্রহণযোগ্য নয়। এমন কি নির্ভরযোগ্য হাদিছ সংকলন যেমন বোখারী, মুসলিম শরীফের সব হাদিছই কিন্তু গ্রহণযোগ্য নয়। আর তা ছাড়া মুসলমানদেরকে বিভ্রান্তমূলক হাদিছ নয়, বরং কোরানের নির্দেশাবলীকেই প্রাধান্য দিতে হবে।

নাস্তিকদের হত্যা করাকে উগ্রবাদী মুসলমানরা হত্যা করাকে ইসলামসম্মত মনে করে বিশেষ করে নাস্তিকেরা যখন তাদের যুক্তির আলোকে মোহাম্মদ(সঃ)-এর নবুয়তকে অস্বীকার করে নানা ধরণের কটাক্ষ করে থাকে। এ প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে, এ কারণে তো পরলোকে আল্লাহই বিচার করবে। শুধুমাত্র অবিশ্বাসের কারণে নাস্তিকদের হত্যা করা মানবিকতা বিরোধী তো বটেই, ইসলাম সম্মতও নয়।

পরিশেষে বলা যায়, বিশ্বাস/অবিশ্বাস নিয়ে সমাজে চলমান হানাহানি কিংবা বিদ্বেষ সেদিনই বন্ধ হবে যেদিন মানবজতি সত্যিকার অর্থে সভ্য হবে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



আজব সব ভাবনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.