নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শরীরে শরীর নয়, ঠোঁটে ঠোঁট রাখাও নয়, মূহুর্তের ছোঁয়াও নয়, একটু দেখাতেই লিটার খানেক অগ্নিজলের ঘোর।

ত্রিশোনকু

না প্রেমিক না বিপ্লবী [email protected]

ত্রিশোনকু › বিস্তারিত পোস্টঃ

এস এস সি পরীক্ষা ও আত্মহত্যা

০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:২৮

এই যে আটজন এস এস সি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর আত্মহত্যা করলো তাদের ওপর কি পরিমান মানসিক চাপ যে ছিল তা কল্পনা কর‍তেও আমার আতংক হয়।

আপনি কি আপনার মটর গাড়ি দিয়ে হাল চাষ করতে পারবেন?
বা ট্রাক্টর চালিয়ে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া যাবেন?

তা যদি না পারেন , না যান তাইলে আপনি কেন চাইবেন আপনার সন্তান এস এস সিতে খুব ভাল করুক?

প্রত্যেকটি মানুষ অনন্য। একেক জনের প্রতিভা একেক রকমের, একেক ধরনের, একেক মাত্রার। সবাই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হয় না। অনেকেই উরুগুয়ের রাজধানী মুখস্ত করে বিসিয়েস হতে পারেনা। কেউ কেউ আইয়ুব বাচ্চু হয়, মুস্তাফা মনোয়ার হয়, কেউ কোনমতে এইচ এস সি পাস করে জেনারেল হয়, কেউ হয় তারেক মাসুদ বা লাকি আখান্দ।

এই এক জীবনেই দেখা।

আপনার সন্তান কারখানায় উৎপাদিত পন্য নয়। সে জীব জগতের সবচেয়ে জটিল সৃষ্টি। তাকে মানুষ জ্ঞান করুন।

পরীক্ষার ফলই সব নয়।

ক্লাস টেনে আমার যে সতীর্থ শৃংখলা জনিত কারনে দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ থেকে বহিষ্কৃত হয়ছিল সে এখন বিশালতম চাকুরী করে, অবিশ্বাস্য অংকের বেতনে। যে এস এস সি তে সম্মিলিত মেধা তালিকায় এক থেকে পাঁচের মধ্যে ছিল, সে গত তিরিশ বছর ধরে কিছুই করেনা (ফৌজদারহাটের ১৭ তম ব্যাচ, আমাদের ব্যাচ একটি রেকর্ড করেছিল, ১৯৭৪ এ, যা এখন পর্যন্ত কোন ব্যাচ ভাংতে পারেনি- সম্মিলিত মেধা তালিকায় তারা প্রথম থেকে ৫ ম স্থান অধিকার করেছিল। আমি অবশ্য দ্বিতীয় বিভাগে সবার পেছনে ছিলাম)।

আপনারা মা বাবা। একটু বোঝার চেষ্টা করুন। আজ যে চারজন তাদের ওপর প্রচন্ড মানসিক চাপের কারনে আত্মহননের পথ বেছে নিলো, তাদের কাছে আপনাদের চাহিদা ছিল শুধু অবিবেচকের মত নয়, জালিমের মত। এরা বেঁচে থাকলে অতি জনপ্রিয় শিল্পী হতে পারতো, প্রতিভাবান অভিনেত্রী হতে পারতো, বা হতে পারতো ভিন্সেন্ট ভ্যান গগ কিম্বা টমাস আলভা এডিসন।

কিম্বা আমার মতন কিছুই না হতে পারতো।

আমি কি কোন অসম্ভব কষ্টকর, দূঃখ ভারাক্রান্ত জীবন যাপন করেছি?

প্রশ্নই ওঠেনা। আজ যদি আমাকে বলা হয় -তোমাকে যদি এখন নয় বছর বয়সে ফেরত নেয়া হয় তাইলে তুমি তোমার জীবনে কি কি বদলাবে?

আমি সংগে সংগে বলবো কিচ্ছু না, আমার যাপিত জীবনই আমি আবার যাপন করতে চাই।

বাচ্চাদের আরেকটু স্বাধীনতা দিন। তাদের উৎকর্ষতা কোন ক্ষেত্রে হবে তা বোঝার চেষ্টা করুন। তাদের অগ্রগণ্যতাকে সম্মান করুন। তা না হলে পিতামাতা হবার কোন যোগ্যতাই নেই আপনাদের।

শুধু শারীরবৃত্তীয় ভাবে আপনা আপনি কিছু মনুষ্য শিশুর জন্ম দিয়েছেন আপনারা।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:৩৬

করুণাধারা বলেছেন: ভালো লিখেছেন। পড়ে অবশ্য মনখারাপ হল। জানিনা বাবা মায়েরা সন্তানের জীবনের চাইতে ফলাফলকে কেন বেশি গুরুত্ব দেন!

০৪ ঠা জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৩৮

ত্রিশোনকু বলেছেন: আসলে আমিও বুঝি না। বাবা মায়ের চাইতে সন্তানদেরকে তো কেউই বেশী ভালবাসেনা।

২| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪২

কল্পদ্রুম বলেছেন: বাবা মায়ের কাছে বাড়ি গাড়ির মত ছেলে মেয়ের রেজাল্টও সমাজে অহংকার করার মত একটি বিষয়।বাপ মায়ের ইগো সমস্যাই ছেলে মেয়েদের উপর চাপ সৃষ্টি করে।

০৪ ঠা জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৪১

ত্রিশোনকু বলেছেন: আসলেই তো।

এই ফলাফলও Status symbol হয়ে গেল!

৩| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪৫

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। এটা কাম্য নয় জীবন কখনো তুচ্ছ হতে পারে না।

০৪ ঠা জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৪৮

ত্রিশোনকু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

আসলেই একটি জীবন, তাও মানুষের, যে মানুষটি এখনো সাবালক নয়!

এটা কিভাবে তুচ্ছ হতে পারে?

৪| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ বিকাল ৩:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: সামান্য এস এস সি পরীক্ষায় যারা ফেল করে তারা আসলেই গাধা। এতটা নির্বোধ ক্যান পোলাপান?

৫| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ বিকাল ৩:৫৪

খাঁজা বাবা বলেছেন: আমার মনে হয় যে সকল বাবা মা তাদের যাপিত জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট নয় তারাই তাদের সন্তানদের প্রেশারে রাখে। মনে করে পড়ালেখায় ভাল না হলে তাদের সন্তানকেও জীবনে তাদের মত অনিশ্চিত জীবনে সংগ্রাম করে যেতে হবে।

অনেকের ক্ষেত্রে এটা হয়ত সামাজিক মর্যাদার বিষয়।

৬| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ বিকাল ৩:৫৮

মীর আবুল আল হাসিব বলেছেন: কিছুই বলার নেই।

৭| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ বিকাল ৫:১২

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সামাজিক প্রতিযোগীতা করতে গিয়ে সন্তানদের উপর মানসিক চাপ দেয়া হয়। অভিভাবকদের বোঝাতে হবে একটা পরীক্ষাই জীবনের সব নয়। সেই সাথে শিক্ষকদেরও শিক্ষার্থীদের মানসিক ভাবে পাস/ফেল মেনে নেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে...

৮| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ বিকাল ৫:২৩

ত্রিশোনকু বলেছেন: হ্যাঁ ঠিক বল্বছেন এটি একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারেই।

ধন্যবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ বের করার জন্যে।

৯| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ বিকাল ৫:২৯

ত্রিশোনকু বলেছেন: আপনি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

এই মোবাইল ভার্সানে লাইকের বাটন দেখছিনা।

আগে দুবার আমার উত্তর হাওয়া হয়ে গেছে।

১০| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ৯:০৬

আল ইফরান বলেছেন: ব্লগে আপনাকে অনেকদিন পর দেখতে পেয়ে ভালো লাগছে, ত্রিশনকুদা। আপনি কি এখনো ফেইসবুকে সুন্দর সুন্দর মাছ (এবং তার রান্নার) ছবি দেন?

আপনি আমাদের অনেক সিনিয়র হবেন নিশ্চয়ই।
আমাদের ব্যাচেও (এবং তার জুনিয়র ব্যাচে) আপনার মত এইরকম ঘটনা আছে। আমাদের ব্যাচের পেছন দিকে টেনেটুনে ২য় বিভাগে পাশ করা ছেলেটি এখন জাতিসংঘের উচ্চপদস্থ কর্তা। ব্যাচের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কারনে অবহেলিত ছেলেটি এখন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে দূরপ্রাচ্যের এক দেশে কর্পোরেট পলিসি লেভেলে কাজ করছে।
ফলাফল আসলে জীবনের একটা পর্যায়ে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। আমাদের বাবা-মায়েরা যদি আপনার মত বুঝতো!

১১| ০৫ ই জুন, ২০২০ ভোর ৬:৪১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মা বাবার অতিরিক্ত মানসিক চাপ দেওয়া ঠিক নয়। আর আমাদের শিক্ষাব মান উন্নয়নও দরকার ।

১২| ০৫ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৩:৫৮

পদ্মপুকুর বলেছেন: আমাদের দেশে সবকিছুই এখন রেজাল্ট ওরিয়েন্টেড হয়ে গেছে। এখানে এখন বিজ্ঞানের চেয়ে প্রযুক্তি, মানুষের চেয়ে মেশিন এবং চিন্তার চেয়ে উৎপাদন গুরুত্বপুর্ণ। এবং এটাই হওয়ার কথা।

একটা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে গুলি করার মত অপরাধ করার পরও প্রধান দুই আসামী যখন এই লকড ডাউনের ভেতরেও চার্টার্ড বিমানে করে নিরাপদে দেশত্যাগ করতে পারে, তখন এ ধরনের উদাহরণগুলো সমাজের বাকি (পড়ুন- অক্ষম, নির্যাতিত) মানুষদের কাছে বার্তা দেয় যে টাকা/ক্ষমতা হলে তুমিও এ রকমটা করতে পারবে। আর এই ক্ষমতা অর্জনের জন্য বংশপরম্পরায় যারা দুর্বল, দরিদ্র, তাদের কাছে অ্যাকাডেমিক সাফল্যটা প্রাথমিক একটা রিকোয়্যারমেন্ট। যার প্রথম ধাপ এই এসএসসি'র রেজাল্ট। সমস্যা হলো, এখন প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেেকেও এই একই প্রণোদনাই দেওয়া হয় সবাইকে।

এই সাফল্য লাভ করানোর পেছনে বুভুক্ষু মাতাপিতার আকাঙ্খাই সন্তানদের জন্য ডিলেমা হয়ে দাঁড়ায়। ফলাফল তো আপনি লিখেছেনই। কিন্তু এর জন্য মাতাপিতার খুব যে একটা দোষ দেওয়া যাবে, আমি তা মনে করি না। বরং ন্যায়বিচার ও অধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠাটা জরুরী।

যখন মানুষ দেখবে যে সে ভুরুঙ্গুমারীতে বাস করলেও সমাজ রাষ্ট্র তাকে তার বিপদে-প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াচ্ছে, তখন তার কাছে এই তথাকথিত জিপিএ মূল্যহীন হয়ে পড়বে।

ভালো থাকবেন।

১৩| ১৩ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৪০

আল ইফরান বলেছেন: @ পদ্ম পুকুরঃ আমি আপনার লেখার প্রতিটা শব্দের সাথে একমত। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ফলাফল এখন শ্রেণী উত্তরণের একটা সম্ভাব্য পথ হিসেবে নির্ধারিত হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.