নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহিত্য প্রিয় মানুষ আমি, বাংলা ভাষা চর্চার চেষ্টা করি। মূলত একজন একনিষ্ঠ পাঠিকা।

উজ্জয়নী

পেশায় গবেষক, নেশায় পাঠক

উজ্জয়নী › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'যদি প্রেম দিলে না প্রাণে\' (মেয়েদের নিয়ে বাস্তব নির্ভর দ্বিতীয় সত্যি ঘটনা) ছোট গল্প

২৪ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ২:৩০

১.
এনি আদার কোয়েশ্চেন ? গোল টেবিল ঘিরে বসা একজিকিউটিভদের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে নিশ্চিন্ত মনে নিজের চেয়ারে বসল রিমা, কারুর যে আর কিছু বলার থাকতে পারেনা, সে বিষয়ে, নিশ্চিত সে। অনেক খেটেছে এই ক্লায়েন্ট প্রেজেন্টেশনটা নিয়ে, আশানুরূপ সাড়াও পাওয়া গেছে আজ। ছোট্ট একটা তৃপ্তির নিশ্বাস ফেলে, সামনে রাখা কফির কাপে চুমুক দেয় রিমা আর আড়চোখে একবার বসকে দেখে নেয়। নাহ বেশ সন্তুষ্ট মুখ। আলোচনার অর্থনৈতিক দিকটা শুরু হয়েছে, বোসদা প্রেজেন্টেশন দিচ্ছেন। রিমা রিল্যাক্সড হয়ে বসে আশেপাশের মানুষদের উপর চোখ বুলায়। হঠাৎ চোখ আটকায় প্রবীরের উপর, এক দৃষ্টিতে তাকেই দেখছে প্রবীর, কেমন যেন ঘোর লাগা চোখে। অস্বস্তিততে চোখ নামিয়ে নেয় রিমা। চেষ্টা করে মন দেয় বোসদার প্রেজেন্টেশনে। 

২.
দিনের শেষে অফিস ফাঁকা হতে শুরু করেছে। বেরুনোর জন্য হাত ব্যাগ গোছাতে গোছাতে অভ্যাসবশত সাইড টেবিলের টিভিতে সিসি টিভি ফুটেজের উপর চোখ পরে রিমার। সাথে সাথেই আজ সকালের অস্বস্তি পুরোমাত্রায় ফিরে আসে। প্রায় খালি হয়ে যাওয়া অফিসের নিজের কিউবিকেলে এখনো বসে প্রবীর। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে তারই অফিসের দিকে, ঠোঁটে হালকা হাসি। টুং করে একটা মেসেজ আসার শব্দে টিভির পর্দা থেকে মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ ফেরায় রিমা। 
কি আশ্চর্য, প্রবীর মেসেজ করেছে, কথা বলতে চায়, এখনি।
প্রবীর রায়, অফিসের নতুন স্মার্ট সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বয়েসে তার থেকে ছোটই হবে আর পদমর্যাদাতে তো অনেকটাই পিছনে। রিমা এই কোম্পানিতে পাবলিক রিলেশানের হেড আজ প্রায় ছয় বছর। তার কেরিয়ার উন্নতির পথ মসৃণ ছিল না। তার পারিবারিক জীবনের মতই কঠিন ছিল সেই যাত্রা। কোনটা বেশী কঠিন ছিল! মনে পড়ে না। তবে মুক্তির ক্ষণগুলি মনে আছে। যেদিন তাপসের থেকে আইনি বিবাহবিচ্ছেদের কাগজ হাতে পেল, সেদিন একা অনেকক্ষণ কেঁদেছিল রিমা, আনন্দাশ্রু। এক বেদনাময় অধ্যায় শেষ হওয়ার আনন্দ। আবার যেদিন বস, অফিসের সবার সামনে তাকে এই চেয়ারে বসিয়েছিলেন, সেদিনও আনন্দাশ্রু ঝরেছিল গোপনে, কঠিন পরিশ্রমের স্বীকৃতি কাকে না আপ্লুত করে!
আরো একটা মেসেজের রিং বাস্তবে ফেরায় তাকে। প্রবীর উত্তরের প্রতীক্ষা করছে। আসুন বলে মেসেজ করে, হাত ব্যাগে চেন টানে রিমা, কোন লম্বা মিটিং এ এখন সে ঢুকবে না। আজ একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে। ইলেক্ট্রিশিয়ানকে আসতে বলা আছে।  মা ও রিমা - এই দুজনের সংসারে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডী পাঠ, সবই তাকেই করতে হয়। কাজের লোক আছে, কিন্তু কিছু ডিশিসান তো তাকেই নিতে হয়, ওটা কাজের লোকের কর্ম না।

৩.
কেবিনের দরজায় নকের শব্দ। প্রবীর। 
- কাম ইন বলতেই তার টেবিলের উল্টো দিকে প্রবীর। দিনের শেষেও বেশ ফ্রেস ও স্মার্ট দেখাচ্ছে ছেলেটাকে। 
- বলুন, সময় নষ্ট না করে কথা শুরু করে রিমা।
প্রবীর কিছুই বলে না, ইতস্তত করে দাঁড়িয়ে।
একটু বিরক্ত বোধ করে রিমা, - কি হল, কিছু বলবেন? 
আপনার ডানদিকের গালে অনেকটা মার্কারের কালি লেগে রয়েছে। - ফিসফিস করে প্রবীর

এই রকম কোন মন্তব্যের জন্য আদৌ প্রস্তুত ছিল না রিমা। হঠাৎ খুব হাসি পায় তার। সশব্দে হেসে ফেলে বলে, দাঁড়িয়ে কেন বসুন। কালি মোছার কোন তাড়া দেখায় না সে। প্রবীর বসে। কফি খাবেন? রিমা জিজ্ঞেস করে, সারাদিন পরে এই এক ছোট্ট কথা যেন স্ট্রেস বার্স্টারের কাজ করেছে। আবার রিমাকে অবাক করে প্রবীর, আজ থাক। মেয়েকে টিউশান ক্লাসে নিয়ে যেতে হবে, আমার স্ত্রী একটু ট্যুরে গেছে। 

- বেশ তাহলে গুডনাইট, কথায় ইতি টানতে চেয়ে উঠে দাঁড়ায় রিমা। উঠে দাঁড়িয়েছে প্রবীরও, রিমা অপেক্ষা করছে গুডনাইট শোনার। কিন্তু আজ যেন তার অবাক হওয়ারই দিন।
-আপনাকে আজ খুব সুন্দর দেখাচ্ছে; এক নিশ্বাসে কথা কটি বলে দ্রুত তার কেবিনের বাইরে চলে যায় প্রবীর। 

রিমা আবার বসে পরে। তার যুক্তিবাদী মন বলছে, এখন তার ভীষণ রেগে যাওয়া উচিৎ। উচিৎ প্রবীরকে ডেকে সাবধান করে দেওয়া, ভবিষ্যতে যেন সে মর্যাদা লংঘন না করে। কিন্তু এক অজানা ভালোলাগা অসাড় করে দিচ্ছে যুক্তিজালকে। 
এই অফিসে মধ্য চল্লিশের রিমাকে সবাই সমীহ করে। নিজের কাজে ও কথায়, অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও নিজের চারধারে সে এক অদৃশ্য দূরত্বের পাঁচিল তুলে রাখে, আজ দস্যুর মত সেই পাঁচিল টপকে প্রবীরের প্রশংসা এসে তাকে বিদ্ধ করেছে, কিন্তু সেই বেদনাটুকু মধুর সুরে বাজছে কেন, এ কোন হেঁয়ালি? 
ইন্টারকমে প্রবীরকে ডাকে রিমা, -একটু কথা আছে, একবার আসবেন? ঘড়ির কাঁটা নটার ঘর ছুঁলে দুজনে উঠে দাঁড়ায়, বাড়ি ফিরতে হবে। মাঝের দুঘণ্টায় যেন দশ বছরের না বলা কথার বান ডেকেছিল, রিমাই বেশী বলেছে, বলেছে প্রবীরও তবে সে শুনেছে বেশী। এমন শ্রোতা কতদিন পায়নি রিমা। 

৪.
ফেরার পথে গাড়িতে মনটা বেশ ফুরফুরে রিমার। একজনের ভালোলাগায় তার মন যে এভাবে ভালো হয়ে যেতে পারে, কোনদিন ভাবেনি সে। জ্যামে আটকানো গাড়ির কাঁচতোলা, বর্ষা ভেজা কাদামাখা শহরটাকে ভারি মোহময় ও মায়াবী লাগে আজ। ট্র‍্যাফিকের আওয়াজ চাপা দিয়ে একটি সুর বেজে চলেছে বসন্ত বাহার রাগে, সামান্য দুটো কথা। - আজকাল ভালো বন্ধু কোথায় পাওয়া যায় বলুন, আমি আপনার একজন অন্তরঙ্গ বন্ধু হতে পারলে ধন্য বোধ করব। প্রবীরের দুই চোখের ভাষা অবশ্য বলছিল অন্য ভালোলাগার কথা। বড় ভালো লাগছে। রিমা হাত দিয়ে ডান গালের কালির দাগটাকে স্পর্শ করে, আদরের ভঙ্গিতে। তারপর চট করে ফোনে তার পছন্দের খাবার অর্ডার দেয়। আজ ডাল ভাতের দিন না।
পরের দিন শনিবার, সারাদিন উশখুশ করে রিমা, একটা ফোনের প্রতীক্ষা। নিজের বিবেক কিন্তু খোঁচাতে ছাড়ছে না। - কি করছ রিমা, প্রবীর বিবাহিত, তার দুই মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে সুখের সংসার। সেটা সে অস্বীকারও করে নি। রিমাকে চায় সে বান্ধবী রূপে। এ সমাজ কি সেই বন্ধুত্ব মেনে নেবে? যদি প্রবীরের স্ত্রী কোনদিন তার সামনে এসে দাঁড়ায়, পারবে তো সে চোখ মেলাতে? অপরদিকে মন বলে বন্ধুত্ব্ব আর প্রেম কি এক? তারপরেও নিজের দ্বিচারিতা নিজেকেই লজ্জা দেয়। প্রবীর কি তপতী, বোসদা, শান্তনুর মত নিছক নির্ভেজাল বন্ধু হতে চেয়েছে?
শনিবার কোন ফোন না পেয়ে, রবিবার নিজেই ফোন করে রিমা। বেজেই গেল, কেউ ধরল না। জেদ চেপে গেছে তার, আবার ফোন করে, আবারো, তিন বারের বার, ওপাশে প্রবীর। 
-হ্যালো বলুন (নিতান্ত নির্লিপ্ত গলা)
- ফোন ধরছ না কেন? বাষ্প জমে রিমার গলায়।
- আপনি সোমবার অফিসে ফোন করুন, বাড়িতে কাজের কথা আমি বলি না, একটুও না থেমে উত্তর প্রবীরের।
- হতভম্ব সোমা কিছু বলার আগেই, ওপাশে শুনতে পায় মহিলা কন্ঠ। - আজো কাজ, উফ বান্টি আর অপেক্ষা করবে না, কেক কেটেই ফেলছি আমরা, তুমি এস। ভেসে আসে কচি কন্ঠের আহবান, ড্যাডি প্লিজ, লেট হয়ে গেলে আমরা ম্যাজিক শো কখন দেখতে যাব? 

৫.
ফোন ছেড়ে দিল রিমা। এক মুহূর্তে সে মাটির পৃথিবীতে নেমে এসেছে, প্রেমের ফানুস নিভে গেছে। নিজেকে খুব ছোট, সস্তা, খেলো মনে হয় তার। তার অবদমিত ডেস্পারেশান তাকে আজ কি বিশাল বিপদের মুখে এনে ফেলেছে। মনে মনে ঠাকুরকে ধন্যবাদ দেয় রিমা। দেরী হলেও, ধনুক থেকে তীর ছুটে জায়নি। প্রেমের নতুন রামধনুকে মুচড়ে ভেঙে ফেলে রিমা। নতুন ক্ষত থেকে রক্ত ঝরছে, ঝরুক; সেই রক্তে স্নান করে শক্তি সংগ্রহ করতে হবে তাকে। কাল যখন প্রবীরের সাথে দেখা হবে, তাকে বুঝিয়ে দিতে, আকাশকুসুম চয়নে হতাশা ছাড়া কোন প্রাপ্তি নেই। ৪২ বছরের নিসংগতা যতটা তার দুর্বলতা, তার থেকেও বেশী তার শক্তির উৎস।  একটু সময় চাই নিজেকে গুছিয়ে নিতে। অফিসে ইমেল করে দুদিন ছুটি নিল সে। কোনার্কের কাছে তার ফেভারিট রিসর্টে ঘর বুক করল। 

সামনে দিগন্তবিস্তৃত সমুদ্র, জোয়ার, ভাঁটা, রিমা ভাবে ভাঁটাই বা মন্দ কি, মাটির কাছে তো ফিরে আসা যায়। হঠাৎ আপন মনেই হেসে ওঠে সে, আজ পর্যন্ত কত পুরুষই বলল, তোমায় ছাড়া বাঁচবো না, আর একই সাথে বলল, স্ত্রী ও সন্তানদের তারা বড়ই ভালোবাসে, এটা কি সোনার পাথরবাটি নাকি সত্যিই একসাথে একইভাবে একাধিক ভালোবাসার সম্পর্ক থাকা সম্ভব। মেয়ে হিসেবে দ্বিচারিতা সে মানতে পারেনা, কিন্তু পুরুষরা? যা গেছে তা যাক। মায়ার হরিনের পিছনে আর সে দৌড়াবে না।

সব ভাবনায় ইতিটানে রিমা, গুন গুন করে গায় - এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয় আলোয়..." হাত ব্যাগে নিরন্তর ফোন বাজছে, সেট রিংটোন চিনিয়ে দিচ্ছে প্রবীরের ডাক, সব উপেক্ষা করে, চোখ বুজে, গলা খুলে রিমা গেয়ে চলে - আমার মুক্তি ধুলায় ধুলায় ঘাসে ঘাসে...এই আকাশে..." 

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৩:১৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:


দিদি, গল্পটি আমার খুব ভাল লেগেছে; দারণ দক্ষতায় গলপটি লেখেছেন; গল্পের শেষ অংশটি শিক্ষনীয়; তবে, সবচেয়ে ভাল লেগেছে (৪), আর (৫) এর প্রথম কয়েকটি লাইন B-)

দিদি, "কিউবিকেলে" শব্দটি বুঝিনি; "কেবিনের দরজায় নকের শব্দ" বাক্যটি ভাল লেগেছে B-)

২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ ভোর ৫:৫৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


বিবিএ, এমবিএ?

৩| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার গল্প গুলো যেন কেমন!!!

২৪ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:১৮

উজ্জয়নী বলেছেন: well we all have our style and our stories reflect realities of our society, nuanced

৪| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:১৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: উজ্জয়নী ,




সুন্দর হয়েছে গল্পটি ঝরঝরে লেখায় ।
তবে বিবাহিত কিম্বা অবিবাহিত নারী পুরুষের মাঝে প্রেম (?) ছাড়াও বন্ধুত্ব হতে পারে কোনও প্রকার প্রাপ্তির হিসেব ছাড়াই ।

২৫ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ২:০৯

উজ্জয়নী বলেছেন: সে তো বটেই তবে বাস্তবে সেটা খুব কম হয়। আমি একটি সত্যি ঘটনার ছায়ায় লিখলাম। ভালো বন্ধুত্ব কি বাড়িতে, স্ত্রী বা স্বামীর কাছে লুকিয়ে করতে হয়। বন্ধুত্বের নির্মল সম্পর্ক লুকোচুরিতে কলুষিত হয়। এক্ষেত্রে সুরুটা সুন্দর ছিল, প্রবীর যদি মর্যাদা রাখতে পারত।

৫| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৫১

আরাফআহনাফ বলেছেন: ৪এ রীমা কিভাবে সোমা হয়ে গেল বুঝলাম না !! !

গল্প ভালো হয়েছে।

২৫ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ২:২৩

উজ্জয়নী বলেছেন: ঠিক বলেছেন, এটা ভুল, সংশোধন করা যাচ্ছে না, সারভার ডাউন।

৬| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৩

বিষক্ষয় বলেছেন: Land grabber and getting the govt to allocate land is not the same thing.

২৫ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ২:৩৫

উজ্জয়নী বলেছেন: What is your context here? also go through UN definition of land acquisition & land grabbing if you are really interested. Also there are country speciific legal frameworks that distinguis both and tell us how grabbing happens in the name of acquisition.

৭| ২৫ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৮

উজ্জয়নী বলেছেন: cubicle হল প্লাই বা কাঁচ দিয়ে তৈরি ক্ষুদ্র কক্ষ যা mid level officer দের অফিস স্পেস

৮| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৩:৩২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: :( :(!! কোন খবর নেই!!!!

১৮ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:০৪

উজ্জয়নী বলেছেন: সখের লেখা তো, পেশা নিয়ে চাপে আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.