নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ফুলটাইম ড্রিমার, পার্টটাইম রিয়ালিস্ট! [email protected]
যাত্রী বোঝাই বাসে আগুন দেয়ার মাধ্যমে গত চার ফেব্রুয়ারি রাতে জামাত-শিবির যুদ্ধাপরাধ বিচার বিরোধী সহিংসতা শুরু করে। উত্তরায় রাত সাড়ে দশটার সেই নৃশংসতায় জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে এবি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা প্রাণ হারান। তের ফেব্রুয়ারি তারা প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে অগ্রণী ব্যাংকের কর্মী জাফর মুন্সিকে মৃত্যুর দুয়ারে পৌঁছে দেয়। চব্বিশ ঘণ্টা অমানুষিক যন্ত্রণা ভোগের পর জাফর মুন্সি হাসপাতালের বিছানায় মারা যান।
এরপর পনের ফেব্রুয়ারি বাসার সামনে নির্মমভাবে খুন হন ব্লগার রাজিব। পয়লা মার্চ রাতে রাজিবের খুনিদের পাঁচজনকে পুলিশ গ্রেফতার করলে জানা যায়- রাজিব খুনের উস্কানিদাতা একজন শিবির কর্মী।
বাইশ ফেব্রুয়ারি জামাত-শিবির তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে সারা দেশে সহিংসতা শুরু করে। জুমার নামাজের পরপর তারা একযোগে দেশের চৌষট্টিটি জেলায় হামলা চালায়। শাহবাগের গণআন্দোলনের খবর প্রচার করায় সাংবাদিক এবং নিরাপত্তা দেয়ায় পুলিশের ওপর জামাত-শিবির আর তার দোসরদের হামলা ছিল লক্ষণীয়। অন্তঃত ত্রিশজন পুলিশ মারাত্মকভাবে আহত হন, উনিশজন সাংবাদিককে গুরুতরবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়। দেশজুড়ে চালানো জামাত-শিবিরের হামলায় চারজনের প্রাণহানি ঘটে। সেদিন জামাত-শিবিরের হামলা থেকে রক্ষা পায়নি মসজিদ, দেশের পতাকা, শহীদ মিনার এবং কয়েক জেলার গণজাগরণ মঞ্চ। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে মসজিদের মাইক ব্যাবহার করে উস্কানি দিয়ে তারা সাধারণ জনগণকে পুলিশের গুলির মুখে ঠেলে দেয়।
তারপর আসলো সেই কাঙ্ক্ষিত দিন-আটাশ ফেব্রুয়ারি। কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী সাইদির ফাঁসির রায় জানা গেল। আর সাথে সাথে শুরু হল দেশজুড়ে জামাত-শিবির ও তার দোসরদের তাণ্ডব। সংখ্যালঘুদের উপাসনালয় ও বসতবাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে তারা সাম্প্রদায়িক সংঘাত শুরু করার একটা অপচেষ্টা চালায়। ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে এক প্রকৌশলীকে হত্যার মাধ্যমে জামাত-শিবির প্রকাশ করে সহিংসতার নতুন রূপ। গাইবান্ধায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় তিন পুলিশ সদস্যকে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার মাত্র দুইদিনে সারাদেশে কমপক্ষে সাতচল্লিশজন মানুষ সহিংসতার বলি হয়। নিঃসন্দেহে পুলিশের গুলিতে মারা যাওয়া একটা অংশ জামাত-শিবির কর্মী। কিন্তু একটা বড় অংশই সাধারণ মানুষ; যারা জামাত-শিবির ও পুলিশের সম্মুখযুদ্ধের মাঝে পড়ে কোনকিছু বুঝে ওঠার আগেই মারা গিয়েছে। যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধ, দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ ছিল খুব সাধারণ ঘটনা।
খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে পরদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করলেন। নেত্রীর ঘোষণার পর জাতীয়তাবাদী শক্তি প্রকাশ্যেই জামাত-শিবিরের সহিংসতার সহযাত্রী হচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবিদার সাদেক হোসেন খোকা ঘোষণা দিলেন শাহবাগ আন্দোলন প্রতিহত করার। জামাতের সাথে মিলিয়ে বিএনপি আগামি মঙ্গলবার সারা দেশে হরতাল ডেকেছে।
আজ তিন মার্চ জামাত-শিবিরের আটচল্লিশ ঘণ্টার হরতালের প্রথমদিনে এ পর্যন্ত বাইশজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। শুধু বগুড়াতেই এগারোজন নিহত, শাজাহানপুর থানায় জামাত-শিবিরের চালানো হামলায় দুজন নারীও সহিংসতার নির্মমতার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন। কিশোর ও শিশু নিহত হওয়ার খবরও শোনা গেছে। ট্রেনের বগিতে আগুন দেয়া, স্টেশনে আগুন দেয়া, রাস্তা অবরোধ করা, যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ, খাবার বোঝাই ট্রাকে হামলা, স্থল বন্দরে আক্রমন ইত্যাদি চলছেই।
চার ফেব্রুয়ারি নিহত হওয়া ব্যাংক কর্মকর্তা একটি দুগ্ধপোষ্য শিশুর বাবা। যে শিশু কোনদিনই তার বাবাকে বাবা বলে ডাকতে পারবে না। জাফর মুন্সিও পরিবার-পরিজন রেখে গেছেন; তার স্ত্রী আর কোনদিনই তার প্রিয় খাবারটি রাঁধতে পারবেন না। নিহত এক পুলিশ কনস্টেবলের বাড়ি ফেরার কথা ছিল, সন্তানদের বাবার জন্য সেই প্রতীক্ষা কোনদিনই ফুরাবে না। এ যাবতকালে নিহত সকল সাধারণ মানুষেরই আত্মীয়স্বজন আছেন যাদের ব্যাথা আমরা চাইলেও কোনদিন উপলব্ধি করতে পারব না।
শুধু বলতে পারি- তোমরা আমাদের ক্ষমা কর। আমরা তোমাদের নিকটজনদের জামাত-শিবিরের হিংস্র থাবা থেকে রক্ষা করতে পারিনি। যেমনটা পারিনি একাত্তর সালে ত্রিশ লক্ষ শহীদকে বাঁচাতে। যেমনটা পারিনি একাত্তরে দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম বাঁচাতে। তবে আমরা একাত্তরে ঠিকই সব বিরোধিতা আর ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে স্বাধীনতার টকটকে লাল সূর্যকে এনেছি। এবারও জয় আমাদেরই হবে, আমরা তোমাদের ভুলব না।
জয় বাংলা।
২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:২৫
হাঁড় = ঘাঁড় বলেছেন: প্লাস শোকেস মন্তব্য চাই
ভাল পোস্ট চাই
ছাইদি নিয়া চান্দের বিনুদুন পুস্ট চাই না
আমরা বিনুদুন করতে বসি নাই
বিচার চাই
প্রোপাগান্ডার জবাব চাই
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৩৪
নায়করাজ বলেছেন: আমাদের দেশের মানুষের আচরণ দেখলে খুব হতাশ হই। এখন জামাত-শিবিরের জন্য সবার অশ্রুতে বুক ভেসে যাচ্ছে। মানবতা উথলে উঠছে। আর যারা তাদের সহিংসতা, নারকীয় তাণ্ডব, অরাজকতার শিকার হচ্ছে তারা যেন মানুষই না।
থানা আক্রমণ, পুলিশ ফাড়ি আক্রমণ, রেল লাইন উপড়ে ফেলা, মসজিদ-মন্দিরে হামলা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর জ্বালানো কোন অপরাধই না এই দেশে।
এই দেশের মানুষের বিবেক নাই। যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের ঘাড়ের মধ্যে না পড়ে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের বিবেক জাগে না।