নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লালনের মনের মানুষ

লালনের মনের মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পার্বতীর বাউল হয়ে ওঠা

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৫৮


ষোড়শী এক মেয়ে আলমের টিনের মধ্যে একতারার টুং শব্দের মূর্ছনায় মূর্ছাগত, দিগ্‌বিদিক জ্ঞানশূন্য। শান্তিনিকেতনে আসা যাওয়ার পথে ট্রেনে অপার বিস্ময়ে অন্ধ বাউলের হৃদয়ের গান শুনে এই তাঁর উপলব্ধি। একটা সময় তাঁর বাউল গান শুনতে ভয় লাগত; ভাবত বাউলের গান বুঝি তাঁকে ঘর ছাড়া করবে। ছাড়তে হবে পড়াশোনা। ঠিকানা হবে আশ্রম। আর শেষকালে হয়েছেও তাই। পশ্চিমবঙ্গের ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নেওয়া মৌসুমি পারিয়াল, কাল আর মনের খেয়ালে হয়ে গেলেন পার্বতী বাউল।

বাউল হয়েই যেন তাঁর দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়ানো। টরন্টো সংস্কৃতি সংস্থার ১০ম বার্ষিক পারফর্মিং আর্ট উৎসব ২০১৫-তেও গান গাইতে এসেছিলেন পার্বতী বাউল। সেখানেই গ্রিনরুমে বসে তাঁর সঙ্গে কিছু কথোপকথন।
পশ্চিমবঙ্গের অনেকের মতো তাঁর প্রকৌশলী বাবা আর রামকৃষ্ণের ভক্ত মা পূর্ববঙ্গের এখনকার বাংলাদেশের বাসিন্দা ছিলেন। দেশভাগের পর তারা পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। বাবার রেলওয়েতে চাকরির কারণে নানান জায়গা থাকা হলেও শৈশবের উল্লেখযোগ্য সময় কেটেছে আসাম ও কুচবিহারে। সেই সময়ই তাঁর হাতেখড়ি হয় উচ্চাঙ্গ সংগীত ও কত্থক নৃত্যে। ভিজুয়াল আর্ট শিখবেন বলে এসেছিলেন কলাভবনে গুরুদেবের স্কুলে। অথচ অন্ধ বাউলের মোহাচ্ছনতাই তাঁকে বাউল শিল্পী বানিয়ে ছাড়ে। শান্তি নিকেতনে বাউল শিল্পী ফুলমালি দাসী প্রায় আসতেন গান করতে। নিয়তির খেলায় যা এক সময় ভয় লাগত পার্বতীর, তা-ই গলায় তোলার জন্য শান্তিনিকেতনে আসা ফুলমালি দাসী বাউলের দীক্ষা নেওয়া শুরু করেন। বাউল হয়ে ওঠা যেন আরও বেগবান হয়। তখন একদিন সনাতন দাসের দীক্ষা নেওয়ার জন্য পার্বতী বাকুড়ার সোনামুখী আশ্রমে হাজির হন। সনাতন দাসের বয়স তখন ৮০ বছর। প্রাণান্ত ১৫ দিনের চেষ্টায় তাঁর দীক্ষা পান। তারপর প্রায় সাত বছর সনাতন দাস বাউলের সঙ্গে দেশ-দেশান্তরে, আশ্রমে আশ্রমে গান পরিবেশন করেন গুরু-শিষ্যা। কখনো গুরুর সঙ্গে সুর তুলেছেন, কখনো দিয়েছেন তাল, নেচে গেয়ে মাতিয়েছেন দর্শক-শ্রোতার হৃদয় মন। সনাতন দাস বাউলের অনুমতিক্রমে পার্বতী একা একা কিছুদিন গান করার পর তাঁর দ্বিতীয় গুরু ৯৭ বছর বয়সী শশাঙ্ক গোঁসাইয়ের কাছে দীক্ষা নেন। গুরু শশাঙ্কের শতায়ু জীবনের বাকি টানা তিন বছর পার্বতী তাঁর কাছে বাউলের দর্শন, গান, অন্তর-বাহির দুই হাতে গ্রহণ করেন।
দরবেশ পরম্পরায় দীক্ষায় দীক্ষিত পার্বতী এখন পায়ে অভিনব নূপুর, কোমরের কাছে ডুগডুগি আর তাঁর বিশাল জটা ধরা চুলে নৃত্য ভঙ্গিমায় কখনো অধরার কথা, কখনো কৃষ্ণের কখনো রাধা আবার কখনো নিজেকে জানার, চেনার গল্প বলে যান ঘণ্টার পর ঘণ্টা, রাতের পর রাত।
কিছু গান:


মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৬

পার্থ তালুকদার বলেছেন: সরাসরি পার্বতী বাউলের গান শুনার সৌভাগ্য হয়েছিল।
অসাধারণ তাঁর নৃত্যশৈলী ।

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
পার্বতী বাউলের একটি অসাধারণ গান

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.