নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শত অসাধারণ এর ভিতরে সাধারণ আমি..আর সহস্র সাধারণ এর ভিতরে আমি নগণ্য..সেই নগণ্যতার মাঝেও নিজেকে কিছুটা গণ্য বলে প্রমাণ করতে চাই..প্রমাণ করতে চাই, হারতে গিয়েও জিতে যাবার মতো কোনো দুর্লভ অনুভূতির...

আবির আহমেদ খান

শূন্যতাকে, পূর্ণতার সাথে যোজন বা বিয়োজন করা কি সম্ভব? যেহেতু, পূর্ণতার কোনো সাংখ্যিক রূপ/চিহ্ন নেই!সেহেতু, সম্ভব না!! আমিও পূর্ণতা নামক মোহ পাবার আশায় শূন্যতকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছি!! আবার শূন্যতা নিয়েই হয়তবা বিদায় নিবো একদিন

আবির আহমেদ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ড্রপার (DROPPER)

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫০



এইতো সেদিন এর কথা!
কদিন আগেও না মা নিজ হাত দিয়ে খাইয়ে দিতো!
একটা সময় ছিলো,  যখন মায়ের হাতের আঙুল ছিলো
দৈহিক ভারসাম্য রক্ষার হাতিয়ার!

স্কুলে থাকতে মার হতের নোট করা লেখাগুলো বেশ ভালোই কাজে লেগেছিলো!
তখনকার দিনে ৫ ম শ্রেণিতে বৃত্তি পাওয়াটা মোটেও
সহজ ছিলো না!!
৮ম শ্রেণি, এস.এস.সি তে জিপিএ ৫.০, আর এইচএসসি তে ৫.০ পাওয়া ছেলেটা আজ ভার্সিটি পদার্পণ করতে যাচ্ছে!!


ভার্সিটি তে উঠার ঠিক কিছুদিন পর মা মারা যায়!
মায়ের কবরে মাটি দেবার সময়, কল্পচিত্রে ভেবে নিয়েছিলো মার সাথে শেষ কথোপকথনটা!
সেদিন মায়ের সাথে,  মেয়ে নিয়ে কিছুটা কথা কাটাকাটি
হয়েছিলো!
মা বলেছিলেন, 
দেখ বাবা গরিব এর ঘরে জন্ম নিয়েছিস!! মেয়ের বাবা
অনেক বড়লোক!! আমাদের তারা কখনোই মেনে নেবেন
না! তার চেয়ে ভালো বাবা তুই বরং সরে আয় মেয়েটার কাছ থেকে! বড়লোকেরা অভিনয় করতে জানে!!
তাদের চাওয়া পাওয়টা বেশি! আবার তাদের সব থাকা সত্ত্বেও অভাব ও বেশি!! তর ভিতরেও তারা তাদের চাওয়া পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে অভাব এর প্রতিচ্ছবি আঁকবে!!
তখন কি তুই মানতে পারবি? নাকি তর বিষন্ন মাখা অবয়ব টা আমরা মেনে নিতে পারবো?
যা করিস বাবা একটু ভেবে চিন্তে করিস!!

এ নিয়ে মার সাথে কথাকাটাকাটির ফলপ্রসূত বাড়ি থেকে
আসার পথে মাকে বলে আসা হয়ে উঠেনি!
মা, আমি যাচ্ছি! দোয়া করো!!

আক্ষেপ ছিলো, মাকে একবার দেখার! 
আক্ষেপ ছিলো, মার কাছে একটিবার ক্ষমা চেয়ে নেবার!
আক্ষেপ ছিলো, একটিবার বলার
"মা তোমায় অনেক ভালোবাসি "


একটি মেয়ে মাকে দিনে ১০০ বার ভালোবাসি বল্লেও একটা ছেলে তা করে না!  তাদের ভিতর খানিকটা লজ্জা কাজ করে!! আবার খুব ভদ্র একটা মেয়ে তার ভালোবাসার মানুষটিকে ভালোবাসি ভালোবাসি পুনঃ পুনঃ বলাতেও খানিকটা লজ্জাবোধ করে!!
অপরদিকে যে ছেলেগুলো সত্যিকারের কাউকে ভালোবাসে সে তার ভালোবাসার মানুষটিকে দিনে হাজারবার ভালোবাসি বলতে একটুও দ্বিধাবোধ করেনা!


যাই হোক......


আজ মা মারা গিয়েছে ৫ দিন হলো!!
প্রেমিকা আজ ফোন দিয়ে তার বিয়ের কথা বললো!
তাকে ছেলেপক্ষ নাকি দেখতে এসেছিলো!!

প্রেমিকার সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত হলো,
আগামীকাল তার বাবা-মার সাথে কথা বলতে যেতে হবে!
ঠিক সকাল ৮ টা!  ভালো কোনো কাপড় নেই!
যা আছে তাই পড়লাম!  জুতো পড়তে গিয়ে দেখি,
খুব বেশিক্ষণ নাও টিকতে পারে!  জুতোর তলি যেকোনো
সময় আলাদা হয়ে যেতে পারে!
এগুলো পরেই তাদের বাসায় প্রবেশ!

প্রেমিকার বাবা-মাও বসেছেন!! খানিকটা আড় চোখে গেটাপ টা দেখে নিলেন!  তাদের মুখ দেখে মনে হচ্ছিল
তারা ভিতর ভিতর খুব ক্ষোভ প্রকাশ করছেন!
কি করো জিজ্ঞেস করতেই বলে দিলাম,আমি ভার্সিটি তে পড়ি!  ২য় বর্ষ!
বাবা কি করেন?
জ্বি, আমার বাবা একজন সাধারণ কর্মচারী!!
ও আচ্ছা!  তুমি ওর কি হও (প্রেমিকার)?
জ্বি, আসলে আমরা.....
অপরপাশ থেকে (প্রেমিকা)....
বাবা ও আমার জাস্ট ফ্রেন্ড...
আমার বিয়েতে ওকে ইনভাইট করেছি...
আমি বেশ হেসে নিলাম মনে মনে!

চলে যাবার পথে প্রেমিকা বলেছিলো,
তুমি এগুলো পরে এসেছো!
আসলে তোমার সাথে আমার কোনোকিছুই
মিলে না! তার চেয়ে ভালো তোমার পথে তুমি হাঁটো!
সেদিন চুপচাপ হেঁটে দোকান থেকে ২টাকা দিয়ে একটা




সিগারেট ধরিয়ে চলে এলাম বাসায়! এসে মার ছবির সাথে কিছুটা কথা বলে নিলাম! 
"তুমি ঠিক ই বলেছিলে মা!  তোমাকে দরকার মা আজ!
আমি যে আজ ভারসাম্যহীন "

রাতে ফেবুতে ঢুকেই দেখি,
যার সাথে প্রেমিকার বিয়ে হবে তার গাড়ি আছে!
বুঝলাম, হোম পেজ এর প্রথম খবর টাই তাদের!
সেখানে তাদের গাড়ির সাথে তাদের ভবিষ্যৎ কে
সাক্ষী রেখে সকলের নিকট দোয়া চেয়েছিলো তারা!
স্ক্রিনশট দিয়ে রেখেদিয়েছিলাম!!!



২বর্ষ এর ১ম সেমিস্টারে ড্রপ এর বন্যায় প্লাবিত হয়েছিলাম!! ছোট ভাইদের সাথে পরীক্ষা দিয়ে পরবর্তীতে
ভালো রেজাল্ট নিয়েই কোর্স কমপ্লিট করেছিলাম!
ছোট, ভাইরা তাকিয়ে ছিলো পরীক্ষা দেবার সময়!!  তারা আমার ভেতর কি জেনো খুঁজছিলো!!
কখনো চোখ এর দিকে তাকিয়ে ছিলো!!
হয়তবা তাদের মনে অনেক প্রশ্ন ছিলো!
ভাইয়া এতো সেড কেনো?
ভাইয়া কেনো হাসেনা?
হয়তবা তাদের এটাও মনে হয়েছিলো,
ভাইয়া মনে হয় আমাদের সাথে পরীক্ষা দিবে বলে
মন খারাপ!!! মনে মনে হাসছিলাম!!
আর ভাবছিলাম,  তোদের মা আছে! তার মানে ভারসাম্য ও আছে!  আমার মা নেই!!  তাই আমি ভারসাম্যহীণ!

আজ আমার ভার্সিটি লাইফ এর শেষ দিন!
সিএসই ডিপার্টমেন্ট থেকে সিজিপিএ ৩.৭৫ নিয়ে বের হয়েছি!  হয়তবা আরো ভালো হতে পারতো!!
কি আরর করার!! 

প্রায় ৬ মাস একটা সফটওয়্যার কম্পানিতে কাজ করেছিলাম!! আজ সোমবার!!
গুগল থেকে এপয়েন্টমেন্ট লেটার আসছে!
এর কিছুদিন আগে কম্পানিতে আমার বেতন বাড়াবে বলেছিলো!  তারপরো বলেছিলো থেকে জেতে কম্পানিতে!! বাট, আর থাকা হলোনা!

আজ গুগল থেকে আমাকে একটা গাড়ি গিফট করা হয়েছে!  গাড়িটার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি পেরুবে!!!
একটা সেল্ফি তুলেছিলাম!  এইটাই আমার জীবনের প্রথম সেল্ফি!

আর ফেইসবুক এ পোস্ট এর ক্যাপশনে লিখেছিলাম
                 "ইয়েস আই কেন "



সেখানে বিবাহিত পাক্তন প্রেমিকা কমেন্ট করেছিলো,
               "বাহ, পাশে একটা কিস ইমু ছিলো "
আজ বেশ হাসি পাচ্ছে!  হাসিটা সেদিনকার অপমানের
কূটক্তিমাখা প্রত্তোত্তর!!! 

         
প্রতিটা ড্রপারের পিছনে একটা গল্প থাকে!!

যেটা বলা হয়না!  শেয়ার করা হয়না!
তারা বলতে চায়!!  সাহস হয়না!!
তাদের চোখ কথা বলে!!!
আর চোখের কথা ক'জন বুঝে!!


দিন শেষে সাফল্য, তাদের অভিজ্ঞতার কাছে পরাজিত!


( কাল্পনিক)



মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৪৭

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আপনার লেখার আইডিয়াগুলো চমৎকার। খুব ভাল লেগেছে পড়ে। শুভ কামনা আপনার জন্য।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৪৯

আবির আহমেদ খান বলেছেন: ধন্যবাদ!
দোয়া করবেন

২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:০৪

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: জীবনে যারা আবেগকে পশ্রয় দেয় তারা ভুল করে।
মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় বর্তমানকে আশ্রয় করে।
অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের ভীত বর্তমানেই মজবুত করতে হয়।
আপনার গল্পের নায়িকা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তটাই নিয়েছেন। তাকে বাহাবা না দিয়ে পারা যায় না।
তিনি আর কি বা করতে পারতেন ? ভার্সিটি পড়ুয়া একদা মদ্দার যেখানে একজোড়া জুতা কিনার ক্ষেমতা নাই সে বিয়ে করে সংসার জীবনে তার ও নায়িকার জীবনে অশান্তি ডেকে আনা ছাড়া আর কিছুই করতে পারতো না। মাঝখান দিয়ে নায়িকা না পেতো সংসার জীবনে সুখ আর না পেতো বাবা মায়ের কাছে ফিরে যেতে।
নাটক, সিনেমা আর তথাকথিত লেখকদের লেখনী ও কার্টুন ছবিতে অনেক কিছুই সম্ভব যা বাস্তরের সাথে যায় না।
জীবনকে যে কার্টুন মনে করে সেই ধোকাবাজীর শিকার হয়। ধন্যবাদ মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য ।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:১৭

আবির আহমেদ খান বলেছেন: ভালো! ভালো!মানলাম আপনার কথা!!
তথাকত্থিত কার্টুনচিত্র/ লেখনী আপনার জীবনের সাথে নাও মিলতে পারে!
কিংবা, আপনি অভিজ্ঞতার চূড়ায় যদি উঠেও থাকেন তাহলে সেটা আপনার থেকে আপনার উচ্চতায়!
সেটায় সবার থেকে নিজের উচ্চতায় না ভাবাটাই ভালো!
উচ্চতায় খাঁদ পড়বে!! আবার নিরাপদ জায়গা ও থাকবে!
কেউ খাঁদে পড়বে, কেউবা বেঁচে যাবে!

তাহলে মনে করুন,
ধর্ষিতা কি জানত যে ৫ মিনিট বর্তমান আর ভবিষ্যৎ এর তফাতে তাকে ধর্ষিতার খাতায় নাম লেখাতে হবে?!
আপনার দিক থেকে যেটা বাহবা দেয়ার মতো! অথবা কার্টুন/ব্যঙ্গচিত্র
অন্য কারো কাছে সেটা তার জীবনের অভিজ্ঞতা!
আপনার কাছে যেটা অভিজ্ঞতা অন্য কারো কাছে সেটাই ভেবে দেখার বিষয় ই না!
পৃথিবীতে যুক্তিখণ্ডন এর অভব নেই!
ওই দিকে না জাই!
আপনকেও মূল্যবন সময় নষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ!

৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: কাঁচা হাতের লেখা নয়।

লিখতে থাকুন।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:১০

আবির আহমেদ খান বলেছেন: দোয়া করবেন! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.