নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা ভাবি, যা দেখি, যা বিশ্বাস করি

আমি খুব সাধারন একটা মানুষ। সাধারন হয়েই থাকতে চাই

শিশু বিড়াল

স্বাধীন দেশের স্বাধীন এক নাগরিক। পেশায় ডাক্তার হলেও নেশা ছবি আঁকা। সবই সখের বশে। ভালবাসি দেশ ও দেশ এর মানুষ।

শিশু বিড়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

-------ইরিতা------

২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:২০

৩০১৪ সাল

সকাল থেকেই ইরিতা অপেক্ষা করে আছে কখন বাবা বাসায় ফিরবে। আজ ওর জন্মদিন। ৮ বছর শেষ করে ৯ বছরে পা দিল। বড় বড় চোখের আর ফোলা ফোলা গালের মিষ্টি একটা মেয়ে। প্রতি বছর এই দিনে ইরিতার বাবা ওকে ইরিতার মায়ের ফেসবুক পাসওয়ার্ড একদিনের জন্য ব্যাবহার করতে দেয়। ইরিতা সারাদিন বসে বসে মায়ের ছবি দেখে, লেখা পড়ে। সব এখনো দেখা হয়নি। দিন শেষে বাবা আবার পাসওয়ার্ড বদলে লগ আউট করে ফেলে। আবারও এক বছর অপেক্ষা।

ইরিতার মায়ের নাম ইরা। ইরা ৩৬ বছর বয়সে হঠাৎ একদিন ঘর ছেড়ে চলে যায়। একটু এলোমেলো ছিল মেয়েটা। একমাত্র সন্তান ইরিতাও ওকে বেঁধে রাখতে পারেনি। ইরিতার বয়স তখন ২ কি ৩ বছর। কয়েকমাস পরে জানা যায় ইরা মারা গেছে। কেন কীভাবে কেউ বলতে পারেনা। আর এর পরপরই ইরার বন্ধু তুরান ইরিতার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়। বাবার স্নেহ দিয়ে বড় করতে থাকে ইরিতাকে।

তুরান বাসায় এসে ঢুকতেই ইরিতা বাবা!! বাবা!! বলে ঝাপিয়ে পড়ল।

-'কিরে আমার হাতির বাচ্চা কি করিস তুই??' তুরান ইরিতাকে আদর করে হাতির বাচ্চা বলে।

-'পাসওয়ার্ড দাও বাবা পাসওয়ার্ড!!!'

-'আরে দিচ্ছি দিচ্ছি। তুই তো ছোট থেকে বড় হাতি হয়ে গেলি রে!!'

ইরিতা মায়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে বসে পরে। কত কিছু যে করত মেয়েটা। ও একটু একটু করে প্রতিটা লাইন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ে। পড়তে থাকে। মায়ের প্রতিটা ছবির প্রতিটা কমেন্ট, প্রতিটা লেখার প্রতিটা শব্দ সবটুকু কৌতূহল মিটিয়ে পড়ে। পড়তে পড়তে রাত হয়ে যায়।

তুরান মেয়ের ঘরে এসে দেখে মেয়ে তার মায়ের ফেসবুকের উপর উপুড় হয়ে আছে এখনো। একবার ভাবে আজকে এই পর্যন্তই রাখবে কিনা, পরে ভাবে থাক, দেখছে দেখুক। ও জানে আর কিছুদূর গেলেই ইরার ফেসবুকে ইরিতা একটা বিশেষ পোস্ট পাবে যেটা এমনঃ

"মা ইরিতা, আমি তোমাকে অনেক বেশি ভালবাসি, কিন্তু তার চেয়েও বেশি তোমার ভালবাসা আমার প্রতি কতটুকু তা অনুভব করতে চেয়েছি। তাই তোমাকে আজকে ফেলে চলে যাচ্ছি। আমি আবার ফিরে আসব। আমার এটা দেখা ও বোঝা খুব জরুরী যে আমার অনুপস্থিতিতে তুমি আমাকে কতটা মনে রাখ, মনে রাখতে চাও, ভালবাস, ভালবাসতে চাও। তাই আমি সবসময় তোমার সাথেই থাকব। সময় হলেই তুমি বুঝবে।

পুনশ্চঃ তোমার বাবা হই আর মা হই তুমি আমার ভালবাসার জন্য যতটা আকুল আমি তোমার ভালবাসার জন্য তার চেয়েও অনেক বেশি। তাই তোমাকে কষ্ট দিলাম হয়ত মা তবে একদিন তুমি বুঝবে আমি তোমাকে অনেক বেশি ভালবাসি বলেই এমন করেছিলাম।

-ইরা"

তুরান অপেক্ষা করে আছে। ইরা যা দেখতে চেয়েছিল, তা পেরেছে। তার মেয়ে ইরিতা তাকে যেভাবে প্রতি মুহূর্ত মনে করে তা সে ইরিতার বাবা হয়ে আবার ফিরে না আসলে কোনদিন জানতে পারত না।
অপেক্ষা করছে, ইরা।
---------------------------------------------------------


(আমার গল্প লেখার কোনই অভিজ্ঞতা নেই। এমনি খেয়াল হল তাই লিখলাম। কাজেই উল্টাপাল্টা মনে হলে কিছু মনে করবেন না।)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:১৮

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
শেষটায় অদ্ভূত ব্যতিক্রমি পরিভ্রমণ ৷


সময় যখনই হোক কিছু কিছু আবেগ অপরিবর্তিত থাকবে মানব মননে ৷

আরো লিখতে থাকুন ৷

২| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫০

কলমের কালি শেষ বলেছেন: হুম । মনখারাপ করা গল্প । ভাল লাগলো । শুভকামনা । :)

৩| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:১৪

লাবনী আক্তার বলেছেন: চমৎকার হয়েছে। গল্প কেন লিখনা ?

আরো গল্প পড়তে চাই তোমার কাছ থেকে।


৪| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:২০

জেরিফ বলেছেন: লাবনী আক্তার বলেছেন: চমৎকার হয়েছে। গল্প কেন লিখনা ?


অপেক্ষায় রইলাম :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.