নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের মন, ভাবনা, অনুভূতি ও ভালবাসা বৈচিত্র্যময় বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দর!https://www.facebook.com/akterbanu.alpona

আলপনা তালুকদার

ড.আকতার বানু আলপনা,সহযোগী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী

আলপনা তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেকোন অপরাধের প্রতিবাদ ও প্রতিকার হওয়া জরুরী কেন?

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:১৯




যেকোন অপরাধের প্রতিবাদ ও প্রতিকার হওয়া জরুরী কেন?

কোন ছোট বা বড় যেকোন অপরাধ সংঘটিত হবার পর বেশীরভাগ ক্ষেত্রে আমরা বিষয়টি দ্রুত ও সহজ উপায়ে নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করি। সামাজিকভাবে হেয় হবার সম্ভাবনা থাকলে আমরা অপরাধটি গোপন করার চেষ্টা করি। কখনও কখনও আর্থিক সঙ্গতি না থাকা, পুলিশের হয়রানির ভয়, বিচারিক দীর্ঘসূত্রিতা, অপরাধী শক্তিশালী হলে তার নির্যাতনের ভয়, প্রিয়জনদের সমর্থন না পাওয়া,.... ইত্যাদি কারণে আমরা অপরাধের প্রতিবাদ বা প্রতিকার করিনা, করতে পারিনা। এতে অপরাধী যেমন প্রশ্রয় পেয়ে আরো অপরাধ করে, তেমনি নির্যাতিত ব্যাক্তি ন্যায় বিচার না পেয়ে বার বার নির্যাতিত হয়। তাই আসুন জানি, মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কোন অপরাধের প্রতিবাদ ও প্রতিকার হওয়া কেন জরুরী।


* অন্যায়ের প্রতিকার না পেলে মানুষের মনে যে দীর্ঘস্থায়ী মানসিক ক্ষতের সৃষ্টি হয়, তা সারাজীবন তাকে কষ্ট দেয় যার যণ্ত্রণা শুধু সেইই জানে।

* অন্যায়ের প্রতিকার না পেলে বা প্রতিবাদ করতে না পারলে তা মানুষের
মনের উপরে চাপ ফেলে, মানুষ নিজেকে অসহায়, নিগৃহীত ও অপমানিত বোধ করে, ঐ কষ্টকর বা অসম্মানজনক অবস্থার কথা ভুলতে পারেনা। ফলে স্বাভাবিক ও আনন্দময় জীবন ব্যাহত হয়।

* ভিকটিম নিকটজনদেরকে তার প্রতি হওয়া অন্যায়ের প্রতিকার করতে না পারার অপরাধে কখনো ক্ষমা করতে পারেনা। কোনদিন শ্রদ্ধা করবেনা, অক্ষম, অপদার্থ ভাববে।

* আক্রান্ত ব্যক্তির মানসিক শক্তি, ক্ষমতা বা সৃজনশীলতা, কাজ করার স্পৃহা, জীবনে কিছু করার বা হওয়ার স্বপ্ন, স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার আনন্দ.. এগুলো চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়। কেউ কেউ অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে। কেউ না মরে বেঁচে থাকে।

* অপরাধীকে বুক উঁচিয়ে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াতে দেখে ভিকটিমের কষ্ট আরো বাড়ে।

* অপরাধী শাস্তি পায়না বলে আরো অপরাধ করার স্পর্ধা ও সুযোগ পেয়ে যায় এবং বীরদর্পে অপরাধ করে। ফলে অন্য মানুষের মনেও ভয় সৃষ্টি হয়। ফলে তারাও অপরাধের প্রতিবাদ করেনা। এভাবে অপরাধীদের মনোবল বাড়ে, শাস্তির ভয় কমে যায়, আইনকে তোয়াক্কা করেনা।

* শাস্তি না পাওয়া অপরাধীদের দেখে অন্যরাও অপরাধ করতে উৎসাহিত বোধ করে। আরো মানুষ অপরাধ করে। এভাবে সমাজ, দেশ কলুষিত হয়।

* ভিকটিম ন্যায়বিচার না পাওয়ার কারণে আত্মগ্লানিতে ভোগে, নিজেকেই অসহায় ও অপরাধী ভাবে, আত্মহত্যা করে, কাউকে বিশ্বাস করতে পারেনা, মানুষের প্রতি, আইনের প্রতি আস্থা হারায়, অনেকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়।

* ভিকটিমের মনের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কষ্ট, ভয়, লজ্জা, আতংক, ঘৃণা,... ইত্যাদি সৃষ্টি হয় যা তাকে প্রতিনিয়ত মানসিক যণ্ত্রণা দেয় যা থেকে বের হবার কোন উপায় সে খুঁজে পায়না।

* মানুষ স্বভাবগতভাবে ন্যায়পরায়ণ। তাই তার প্রতি ঘটে যাওয়া অপরাধ দগদগে ঘায়ের মত চিরস্থায়ীভাবে থেকে যায় যা কোনদিনও শুকায়না, ভিকটিম কখনোই তা ভুলতে পারেনা, মেনে নিতে পারেনা। অবচেতন মনেও প্রতিনিয়ত এই কষ্টের অভিজ্ঞতা অবদমিত অবস্থায় থেকে মনের উপর চাপ প্রয়োগ করে।

* অপরাধী শাস্তি পেলে ভিকটিম সান্তনা পায়, কষ্ট চলে যায়, নতুন করে বাঁচার উদ্যম সৃষ্টি হয়, মানুষকে বিশ্বাস করতে পারে, মানসিক ভারসাম্য ফিরে আসে।

যেকোন মানুষের ন্যায়বিচার পাবার অধিকার তার বৈধ ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার। তাই আমাদের উচিত, সাহস করে প্রতিকূলতা আছে জেনেও ছোট বা বড় যেকোন অপরাধের প্রতিবাদ ও প্রতিকার করা। কেননা ছোট ছোট অপরাধ মেনে নিতে নিতেই একসময় বড় অপরাধ সংঘটিত হয়।

আল্লাহও সে ব্যাক্তিকে সাহায্য করেন না যে নিজেকে সাহায্য করেনা। তাই নিজেকে, আপনজনকে, আশপাশের মানুষকে ন্যায়বিচার পেতে সাহায্য করুন।

খুব খুব ভাল থাকবেন বন্ধুরা।


মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:২৫

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আপনার লিখাগুলো জন সচেতনামূলক। পাঠক মাত্রই উপকৃত হবে। ভাল থাকবেন সবসময়।

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:০৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:১৮

সিনবাদ জাহাজি বলেছেন: লিখাতে প্লাস।
একেবারে সত্য কথাগুলোই উঠে এসেছে আপনার লিখায়

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৩২

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল থকবেন।

৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:১৫

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আপনার লেখা প্রথম পাতায় কেন আসছে না, এই বিষয়ে আমরা অনুসন্ধান করে দেখছি। আপনি অনুগ্রহ করে আপনার ইমেইল চেক করুন। আপনাকে একটি মেইল পাঠানো হয়েছে।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৫

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:০৩

অর্ধ চন্দ্র বলেছেন: দারুন লেখা, লিখতে থাকুন অবিরত, ১ম পাতা নিয়ে ভাবনা বাদ দিন,

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:০৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:২৮

অর্ধ চন্দ্র বলেছেন: ফেবুতে ঢুঁ মেরে আসলাম, বেশ লিখেন তো! Dewun Green

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: তাই নাকি? সত্যি দারুণ লিখি??? আরে না। পরিচিত মানুষরা ফেবুতে এমনি এমনি লাইক দেয়, সুন্দর সুন্দর কমেন্ট করে।

ফেবুতে আমার দেয়াল ঘুরে আসার জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

৬| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৪

অর্ধ চন্দ্র বলেছেন: হ্যা সত্যিই বেশ লেখা, আর সবাই নয়, ব্যতিক্রম ও আছে, ধন্যবাদ, সব সময় ভালো থাকবেন।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জ্বি, আপনিও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.