নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের মন, ভাবনা, অনুভূতি ও ভালবাসা বৈচিত্র্যময় বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দর!https://www.facebook.com/akterbanu.alpona

আলপনা তালুকদার

ড.আকতার বানু আলপনা,সহযোগী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী

আলপনা তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাধবী

৩০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:২১



তিন

"হ্যালো! মাধবী কথ বল। বল কি হয়েছে?"
মাধবী কি যেন একটা বলার চেষ্টা করল। আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না। ওর গলাটা খুবই ক্ষীণ। যেন গলা দিয়ে স্বর বের হচ্ছেনা। এবার আমি নিশ্চিত - কিছু একটা হয়েছে। কিন্তু সেটা কি? আমি আবার বললাম, "মাধবী, বলো সোনা। আমাকে বল। কি হয়েছে?"

'মাধবী' নামটা ওর বাবা-মার দেয়া নয়। ওকে ভালবাসার পর আমি দিয়েছি। ওকে নিয়ে লেখা আমার গল্প-কবিতায় আমি এই নামটা ব্যবহার করি। যদিও ওকে আমি ডাকতাম অন্য আরেকটা নামে।

মাধবীর সাথে একা প্রথম যেদিন আমার দেখা হয়, সে দিনটার কথা যতবার ভাবি, কষ্টে বুকটা ফেটে যায়।অথচ এই দিনটিই হবার কথা ছিল আমাদের জীবনের সবচেয়ে কাংখিত ও আনন্দের।

আমি দিনটাকে কল্পনা করতাম এভাবে: আমাদের পরিকল্পনা মত দেশে গিয়ে আমি উঠব আমার বন্ধু সুমনের বাসায়।গতবারে গিয়েও তাই করেছি। তখন মাধবীর সাথে যে চারদিন আমার দেখা হয়েছে, ও সাথে ছিল। মাধবী ওর খুব ভাল বন্ধু। মাধবীর ফোন নাম্বার, খবর - সব আমি ওর কাছ থেকেই পাই। ওরা একি শহরে থাকে। মাধবী ভার্সিটি যাবার নাম করে সুমনের বাসায় আসবে।আমরা দু'জন দু'জনকে দেখে আনন্দে আত্মহারা হব। তারপর একসময় আমরা কোন একটা রুমে একা হব। সুমন আমাদের একান্তে কথা বলার সুযোগ দিয়ে চলে যাবে। আমি আমার 'জীবনের 'শ্রেষ্ঠ অর্জন' মাধবীকে বুকে টেনে নেব।ও প্রথম প্রথম খুব লজ্জা পাবে। ভারী লাজুক আমার মাধবী। হোক। আমি একটু জোর করে হলেও ওর ঠোঁটে চুমু খাব। এরপর আর ভাবতে পারিনা। প্রতিবার আমার কল্পনা এ পর্যন্ত এসে থেমে যায়।

আমি ওর জন্য হীরার আংটি কিনেছি। বলতে দ্বিধা নেই, আমার সাধ্যের অতিরিক্ত দাম দিয়েই কিনেছি। আরো কিছু জিনিসপত্রও কিনেছি। ঠিক করে রেখেছি যখন ওর হাত ধরব, যখন আমাদের ভাললাগার অনুভূতিগুলো ছড়িয়ে যাবে দু'জনের শরীরে, তখন কিছুতেই ওর হাত ছাড়বনা। 'হৈমন্তী' গল্পের অপুর মত আমারো মনে হবে- "পাইলাম! আমি ইহাকে পাইলাম!" ওযে আমার! একান্ত আমার!! ওর হাতের সরু আঙুলগুলো নিয়ে আমি কিছুক্ষণ খেলা করব। তারপর পকেট থেকে আংটিটা বের করে ওর হাতে পরিয়ে দিয়ে বলব, "আজ থেকে তুমি আমার বাগদত্তা। আর কেউ তোমাকে ছুঁতেও পারবেনা"। তখন ওর অনুভূতিগুলো কেমন হয়, তা দেখার জন্য আমি উন্মুখ হয়ে আছি।

আমি মাধবীকে প্রশ্ন করেছিলাম, "কেন আমার প্রেমে পড়লে? আমাকে তুমি দেখেছ মোটে চারদিনে ৪/৫ ঘণ্টা। তারপর আমি চলে এসেছি। ঐটুকু সময়ে এমন কি দেখে আমাকে তোমার এত ভাল লাগলো?"

আমিও কবিতা পাগল। এই একটি জায়গায় আমাদের মিল সবচেয়ে বেশী। আমি লিখি কম। কিন্তু অন্যের কবিতা পড়ি, অন্যদের আবৃত্তি করে শোনাই। মাধবীর শহর ছেড়ে যেদিন চলে আসি, তার আগের দিন বিকেলে নদীর পাড়ে যখন আমরা ক'জন বন্ধু মিলে বেড়াতে যাই, মাধবীও আমাদের সাথে ছিল। রিজু, সুমন, বন্যা, মাসুম আর আমরা। নৌকায় চড়ে নদীতে বেড়ানোর সময় আমি কবিতা আবৃত্তি করেছিলাম। আঠারো বছর আগের কথা বলছি। কোন কবিতা- ঠিক মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে, সবাই বলেছিল - "আরেকটা"। আমি মাধবীর অনুভূতি আলাদা করে খেয়াল করিনি। হয়ত তারও ভাল লেগেছিল বলেই আমাকে ভালবাসা। কিন্তু ও বলেছিল অন্যকথা। বলেছিল, "প্রথম তোমার যে জিনিসটা আমার ভাল লেগেছিল তা ছিল তোমার কণঠস্বর। আর ক্লিনিকে ওটি থেকে ট্রলিতে করে অজ্ঞান অবস্থায় যখন তোমাকে ডাক্তার আর নার্সরা নিয়ে আসছিল, তখন তোমার নাক দিয়ে গলগল করে তাজা রক্ত পড়ছিল। আমি তোমার ঐ ব্যথাতুর মুখটার দিকে তাকিয়ে তোমার প্রেমে পড়ে গেলাম।"

প্রহর শেষের আলোয় রাঙা
সেদিন চৈত্র মাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম
আমার সর্বনাশ।

তাই কি? না। মোটেই সর্বনাশ না। তুমি ছিলে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। এত ভালবাসা, এত আনন্দ তুমি ছাড়া আর কেউ আমাকে দেয়নি। একই কথা আমিও বলি মাধবীকে। এত সুখ, এত ভালবাসা গোটা পৃথিবীতে কে দেবে আমায়?


প্রথমবার ক্যান্টিনে দেখা হবার পর মাধবীর সাথে আমার দ্বিতীয় বার দেখা হল আমার অপারেশনের পরের দিন। আমার নাক ফুলে গেছে, খুব ব্যথা, ঠিকমত কথা বলতে পারিনা। রাতে ব্যথায় ভাল ঘুমও হয়নি। বিকেলে পিঠের নীচে বালিশ দিয়ে বিছানায় বসে আছি। সকালে ডাক্তার দেখে গেছে। কাল রিলিজ দেবে। বন্যা আর সুমন পাশের বেডে বসে আছে। ওদের দেখে মনে হয়, দু'জনেই ঘোরের মধ্যে আছে। ওদের দু'জনের চোখে-মুখে মুগ্ধতা। দুপুরে যখন আমি চোখ বুজে ছিলাম, আড়চোখে দেখেছি, সুমন ওর হাত ধরতেই লজ্জা পেয়ে সরে গেছে বন্যা। আমি দেখি, আবার দেখিনা। কি যে সুন্দর দৃশ্য!!!

ওদের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। বন্যার পরিবার মেনেও নিয়েছে। বন্যার মা এসেছিলেন আমাকে দেখতে। সবই ভাল, কিন্তু বন্যা দেখতে মোটেই ভালনা। আমি কথা প্রসঙ্গে মাধবীকে বলেছিলাম, "সুমনের পাশে ওকে মানায়না। আমি সুমনকে বলেছি, বিয়ের আগে ভাল করে ভাবতে, যেহেতু চাচা-চাচীও রাজীনা।" সুমন আর আমার বাড়ী একই জায়গায়। আমরা ছোটবেলার বন্ধু। ওর পরিবারের সবাই আমার আপনজনের মত। চাচা- চাচী চান সুমন ডাক্তার মেয়ে বিয়ে করুক, যেহেতু সে নিজেও ডাক্তার। তাছাড়া বন্যাকে দেখে ওনাদের পছন্দও হয়নি।

আমার কথা শুনে মাধবী ভয়ানক রেগে গেল। রাগ করে আর কথাই বললনা। পরের সপ্তাহে সে লিখেছিল : ধরা যাক বন্যার এক কোটি দোষ আছে যার জন্য ওকে বিয়ে করা যায়না। কিন্তু ওর একটাই প্লাস পয়েন্ট - সুমন তাকে চায়। বন্যার এই একটিমাত্র প্লাস পয়েন্ট ওর এক কোটি দোষকে ম্লান করে দেবার জন্য যথেষ্ট। আচ্ছা, তোমার কোন বন্ধু যদি তোমাকে বলে, মাধবী বিশ্রী মোটা। ওকে বিয়ে করিসনা। তাহলে তুমি কি করবে? কি করবে??

আমি অসম্ভব লজ্জা পেলাম। তাইতো! আমি সুমনকে এভাবে বলতে পারিনা। যার নয়নে যারে লাগে ভাল। তাছাড়া ভালবাসা বিষয়টা স্বর্গীয়। কেউ চাইলেই কাউকে ভালবাসতে বা ভুলে যেতে পারেনা। যেমন মাধবীকে এখন আমি নিজের জীবনের চেয়েও বেশী ভালবাসি। অথচ ওকে আমি দেখেছি খুবই অল্প সময়। মাধবীর চেয়ে কত সুন্দরী মেয়ে আমার পরিচিত ছিল। এখানে পড়তে আসার পরেও আমার চারপাশে কত সুন্দরী মেয়ে দেখি রোজ। কাউকেই আমার তেমন মনে ধরেনা। এ জীবনে আমি আর কাউকে কোনদিন ভালবাসতে পারবনা। মাধবী আমার বুকের সবটুকু ভালবাসা নিংড়ে নিয়েছে। আমি শুধু বুকের খাঁচাটা নিয়ে ঘুরে বেড়াই।

এদেশে সংগী নির্বাচনের বিষয়টিও আমাদের দেশের চেয়ে আলাদা। এদেশে ছেলে-মেয়ে বড় হলে তাদের বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড না থাকলে বাবা-মা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান এই ভেবে যে, নিশ্চয় তাদের সন্তানের কোন সমস্যা আছে। আমাদের দেশে ঘটে উল্টা। অথচ মানুষ প্রেমে পড়বে- এটাই আদি-অনন্তকালের নিয়ম। আমরা ভাবি, তা না ঘটুক। যদিও প্রকৃতি চলে তার স্বাভাবিক নিয়মে। আমাদের ছেলেমেয়েরা প্রেমেও পড়ে, পালিয়ে বিয়েও করে। যদিও সব বাবা-মা মনে করেন তাঁদের সন্তান প্রেমে পড়বে তাঁদের অনুমতিক্রমে। আর তাদের সংগী নির্বাচন করে দেয়া বাবা-মার স্বতঃসিদ্ধ অধিকার।

আমার বন্ধু পল এ্যারেন্জড ম্যারেজের কথা শুনে বলেছিল, "অসম্ভব! এটা হতে পারেনা। তুমি মিথ্যে বলছ। চিনিনা-জানিনা - তাকে বাবা-মার কথায় বিয়ে করে ফেলব? বল কি? এতো পাগলেও করবেনা।স্ট্রেন্জ!!"

পল গত সপ্তাহে এলিজার সাথে ব্রেকআপ করেছে। ওরা গত দু'বছর লিভ টুগেদার করছিল। আমি কারণ জানতে চাইলে বলল, "এলিজা খুবই ভাল মেয়ে। কিন্তু আমি ওকে আর ভালবাসিনা। ভালবাসা না থাকলে একসাথে থাকার কোন মানে হয়না। এলিজাও এটা জানে। তাছাড়া আমি আরেকটি মেয়েকে ইদানিং পছন্দ করতে শুরু করেছি। তাই ওর সাথে ডেট করার আগে এলিজার সাথে সম্পর্ক চুকিয়ে দেয়া জরুরী। কারণ আমি ওকে ভাল না বাসলেও ওকে ঠকাতে পারিনা।"

আমি খুব কাছ থেকে এদের এ বিষয়টা দেখেছি। ওরা যখন বুঝতে পারে দু'জনের মধ্যে আর ভালবাসা নেই, তখন ওরা উভয়ের সম্মতিতে ডিভোর্স নেয় বা ব্রেকআপ করে। আমাদের মত দিনের পর দিন ভালবাসার, ভালথাকার অভিনয় করেনা। ওরা সৎ। একটি সম্পর্কে থাকাকালীন সহজে অন্য আরেকটি সম্পর্কে জড়ায়না। আমরা পরকীয়া করি, এমন কি একই সাথে একাধিক প্রেম ও করি। যেদিন ধর্ষণে সেঞ্চুরির পর মিষ্টি বিতরণের খবর জানতে পারি, লজ্জা-ঘৃণা-কষ্টে কুঁকড়ে গেছিলাম। কি নিদারুণ মানসিক দৈন্যতা!!! ছিঃ!!!!

এরা বিয়ের আগে সেক্স করে। কিন্তু জোর করে নয়। যা হয় দু'জনের সম্মতিতে। সেক্স দু'জনের সম্পর্ক, ভালবাসাকে আরো গাঢ় করে। আমাদের দেশে হয় উল্টোটা। হলে আমার পাশের রুমের এক বড়ভাই প্রায়ই তাঁর প্রেমিকাকে দুপুরবেলায় রুমে নিয়ে আসতেন। মাস চারেক পর দেখলাম ওঁদের সম্পর্ক ভেঙ্গে গেছে। কারণটা আর না বলি। নিজেই নিজেকে অপমান আর কাঁহাতক করা যায়???

সেদিন বিকেলে ক্লিনিকে এসে মাধবী আমার খুব কাছে এসে একেবারে আপনজনের মত জিজ্ঞেস করেছিল, "এখন কেমন আছ? " মনে হয় যেন কত জনমের চেনা! আমাকে বসে থাকতে দেখে ওর মুখ হাসিতে ঝলমল। যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। মাধবী আমাকে দেখতে এসেছে ওর এক বান্ধবীকে সাথে নিয়ে। আমার অস্বস্তি হচ্ছে। না জানি আমাকে দেখতে কি ভীষণ বাজে লাগছে! শুধু বললাম, ' ভাল আছি।' মাধবী আবার বলল, "কাল তোমার অবস্থা দেখে খুব ভয় পেয়েছিলাম। আমি রক্ত দেখতে পারিনা। আমি খুব ভীতু।" মাধবী "তেলাপোকা দেখে অজ্ঞান হওয়া" টাইপের মেয়ে। বড় কোমল মন তার। যেমন কোমল তার মুখ, ঠিক তেমনি। আহা! আরো আগে কেন তোমার সাথে দেখা হয়নি? সেই এলে, এত দেরীতে কেন? আমার যে হাতে সময় নেই। আমাকে যে চলে যেতে হবে অনেক দূর! প্রিয় মাতৃভূমি, আপনজন সবকিছু ছেড়ে..

চলবে...........

রিপোস্ট

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৩০

দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: চলুক,দেখি কতটুক যায়।একটা কথাই ধোঁয়াশা মাধবীর কি হয়েছিলো?.

৩০ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: হা হা হা! জানবেন। নিশ্চয় জানবেন। সবুরে মেওয়া ফলে। ঠিক কিনা?

ভাল থাকুন, আর পড়তে থাকুন।

২| ৩০ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৪

পংঙ্কজ অধিকারী বলেছেন: খুব সুন্দর

৩০ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৩| ৩০ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৯

জুনিয়ার ব্লগার বলেছেন:
মাধবী চরিত্রে কি আপনি? গল্প মোটামুটি হয়েছে।

৩০ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: লেখকের কল্পনার একটি চরিত্র মাধবী। ধন্যবাদ গল্প মোটামুটি বলার জন্য। ভাল থাকুন।

৪| ৩০ শে মে, ২০১৭ রাত ৮:৩৯

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:

আরে আপা, কেমন আছেন ? গল্প সুন্দর হয়েছে + :-P

৩০ শে মে, ২০১৭ রাত ৯:০৫

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ভাল আছি। আপনি?

সত্যি সুন্দর হয়েছে? ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৫| ৩০ শে মে, ২০১৭ রাত ৯:০৬

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:

আমি ভাল আছি !! হুম ,গল্প আরো বেশি বেশি লিখুন !!

৩০ শে মে, ২০১৭ রাত ১০:১৫

আলপনা তালুকদার বলেছেন: শুনে ভাল লাগলো। জ্বি, লিখব। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.