নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের মন, ভাবনা, অনুভূতি ও ভালবাসা বৈচিত্র্যময় বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দর!https://www.facebook.com/akterbanu.alpona

আলপনা তালুকদার

ড.আকতার বানু আলপনা,সহযোগী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী

আলপনা তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

  প্রাইভেট কোচিংএর মহামারী রূপ ও শিক্ষাব্যবস্থায় ধ্বস

৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৪




প্রাইভেট কোচিংএর মহামারী রূপ ও শিক্ষাব্যবস্থায় ধ্বস

বাংলাদেশের ১৯৬০ সালের চাকরীবিধি অনুযায়ী স্কুল শিক্ষক, ১৯৭৯ সালের চাকরীবিধি অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক কলেজশিক্ষক, ১৯৯৪ সালের চাকরীবিধি অনুযায়ী ডিগ্রী অনার্স কলেজের শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়াতে পারবেননা। অন্য চাকরীও করতে পারবেন না। কিন্তু এসব বিধির বাস্তবায়ন নেই। শিক্ষকরাও তা মানছেন না। ফলে শিক্ষকদের অনৈতিক কোচিং ব্যবসা বাংলাদেশের মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিকলাঙ্গ করে দিচ্ছে দিন দিন।

বর্তমানে বাংলাদেশে মূলতঃ শিক্ষকদের সীমাহীন লোভের কারণে কোচিং ব্যবসার লাগামহীন প্রসার ঘটেছে গোটা দেশে। শহর তো বটেই, গ্রামের স্কুলগুলোতেও প্রাইভেট ব্যবসা জমজমাট। শিক্ষকরূপী এসব কোচিং ব্যবসায়ীর হাতে জিম্মি সব শ্রেণী-পেশার শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।

আগে কোন ছাত্র প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষকরা তাকে বাধ্য করত না। এখন শিক্ষকরা প্রাইভেটে ছাত্র আনার জন্য নম্বর কম দেয়া, শিক্ষার্থীদের মারা, ইচ্ছে করে কঠিণ প্রশ্ন করা, যারা পড়ে তাদেরকে পরীক্ষার আগে প্রশ্ন আউট করে দেয়া, তাদেরকে নম্বর বেশী দেয়া, যারা পড়েনা, তাদেরকে কম নম্বর দেয়া, অভিভাবকদেরকে নানাভাবে চাপ দেয়া, ইত্যাদি নানা কূটকৌশল অবলম্বন করেন।

কোচিং বাণিজ্য ভয়াবহভাবে বেড়ে যাওয়ায় এসব লোভী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম আদালতে ২০১১ সালের শেষের দিকে একটি রিট করেন। এর ফলশ্রুতিতে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে "শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং-বাণিজ্য বন্ধ নাতিমালা ২০১২" প্রনয়ণ করেছে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এই নীতিমালা অনুসারে কোন শিক্ষক তাঁর নিজ প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেননা। প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি নিয়ে অন্য স্কুলের একসাথে সর্বোচ্চ দশ জন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেন। অভিভাবকদের অনুরোধে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলের ভিতরেই অল্প ফিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতিক্রমে অতিরিক্ত ক্লাস করানো যাবে।

এই নীতিমালা না মানলে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা বলা আছে। যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও স্থগিত বা বাতিল, সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে সাময়িক বা স্থায়ী বরখাস্ত, পেশাগত অসদাচরণের কারণে শৃঙ্খলা আপীল বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া,
বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি ও পাঠদান অনুমতি বাতিল
ইত্যাদি।

কিন্তু এসব আইন বা নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরা ক্লাসে দায়সারাভাবে পড়িয়ে ছুটছেন প্রাইভেট পড়াতে। কখনও নিজ বাসায় বা বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে। শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসিয়ে ব্যাচের পর ব্যাচ পড়াচ্ছেন। এমন কি, স্কুলের বা কলেজের ক্লাসে ঠিকমত না পড়িয়ে স্কুল ছুটির পর কোচিং ক্লাসে বেশী টাকা নিয়ে ঠিকই যত্ন করে পড়াচ্ছেন ঐ স্কুলেই বা কলেজেই। শিক্ষার্থীরাও ক্লাসে হাজিরা দিয়েই ছুটতে বাধ্য হচ্ছে এসব শিক্ষকদের কাছে। প্রচুর ভাল নামকরা শিক্ষক আছেন যারা ক্লাসে ভাল না পড়ালেও কোচিং এ খুবই ভাল পড়ান। শিক্ষকরা ক্লাসে ঠিকমত পড়িয়ে দিলেই শিক্ষার্থীদের কোচিং এর পিছনে ছুটতে হতনা। অভিভাবকদেরও অর্থ, সময় ও শ্রমের অপচয়ও হতনা।

কেন অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের প্রাইভেটে পড়তে দেন বা শিক্ষার্থীরা পড়ে :

১। পিএসসি-জেএসসি পরীক্ষা প্রবর্তন : পিএসসি-জেএসসি - এ দুটো পাবলিক পরীক্ষা প্রবর্তনের ফলে এদুটো পরীক্ষার ফলাফলের গুরুত্ব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে বেড়ে যাওয়ার কারণে ভাল ফলের আশায় বাধ্য হয়ে অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট পড়াচ্ছেন।

২। ক্লাসে শিক্ষকদের ঠিকমত না পড়ানো : এখন ক্লাসের পড়ায় ছেলেমেয়েরা ভাল করতে পারছেনা। কারণ শিক্ষকরা ইচ্ছে করে ক্লাসে ঠিকমত পড়ান না। পড়ালে ছাত্ররা তাদের কাছে প্রাইভেট পড়বেনা। ঠিকমত না পড়ানোর কারণে শিক্ষার্থীরা পড়া বোঝেনা, রেজাল্ট খারাপ করে। তাই তারা বাধ্য হয়ে প্রাইভেট পড়ে।

৩। সৃজনশীল পদ্ধতি চালু : সৃজনশীল পদ্ধতি চালু হওয়ার কারণে অভিভাবকরা এ পদ্ধতি বোঝেন না। তাই নিজে আর ছেলেমেয়েদের পড়াতে পারেন না। এই না পারার কারণে অনিচ্ছাসত্ত্বে, বাধ্য হয়ে প্রাইভেট পড়ান।

৪। ভর্তি পরীক্ষা : বাংলাদেশের সব ভাল স্কুলগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে কোন শিশু ভর্তি হতে পারেনা। অর্থাৎ স্কুলে আসার আগেই শিশুকে অনেক কিছু শিখে আসতে হয় যা তার স্কুলে আসার পরে শেখার কথা। প্রাইভেট পড়ানো শুরু হয় মূলতঃ ভাল স্কুলগুলোতে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করানোর জন্য। কারণ ওসব স্কুলের রেজাল্ট ভাল। তাই ধরেই নেয়া যায় ভর্তি করাতে পারলে ভাল ফল সুনিশ্চিত। তাই ভাল স্কুলে যাতে ভর্তি পরীক্ষায় ভাল করতে পারে, সেজন্য প্রাইভেট পড়ান অভিভাবকরা।

ভাল নম্বর না পোলে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগই দেয়া হয়না। এখন তো আবার ভাল নম্বর পেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে একবারের বেশী ভর্তি পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়না। আগে দ্বিতীয় বিভাগ পাওয়া ছাত্রও বুয়েটে চান্স পেয়েছে যেটা এখন অসম্ভব। তাই যেকোন মূল্যে ভাল নম্বর পাওয়াটা অনিবার্য। আর ভাল ফল বা নম্বরের জন্য প্রাইভেট না পড়ে উপায় নেই।

৬। প্রশ্ন আউট বা ভাল ফলের নিশ্চয়তা: এখন ভাল ফলাফল নির্ধারণ করে টাকা। অর্থাৎ টাকা খরচ করে স্কুলের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়ালে শিক্ষকরা পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন বলে দেন, বেশী নম্বর দেন। ফলে রেজাল্ট ভাল হয়। প্রাইভেট না পড়লে ভাল নম্বর পাওয়া যায়না। রেজাল্টও ভাল হয় না।

অভিভাকরা কোচিং এ বাচ্চাদের দিচ্ছেন। কারণ তাঁরা তার সুফল পাচ্ছেন। উদাহরণ দেই। আমি ক্লাস ওয়ানে আমার মেয়েকে নামতা পড়িয়েছি। কিন্তু পরীক্ষায় প্রশ্ন এসেছে গুণ আকারে। যেমন ৩ এর ঘরের নামতা লিখ - এর পরিবর্তে তিন গুণ চার সমান কত?- এভাবে প্রশ্ন এসেছে। যারা কোচিং করেছে, তাদেরকে এভাবেই শেখানো হয়েছে। ফলে তারা পারবে। যেসব বাচ্চা কোচিং করেনি তারা প্রশ্ন না বোঝার কারণে পারবোনা বা ভুল করতে পারে। ফলে রেজাল্ট খারাপ হবে। আবার ইংরেজি প্রশ্নের উত্তর ওয়ানের বাচ্চার বানিয়ে লিখতে পারার কথা না। তাই কোচিং এ যেসব প্রশ্নোত্তর মুখস্থ করানো হয়, শিক্ষকরা সেগুলোই পরীক্ষায় দেন। ফলে কোচিং করা শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন কমন পায়, রেজাল্ট ভাল হয়। আবার বিভিন্ন ভাল স্কুলগুলোর শিক্ষকরা ভর্তি পরীক্ষার কোচিংকরান আবার ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নও করেন। তাই প্রশ্ন আগেই বলে দেন। ছাত্ররা প্রশ্ন কমন পায়, ভর্তির সুযোগও পায়। ফলে ওসব শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়ার হিড়িক পড়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ( কখনো কখনো স্বামী ও স্ত্রী দু'জন ) তাঁর ক্লাস ওয়ান বা টু এর শিশুকে পড়াতে পারবেন না, এটা হতে পারেনা। কিন্তু বাস্তবতা হল, মেধাবী, শিক্ষিত, পেশাজীবী অভিভাবকরা, এমন কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও তাঁদের স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের নিয়ে ধর্ণা দিচ্ছেন স্কুলের শিক্ষক বা কোচিং সেন্টারে উপরোক্ত সুবিধা পাবার জন্য। সময়, শ্রম ও মেধার কি নিদারুণ অপচয়!

ক্লাস সিক্স পর্যন্ত আমার মেয়ের কোন গৃহশিক্ষক ছিলনা। সব বিষয় আমি নিজে পড়াতাম। কোন কোচিংএ ও দেইনি, কারণ আমি চেয়েছি আমার মেয়ে ক্লাসে প্রথম না হোক, তবে ওর বেইজ যেন দূর্বল না হয়। তাতে মেয়ে পিএসসি পরীক্ষায় ভাল কারলেও স্কুলের পরীক্ষায় তার রোল এক থেকে দশের মধ্যে ছিলনা, যদিও আমি জানি সে খারাপ ছাত্রী নয়।

আমাদের সময় সৃজনশীল ছিলনা। তবু কিছু কম শিখেছি বলে মনে হয়না। আমাদের সময়ও সায়েন্সের ছেলেমেয়েরা প্রাইভেট পড়ত। অল্প কিছু বিষয়ে। আমি নিজেও স্কুলে কখনও কোন বিষয়ে প্রাইভেট পড়িনি। কলেজে পরিসংখ্যান প্রাইভেট পড়েছি বিশ দিন। শুধু যেগুলো নিজে পারতামনা, সেগুলো।(স্কুলে থাকতে আব্বা পড়াতেন অংক আর ইংরেজী, তাও শুধু যেগুলো নিজে নিজে পারতামনা, সেগুলো। তাতে আমার রেজাল্ট খারাপ হয়নি। আমি এসএসসি- তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল থেকে রাজশাহী বোর্ডে মানবিক বিভাগ থেকে মেয়েদের মধ্যে প্রথম ও সম্মিলিত মেধা তালিকায় অষ্টম স্থান এবং এইচএসসি - তে রাজশাহী কলেজ থেকে রাজশাহী বোর্ডের মানবিক বিভাগ থেকে মেয়েদের মধ্যে প্রথম ও সম্মিলিত মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করি।আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে মনোবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছি)।

আর এখনকার পড়ালেখার ধবণ এমন হয়েছে যে, শিক্ষার্থীদের প্রতিটা বিষয়ের প্রতিটা চ্যাপ্টারের প্রতিটা প্যারা টিউটরের কাছে শিখে নিতে হয় সৃজনশীল পদ্ধতি না বোঝার কারণে বা যেকোন প্যারা থেকে প্রশ্ন হবার সম্ভাবনা আছে বলে। একারণে এখনকার বাচ্চারা সব বিষয়ে প্রাইভেট পড়ে। ধর্ম, সমাজ, এমন কি মাতৃভাষা বাংলাও। ক্লাসের প্রথম যে ছাত্র, সে সবচেয়ে বেশী প্রাইভেট পড়ে। অর্থাৎ রেজাল্টের কৃতিত্ব এখন ছাত্রের নয়, প্রাইভেটের। যেসব অভিভাবকের সাধ্য আছে, তাঁরা প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। আর যাঁদের নেই, তাঁরা যে কি কষ্ট করে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার বাড়তি খরচ জোগাড় করছেন, তা তাঁরাই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।

৭। অভিভাবকদের ধারণা ও বাস্তব অভিজ্ঞতা : প্রাইভেট ছাড়া ভাল ফল করা যায়না, এ ধারণা এখন বদ্ধমূল, বাস্তবতাও তাই। অভিভাবকরা জানেন, শিক্ষকরা ক্লাসে ভাল করে পড়াবেননা, প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষার্থীরা ভাল বুঝবেনা, শিক্ষকরা ভাল নম্বরও দেনেননা। তাই এটা মেনে নিয়েই অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের প্রাইভেটে পড়তে দেন।

৮। অভিভাবকদের সৃজনশীল পদ্ধতি সম্পর্কে অজ্ঞতা : আগে অভিভাবকরা নিজেরাই নিজেদের সন্তানদের পড়াতেন।সৃজনশীল পদ্ধতি না বোঝার কারণে এখন অভিভাবকরা আর সেটা পারেন না। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা শিক্ষকদের দ্বারস্থ হচ্ছেন।

৯। তীব্র প্রতিযোগিতা : এখন প্রতিযোগীতায় টিকতে হলে ভাল ফল করতেই হবে। যারজন্য প্রাইভেট না পড়ে উপায় নেই। তাই ভাল স্কুলে, ভাল কোচিং এ ভাল টিচারের কাছে পড়ানোটা জরুরী। অনেকের কাছে এটা মানসিক তৃপ্তি ও ভরসার কারণও। তাছাড়া বিত্তবানরা পড়ানোর জন্য টাকা খরচ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন না। তাই শিক্ষকরাও লোভী হয় বাড়তি আয়ের জন্য। একারণে তুলনামুলকভাবে অস্বচ্ছল অভিভাবকরাও বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকদের এ লোভের খোরাক জোগাতে।

১০। অভিভাবকদের ব্যস্ততা : এখন বাবামা ব্যস্ততার কারণে সন্তানদের পড়াশোনার পিছনে সময় দিতে পারেননা। এখন প্রশ্নের ধরণ এমন যে, গাইড বই না পড়লে পড়ানো যায়না। অভিভাবকদের অত মোটা মোটা গাইড বই পড়ে সন্তানদের পড়ানোর বিড়ম্বনার চেয়ে কোচিং এ দেয়া বেশী সহজ। তাছাড়া প্রাইভেট না পড়লে ফল খারাপ করবে, অভিভাবকরা এ ঝুঁকি নিতে চাননা।

১১। শিক্ষকদের জবাবদিহিতার অভাব : আমাদের দেশে ছাত্র-ছাত্রী ফেল করলে বা খারাপ করলে শিক্ষকদের কোন জবাবদিহিতা নেই বা শাস্তি ও হয়না। ফলে শিক্ষকরা স্কুলে কম, কোচিং বা প্রাইভেটে বেশী পড়ান। ইচ্ছে করে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ভাল করে পড়ান না বা ফল খারাপ করান যাতে শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট পড়তে আসে বা অভিভাবকরা পড়তে পাঠান। ইত্যাদি।

আমাদের শিরক্ষাব্যবস্থার দূরবস্থার কারণ

উন্নত দেশগুলোতে, যেমন ফিনল্যান্ড, এখন পরিবেশ থেকে কোন একটি ঘটনা তুলে এনে সেটার সাথে সম্পৃক্ত সবগুলো বিষয় শেখানো হয়। নানা বিষয় আলাদা আলাদা ভাবে শেখানো হয়না। যেমন কোন একটি প্রাকৃতিক দূর্যোগ, যেমন বন্যা পড়াতে গিয়ে এর কারণ ( বিজ্ঞান - বৈশ্বয়িক উষ্ণায়ন, ভূগোল- পরিবেশের পরিবর্তনে আবহাওয়ার ও ভৌগোলিক অবস্থানের ভূমিকা, সমাজ- এর সাথে মানুষের জীবনপ্রবাহের নানা সমস্যা, জীববিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান ও চিকিৎসা বিজ্ঞান - এর সাথে মানুষ, উদ্ভিদ ও প্রাণীর রোগ, গবেষণা- প্রতিকারের উপায় উদ্ভাবন), ইত্যাদি সবকিছুকে সমন্বিতভাবে পড়ানো হয়। ফলে শিক্ষার্থীর শিক্ষা যেমন বাস্তবমুখী হয়, তেমনি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা নিজের, দেশের ও সমাজের কাজে লাগে।

এজন্য উন্নত দেশগুলোতে লেখাপড়ার ধরণ পাল্টে যাচ্ছে। তারা বাচ্চা ছেলেমেয়েদের একটা কফি শপ দিয়ে বলে, আগামী এক বছর এই দোকানটিৈ চালানো তোমার পরীক্ষা। এই দোকান চালাতে গিয়ে তারা হাতেনাতে অংক শিখেছে, কফি বিক্রি করতে গিয়ে তারা মার্কেটিং শিখেছে, পুরো ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে তারা ম্যানেজমেন্ট শিখেছে, লাভ-লসে পড়ে অর্থনীতি শিখেছে।

যেসব ছেলেমেয়েরা মেকানিকাল কাজ জানে, তাদের দেয়া হয় গ্যারেজ বা কোন খুচরা যন্ত্রাংশের দোকান, কাউকে দেয়া হয় কাপড়ের বা সৌখিন জিনিসের দোকান, কাউকে দেয়া হয় কোন যন্ত্র বানানো বা কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর কাজ। যে যার দক্ষতা দিয়ে দোকান চালাবে বা কাজ করবে। প্রত্যেকের পারদর্শিতার ভিত্তিতে নম্বর দেয়া হবে। এতে তার একাডেমিক শিক্ষার সাথে সাথে তার ভবিষ্যত কর্মজীবনের দিকনির্দেশনা ও পাওয়া হয়ে যায়।

ভারতে একটি স্কুলে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি চ্যাপ্টার বাস্তব প্রয়োগ পদ্ধতিতে শিখতে গিয়ে স্কুলের ছেলেমেয়েরা সে গ্রামের কলেরা, টাইফয়েড, ডায়রিয়া নির্মূল করেছে। আসলে এটাই দরকার। কোন কিছু শেখার সাথে সাথে সেটা কোথায় কাজে লাগবে, সেটা শেখানো বেশী জরুরী।

দূর্বাগ্যজনকভাবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এসবের বালাই নেই।

শিশুদের যাতে স্কুল ও পড়াভীতি তৈরী না হয় সেজন্য প্রথম ছয় বছর খেলাধুলা, ছবি আঁকা, গল্প করা, নাচ, গান এসব করানো হয় উন্নত দেশগুলোতে। পরীক্ষাভীতি শিশুদের শেখার আগ্রহ নষ্ট করে। তাই ফিনল্যান্ডে স্কুলে যাবার পর প্রথম ছয় বছর কোন পরীক্ষা হয়না। ১০ বছর পর শিশুরা প্রথম বড় ধরণের কোন পরীক্ষা দেয়।

মনোবিজ্ঞানীদের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, বিরতিহীন শেখার চেয়ে বিরতিসহ শেখালে শিক্ষার্থীরা ভাল শেখে। তাই জাপানে শেখার মাঝখানে বাধ্যতামূলক বিরতি, এমন কি, কোন কোন স্কুলে ঘুমানোর সুযোগও আছে। শিশুরা বাবা মার সঙ্গ ও ববাবামার সাথে দুপুরের খাবারের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য সেভাবে স্কুলের সময় স্থির করা হয় ফ্রান্স ও মেক্সিকোতে। শিক্ষার কোন স্তরে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়তে হয়না। বেলজিয়ামে দশ বছর পর্যন্ত কোন হোমওয়ার্ক দেয়া হয়না। পৃথিবীর সব উন্নত দেশে পড়ার চাপ কমাতে সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম চালানো হয় পড়ার সমান গুরুত্ব দিয়ে।

ভার্সিটিতে প্রথম বর্ষে পড়ুয়া এক ছাত্র মাসখানেক আগে আমার কাছে এসে বলল, "ম্যডাম, আমি খুব গরীব ঘরের ছেলে। মেসে থাকার সামর্থ নাই। তাই হলে এক বড় ভায়ের কাছে থাকি। সে নানাভাবে আমাকে তাচ্ছিল্য করে। রান্না করা, তার এঁটো প্লেট ধোয়া, ঘর ঝাড় দেয়া, তার সিগারেট কিনে আনা,... এসব আমাকে দিয়ে করায়। অনেক রাত পর্যন্ত বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়। আমি পড়তে পারিনা।"

আমাদের ছেলেমেয়েরা হলে গাদাগাদি করে থেকে পড়ে, হলে সিট পায়না, সিনিয়রদের চাকর হয়, বিদ্যুৎ থাকেনা ঠিকমত, ডাইনিং এর বাসি, পচা, অখাদ্য খাবার খায়, মাঝে মাঝে শুনি তাদের নাকি শেয়াল কুকুরের মাংসও খাওয়ানো হয়, আছে সেশনজট, বই- কম্পিউটার কেনার টাকা নেই, ইত্যাদি হাজার কষ্ট। আর পাস করে চাকরী নেই, বেকারভাতাও নেই। মামার জোর, ঘুষ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর লোক,...এসব না থাকলে চাকরীও জোটেনা। মধ্যবিত্ত ও গরীব অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা নানাভাবে নিষ্পেষিত। আর লাভবান হয় লোভী শিক্ষকরা, কোচিং-গাইড বই ব্যবসায়ীরা।

অথচ আমাদের ছেলেমেয়েরা যথেষ্ট মেধাবী, পরিশ্রমী। মেধাবী বলেই তারা বিদেশের নামী দামী কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টপ করে। কারণ ওখানে হাতে কলমে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে, দেশে যেটা পারেনা মুখস্থনির্ভর পড়ালেখার কারণে। আমাদের অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত প্রবাসী শ্রমিকরা হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেই আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে।

জেএসসি, পিএসসি, সৃজনশীল ইত্যাদি নানা নতুন নতুন পধতি চালু, এ প্লাসের ছড়াছড়ি, ভুল লিখলেও শিক্ষকদেরকে নম্বর বেশী দিয়ে এ প্লাস বাড়ানো বা শতভাগ পাস করানোর চাপ, বছরে ৩ টা পরীক্ষা দেয়া, ক্লাস টেস্ট দেয়া, প্রাইভেট পড়ার চাপ, ইত্যাদি নানা সমস্যা তো আছেই।

কেন শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ানঃ

বলা হয়, শিক্ষকদের বেতন কম। তাই তাঁরা প্রাইভেট পড়াতে বাধ্য হন। ক্যান্টনমেন্ট স্কুলগুলোর শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়াতে পারেন না। পড়ালেও নিজের স্কুলের শিক্ষার্থীদের পড়াতে পারেন না। পড়ালে চাকরী চলে যায়। তাঁদের চলে কিভাবে? শিক্ষকরা চাকরীতে ঢোকার সময় বেতন কত হবে সেটা জেনেই আসেন। যদি মনে করেন, এ বেতনে চলবেনা, তাহলে আসেন কেন?

কোন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক প্রাইভেট পড়ান না। যখন বেতন অনেক কম ছিল, তখনো কেউ পড়াননি। তাহলে তাঁদের চলত কিভাবে? নিশ্চয় কষ্ট করেই চলতেন।  তবু কোনদিন তাঁরা নিজের পেশাকে কলুষিত করেননি।
আমার বাবাও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তাই আমি বিষয়টা খুব ভাল জানি।

কিন্তু বর্তমানে স্কুল, কলেজ, এমন কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা টাকার পেছনে ছুটছেন। স্কুল কলেজের শিক্ষকরা প্রাইভেট কোচিংসহ নানা দূর্নীতিতে জড়াচ্ছেন।, নৈশ কোর্স, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজগুলোতে পরীক্ষা নিতে গিয়ে ঘুষ নেয়া, নানা প্রজেক্টে বাড়তি আয়ের জন্য কাজ করা, কলেজের বিভিন্ন শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, ইত্যাদি  নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নাম। কেন এমন হবে? আসলে বিষয়গুলো নিয়ে খুব সিরিয়াস আলোচনা দরকার।


এ নৈরাজ্য থেকে মুক্তি ও শিক্ষার মান বাড়ানোর উপায়ঃ

১। প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষা তুলে দিতে হবে। লটারীর মাধ্যমে আসনসংখ্যা অনুযায়ী ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করতে হবে।

২। ছাত্র-শিক্ষক  অনুপাত ঠিক রাখতে হবে। শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

৩। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাড়াতে হবে। বিভিন্ন ক্লাসে শিশুদের ফলাফলের ভিত্তিতে ক্রমান্বয়ে উপরের ক্লাসে, এভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ভর্তি করতে হবে।

৪। কোচিং, প্রাইভেট, গাইড বই- এসব তুলে দিতে হবে। পিএসসি-জেএসসি পরীক্ষা , সৃজনশীল পদ্ধতি তুলে দিতে হবে।

৫। শিক্ষকদের জবাবদিহিতা ও শাস্তির কঠোর প্রয়োগ বাড়াতে হবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সব পর্যায়ে শিক্ষকদের বেতন আরও অনেক বাড়ানো উচিত, যাতে দেশের সবচেয়ে মেধাবী মানুষগুলো অর্থের পেছনে না ছুটে তাঁদের বেতন দিয়েই একটি সম্মানজনক জীবন যাপন করতে পারেন।


সামগ্রিকভাবে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় যে ধ্বস নেমেছে সেটা রদ করতে হলে পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। আমাদের শিরক্ষাব্যবস্থার এ দূরবস্থা খুব দ্রুত বদলানো দরকার।

শিক্ষা বিষয়ক অনলাইন জার্নাল 'বাংলাদেশের শিক্ষা'-য় লেখাটি গতকাল ছাপা হয়েছে।




https://www.bn.bdeduarticle.com/প্রাইভেট-কোচিঙের-মহামারী/














মন্তব্য ৪৯ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৪৯) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৪২

নতুন বলেছেন: বিষয়টা আমাদের নৈতিক স্খলন থেকেই শুরু....

শিক্ষকরা এখন হিসেব করে প্রাইভেট পড়িয়ে কে কত টাকা আয় করে ... ।

কলেজে ক্লাসে পড়াশুনা কিছুই হয়না। প্রাইভেটেই সবার ভরসা... :(

একটা জাতির শিক্ষকরা যদি টাকার জন্য ছাত্রের শিক্ষা জিম্মি করে তখন সমাজে কখনোই ভাল মানুষ তৌরি হবেনা।

৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:০৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জ্বি, ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ।

২| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
প্রাইভেট কোচিংএর মহামারী রূপ ও শিক্ষাব্যবস্থায় ধ্বস বানান টা ......গোড়ায় গলদ !! ঠিক করে নিন ।

৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:০৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: বানান ঠিক আছে। ধন্যবাদ।

৩| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৯

সিফটিপিন বলেছেন: অনেকটাই ডাক্তারদের মতো। সরকারী হাঁসপাতালে গেলে আপনারদিকে তাকাবে কিনা ঔষধ লিখে দিবে। ভাল হোক আর না হোক। কিন্তু তার চেম্বারে যান কত আদর যত্ন করে দেখবে।

প্রচুর ভাল নামকরা শিক্ষক আছেন যারা ক্লাসে ভাল না পড়ালেও কোচিং এ খুবই ভাল পড়ান। শিক্ষকরা ক্লাসে ঠিকমত পড়িয়ে দিলেই শিক্ষার্থীদের কোচিং এর পিছনে ছুটতে হতনা। অভিভাবকদেরও অর্থ, সময় ও শ্রমের অপচয়ও হতনা।
ভাল বলেছেন।

৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:০৪

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জ্বি, তুলনা সঠিক। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৪| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৫২

আখেনাটেন বলেছেন: এখানে কোয়ালিটি ও কোয়ান্টিটির দ্বন্দ্ব চলছে। যেখানে কোয়ান্টিটি কোয়ালিটিকে নকআউট করেছে। আর উপরওয়ালাদের এটাই দরকার নিজের ভবিষ্যতের জন্য।

৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:০৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জ্বি, ঠিক। নিজেদের চেয়ার ঠিক রাখতে গিয়ে গোটা জাতিকে ডোবানো। ধন্যবাদ।

৫| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৩

বিজন রয় বলেছেন: যেখানে প্রশ্ন আউট হয় প্রতিটি পরীক্ষায় সেখানে আবার কোচিং !! চারিদিকে হতাশা।

আপনার লেখাটি অনেক গঠনমূলক।


শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
প্রাইভেট কোচিংএর মহামারী রূপ ও শিক্ষাব্যবস্থায় ধ্বস বানান টা ......গোড়ায় গলদ !! ঠিক করে নিন ।

হা হা হা ........... কাকতালীয়ভাবে শাহরিয়ার কবীর একটু আগেই ঠিক ওই বানানটি আমাকেও ধরিয়ে দিলে এলেন।

তাকে এবং আপনাকে ধন্যবাদ।

৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:০৯

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার ব্লগ ঘুরে এলাম। শাহরিয়ার ভাই আপনার 'ধ্বংস' ঠিক করেছেন, 'ধ্বস' নয়। আপনি 'ধ্বংশ' লিখেছেন।

ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৬| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:১৬

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
সরি , প্রথমে বুঝতে পাড়িনি ! ধ্বস প্রতিশব্দ হিমবাহ.....। ঠিক আছে !! ধন্যবাদ ।

৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:২৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: না না ঠিকআছে। সরির কিছু নেই হতেই পারে। যেমন - 'পারিনি' কে ভুল করে 'পাড়িনি' লিখে ফেলেছেন। আমিও মাঝে মাঝে এমন করে ফেলি। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৭| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:২২

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক সুন্দর বিষয়ে সুন্দর আলোচনা করেছেন।

৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:২৮

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। তবে কষ্ট হল, এগুলো কেউ প্রয়োগ করবেনা।

৮| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:২৪

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন:

পরামর্শ গুলোও চমৎকার, সহমত রাখতে কোন চিন্তার প্রয়োজন পড়ে না।

শুভকামনা আপনার জন্য।

৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:২৯

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল লাগবে, নীতিনির্ধারকরা এগুলো আমলে নিলে।

৯| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:২৪

বালাম সিটিকে বলেছেন: আমাদের বর্তমান সম্মানিত শিক্ষামন্ত্রি মহোদয় বার বার ঘোষনা দেয়া সত্বেও বন্ধ হচ্ছেনা কোচিং বানিজ্য-- আর তাই প্রশ্ন হচ্ছে-
কেন এই ব্যর্থতা?

৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৩০

আলপনা তালুকদার বলেছেন: কারণ আছে। ৪ নং কমেন্ট পড়ুন। ধন্যবাদ।

১০| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: লটারি বিষয়টি আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয় না ।মান্ধাত্বার আমলের চাষবাসের মত ব্যাপার মনে হয় । বৃষ্টি আসলে চাষ নাহলে গলায় ফাস। সবার শুদ্ধাচার হওয়া দরকার । নৈতিকতাই পারে এসব অনিয়ম দূর করতে । তবে হ্যা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করতে হবে । মুখস্থ বিদ্যাই বড় বিদ্যা হয়ে ওঠেছে । এটা বন্ধ করে বুঝে শুণে পড়ার ব্যাপারটি রপ্ত করতে বা প্রচলন করতে হবে ।

৩১ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৮

আলপনা তালুকদার বলেছেন:
সব ভাল স্কুলগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে কোন শিশু ভর্তি হতে পারেনা। অর্থাৎ স্কুলে আসার আগেই শিশুকে অনেক কিছু শিখে আসতে হয় যা তার স্কুলে আসার পরে শেখার কথা। প্রাইভেট পড়ানো শুরু হয় মূলতঃ ভাল স্কুলগুলোতে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করানোর জন্য। ভাল স্কুলগুলোতে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি করার জন্য অনেক শিক্ষার্থীর মধ্যে অল্প শিক্ষার্থী বাছাই করার জন্য প্রশ্ন এতটাই কঠিণ করা হয় যে তা তৃতীয়/চতুর্থ শ্রেণীর উপযুক্ত। তাই ভাল স্কুলে যাতে ভর্তি পরীক্ষায় ভাল করতে পারে, সেজন্য প্রাইভেট পড়ান অভিভাবকরা। ফলে শিশুদের মেধার উপর চাপ পড়ে। তাই সহজ প্রশ্নে পরীক্ষা নিতে হবে। অনেক শিক্ষার্থী একই নম্বর পেলে সেক্ষেত্রে লটারীর মাধ্যমে আসন সংখ্যা অনুযায়ী শিক্ষার্থী নির্বাচন করা দরকার।

বাংলাদেশের প্রতিটা স্কুলে এরকম সহজ প্রশ্নে পরীক্ষা বা লটারী পদ্ধতিতে
ভর্তি নিলে কোমলমতি শিশুরা নির্যাতন থেকে বেঁচে যায়। কারণ ছোটবেলায় ঐ বয়সে আমরা এত পড়িনি। এত পড়ার চাপের কারণে শিশুরা পড়ায় আনন্দ হারিয়ে ফেলছে।

পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে শিশুরা স্কুলে ভর্তি হয় কোন পরীক্ষা না দিয়ে। সবচেয়ে ভাল হয় তেমন করতে পারলে।

ধন্যবাদ।

১১| ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৯

করুণাধারা বলেছেন: খুব দরকারি কথাগুলো সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। পোস্টে দীর্ঘ মন্তব্য করার ইচ্ছা থাকলেও সময়ের অভাবে করতে পারছি না তাই আপাতত ভাল লাগা জানিয়ে বিদায় নিচ্ছি।

ভাল থাকবেন। শুভকামনা।

৩১ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩০

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। ব্যস্ততার মাঝেও এটুকু লেখার জন্য। ভাল থাকুন।

১২| ৩১ শে মে, ২০১৭ রাত ১০:২৯

কাশফুল মন (আহমদ) বলেছেন: অনেক কিছু তুলে ধরেছেন,যা একদম বাস্তব সম্বত।

৩১ শে মে, ২০১৭ রাত ১১:৪০

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ।

১৩| ৩১ শে মে, ২০১৭ রাত ১১:৪৮

দাঁড়িকমা প্রকাশনী বলেছেন: নৈতিক স্খলন, পুরো জাতির জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।

০১ লা জুন, ২০১৭ রাত ১২:০৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: আমাদের দেশের সব সেক্টরে কি পরিমাণ অনাচার প্রবেশ করেছে তা দেখে আমি শিউরে উঠি, আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। দেশের এত স্খলন কি করে রোধ করা সম্ভব???

সব বিষয়ে লিখতেও পারিনা, সহ্য করতেও পারিনা, প্রতিবাদ করতেও পারিনা। জাফর ইকবাল স্যারও তাঁর একটি লেখায় আমার মতই হতাশা ব্যক্ত করেছেন।

ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

১৪| ০১ লা জুন, ২০১৭ রাত ১:৫৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আজই শুধু না, এটা চলে আসছে অনেক আগে থেকেই।। এখন মহামারি আকারে।।
অনেক ছর গে মনোজ বসুর " মানুষ গড়ার কারিগর" বইটিতেই এর সুন্দর বর্ননা আছে।।

০১ লা জুন, ২০১৭ রাত ৩:৪৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ভালো বলেছেন। ধন্যবাদ।

১৫| ০১ লা জুন, ২০১৭ সকাল ৭:৫৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: খুবই জরুরি একটি বিষয় নিয়ে সুন্দর ও সাবলীল ভাবে লিখে যাবার জন্যে আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন আপা।
শুভকামনা জানবেন।

০১ লা জুন, ২০১৭ সকাল ৮:৩১

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনাকেও শুভকামনা জানাচ্ছি। ভাল থাকুন।

১৬| ০১ লা জুন, ২০১৭ রাত ৯:২৩

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
খুব গুরুত্ববহ বিষয়ে আপনার সাথে একমত!

০১ লা জুন, ২০১৭ রাত ১০:১৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। শুনে ভাল লাগলো।

১৭| ০২ রা জুন, ২০১৭ ভোর ৪:২৬

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: খুবই ভালো একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। আমিও শুরু ম্যাট পড়তাম প্রাইভেট, এরপরো বোর্ড পরীক্ষায় আমার রেজাল্ট খুবই ভালো ছিল।

এই যুগের পড়ার যে সিস্টেম তা দেখলে মাথা ঘুরে। বাচ্চাদের জন্য মায়া হয়। আমার ছেলে এই জুনে ক্লাস সেভেনে উঠবে অথচ আমি এখন পর্যন্ত তার কোন বই খাতা দেখিনি, কোচিং আর প্রাইভেট টিউটর তো বহু দূরের কথা।

০২ রা জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৩২

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জ্বি, ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

১৮| ০২ রা জুন, ২০১৭ দুপুর ২:৩৩

আল আরাফাত বলেছেন: Our First Short Film "Light Of Black" By Kh Al Arafat

চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

https://youtu.be/99K5BjhJWDI

০২ রা জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:১৫

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ?

১৯| ০২ রা জুন, ২০১৭ রাত ৯:৩১

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: সুন্দর পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।

শুভেচ্ছা জানবেন।

০২ রা জুন, ২০১৭ রাত ১১:৪৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জ্বি, ধন্যবাদ। ভাল থাকুন - আপনাকেও এই শুভেচ্ছা।

২০| ০২ রা জুন, ২০১৭ রাত ১০:৩৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: আলপনা তালুকদার ,



ঠিক বলেছেন ---সামগ্রিকভাবে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় যে ধ্বস নেমেছে সেটা রদ করতে হলে পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে।
পরামর্শগুলোও চমৎকার । কিন্তু নৈতিকতাহীন আর অশিক্ষিত এই জাতির কারা, বিড়ালের গলায় ঘন্টাটি বাঁধবেন ??????

০২ রা জুন, ২০১৭ রাত ১১:৪৯

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। দিন বদলাবে নিশ্চয়। কোন অনাচারই চিরস্থায়ী নয়। আমি আশাবাদী। আমি লেখালেখি করি এজন্যই। একদিন কেউ না কেউ এগিয়ে আসবে।

ভাল থাকুন।

২১| ০৩ রা জুন, ২০১৭ ভোর ৫:৩১

অর্ধ চন্দ্র বলেছেন: পরিবর্তন আমাদের করতে হবে।

০৩ রা জুন, ২০১৭ সকাল ৮:২৮

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জ্বি, নিশ্চয়। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

২২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৭ ভোর ৬:৫৯

Taufik Alahi বলেছেন: জাতি আজ বাক প্রতিবন্ধী। এখান থেকে পরিত্তানের জন্য অবশ্যই সরকার কে আগিয়ে আসতে হবে।

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ সকাল ৮:৪৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ।

২৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:২৮

মিঃ আতিক বলেছেন: আপনার প্রস্তাব গুলো বিবেচনার দাবী রাখে। ধন্যবাদ

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৭:৫৪

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জেনে ভাল লাগলো। আপনাকেও ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.