নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের মন, ভাবনা, অনুভূতি ও ভালবাসা বৈচিত্র্যময় বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দর!https://www.facebook.com/akterbanu.alpona

আলপনা তালুকদার

ড.আকতার বানু আলপনা,সহযোগী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী

আলপনা তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারী-পুরুষের ক্ষমতায়ন বিষয়ে কিছু ভুল ধারণা

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৭



নারী-পুরুষের ক্ষমতায়ন বিষয়ে কিছু ভুল ধারণা


কিছু সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন, আইন, এবং নারী ও পুরুষের জন্য সমাজ কর্তৃক আরোপিত ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকার কারণে আমাদের সমাজে পুরুষকে শ্রেষ্ঠ ও নারীকে পুরুষের অধীনস্ত ভাবা হয়। পুরুষের শ্রেষ্ঠত্বের এমন ধারণাই সারা পৃথিবীতে যুগে যুগে নারীর প্রতি সব ধরণের সহিংসতা, নীপিড়ন, বৈষম্য ও সব ধরণের নির্যাতনের (শারীরিক, আর্থিক, মানসিক, যৌন) কারণ।

জাতিসংঘের মানদণ্ডে নারীর প্রতি অর্থনৈতিক নির্যাতনের মাপকাঠি হচ্ছে, স্বামীর হাতে পর্যাপ্ত টাকা থাকা সত্ত্বেও স্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত সংসার খরচের টাকা না দেওয়া। আর আমাদের বাংলাদেশের মানদণ্ডে নারীর প্রতি অর্থনৈতিক নির্যাতন হচ্ছে, স্ত্রীকে নিয়মিত হাতখরচ না দেওয়া, যৌতুক দাবী করা, বাবার বাড়ী থেকে টাকা বা জিনিসপত্র আনতে স্ত্রীকে চাপ দেওয়া, স্ত্রীর বেতন, সম্পদ বা অর্থ কেড়ে নেওয়া ইত্যাদি। মানসিক নির্যাতন হলো কাউকে মানসিক যন্ত্রণা দেওয়া। আমাদের ভদ্র সমাজে শারীরিকের চেয়ে মানসিক নির্যাতনের হার বেশী। মানসিক নির্যাতনের তালিকাটা দীর্ঘ। যেমন - অকারণ সন্দেহ করা, স্বাধীন চলাফেরায় বাধা দেয়া, গালি দেয়া, বাইরের লোক বা সন্তানদের সামনে হেয় করা, প্রতিটা কাজের কৈফিয়ত চাওয়া, কোন কিছু জোর করে চাপিয়ে দেয়া, ইত্যাদি।

নারীর চেয়ে পুরুষকে কিছু কারণে শক্তিশালী ও শ্রেষ্ঠ বলা হলেও কারণগুলোর কোন সত্যতা ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। যেমন -

১। নারীদের উপর পুরুষের শারীরিক নির্যাতনের কারণ হিসেবে বলা হয়, পুরুষের শক্তিশালী হওয়া। পুরুষের গায়ে জোর বেশী। তাই নারী তার সাথে শক্তিতে পারেনা।

আমি মনে করি, নারী ও পুরুষের শারীরিক শক্তিতে কোন পার্থক্য নেই। নারীকে যুগে যুগে বাড়ীর কাজে আটকে রাখার কারণে দিনে দিনে নারী তার শারীরিক সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। ফলে সে পুরুষের চেয়ে দূর্বল হয়ে গেছে। পুরুষ ও নারীর ক্ষমতা যে সমান, প্রকৃতিতেই তার প্রমাণ আছে। পৃথিবীর সব উন্নত দেশে মেয়েরা পারেনা, এমন কোন কাজ নেই। ওসব দেশে "মেয়েদের কাজ" বা "ছেলেদের কাজ" বলে কাজের কোন শ্রেণী বিভাগ নেই। সব কাজ সবার। সবাই সব কাজ করে, করতে পারে। অনেকে বলেন, পুরুষরাই শুধু কঠোর পরিশ্রমের কাজ করতে পারে, নারীরা নয়। কিন্তু আমাদের দেশের সাঁওতাল মেয়েদেরকে আমি কৃষিকাজসহ সব কাজ পুরুষের সমান, কখনও কখনও পুরুষের চেয়ে বেশীই করতে দেখেছি। অন্য উপজাতিদের মেয়েদের বেলায়ও তাই। নারীরা শারীরিকভাবে দূর্বল হলে উপজাতি মেয়েদেরও দূর্বল হবার কথা। আমি নিজে ছোটবেলায় আমার খালাতো ভাইবোনদের সাথে পাল্লা দিয়ে ভরা নদী সাঁতরে পার হতাম, গাছে চড়তাম (সুপারি গাছেও), সাইকেল চালাতাম, ভেলা চালাতাম, আরও কত কি! এখন কি গাছে চড়তে পারবো? পারবনা। অভ্যাস থাকলে ঠিকই পারতাম।

সভ্যতার শুরু হয়েছে নারীদের হাতে। কারণ কৃষিকাজের সূত্রপাত ঘটে মেয়েদের হাতে। আর এটা ছিল সভ্যতার পথে মানুষের প্রথম পদক্ষেপ!
নারীকে পিছিয়ে রেখেছে বিভিন্ন সামাজিক প্রতিবন্ধকতা। উপযুক্ত সামাজিক পরিবেশ পেলে তারা কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে তা মুরং উপজাতির দিকে তাকালেই বোঝা যাবে। একজন মুরং নারী দুই তিনজন পুরুষের সমান কাজ করতে পারে। ইউরোপে মেয়েরা বিশাল বিশাল ট্রাক, ট্রেন, বাস, লরি (২৮টি চাকার বিশাল লরি) চালায়, যা পুরুষদের পারা কঠিণ। বিমান, জাহাজ চালানোর পর এখন তো মেয়েরা মহাকাশেও যাচ্ছে।

২। বলা হয় পুরুষরা একাধিক স্ত্রী রাখতে পারে, নারীরা নয়। এটাও ভুল ধারণা। সারা পৃথিবী জুড়ে পতিতারা তার প্রমাণ। একটি বৈজ্ঞানিক সত্য হলো, পুরুষের তুলনায় নারীর যৌনক্ষমতা কয়েকগুণ বেশী।

৩। ধর্মমতে ও আইনমতে পুরুষরা শ্রেষ্ঠ। কারণ তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব বেশী। স্ত্রী-সন্তান, ভাইবোন, আত্মীয় ও বৃদ্ধ বাবামার ভরনপোষণের দায় পুরুষদের। এজন্যই পুরুষরা পিতার সম্পত্তি বেশী পায়।

মেয়েরা কম দ্বায়িত্বশীল, একথা কোন দিক থেকেই ঠিক নয়। বরং তারাই বেশী দায়িত্ববান। নারীই তার পরিবারকে আগলে রাখে, সবার দেখভাল করে। রাতদিন পরিশ্রম করে সন্তান লালন পালন, বাড়ীর যাবতীয় কাজ, স্বামীর কৃষিকাজে সাহায্য, পশুপালন, রান্না,....। কি করেনি মেয়েরা? এখনও কি করেনা? কর্মজীবী নারীরাও ঘরে, বাইরে সব দায়িত্ব সমানভাবে সামলে যাচ্ছে রোজ। দুনিয়াজোড়া মেয়েরা পুরুষের পাশাপাশি সমান কাজ করে সমান আয় করে। বৃদ্ধ বয়সে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরাই আজকাল বাবামার দেখাশোনা বেশী করে।

৪। পুরুষরা আয় করতে পারে, নারীরা আজীবন শুধু বসে বসে খেয়েছে।
তাই পুরুষ নারীর উপর কর্তৃত্ব ফলাবে, এটাই তো স্বাভাবিক।

কিন্তু বাস্তবতা হলো, পুরুষ আর্থিকভাবে ক্ষমতাবান হয় নারীকে বঞ্চিত করে। পুরুষরা পিতার সম্পত্তি বেশী পায়, মেয়েদেরকে তাদের বাবা ও স্বামীর সম্পত্তির অংশ ঠিকমত দেওয়া হয়না, দিলেও তা স্বামী দখল করে। স্ত্রীর বাবার দেয়া সম্পদ, বেতন বা সঞ্চয় কেড়ে নেয় স্বামী। মোহরানা, তালাকের পর খোরপোষ.... এসব ঠিকমত দেয়া হয়না। ফলে নারী আর্থিক দিক থেকে পুরুষের চেয়ে অনেক অনেক বেশী দূর্বল হয়ে যায়। নারীরা পরিশ্রম করে টাকা আয় করতে পারেনি কারণ মেয়েদেরকে আয় করতে বাইরে যেতে দেয়া হয়নি। কারণ তাকে ঘর সামলাতে বাধ্য করা হয়েছে। নাহলে সেও কি ছেলেদের সমান আয় করতে পারতো না?

 ৫। সামাজিকভাবে নারীর সামাজিক মর্যাদা ও গুরুত্ব কম। তাই তার মতের গুরুত্বও কম। তার জীবনের সব গুরুত্বপপূর্ণ সিদ্ধান্ত সে নিজে নিতে পারেনা। তাকে নিতে দেওয়া হয়না, নেয় পুরুষ। কারণ মেয়েদের বুদ্ধি কম। এ কথাটিরও কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। নারীকে দাবিয়ে রাখার জন্য এটি পুরুষের আরেকটি অপপ্রচার ছাড়া কিছু না। 

গড় আকারের একজন নারীর মস্তিষ্ক গড় আকারের একজন পুরুষের অপেক্ষা ১০০-১৩০ গ্রাম কম।মস্তিষ্কের আকার, আয়তন বা সেলের কম বেশীর উপরে বুদ্ধি কম বা বেশী হওয়া নির্ভর করেনা। এখন পর্যন্ত এটাই বৈজ্ঞানিক সত্য।মানুষের মস্তিষ্কের পরিমাণের উপরে নয়, বরং গঠনের উপরে এর উৎকর্ষ নির্ভর করে। গড় শারিরীক শক্তিতে নারী পুরুষের তুলনায় ১২%এর মত পিছিয়ে আছে। কিন্তু তাকে অনন্যতা দিয়েছে তার বিশেষ ক্ষমতা - সেটা হলো নতুন প্রাণ সৃষ্টির সক্ষমতা। আর বিশেষ সক্ষমতার কারণেই মানুষের ইতিহাসের শতকরা পঁচানব্বই ভাগ সময় নারীই সমাজের নেতৃত্ব দিয়েছে। (বিস্তারিত দেখুনঃ লুইস হেনরি মরগানের 'প্রাচীন সমাজ' বইতে।) আর বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি যেভাবে হচ্ছে তাতে মানব ক্লোনিং আইন করে নিষিদ্ধ না হলে সন্তান উৎপাদনের জন্য নারীকে আর পুরুষের দারস্থই হতে হবে না। হাইপোথেটিক্যালি, যদি এই মুহূর্তে পৃথিবী নারী শূন্য হয় তবে সর্বোচ্চ একশ বছরের মধ্যেই মানবজাতি বিলুপ্ত হবে। অন্যদিকে, পুরুষ শূন্য হলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে পৃথিবী নারীস্থান হয়ে উঠবে।

উন্নত বিশ্বে যেখানে জেন্ডার ইকুইটি ও ইকুয়ালিটি নিশ্চিত করা গেছে, সেখানেও গবেষণা খাতে মেয়েদের অংশগ্রহণ ৭%এর কম। গবেষণা খাতে মেয়েদের অংশগ্রহণ কম হবার কারণ অনেক হতে পারে। তবে কম মেধা তার কারণ নয়। কোন পেশায় যুক্ত না হবার একটি বড় কারণ মানুষের ইচ্ছা বা আগ্রহ না থাকা। কিন্তু চাইলে সে ঐ পেশায় যেতে পারবেনা, কারণ তার সামর্থ্য নেই - একথা ঠিক নয়। আবার সামর্থ্য কমে যাবার কারণ দীর্ঘদিনের অনভ্যাসও হতে পারে।

৬। আরেকটি বৈজ্ঞানিক সত্য হলো, পুরুষের তুলনায় নারীর সহ্যশক্তি কয়েকগুণ বেশী। মা প্রতিবার সন্তান জন্ম দেয় একসাথে বিশটা হাড় ভেঙ্গে গেলে যতটা ব্যথা হয়, ততটা ব্যথা সহ্য করে। বাচ্চা হবার আগের দিন পর্যন্ত অধিকাংশ চাকুরীজীবী মেয়ে কাজ করে। বেকার মেয়েরাও শুধু ভারী কাজ ছাড়া বাচ্চা হবার আগের দিনও সব কাজ করে। বিদেশে সন্তান হলে বাবা ও মা উভয়ে মেটারনিটি ও পেটারনিটি লিভ পায়। তারপর তারা উভয়ে কাজে যোগ দেয়।

একটি অনুষ্ঠানে আমি ও আরেকজন আলোচক কথা বলার পর ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্নোত্তর পর্বে এক ছাত্র প্রশ্ন করলো, "আপনারা বলছেন আমাদের দেশে মেয়েরা বৈষম্যের শিকার। তাদেরকে সব সুবিধা কম দেয়া হয়। কিন্তু আমার বাসায় আমি দেখি আমার বাবা সবসময় আমার চেয়ে আমার বোনকে খাবার, জামা, হাতখরচ সব আমার চেয়ে বেশী দেয়। তাহলে মেয়েদের প্রতি বৈষম্য কিভাবে হল?" উত্তরে আমরা বললাম, "খাবার, জামা, হাতখরচ বেশী দিলেও সম্পত্তি, বাড়ী, টাকা দেবার সময় তোমার বাবা ঠিকই তোমাকেই বেশী দেবেন। তাছাড়া বিয়ের আগে বাবার বাড়ীতে মেয়েরা যতদিন থাকে, ততদিন বাবামা একটু বেশী ভালবাসা দেন। কারণ মেয়েটি চিরদিন বাবামার কাছে থাকতে পারবেনা, তুমি থাকবে। এটিও বৈষম্য। বাবার সম্পত্তি কম পাবার কারণে বিয়ের পর বাবার বাড়ীর উপরে তার কোন অধিকার থাকবেনা। সে হবে পরগাছা। আর মেয়েকে বাবামা যতটা ভালবাসেন, শ্বশুর-শাশুড়ী ননদরা ততটা বাসেননা। তাই বিয়ের পর তার কপালে ভালবাসা জুটবে কিনা, এই আশংকায় বাবামা বেশী বেশী ভালবাসেন।"

আরেকজন প্রশ্ন করলো, "মেয়েদের জন্য কোটা পদ্ধতি থাকার কারণে একটি ছেলে পরীক্ষায় মেয়েদের চেয়ে ভাল করেও চাকরী পায়না, মেয়েরা পায়। কিন্তু একটি মেয়ের চেয়ে একটি ছেলের চাকরী পাওয়া বেশী জরুরী। কারণ একজন ছেলে চাকরী পেলে বিয়ে করে একটি বেকার মেয়ের দায়িত্ব নিতে পারে। একটি মেয়ে তা করেনা। চাকরী করলেও একটি মেয়ে বেকার কোন ছেলেকে বিয়ে করেনা। চাকরী না পেলে একটি ছেলে বিয়ে করতে পারেনা, কিন্তু একটি মেয়ে পারে। তাহলে একটি ছেলের চেয়ে একটি মেয়ের চাকরী কি বেশী জরুরী না? তাহলে এক্ষেত্রে ছেলেরাই কি বৈষম্যের শিকার হচ্ছে না?"

এর উত্তর - মেয়েরা চাকরী করতে আসার সুযোগই কম পায়। তার আগেই মেয়েরা বহুবার বহু বৈষম্যের শিকার হয়। ছেলেদের পড়াশোনা জরুরী। কারণ বাবামাকে দেখার দায়িত্ব ছেলেদের। তাই বাবামা ছেলেদেরকে পড়ান, মেয়েদের পড়ান না বা অল্প পড়িয়ে বিয়ে দিয়ে শ্বশুরবাড়ী পাঠিয়ে দেন। কোটা পদ্ধতি রাখা হয়েছে মেয়ে ও মেয়েদের বাবামাকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য যাতে 'চাকরী পাওয়া সহজ', এটা বুঝে হলেও যেন বাবামা মেয়েদেরকে পড়ান বা মেয়েরা পড়ে।

সকার মেয়ে বেকার ছেলেকে বিয়ে করেনা - একথা ঠিক। সে দোষ মেয়েদের নয়। পরিবার, সমাজ ও স্বয়ং পুরুষের। বৌকে কাজে পাঠিয়ে স্বামীরা কি  বউয়ের মত সংসারের সব কাজ করবে? করবেনা। বৌয়ের আয়ে বসে বসে খেতে তাদের সম্মানে বাধে। কিন্তু চাকরী করা বৌদের টাকা নিতে বাধেনা। বৌ, বাচ্চা ফেলে যখন স্বামীরা চলে গিয়ে আবার বিয়ে করে, তখন মা কত কষ্ট করে, লোকের বাড়ী কাজ করে, প্রয়োজনে ভিক্ষা করে সন্তানদের দেখাশোনা করে। নিজের সন্তানের দায় বৌকে দিতে সম্মানে বাধেনা। বৌয়ের বাপের দেয়া টাকা, সম্পদ, এটা সেটা হাত পেতে ভিখারীর মত  (এমনকি বৌকে নির্যাতন করে হলেও) নিতে বাধেনা। বাসাবাড়ীতে কাজ করা মেয়েদের কারো কাছেই তো শুনিনা যে তাদের স্বামীরা বউয়ের টাকা নেয়না!
একজন বলল, "ম্যাডাম, আমরা তো প্রায়ই দেখি শাশুড়ি-ননদ, মানে মেয়েরাই মেয়েদের নির্যাতন করে বেশী। যৌতুকের জন্য তো স্বামী একা বৌকে নির্যাতন করেনা। শাশুড়ি,  ননদও করে। পতিতালয়ে মেয়েদের যৌনকর্মী বানাতে ভূমিকা রাখে এক নারী সর্দারনী। মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে স্বামীর দ্বারা নির্যাতিত হবার পরও মেয়েকে স্বামী ছাড়তে প্রথম বাধা দেয় মা, যে কিনা নারী। কখনও অফিসে নারীকর্মীদের নির্যাতন করে নারী বসরাও। মা নারী হয়ে মেয়ের চেয়ে ছেলেকে বেশী প্রাধান্য দেন। তাহলে মেয়েরা কি পুরুষের চেয়ে নারীদের দ্বারাই বেশী নির্যাতিত ও বৈষম্যের শিকার হয়না?"

হয়। তবে প্রতিটা নারী দ্বারা অন্য কোন নারী যখন নির্যাতনের শিকার হয়, তখন সেই নারীর নির্যাতনকে সহায়তা করে একজন পুরুষ। যেমন - মোটরসাইকেল দেবার জন্য কোন শাশুড়ী বা ননদ যখন কোন বৌকে নির্যাতন করে, তখন এই নির্যাতনকে উস্কে দেয় বৌটির স্বামী বা শ্বশুর, যে কিনা একজন পুরুষ। কারণ মোটরসাইকেলটি তো শাশুড়ি বা ননদ চালাবে না। পরকীয়ার কারণে স্ত্রী একা স্বামীকে খুন করেনা। করে স্ত্রীর পরকীয়ার পুরুষ। এভাবে প্রতিটা নারী দ্বারা অন্য কোন নারী বা পুরুষ নির্যাতনের ক্ষেত্রেই নির্যাতনকারী নারীর পিছনে কোন না কোন পুরুষের প্রচ্ছন্ন ভূমিকা থাকে।









মন্তব্য ২০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৫

নতুন বলেছেন: নারীর চেয়ে পুরুষকে কিছু কারণে শক্তিশালী ও শ্রেষ্ঠ বলা হলেও কারণগুলোর কোন সত্যতা ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

একটা মজার বিষয় হলো নারী সন্তান জন্মদেয় যার ফলেই পৃথিবিতে মানবজাতি টিকে আছে....

নারীরা চাইলে ক্লোনিং মাধ্যমে শুধু নারীর জন্মদিতে পারবে কিন্তু পুরুষ বিলুপ্ত হয়ে যাবে.... তাই নারীদের টিকে থাকার ক্ষমতা পুরুষের চেয়ে বেশি।

আর অবশ্যই নারীরা পুরুষের থেকে কোন অংশে কম না। আমাদের সমাজে নারীদের ঘরের ভেতরে রেখে তাদের নিয়ন্ত্রন করতে পছন্দ করি।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৮

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল থাকুন। শুভেচ্ছা নিরন্তর।

২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৬

আল ইফরান বলেছেন: ক্ষমতায়নের প্রশ্নে যাওয়ার আগে আমার কাছে গুরুত্বপুর্ন হচ্ছে 'ক্ষমতার' মাপকাঠি নির্ধারন করা।
জেন্ডার কনটেক্সটে 'পাওয়ার' এর সংজ্ঞা কি হবে সেই জায়গায়টা ভুলে গিয়ে আমরা শুধু ক্ষমতায়নের কথাই বলে যাই।
অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নই যদি ক্ষমতায়নের প্রধান মাপকাঠি হত তাহলে পুরো বিশ্ব জান্নাতের বাগান হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু সেটা না হয়ে আমাদের মধ্যে পারষ্পরিক অবিশ্বাস ও অহিঞ্ছুতা বেড়ে যাচ্ছে।
আপনার লেখার পয়েন্ট বাই পয়েন্ট এনালিসিস এ যাচ্ছি না, কিন্তু 'ক্ষমতা'র ভিত্তি/মাত্রা/প্রয়োগের ক্ষেত্র নির্দেশ না করে ক্ষমতায়নের কথা বললে কথাগুলো শুনতে ওয়েস্টার্ন হেজেমনির প্রতিধ্বনির মত বলে মনে হয়।
আপনি যেহেতু এই ধারায় পড়াশূনা করেছেন, আশা করি এই বিষয়ের দিকেও সামনের দিনগুলোতে আলোকপার করবেন।
আমি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমতায়নের কথা শুনলে কিছুটা পিছিয়ে যাই, কারন এই নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের নামেই আমাদের পল্লী অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে সুকৌশলে সুদের ব্যবসাকে প্রবেশ করানো হয়েছে ক্ষুদ্র ঋণের সর্বনাশা চক্রে।
আর ক্ষমতায়নের ধারনার পেছনে শক্তিশালী ড্রাইভিং ফোর্স হিসেবে ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদের মার্কেট ইকনমির একটা ভুমিকা আছে।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:২৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন:
বস্তুগত, মানবিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণকে ক্ষমতা বলা হয়। আর ব্যাপক অর্থে নারীর ক্ষমতায়ন বলতে, একজন নারীর স্বকীয়তা, নিজস্বতা সর্বোপরি স্বয়ংসম্পূর্ণতার বিকাশকে বোঝায়। নারী-পুরুষের মধ্যকার অসমতা ও বৈষম্য দূর করে নারীকে পুরুষের সমকক্ষে প্রতিষ্ঠিত করাই হলো নারীর ক্ষমতায়ন। নারীর ক্ষমতায়ন করতে হলে নারীকে ক্ষমতা বিকাশের সুযোগ দিতে হবে। পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা এবং নারীদেরকে শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে। সমাজ ও অর্থনীতিতে নারীর অবদান যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে এবং তাদের উপর নির্যাতন করা প্রতিরোধ করতে হবে, তবেই নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫০

আমার আব্বা বলেছেন: বৌমা বিশ্লেষণ অসাধারন হয়েছে অনেক বড় হবে তুমি।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৯

আলপনা তালুকদার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ শ্বশুর আব্বা। ভাল থাকুন।

৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ২ নং তুলনাটা কোন নারীবাদিকে দিতে দেখিনি কোনদিন। আপনি পতিতার সাথে পুরুষের স্ত্রী রাখার তুলনা টেনেছেন!
যতই গবেষণা আর আলোচনার চেষ্টা করেন না কেন, প্রকৃতি নারী ও পুরুষকে আলাদা করেছে শারীরিক ও মানসিকভাবে। এগুলো টক শো আর সেমিনারেই থাকবে। বাস্তবে প্রয়োগ অনেক দূরের ব্যপার...

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: প্রকৃতি আলাদা করেছে। কিন্তু তার জন্য বৈষম্য, নির্যাতন করতে বলেনি। এত কথা এত তুলনা বার বার আসে শুধু ওদুটো কমানোর জন্য। আমাদের আর কোন উদ্দেশ্য নেই। আমাদের দেশে না হলেও উন্নত বিশ্বে মেয়েরা ওদুটো থেকে অনেকটাই মুক্ত হচ্ছে। আশা করি, একদিন আমাদের মেয়েরাও হবে। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৫| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৯

শামচুল হক বলেছেন: সমান সম্পদ, সমান চাকরী
সেইটা দোষের নয়
সকল ক্ষেত্রেই সমান সমান
এইটা কেমনে হয়?

নারীরা দেয় শিশুর জন্ম
পুরুষ কি তাই পারে,
ছোট্ট শিশুর দুগ্ধ-দানে
দায়িত্ব দিবে কারে?

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১৮

আলপনা তালুকদার বলেছেন: সমান সম্পদ, সমান চাকরী, সমান সম্মান, কোন বৈষম্য ও নির্যাতন থাকবেনা, একসাথে একে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল ও শ্রদ্ধাশীল। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৬| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৩

কামরুননাহার কলি বলেছেন: আপু আপনার এই লেখাটাই আজ আমি সত্যি ধন্য । আমি আপনাকে বলে বুজাতে পারবো না যে এই লেখাটা আমার কাছে কতটা ভালো লেগেছে। খুব খুব খুব ভালো লেগেছে। সত্যিই আপু অসাধারণ লেখেছেন। এই একই কথা নিয়ে আমি বার বার ছেলেদের সাথে বাধাই। কিন্তু ওদের সাথে কিছুতেই আমি পেরি উঠিনা। কিন্তু আজ আপনার এই লেখাটা থেকে আমি অনেক কিছু জানতে পেরেছি। আরো ভালো ভাবে এবং স্পর্শ ভাবে ক্লিয়ার হয়েছি। এখন হয়তো আরো বলতে পারবো।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৪

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৭| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৯

কানিজ রিনা বলেছেন: অসাধারন প্রথমেই অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার ডাইরির লেখাটা কিভাবে তুমি
হুবহু লিখে পোষ্ট দিয়েছ? কি বলব
সব সচেতন নারীর অবক্ত ভাষা তোমার
লেখনিতে উঠে এসেছে। তবে ছবির বাচ্চা
দেখে ভয় হচ্ছিল ইটের গুরো বাচ্চার
চোখে পরেছিল কিনা। সেইত মা যে
আল্লাহ্ প্রদত্ব স্তনের দুধ বাচ্চাকে খাওবে।
তুমি বলো তা পুরুষের দিয়েছে কি?
সেইত মা যার পায়ের তলে বেহেস্ত।
আর মায়ের বুদ্ধি কম থাকলে সন্তান
মায়ের উদরে তিল তিল করে বড় হয়ে
বেড় হয়ে আসে মায়ের বুদ্ধি নিয়ে।
ভাল থাকো এই কামনা।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ আপা। ভাল থাকুন। আপনাদের অনুপ্রেরণা পাই বলেই লিখে যাই। শুভেচ্ছা নিরন্তর!!!!

৮| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ২:০৫

প্রামানিক বলেছেন: সব জায়গায় নারী পুরুষ সমান ভাবা ঠিক হবে না। কোন কোন ক্ষেত্রে নারীই শ্রেষ্ঠ এবং সেখানে নারীই শ্রেষ্ঠ সম্মানের অধিকারী।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৩০

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জ্বি, অবশ্যই। কিন্তু দুঃখের বিযয় হলো, অধিকাংশ পুরুষ এই কথাটা মানতে চায়না। তারা নিজেদেরকেই শ্রেষ্ঠ বলে। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। ভাল থাকুন। শুভকামনা।

৯| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৩

শুভ_ঢাকা বলেছেন: ম্যাম, আপনার পোস্টে ব্যবহৃত ছবি একবিংশ শতাব্দীতে এসেও বা বাস্তব জীবনে এর চেয়েও ভয়াবহ ছবি দেখতে হয়, যা আমার মনে তীব্র ক্ষোভ ও কষ্টের উদ্বেগ করে।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৪

আলপনা তালুকদার বলেছেন: এটাই বাস্তবতা। তবু আমাদের মানসিকতা বদলায় না। কষ্টটা এখানেই। ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

১০| ১৭ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৩৮

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: এই যে ছবিটা ।এটা একটা বাস্তব চিত্র।
তার অনেক বড় পরিচয় ।। তিনি শিশুটির মা ।।আর সন্তানের জন্য তার কি লড়ায়।।
বেচে থাকার লড়ায়।।। যে তো এখানে যুদ্ধা ।।।একজন কর্মী ।।
একজন খেটে খাওয়া মানুষ ।।।।। শ্রদ্ধা সবসময় এই সব মায়েদের
প্রতি ।।।

১৭ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:১১

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.