নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্নে সমুদ্র পারি দেওয়া ছেলেটি জেগে উঠে দেখে সে মাত্র বিছানার এপাশ ফিরে ওপাশে শুয়েছে মাত্র

অমিত বসুনিয়া

পৃথিবীর মৃত্যু ঘটুক শূধু তৃনলতাগুলো বেড়ে উঠুক , ছুয়ে দিক নীল আকাশের ভ্রান্ত সীমানা ।

অমিত বসুনিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

অস্পষ্ট ভালোবাসা - পর্ব ১

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫৪


এই ছেলে এই
দূরে একটা মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ধমকের সুরে ডাকছে , মনে হয় যেন আমি কিন্ডারগার্ডেন এর স্টুডেন্ট আর সে সেখানকার বদরাগী মিস । নিশ্চিত হবার জন্য আমি বললাম
- আমাকে বলছেন ।
- নাহ পাশে দ্বারিয়ে থাকা বটগাছ টাকে বলছি ।
- ওহ তাই বলুন , আমি ভাবছি আবার আমাকে বলছেন নাকি ।
- হ্যা তোমাকেই বলছি ।
- বলুন ।
- তুমি এখানে প্রতিদিন দ্বাড়িয়ে থাক কেন ?
- বটগাছের সাথে খোলা রাস্তা বৈঠক করি তো তাই ।
- বটগাছের সাথে বৈঠক । বিরক্তি মিশ্রিত কন্ঠে - আর এই খোলা রাস্তা বৈঠক আবার কি ?
- ঐতো মানুষ করে গোল টেবিলে বসে গোল টেবিল বৈঠক , সেরকম খোলা রাস্তায় দ্বাড়িয়ে খোলা রাস্তা বৈঠক ।
- তা হোক তোমার খোলা রাস্তা বৈঠক , তুমি আর কাল থেকে এখানে দ্বাড়াবে না ।
- কেন ? আপনি কি এই জায়গায় কোন বিলবোর্ড বসানোর চিন্তার করছেন ?
- নাহ স্মৃতিসৌধ বানাবো ।
- টাকা কি নিজে দিচ্ছেন নাকি সরকার দিচ্ছে ।
- সেটা জেনে তুমি কি করবে ।
- নাহ সরকার দিলে সেখান থেকে আমিও কিছু ভাগ পাই তো ।
- তুমি ভাগ পাও মানে ?
-আপনি আমার খোলা রাস্তা বৈঠকের ভেনু থেকে আমাকে উৎখাত করছেন আর আমাকে সান্তনা হিসেবে কিছু অর্থকড়ি দিবেন না ?
- ও তাই তোমাকে আমার অর্থকড়ি দিতে হবে ।
- সবাই তো দেয় , আপনি কেন দিবেন না ?
- কারন তোমাকে আমি চিনি না ।
- চিনতে চান ? নামঃ রুপক, বাসাঃ আপনার বাসা থেকে ডানপাশে ৪ টা বাসা পরে গেলে যে গলিটা পাওয়া যায় সেটার শেষ মাথার নারিকেল গাছ ওয়ালা বাড়িটা । বাবা ভাঙ্গাড়ির ব্যাবসা করে , মা পিওর গৃহিণী , বোন স্কুল পড়ুয়া । আমি ঢাকা ভার্সিটির সাইকোলজি বিভাগের ২য় বর্ষে পড়ি । আর কিছু জানতে চান ?

কোন রকমে কথাগুলো শেষ করে দেখি মেয়েটি চলে যাচ্ছে , আমি তার চলে যাওয়া দেখছি ...।
শেষে লোকে অন্য কিছু ভেবে নিবে সেই কথা চিন্তা করে ঘুরে বাড়ির দিকে রওনা হলাম ...।
পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ঠোটে লাগালাম , পকেটে হাত দিয়ে লাইটার বের করে জ্বালাতে গিয়ে দেখি লাইটারের ফুয়েল শেষ ।
কিছু কিছু জিনিস আছে যেগুলো আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় কিন্তু সেই কাজগুলো করতে ভুলে যাই , যেমন বাথ্রুমের লাইট অফ করা , লাইটের ফুয়েল ভরা, আন্ডারগার্মেন্টস কেনা ইত্যাদি ইত্যাদি ...
বাসায় এসে দেখি আম্মু শুটকি মাছের সাথে কচুর ডাটা রান্না করেছে , হাত্মুখ ধুয়ে এসে খেতে বসলাম ।
খেতেই বসেই আম্মু শুরু করলো তার রেগুলার নীতিকথামুলক বকবকানী ।
- কিরে দিন দিন শুকায় যাচ্ছিস ক্যান ? কই থাকিস সারাদিন । ঘোরাঘুরি একটু কম কর আর খাওয়া দাওয়া এক্টূ বাড়া ।
আমি চুপ চাপ খাচ্ছি , আম্মু হুট করে আরো দেড় চামুচ ভাত তুলে দিলো । আমি জানি এই মুহুর্তে "না" কথা বলা মানেই বিপদ , বাধ্য ছেলের মতো খেয়ে উঠলাম ।
বিছানায় গিয়ে শুইলাম কেবল তন্দ্রা মতো এসেছে , দেখি সেই মেয়েটা । যে আমাকে আজ ছোটবাচ্চার মতো বকেছিলো ।
তার চোখে গোল ফ্রেমের গোলাপি কালারের চশমা । বা হাতে জীবনানন্দ দাশের "রুপসী বাংলা" আর ডান হাতে একটা বড়সড় সাইজের মোবাইল ফোন ।
এই সব ভাবতে ভাবতে কখন যে তন্দ্রা থেকে এগিয়ে গিয়ে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেছি ...।
সকালে ঘুম থেকে উঠলাম বিশ্রি রকমের এলার্ম টার কারনে । কেন যে সকাল ৯ টায় এলার্ম দিতে গেছিলাম । পৃথিবীর কিছু মহান আবিস্কার আমার জন্য নয় । এলার্মটার হচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম । এলার্ম বন্ধ করে আবার ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতে গেলাম , হঠাৎ মনে পরে গেলো একটা ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাস আছে ভার্সিটি যেতে হবে ।
বেকায়দা মতো উঠতে গিয়ে খাটের পায়ার সাথে আমার কোমর বাড়ি খেল । এক হাতে কোমর মালিস করতে করতে বাইরে বের হলাম ।
এসে দেখি আম্মু কি জানি কি নিয়ে আব্বুর সাথে চিল্লাচিল্লি করছে । রোজকার কাহিনী তাই গায়ে তেমন লাগলো না । আমি এক হাতে কোমরমালিস করতে করতে আরেক হাতে ব্রাশ টা নিয়ে বাথ্রুমে ঢুকলাম । বাথ্রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে মলম খুজছি , কোথায় রাখছি খুজে পাচ্ছি না । দরকারী জিনিস গুলো সময়মতো কখনোই পাওয়া যায় না জানতাম । তাই নাস্তার টেবিলে বসে এক খানা শুকনো রুটী চিবোতে চিবোতে এক মগ কফি বানালাম । শান্তি মতো কফি খেয়ে বের হলাম ভার্সিটির উদ্দেশ্যে ।
ভার্সিটির ক্লাস শেষে আবার হাজির হলাম সেই কালকের জায়গায় ।
আজকে জায়গাটার মধ্যে কোথায় যেন একটা বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম । দক্ষিনের দিকের আম গাছটায় আজকে কোন পাখি নাই , তার
পাশের বাড়িটায় আজকে কোন চিৎকার চেচিমেচি নাই । তার বদলে বাড়ির সামনে একটা ভাঙ্গা বাস দ্বাড়িয়ে । বাস টার উপরে একটা খুপরির মতো জায়গায় একটা চড়ুই পাখির বাসা , পাখিটী কোথাও দেখতে পাচ্ছি না । হয়তো সেও কোন কাজে বেড়িয়েছে । পাখিদের আবার একটাই কাজ খাদ্য খোজা । দূর থেকে পাখির বাসাটায় একটা ডিম দেখা যাচ্ছে । আমি সেদিকে তাকিয়ে আছি হঠাৎ উপরের দিকে তাকিয়ে দেখি একটা বাজপাখি উড়ছে সেই পাখির বাসাটার উপর । আচ্ছা বাজপাখি কি ডিম খায় ? কে জানে ......
এমন সময় সে মিস কিন্ডার গার্ডেন হাজির ।
- এই যে , আপনি আজকেও এসেছেন । ( বাহ ভালো ব্যাপার তো আজকে তুমি থেকে আপনিতে চলে এসেছে , আমিও একটু হিমু সাজার

চেস্টা করলাম )
- হ্যা আসলাম এই পাখিটি দেখতে , তুমি কেমন আছো ?
মেয়েটি হতবাক হতে গিয়েও নিজেকে সামলে নিলো
- হিমু সাজার চেস্টা করছেন ? আর কোন পাখির কথা বলছেন ঐটা তো কালকে ছিলোই না , আপনি কেমন করে জানলেন ?
এতক্ষন আমার আসলেই খেয়াল ছিলো না আসলেই তো বাস আস্লো ঠিক আছে , কিন্তু সেই সাথে পাখির বাসা ? চড়ুই পাখি মানুষের বাসাতে নিজের বাসা বাধে । এখন আবার বাসের উপরে । হয়তো বেচারা এটাকেও মানুষের বাসা ভেবেনিজের বাসা বেধেছিলো কিন্তু বাস টি ডিম সমেত পাখির বাসা নিয়ে এখানে এসে পড়েছে । কে জানে চড়ুই পাখিটি আদৌ এই বাসার পরিবর্তনের কথা জানতে পেরেছে কি না ।
- এই যে কই হারায় গেলেন ?
- নাহ ভাবছিলাম এই পাখির বাসাটার মালিক এর কথা বেচারা , বেচারী হয়তো বাইরে গেছে এসে দেখে তাদের বাসার পরিবর্তন হয়েছে ।
- ভাবুন ভালো করেই ভাবুন । ভাবতে ভাবতে পক্ষী বিশারদ হয়ে যান , কিন্তু আপনাকে না বলেছি আপনি এখানে আর দ্বাড়াবেন না ।
- কই আপনি তো আমার ভাগের টাকাটা দিলেন না ......।
মেয়েটির ভ্রু অসম্ভব রকম কুচকে গেলো । মেয়েটিকে বলতে ইচ্ছা করছে তার রাগী চেহারায় যতটা সুন্দর দেখায় ভ্রু কোচকানো অবস্থায় তার চেয়ে কয়েকগুন বেশি কুৎসিত দেখায় ।
- দেখেন ।
- কি দেখবো ?
মেয়েটি বিরক্ত হচ্ছে আর আমি উপভোগ করছি একটা মেয়ে কতোটা কুৎসিত হতে পারে ।
হঠাত করেই মেয়েটা চলে গেলো , ঠিক কালকের মতো করে । দেখে মনে হচ্ছে গতকালকের ক্রিকেট ম্যাচে টিভি রিপ্লে দেখানো হচ্ছে । আমি মুগ্ধ হয়ে দেখছি ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০২

Palash Talukder বলেছেন: অসম্ভব সুন্দর হয়েছে

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৫

অমিত বসুনিয়া বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.