নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্বরতায় জানোয়ারকেও হারিয়ে দিয়েছে মানুষ (!)

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৬

ধর্ষণের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে। ধর্ষিতা নারীর আর্তনাদের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ধর্ষকদের উল্লাস। মারাত্মক এই ব্যাধিটি সমাজের অবক্ষয়ের চূড়ান্ত প্রমাণ। ২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দেশে ৪ হাজার ২১৯ জন ধর্ষনের শিকার হয়েছে। ১ হাজার ৮৪৪ জন গণধর্ষন হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের এক প্রতিবেদনে জানা যায়-১৯৯৭ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ধর্ষনরে শিকার হয়েছে ১৪১২৮ জন। ১৯৯৭ তে ১৩৩৬, ১৯৯৮ তে ২৯৫৯, ১৯৯৯ তে ৩৫০৪, ২০০০ তে ৩১৪০, ২০০১ সালে ৩১৮৯ জন ধর্ষনের শিকার হয়েছে। এ সময় ৩ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বুড়ী পর্যন্ত ধর্ষনের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫ বছরের নারী নির্যাতনের চিত্র তুলে প্রতিবেদনে জানায়- ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে ৫ হাজার ৪৯৫ টি খুন ও ধর্ষনের পর হত্যা, গণধর্ষন ও ধর্ষন ৩ হাজার ২৪৬ টি। অপর এক জরিপে দেখা যায়-২০০৩ থেকে ২০০৯ এর অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে ৫০০০ নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষনের শিকার হয়েছে।



পুলিশের বার্ষিক অপরাধ সম্মেলনে সি আইডির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় -২০০৯ সালে ধর্ষনের অভিযোগে মামলা হয়েছে ২৯৭২ টি। দেশে গড়ে প্রতিদিন ৮ টি ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়-২০০৯ সালের ১ জানুয়ারী থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে শুধু ধর্ষনরে পর হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ৯৭ জন নারী ও কন্যাশিশু। আর ধর্ষনের শিকার হয়েছেন ৪৫৪ জন নারী। এর মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্ত নারী ২১১ জন এবং কন্যা শিশু ২৪৩ জন। গণধর্ষনরে শিকার হয়েছেন ৯৭ প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও ৭৯ কন্যাশিশু ।



মানুষ যে জানোয়ারকেও ছাড়িয়ে যায় তার অন্যতম প্রমাণ হচ্ছে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যা। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীর গলায় চাকু ঠেকিয়ে ধর্ষণ করে নুলণ্ডী গ্রামের মৃত আলিমুদ্দিনের ছেলে সজিব হোসেন ওরফে সবজেল (৩০)। সন্ধ্যার পর মেয়েটি নিজ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিল। এ সময় প্রতিবেশী সবজেল ধারালো চাকু হাতে তাকে জিম্মি করে পাশের একটি নির্জন ভিটায় নিয়ে যায়। গলায় ধারালো চাকু ঠেকিয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখায় সে। এর পর ঘণ্টাখানেক আটকে রেখে সবজেল তাকে দু’বার ধর্ষণ করে।



কুকুরের চেয়েও নিৎকৃষ্ট না হলে কি কোন শিক্ষক ৩২ ছাত্রীকে ধর্ষণ করতে পারে? ভারতের মিজোরামে নির্যাতনের শিকার দুই ছাত্রীর অভিভাবকের অভিযোগের ভিত্তিতে চম্পাইয়ের এক শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। মিজোরামের সাইচল ভিলেজ প্রাইমারি স্কুলের ওই শিক্ষক তিন বছর ধরে ৩২ জন ছাত্রীকে দিনের পর দিন ধর্ষণের পাশাপাশি নানাভাবে যৌন হেনস্তাও করেছেন। নির্যাতিত ছাত্রীরা আট থেকে ১২ বছর বয়সি। এ ঘটনা যাতে বাইরে না জানানো হয়, সে জন্য নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের কঠিন হুমকিও দিতেন।



কতটা খারাপ রুচির হলে ধর্ষিতাকে ব্ল্যাকমেইল করে ফের ধর্ষণের চেষ্টা করা সম্ভবপর হয়। ভারতের উত্তরপ্রদেশের মীরাট জেলার নবাবগড়ি গ্রামে ২০ বছর বয়সী এক যুবতীকে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী এক যুবক। ঘটনার সময় নির্যাতিতা ঘরে একা ছিল। এই সুযোগে অভিযুক্ত ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে ও মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ক্লিপ তৈরি করে রাখে। এরপরই ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দিয়ে সে ফের যুবতীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। নির্যাতিতাকে হুমকি দেয় যে ঘটনার কথা কাউকে জানালে সে ভিডিও ফাঁস করে দেবে। যুবতী ঘটনার প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত তার বন্ধুদের সঙ্গে মিলে যুবতীকে মারধর করে।



গাড়ি কেনার জন্য পাঁচ লাখ টাকা না পেয়ে এক স্বামী নিজের স্ত্রীর অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে তাকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে। কিন্তু তারপরও স্ত্রী টাকা না দেয়ায় ওই অশ্লীল ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলেন স্বামী। ভারতের পাঞ্জাবের সুজানপুর এলাকার ঘটনা। সুজানপুরের বাসিন্দা মহিলাটি জানিয়েছেন, ২০০৮ সালে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পরই তারা দুজনে পুনে ঘুরতে যায়। সেখানেই তার একটি অশ্লীল ভিডিও বানিয়েছিলেন তার স্বামী। সেটি মহিলাকে দেখানোর পর তিনি সেটি মোবাইল থেকে মুছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বিয়ের পর তাদের একটি ছেলে হয়, যার বয়স এখন পাঁচ বছর এবং তাদের সংসার ভালোভাবেই চলতে থাকে। কিন্তু বিয়ের প্রায় ছয় বছর কেটে যাওয়ার পর তার স্বামী গাড়ি কেনার জন্য তাকে বাপের বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলে। স্বামী মহিলাকে পুনেতে তৈরি করা ভিডিও ইন্টারনেটে ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দেয়।কিন্তু মহিলার বাপের বাড়ি গরিব হওয়ার কারণে তারা টাকা দিতে পারেননি। মহিলার অভিযোগ কিছুদিন আগে সে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অনুষ্ঠানে যায়। সেখানেই তাকে কিছু যুবক অশ্লীল কথা বলতে থাকে। তাদেরকে এমন ব্যবহারের কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা অশ্লীল ভিডিও ইন্টারনেটে ফাঁস হওয়ার কথা জানায়।



আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় পর্নো ছবিতে ঢাবি শিক্ষার্থীরা যুক্ত থাকবে, পর্নোছবি তৈরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খেয়ে পুলিশের কাছে প্রেপ্তার হবে। রাজধানীর নিমতলীর হোটেল সুফিয়া থেকে রাতে মোট ১১জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ জন শিক্ষার্থী ছিল। এদের মধ্যে চারজন মেয়ে ও সাতজন ছেলে । আটককৃতরা এ সময় পর্নো ছবি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছিল। পুলিশ এ সময় ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ পর্নো ভিডিও, পর্নো সিডি, পর্নো ম্যাগাজিন, পর্ন মুভি তৈরির সরঞ্জাম ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করে। এলাকাবাসী জানায়, মাঝে মাঝেই হোটেল সুফিয়াতে এ ধরনের অপকর্ম চলতো। স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে এই অপকর্ম করা হয়। এ নিয়ে হোটেল মালিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ ওই হোটেলের কারণে এলাকার যুবক ছেলে-মেয়ে গোল্লায় যাচ্ছে।



দেশে দেশে এটিএম বুথ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। বেশ কিছু দিন ধরে এই এটিএম বুথে আস্তানা খুঁজে নিয়েছে প্রেমিক-প্রেমিকারাও। অরক্ষিত এটিএম তো বটেই, বহু সময়ে নিরাপত্তাকর্মীকে টাকার বিনিময়ে সরিয়ে দিয়ে ঘুপচি ঘরে শরীরী প্রেমে মেতে উঠছেন প্রণয়ী যুগল। এমনকি, টাকা পেলে রক্ষীরা যেচে কিয়স্কের দরজার সামনে পাহারা দিতেও বসে থাকছেন বলে অভিযোগ। অন্য গ্রাহক সেই সময় এটিএম ব্যবহার করতে এলে তাঁদের ঠেকিয়ে রাখাই সেই সময়ে পাহারাদারের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রক্ষীকে সরাতে পারলেও প্রেমিকদের অজান্তে দিব্যি খোলা থেকে যাচ্ছে এটিএম-এ বসানো সিসিটিভি ক্যামেরার চোখ। আর তাতেই ধরা পড়েছে এটিএম যন্ত্রকে সাক্ষী রেখে অবাধ যৌনতার ফুটেজ।



তিন বছরের শিশু সন্তানকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রে এক প্রেমিকযুগলকে আটক করা হয়। স্কট ম্যাকমিলান নামের ওই শিশুটিকে প্রথমে ফ্রাইপ্যান দিয়ে আঘাত করেন গ্রে লি ফেলেনবাউম। পরে তাকে দড়িতে ঝুঁলিয়ে লোহার রড দিয়ে পেটানো হয। নাস্তা খাওয়া নিয়ে বায়না ধরায় তাকে শিক্ষা দিতেই এই শাস্তি। শিশুটিকে চেয়ারের সঙ্গে বেধে মারধোর করা হয়। এক পর্যায়ে তার পা দুটি নিচের দিকে ঝুঁলিয়ে সিলিংয়ের সঙ্গে বেধে ফেলেন ফেলেনবাউম। এরপর তাকে পেটাতে থাকেন। পাশবিকতার খানেই শেষ নয়। শূণ্যে ঝুলে থাকা শিশুটির মাথা বেশ কয়েকবার দেয়ালে ঠুকে দেয়া হয় সজোরে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে আসে স্কটের দেহ। এসময় তার মা জিলিয়ান টিইট(৩১) ছেলেকে রক্ষার চেষ্টা না করে সঙ্গী গ্রে লি ফেলেনবাউমের সঙ্গে মিলে হাসাহাসি করছিলেন। মৃত শিশুটিকে ফেলে রেখে তারা গাড়ি নিয়ে বাইরে বেড়াতে যান। ফেরার পথে পিৎজা কিনে আনেন এবং রাতে খাওয়া দাওয়ার পর যথারীতি বিছানায় যান এবং সেক্সও করেন। ওয়ালমার্টে কাজ করার সময় ২৩ বছর বয়সী ফেলেনবাউমের সঙ্গে দেখা হয় জিলিয়ান টিইটের। পরে তারা দুজন একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন। ফেলেনবাউমের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীও তাদের সঙ্গেই ছিলেন। ফেলেনবাউমের দুই ছেলে। তাদের বয়স যথাক্রমে ছয় ও তিন বছর। আর জিলিয়ানে রয়েছে ১১ মাস বয়সী এক মেয়ে। তারা সবাই মিলে ফিলাডেলফিয়া অঙ্গরাজ্যের কোটেসভিলে একটি ভাড়াবাসায় থাকতেন। এ পাশবিক নির্যাতন ঠেকাতে এগিয়ে আসেনি ফেলেনবাউমের সাবেক স্ত্রী আম্বের ফেলেনবাউম(২১)।



গুজরাটের ভদোদরায় ১৫ বছরের এক নাবালিকা নিজের প্রেমিকের জন্য তার বাবা-মা’কে খুন করেছে এবং প্রমাণ লোপাটের জন্য বাড়িতেই সে প্রেমিকের সঙ্গে মিলে প্রায় ৭২ দিন ধরে অ্যাসিড দিয়ে মৃতদেহ পোড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে৷ নাবালিকা তার প্রেমিকের সঙ্গে মিলে খাবারে অজ্ঞান করার ওষুধ মিলিয়ে তাদের অজ্ঞান করে এবং ফের তাদের ছুরি দিয়ে আঘাত করে খুন করে৷ অভিযুক্ত নাবালিকার বয়স ১৫ বছর এবং ওই পরিবার মেয়েটিকে দত্তক দিয়েছিল৷ নাবালিকা দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল৷ ২১ বছরের এক যুবকের সঙ্গে তার প্রেম সম্পর্ক ছিল৷ তবে প্রেমিককে পছন্দ করত না তার বাড়ির লোক৷ খুনের ঘটনা ঘটানোর পর দুই অভিযুক্ত শারীরিক সম্পর্কও স্থাপন করে নাবালিকা গর্ভবতী হয়৷ ৬৩ বছরের পুরুষোত্তম ও তার স্ত্রী স্নেহার মৃতদেহ পুলিশ ভদোদরায় তাদের বাড়ি থেকেই উদ্ধার করে৷



২০০৪ সালের ২২ আগষ্ট। রাজধানী ঢাকার অদুরে সাভারের জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গার্মেন্টস কর্মী রাহেলা আক্তার লিমা নামের ১৯ বছরের এক তরুণীকে একদল নরপশু রাতভর উপর্যুপরি ধর্ষনের পর ধারালো ছুরি দিয়ে তার শরীরকে ক্ষত বিক্ষত করে। গলা কেটে দেয়। তারপর বর্বরোচিত ভাবে তরণী রাহেলার স্পাইনাল কর্ডূ ছুরি দিয়ে ছিন্ন ভিন্ন করে ধর্ষকরা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নীরব নির্জন একটি ময়লা আবর্জনার স্তুপে রাহেলার নিথর দেহ ফেলে চলে যায় ঘাতক দুর্বৃত্তরা। তারা ভেবেছিল রাহেলা মারা গেছে। ঘটনার তিনদিন পর নরপশু ধর্ষকেরা রাহেলার মৃত দেহের হাল জানতে এসে দেখতে পায়, রাহেলা বেঁচে আছে এবং প্রচন্ড পিপাসায় পানি! পানি! বলে অস্ফুট চিৎকার করছে। রাহেলার এই জীবন্মৃত অবস্থায় ধর্ষকরা রাহেলাকে পানির পরিবর্তে তার সারা দেহে ঢেলে দেয় এসিড। মেয়েটির মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে বর্বর ধর্ষকরা স্থান ত্যাগ করে। তারপরেও কিভাবে যেন রাহেলা বেঁচে যায়। দগ্ধ,গলাকাট ও পচন ধরা দেহ নিয়ে রাহেলা বেঁচে ছিল। বার বার পানি পানি বলে চিৎকার করছিল সে। পরের দিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাগানের এক মালি স্তুপের ভেতরে নিথর,দগ্ধ,পঁচাগলা শরীরের রাহেলাকে আবিস্কার করে। তখনো রাহেলা জীবিত। এরপর পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত রাহেলাকে নিয়ে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তিন দিন পর তার জ্ঞান ফিরলে সে জবানবন্দী দেয়। কিন্তু ঘটনার ৩৩ দিনের মাথায় রাহেলা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। স্বামী তার লাশ গ্রহন করেনি, জায়গা হয়নি শুশুর বাড়ীতে।



ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূ ও তার দুই সন্তানকে হত্যা করেছে গৃহশিক্ষক তারেক। সে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েই তাদের হত্যা করেছে। তিনজনকে একাই হত্যা করে তারেক। তদন্ত টিমের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে ধর্ষণের চেষ্টা করতে গিয়ে গৃহবধূ ডলির সাথে তার ধস্তাধস্তি হয়। শিশু দুটি তখন অন্যরুমে পড়ছিল। শব্দ পেয়ে ছুটে তারা আসে। তখন তারেক তাদের অন্যরুমে আটকে রাখে। এসময় আবারো বাধা দেয় ডলি। এতেই তারেক হাতে ব্যথা পায়। একপর্যায়ে চোখ পড়ে দা ছোরার দিকে। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে প্রথমে ডলিকে হত্যা করা হয়। পরে প্রমাণ সরিয়ে ফেলার চেষ্টায় খুন করা হয় তার শিশু আলভী বিন আনোয়ার এবং কন্যা শিশু আদিবা বিনতে আনোয়ারকে। ২২ বছর বয়সী তারেক কুলগাঁও সিটি কর্পোরেশন কলেজের ছাত্র।



২০১২ সালের ৭ ডিসেম্বর, টাঙ্গাইলরে মধুপুরে এক স্কুলছাত্রীকে বন্দী করে বন্দী করে রেখে পরপর তিনদিন গণধর্ষণ করে ধর্ষকরা। মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে ১০ ডিসেম্বর ধর্ষকরা তাকে সদর উপজেলার রসুলপুর এলাকায় রেললাইনের ওপর ফেলে রেখে যায়। স্থানীয় লোকজন অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে মেয়েটিকে ঢামেক হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। ওসিসিতে চিকিত্সাধীন ওই স্কুলছাত্রীকে দেখতে এসে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পুরো বাংলাদেশ এখন ধর্ষিত।



ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন আপেল ও আয়েশা। কিন্তু বিয়ের ৪ মাসেই বখাটেদের কারণে স্বামীকে হারালেন কুমিল্লা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী আয়েশা। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় বখাটেদের ছুরিকাঘাতে আয়েশার স্বামী ছাত্রলীগ নেতা নুরুল ইসলাম আপেল দুপুরে কলেজের প্রধান গেটে খুন হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী আয়েশা আক্তারকে বেশ কিছুদিন ধরে কয়েক বখাটে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। আয়েশা বিষয়টি তার স্বামীকে জানায়। আপেল দুপুরে কলেজে গিয়ে বখাটে অপু, বিপু, দিপু, রাসেল, সুমন ও সাকিবদের কাছে জানতে চাইলে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বখাটেরা আপেলের বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়।



টঙ্গীতে আঁখি ও আলপনা নামের দুটি শিশু ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলায় স্থানীয় ব্রাক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর এগার বছর বয়সী শিশুকে প্রতিবেশী বখাটেরা গণধর্ষণ করে। বরিশালের হিজলায় বিকালে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। একই গ্রামের কবির হোসেন আকন তাকে কোড়ালিয়া গ্রামের ধলু চৌকিদারের বাগানে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।



নগ্ন ছবির ব্ল্যাকমেইলের শিকার থেকে বাঁচতে বিএম কলেজের ছাত্রী সুপর্ণা আত্মহত্যা করে। বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২য় বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে নগরীর কেডিসির বালুর মাঠ এলাকার আমিনুল ইসলাম রিয়াজের দৈহিক সম্পর্ক হয়। সুযোগ বুঝে রিয়াজ তার মোবাইল ফোনে প্রেমিকার নগ্ন ছবি ধারণ করে। মনোমালিন্য দেখা দিলে রিয়াজ ওই নগ্ন ছবির কথা উল্লেখ করে ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা চালায়। এর কয়েকমাস আগে রিয়াজের প্রথম স্ত্রী সরকারি মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী শারমিন স্বামীর বদচরিত্রের কারণে কলেজের ছাদে নিজ গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করে। বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের ছোট ভাইজোরা গ্রামে মাদরাসা ছাত্রী জেনী আক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত হয় প্রধান শিক্ষক।



২০১২ সালের ১৬-ই ডিসেম্বর সন্ধ্যেয় তেইশ বছরের এক ছাত্রী তার পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে নতুন দিল্লীর শহরতলীতে 'লাইফ অফ পাই' নামে একটি জনপ্রিয় সিনেমা দেখতে গিয়েছিল । সিনেমা শেষে দুই বন্ধুর বাসে করে ফেরার ভয়ঙ্কর বৃত্তান্ত শুধু ভারতীয়দের নয়, সারা পৃথিবীর জনসমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছে। চলতি বাসের মধ্যে ছজন যুবক মিলে মেয়েটিকে বীভৎসভাবে ধর্ষণ করে এবং তার বন্ধুকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। সেই পৈশাচিক গণধর্ষণের ফলে বারো দিনের মাথায় মেয়েটি মারা যায় । দিল্লিতে এক ছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা গোটা ভারতকেই নাড়িয়ে দেয়। এর কিছুদিন পরই ২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে (মানিকগঞ্জ এলাকায়) চলন্ত বাসে এক পোশাককর্মীকে ধর্ষণ করে দুই বাসকর্মী।



ভারতে বেশ কিছু ধর্ষণের কেস কুখ্যাত হয়েছে । যেমন ১৯৭২ সালে মহারাষ্ট্রের পুলিশ থানায় আদিবাসী মেয়ে মথুরার ধর্ষণ - ধর্ষণকারী দুই কনস্টেবল; ১৯৭৩ সালে মুম্বাইয়ের হাসপাতালের মধ্যে নার্স অরুণা শানবাগের বীভৎস ধর্ষণ - ধর্ষণকারী এক সহকর্মী; ১৯৯১ সালে কাশ্মিরে প্রায় ৫১ জন মহিলার গণধর্ষণ - ধর্ষণকারী ভারতীয় সৈন্যবাহিনী; ১৯৯২ সালে রাজস্থানে সমাজসেবী ভঁয়োরী দেবীর গণধর্ষণ - ধর্ষণকারী গ্রামের মুরুব্বী স্থানীয় ব্যক্তিরা; ১৯৯৬ সালে কেরালায় ষোল বছরের মেয়েকে চল্লিশ দিন বন্দী অবস্থায় রেখে গণধর্ষণ; ১৯৯৮ সালে কলকাতায় বাংলাদেশী পর্যটক হানুফা খাতুনের গণধর্ষণ; ২০১২ সালে কলকাতায় সুজেট জর্ডনের গণধর্ষণ, ইত্যাদি । এঁরা ছাড়াও বহু বিদেশী মহিলা ভারতে পর্যটনে এসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন । এই ভয়াবহ তালিকার শেষ নেই।



মধ্য ব্রাজিলের গোইয়ানিয়ায় ৯ মাসে ৩৯টি খুন হওয়ার পর ধরা পরে খুনি। গোটা এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করেছিল ২৬ বছর বয়সী তিয়াগো এনরিকে গোমস্ দা রোকা। রাতের বেলাতেও লোকজন একলা বেরোতে ভয় পাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ এতগুলি খুন কেনই বা করতে গেল সে? তিয়াগো জানায়, এগারো বছর বয়স পর্যন্ত আমার ছোটবেলা আর পাঁচটা সাধারণ বাচ্চার মতোই ছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন পড়শি এক মহিলা আমায় যৌন হেনস্থা করে। বয়সে ছোট ছিলাম, তার উপর সে রীতিমতো আমায় হুমকি দিত যে, কাউকে জানালে কপালে দুর্ভোগ রয়েছে। দিনের পর দিন আমি মুখ বুজে সেই অত্যাচার সহ্য করেছি। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমি প্রচুর মদ্যপান শুরু করি। সে সময়ই ধীরে ধীরে একটা দুর্দমনীয় রাগ আমার মধ্যে তৈরি হয়। যখন ২২ বছর পূর্ণ করি, তখন এই রাগকে দমন করার আর কোনও উপায় আমার কাছে ছিল না।



ভারতের উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে ধর্ষণের পর খুন করে এক কিশোরীকে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। হামিরপুরের এক নারী চার পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। নিগৃহীতা মহিলা অভিযোগ করেছেন তাঁর স্বামীর মুক্তির বিষয়ে কথা বলতে তিনি রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ পুলিশ স্টেশনে যান। সেই সময়ে থানায় এক সাব-ইন্সপেক্টর ছাড়া আর কেউই ছিল না। ওই সাব-ইন্সপেক্টর নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।



ভারতের বিহার রাজ্যে ৪৫ বছর বয়সী এক বাবা তার যৌন লালসা মেটাতে অস্বীকৃতি জানানোয় নিজের ১৯ বছর বয়সী বিবাহিত মেয়েকে হত্যা করেছেন। পেশায় কৃষি শ্রমিক রাক্তু প্রসাদ নামের ওই পাষন্ড বাবা তার খড় কাটার কাস্তে দিয়েই মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেন। ভোররাত ৪টার দিকে বিহার রাজ্যের মুজাফফর নগর জেলার মুস্তাফাগঞ্জ গ্রামে এই নারকীয় ঘটনাটি ঘটে। দুই বছর আগে নিজ স্ত্রীকেও হত্যার করে ওই নরপশু। ঘটনার চার মাস আগে প্রতিবেশি বিষ্ণুপুর গ্রামের দোকানদার রঞ্জিত কুমারের সঙ্গে নিহত মেয়েটির মেয়েটির বিয়ে দেন পাষন্ড বাবা রাক্তু প্রসাদ। মেয়েটি তার স্বামীকে নিয়ে মুস্তাফাগঞ্জে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসে।রাতে মাতাল অবস্থায় বাড়ি ফিরে রাক্তু প্রসাদ মেয়ে ও মেয়ে জামাইর সঙ্গে একই ঘরে ঘুমানোর জন্য জেদাজেদি করে। এতে তাদের মধ্যে বাক-বিতন্ডা বেঁধে যায়। এরই এক পর্যায়ে রাক্তু প্রসাদ খড় কাটার ‘দাবিয়া’ তুলে ধরে মেয়ে জামাই রঞ্জিতকে তার বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে। নয়তো তাকে খুন করা হবে বলে হুমকি দেয়।মেয়ে জামাই রঞ্জিত প্রাণ-ভয়ে সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর রাক্তু তার মেয়ের ঘরে প্রবেশ করে। এবং তার সঙ্গে সহবাসে লিপ্ত হওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে থাকে। এসময় মেয়ের প্রতিরোধ ও সাহাজ্যের জন্য চিৎকারে রাক্তু উত্তেজিত হয়ে খড় কাটার ‘দাবিয়া’ দিয়ে মেয়েটিকে কুপিয়ে হত্যা করে।নিহত মেয়েটি রাক্তুর পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ছিল। এ ঘটনার সময় রাক্তু প্রসাদের অপর চার সন্তান পাশের ঘরেই ঘুমিয়ে ছিল।



রাতে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরে ক্যামব্রিয়ান কলেজের এক ছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। বাধা দিলে লিয়াকত হোসেন লিটন নামের এক নিরাপত্তাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করে । পরদিন ভোরে গাড়িতেই ধর্ষণ করে মেয়েটিকে উত্তরা এলাকায় নামিয়ে দিয়ে যায়। মেয়েটি তাঁর হবু বর ও মায়ের সঙ্গে বাসায় ফেরার সময় একটি মাইক্রোবাসে করে দুর্বৃত্তরা আসে। তারা প্রথমে মেয়েটির মাকে পিস্তল দিয়ে আঘাত করে, তারপর মেয়েটির হবু বরকে চাপাতি দিয়ে কোপায়। এরপর পাশের একটি বাসার নিরাপত্তাকর্মী এগিয়ে এলে তাঁকে গুলি করে মেয়েটিকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তোলে। মেয়েটি জানান, গাড়িতে চালক বাদে পাঁচজন ছিল। তাঁকে গাড়িতে তোলার পরে গাড়িটি বিমানবন্দরের দিকে ছুটতে থাকে। বিমানবন্দরে দুজন নেমে যায়। এরপর গাড়িটি আরও এক জায়গায় থামে। সেখান থেকে কিছু খাবার কেনা হয়। তারপর ফ্লাইওভারের ওপরে উঠে মেয়েটির চোখ বেঁধে দেওয়া হয়। চলতি পথে অপহরণকারীরা মেয়েটির কাছে জানতে চায়, তাঁর সঙ্গের ছেলেটি কে। আরও কিছু কথা তাঁরা মেয়েটির কাছে জানতে চায়। প্রায় দুই ঘণ্টা চলার পর মেয়েটির চোখ খুলে দেওয়া হয়। মেয়েটি তখন দোকানের সাইনবোর্ডে জামালপুর, কালীগঞ্জ লেখা দেখতে পান। এরপর গাড়িটি গ্রামের মতো একটা জায়গায় থামে। দুর্বৃত্ত তিনজন একজনকে ফোন করলে টর্চ হাতে এক ব্যক্তি আসে। তারা পথ দেখিয়ে একটা ফাঁকা জায়গায় গাড়িটা নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তরা তাঁকে গাড়িতে রেখে ‘লক’ করে দিয়ে যায়। যাওয়ার সময় লম্বামতো একজন বলে যায়, চিৎকার করলে বা বের হওয়ার চেষ্টা করলে খুন করে ফেলবে। কিছুক্ষণ পরে তারা ফিরে এলে গাড়ি আবার চলতে শুরু করে। এ সময় তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকে, মেয়েটির সঙ্গে কী করা যায় সে বিষয়ে। একজন বলে পেটে ছুরি ঢুকিয়ে মেরে ফেলার কথা। আরেকজন বলে, সিএনজিতে উঠিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দে। তখন তৃতীয়জন বলে, ও তো একা বাড়িতে যেতে পারবে না। একজন মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করে, বিশ্বকাপে মেয়েটি কোন দলের সমর্থক। খেলা বোঝে না বললে একজন তাঁর গালে চড় দেয়। গাড়িচালক মেয়েটিকে বলে, সে চালককে বিয়ে করলে একটি ফ্ল্যাট উপহার দেবে। চালক এক নারীর ভিজিটিং কার্ড দেখিয়ে বলে, ‘দ্যাখ, ওর সাথে আমার প্রেম ছিল। আমাকে রেখে চলে গেছে। এ জন্য আমি মেয়েদের ঘৃণা করি।’ পুলিশ জানায়, মেয়েটি সেই কার্ডের নাম ও প্রতিষ্ঠানের নাম পুলিশকে জানিয়েছে। পুলিশ সেই নারীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, ওই দিন সন্ধ্যার দিকে একই দুর্বৃত্তরা ওই নারীকে অপহরণ করে ছেড়ে দিয়েছিল।



অসভ্যতার চূড়ান্ত সীমায় না ওঠলে কি ধর্ষণের মত জঘন্য ঘটনা ঘটতে পারে? মিরপুরের পীরেরবাগে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ছয়জন বাসায় ঢুকে কলেজপড়ুয়া এক তরুণীকে ধর্ষণ করে। রাতে রাজধানীর মগবাজারের গোল্ডেন এন প্যালেস আবাসিক হোটেলে স্বামীকে বেঁধে রেখে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন মহানগর (উত্তর) ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হোসেন ওরফে শাহীন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ইকবাল ও তাঁর সহযোগী উজ্জ্বলকে একটি ছুরিসহ গ্রেপ্তার করে।



ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় জাতি লজ্জিত। সন্তানদের কর্মকাণ্ডের দায় অভিভাকদেরও নিতে হবে। ভারতের স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। মোদি বলেন, যখন ধর্ষণের খবর শুনি তখন লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায়।শুধু আইন দিয়ে হবে না। সন্তানকে ভালো-মন্দ পার্থক্য করার শেখাতে হবে তার পিতা-মাতার।মেয়েদেরকে বাবা মা প্রশ্ন করেন, তুমি কোথায় যাচ্ছ বা কী করছ? ছেলেদেরকে কি তা জিজ্ঞেস করেন? যারা ধর্ষণ করে তারা কারো না কারো সন্তান। তাদেরকে খারাপ পথে যাওয়ার আগেই থামাতে হবে।



উল্লেখ্য ভারতে একেরপর এক ধর্ষণ চলছেই । এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি ৩০ মিনিটে দেশটিতে ১জন ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০০১ থেকে ২০১৩ সালে ২৮টি রাজ্যে ও সাতটি বিশেষ অঞ্চলে ১৩ বছরে ২,৬৪,১৩০ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। রাজধানী দিল্লিতেই কেবল ধর্ষণ ঘটেছে ৮,০৬০টি।



এক নয় দুই নয়, ১০০ জন মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্কের কথা নিজের মুখে স্বীকার করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিওর এক মর্গ রক্ষী। ওই ১০০ জন মহিলা যৌন সংসর্গের সময় জীবিত ছিলেন না। অর্থাৎ মর্গে রাখা প্রায় ১০০ টি মহিলা মৃতদেহর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। শুধু তাই নয় এই মৃতদেহগুলির মধ্যে অনেকেই খুন হয়েছিলেন। কেনেথ ডগলাস, বয়স ৬০। হ্যামিল্টনের বাসিন্দা কেনেথ ওহিওতে একটি মর্গে কাজ করতেন। ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে মর্গে রাতের শিফটে কাজ করার সময় মর্গে আসা প্রায় ১০০টি মহিলার মৃত দেহের সঙ্গে তিনি যৌন সংসর্গ করেছেন। রাতে ওই মৃতদেহগুলির মধ্যে থেকে বেছে বেছে কয়েকটি মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সংসর্গে লিপ্ত হত কেনেথ। নিউ ইয়র্ক ডেইলি পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কেনেথ যে সমস্ত মৃতদেহর সঙ্গে যৌন মিলন করেছিল তাদের মধ্যে সে সময় অন্যতন ছিলেন ২৩ বছর বয়সি চার্লিন অ্যালিংয়।যেদিন তাঁকে খুন করা হয় সেদিন রাতেই থার সঙ্গে যৌন মিলন করেন কেনেথ। সেই সময় চার্লিন ছয় মাসের অন্তঃস্বত্ত্বাও ছিলেন। ডগলাস তখনই ধরা পড়ে যায়, যখন ১৯ বছরের ক্যারেন রেঞ্জ-এর শরীরে ডগলাসের সিমেনের ডিএনএ পাওয়া যায়। আর ক্যারেনের হত্যাকারী ডেভিড স্টিফেন যখন আদালতে দাবি করেন, যে তিনি ক্যারেনকে শুধুই হত্যা করেছেন, ধর্ষণ করেননি। কিন্তু ময়নাতদন্তে খুন ও ধর্ষণ দুটোরই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। এরপর ডিএনএ পরীক্ষার পর দোষী সাব্যস্ত হন কেনেথ। এই অপরাধের জন্য কেনেথের তিন বছর জেল হয়। পরে ২০১২ সালে তিনি ফের একই ধরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন।



ভারতের হরিয়ানায় পর পর দুই বার গণধর্ষণের শিকার হয়ে নিজের বাবার হাতেই ধর্ষণের শিকার হয় এক কিশোরী। দিল্লি থেকে এক ঘণ্টারও কম দূরত্বে অবস্থিত সোনেপাত এলাকার ওই স্কুলছাত্রী পুলিশকে তার ওপর ঘটে যাওয়া নৃশংস এই অত্যাচারের কথা তুলে ধরেছে। তার গ্রামেরই একদল তরুণ গত দুই মাসে দুই বার ধর্ষণ করেছে তাকে। দিনের পর দিন নিজের বাবার বিকৃত যৌন লালসার শিকার হতে হয়েছে তাকে। মেয়েটি জানায়, গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাবা তাকে ধর্ষণ করে। এ ব্যাপারে মুখ খুললেই তাকে খুন করার হুমকিও দেয় তার বাবা। ‘আমি লেখা-পড়া করতে চাই। কিন্তু আমার বাবা আমাকে যৌন পেশা গ্রহণ করতে বাধ্য করছে। দয়া করে আমাকে বাঁচান’, পুলিশের কাছে করুণ আর্তি অসহায় কিশোরীর। স্থানীয় একটি এনজিও মেয়েটিকে পুলিশের কাছে নিয়ে এলে তার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।



ধর্ষণ ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে ভূপত তথা মামা চৌহান নামের এক তান্ত্রিক তার দুই স্ত্রী মনা ও রামার সহযোগে ২৩ বছর বয়সী এক তরুণীকে চার দিন ধরে ধর্ষণ করেছে। ঘটনাটি ভারতের গুজরাট প্রদেশের সুরত জেলার আম্রলির। ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী কিছুদিন আগে তার বাবাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে পরিচিত একজনের পরামর্শে তানি্ত্রক মামা চৌহানের সঙ্গে দেখা করেন। চৌহান তখন তাকে আশ্বাস দেয় গোপন শক্তি দিয়ে সে তার বাবাকে ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু তাকে কিছু ‘নির্দেশনা’ মেনে চলতে হবে। আর তা হলো শারীরিকভাবে একসঙ্গে থাকা। এভাবে তাকে চারদিন ধর্ষণ করে। এ ব্যাপারে চৌহানের স্ত্রী প্রথম চাপ সৃষ্টি করে এবং পুলিশকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়।



ব্রিটেনের হাজার হাজার মুসলিম বিয়ের আইনি বৈধতা নেই। ব্রিটিশ আইনে রেজিস্ট্রেশনও নেই। গত ৮ সেপ্টেম্বর বিবিসিতে প্রচারিত এক ডকুমেন্টারিতে এমন দাবিই করেন বিশিষ্ট মুসলিম পারিবারিক আইন বিশেষজ্ঞ আয়না খান। আয়না খান বর্তমানে ডানকান লুইস সলিসিটর ফার্মের ইসলামিক আইন বিভাগের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। ডানকান লুইস আইনি ফার্মের একজন সুবক্তা হিসেবেও সমাদৃত। বিবিসির এই ডকুমেন্টারির রিপোর্টার চার্লোট ক্যালেনকে আয়না খান বলেন, ‘আমি আমার কাজের মাধ্যমে অবগত হয়েছি, ব্রিটেনে ৮০ শতাংশ মুসলিম বিয়ের আইনি বৈধতা নেই, ব্রিটিশ আইনের দ্বারা রেজিস্টার্ড নয়।’



খদ্দের সেজে যৌনকর্মীর সঙ্গে প্রথমে হোটেলে সাক্ষাৎ। এরপর তাদের নৃশংসভাবে হত্যা। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্য থেকে চলতি সপ্তাহে এ রকম সাত নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের সবাইকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের শিকার সাত নারীর একজন আফ্রিকা হার্ডি (১৯)।



এই একবিংশ শতাব্দীতেও যৌন কামনা চরিতার্থ করতে এক বালিকাকে কিনে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিনেছেন ভারতের চেন্নাইয়ের এক ইঞ্জিনিয়ার। শুধু যৌন লালসা মেটাতে বাবা-মায়ের কাছ থেকে ১৬ বছরের বালিকাকে কিনে ৭ মাস ধরে ধর্ষণ করেছেন তিনি। এস কুপ্পুস্বামী নামের ওই ‘ভদ্রলোক’ পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার। বয়স ৫৪ বছর। গ্রামের বাড়িতে দালালের মাধ্যমে ১৬ বছরের ওই বালিকাকে বিয়ে করার কথা বলেন তিনি। এজন্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নগদও দিতে চান। প্রথমে রাজি না হলেও, টাকার লোভে পরে রাজি হন মেয়েটির অভিভাবক। কথা মতো জানুয়ারি মাসে স্থানীয় একটি মন্দিরে বিয়ে হয় তাদের। সপ্তাহের শেষে ফিরে স্ত্রীকে বাবা-মায়ের কাছ থেকে নিয়ে আসতেন নিজের বাড়িতে। এর পর থেকেই শুরু হয় যৌন নির্যাতন। এমনকি বিকৃত যৌনতার জন্য মেয়েটিকে ‘এক্সটাসি’ ড্রাগ নিতে বাধ্য করতেন তিনি। রাজি না হলে চলত অকথ্য অত্যাচার। এর হাত থেকে বাঁচতে আত্মহত্যার চেষ্টাও করে মেয়েটি।



মা’কে দেখার জন্য ১৯৯৫ সালের ২৪ আগষ্ট ঢাকা থেকে বাড়ী যাচ্ছিল গার্মেন্টস কর্মী কিশোরী ইয়াসমিন। পথমধ্যে ইয়াসমিনকে নির্মমভাবে ধর্ষণ করে পুলিশ, এবং তাকে হত্যা করে লাশ দিনাজপুর শহরের পাঁচ কিলোমিটার দূরে রাস্তায় ফেলে দেয়।



২৮ অক্টোবর ২০১৩, ইয়াং ওয়ান গার্মেন্টস এর এক কর্মী সকালে কর্মস্থলে যাবার উদ্দেশ্যে সাভার বাস স্ট্যান্ড থেকে আনন্দ সুপার পরিবহনের একটি গাড়িতে উঠে। ওই গার্মেন্টস কর্মী গাড়িতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অন্যযাত্রী না নিয়ে দরজা বন্ধ করে গাড়ি ছেড়ে দেয় সুপারভাইজার। গাড়িটি সাভারের আমিন কমিউনিটি সেন্টার ছেড়ে আসার পর গাড়ির হেলপার ও সুপারভাইজার গার্মেন্টস কর্মীকে জড়িয়ে ধরে তার গলায় থাকা চেইনটি ছিনিয়ে নেয়। এরপর তাকে ধর্ষণ করে।

৩০-১১-২০১২, সাজিয়া দক্ষিণখানের নোয়াপাড়া আমতলার একটা ক্লিনিকের খণ্ডকালীন চিকিৎসক ছিলেন। ঘটনার আগের রাত বৃহস্পতিবার ওই ক্লিনিকে তাঁর রাতের পালায় দায়িত্ব ছিল। কাজ শেষে রাত ১২টার দিকে ওই ক্লিনিকের বিশ্রামাগারে ঘুমাতে যান। দুর্বৃত্তরা ধর্ষণ করে হত্যা করে রাজিয়াকে।



রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুলের বসুন্ধরা শাখার বাংলা শিক্ষক পরিমল জয়ধর । নিজের ছাত্রীকে ধর্ষণ করে তার ভিডিওচিত্র ধারন করে। পরবর্তীতে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে নির্যাতিতা মেয়েটাকে আরও অনেকবার নির্যাতন করে। মেয়েটার জীবন থমকে গ্যাছে। ক্লাস এইটের মেয়ে।



বলিভিয়ায় ২২ বছরের এক তরুণ তার ২১ বছর বয়সী গার্লফ্রেন্ডকে জনসমক্ষে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। ঘটনাস্থলে প্রায় ২০ জন পথচারী জড়ো হলেও, তাদের কেউ এগিয়ে আসেননি হতভাগ্য ওই তরুণীর প্রাণ বাঁচাতে। তারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুধু তামাশা দেখেছেন। ভ্যানেসা নামের ওই তরুণীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ভিডিও করেছেন। ন্যূনতম মানবিক কোন বোধও তাদের কারও মধ্যে উঁকি দেয়নি। অন্যান্য দিনের মতোই গত মঙ্গলবার উত্তরাঞ্চলীয় ত্রিনিদাদ শহরের একটি রেস্টুরেন্টে কাজে যান ভ্যানেসা। সেখানে তার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত বয়ফ্রেন্ড ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে ভ্যানেসাকে। এ ঘটনায় মৃত্যু হয় ভ্যানেসার। ওই তরুণও আত্মহত্যার চেষ্টা করে।



মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে মোট ৮১২ জন নারী ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে ধর্ষণ-পরবর্তী সময়ে ৮৭ জনকে হত্যা করা হয় এবং আত্মহত্যা করেন ১৪ জন। এ ছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৩০৯টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সারা দেশে। এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার ৯৮ জন এবং ২৯ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়ে সাতজন আত্মহত্যা করেছেন। আরও ৪৪ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।



২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দেশে ৪ হাজার ২১৯ জন ধর্ষনের শিকার হয়েছে। ১ হাজার ৮৪৪ জন গণধর্ষন হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের এক প্রতিবেদনে জানা যায়-১৯৯৭ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ধর্ষনরে শিকার হয়েছে ১৪১২৮ জন। ১৯৯৭ তে ১৩৩৬, ১৯৯৮ তে ২৯৫৯, ১৯৯৯ তে ৩৫০৪, ২০০০ তে ৩১৪০, ২০০১ সালে ৩১৮৯ জন ধর্ষনের শিকার হয়েছে। এ সময় ৩ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বুড়ী পর্যন্ত ধর্ষনের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫ বছরের নারী নির্যাতনের চিত্র তুলে প্রতিবেদনে জানায়- ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে ৫ হাজার ৪৯৫ টি খুন ও ধর্ষনের পর হত্যা, গণধর্ষন ও ধর্ষন ৩ হাজার ২৪৬ টি। অপর এক জরিপে দেখা যায়-২০০৩ থেকে ২০০৯ এর অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে ৫০০০ নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষনের শিকার হয়েছে।



পুলিশের বার্ষিক অপরাধ সম্মেলনে সি আইডির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় -২০০৯ সালে ধর্ষনের অভিযোগে মামলা হয়েছে ২৯৭২ টি। দেশে গড়ে প্রতিদিন ৮ টি ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়-২০০৯ সালের ১ জানুয়ারী থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে শুধু ধর্ষনরে পর হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ৯৭ জন নারী ও কন্যাশিশু। আর ধর্ষনের শিকার হয়েছেন ৪৫৪ জন নারী। এর মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্ত নারী ২১১ জন এবং কন্যা শিশু ২৪৩ জন। গণধর্ষনরে শিকার হয়েছেন ৯৭ প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও ৭৯ কন্যাশিশু ।



মানুষ যে জানোয়ারকেও ছাড়িয়ে যায় তার অন্যতম প্রমাণ হচ্ছে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যা। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীর গলায় চাকু ঠেকিয়ে ধর্ষণ করে নুলণ্ডী গ্রামের মৃত আলিমুদ্দিনের ছেলে সজিব হোসেন ওরফে সবজেল (৩০)। সন্ধ্যার পর মেয়েটি নিজ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিল। এ সময় প্রতিবেশী সবজেল ধারালো চাকু হাতে তাকে জিম্মি করে পাশের একটি নির্জন ভিটায় নিয়ে যায়। গলায় ধারালো চাকু ঠেকিয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখায় সে। এর পর ঘণ্টাখানেক আটকে রেখে সবজেল তাকে দু’বার ধর্ষণ করে।



কুকুরের চেয়েও নিৎকৃষ্ট না হলে কি কোন শিক্ষক ৩২ ছাত্রীকে ধর্ষণ করতে পারে? ভারতের মিজোরামে নির্যাতনের শিকার দুই ছাত্রীর অভিভাবকের অভিযোগের ভিত্তিতে চম্পাইয়ের এক শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। মিজোরামের সাইচল ভিলেজ প্রাইমারি স্কুলের ওই শিক্ষক তিন বছর ধরে ৩২ জন ছাত্রীকে দিনের পর দিন ধর্ষণের পাশাপাশি নানাভাবে যৌন হেনস্তাও করেছেন। নির্যাতিত ছাত্রীরা আট থেকে ১২ বছর বয়সি। এ ঘটনা যাতে বাইরে না জানানো হয়, সে জন্য নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের কঠিন হুমকিও দিতেন।



কতটা খারাপ রুচির হলে ধর্ষিতাকে ব্ল্যাকমেইল করে ফের ধর্ষণের চেষ্টা করা সম্ভবপর হয়। ভারতের উত্তরপ্রদেশের মীরাট জেলার নবাবগড়ি গ্রামে ২০ বছর বয়সী এক যুবতীকে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী এক যুবক। ঘটনার সময় নির্যাতিতা ঘরে একা ছিল। এই সুযোগে অভিযুক্ত ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে ও মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ক্লিপ তৈরি করে রাখে। এরপরই ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দিয়ে সে ফের যুবতীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। নির্যাতিতাকে হুমকি দেয় যে ঘটনার কথা কাউকে জানালে সে ভিডিও ফাঁস করে দেবে। যুবতী ঘটনার প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত তার বন্ধুদের সঙ্গে মিলে যুবতীকে মারধর করে।



গাড়ি কেনার জন্য পাঁচ লাখ টাকা না পেয়ে এক স্বামী নিজের স্ত্রীর অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে তাকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে। কিন্তু তারপরও স্ত্রী টাকা না দেয়ায় ওই অশ্লীল ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলেন স্বামী। ভারতের পাঞ্জাবের সুজানপুর এলাকার ঘটনা। সুজানপুরের বাসিন্দা মহিলাটি জানিয়েছেন, ২০০৮ সালে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পরই তারা দুজনে পুনে ঘুরতে যায়। সেখানেই তার একটি অশ্লীল ভিডিও বানিয়েছিলেন তার স্বামী। সেটি মহিলাকে দেখানোর পর তিনি সেটি মোবাইল থেকে মুছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বিয়ের পর তাদের একটি ছেলে হয়, যার বয়স এখন পাঁচ বছর এবং তাদের সংসার ভালোভাবেই চলতে থাকে। কিন্তু বিয়ের প্রায় ছয় বছর কেটে যাওয়ার পর তার স্বামী গাড়ি কেনার জন্য তাকে বাপের বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলে। স্বামী মহিলাকে পুনেতে তৈরি করা ভিডিও ইন্টারনেটে ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দেয়।কিন্তু মহিলার বাপের বাড়ি গরিব হওয়ার কারণে তারা টাকা দিতে পারেননি। মহিলার অভিযোগ কিছুদিন আগে সে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অনুষ্ঠানে যায়। সেখানেই তাকে কিছু যুবক অশ্লীল কথা বলতে থাকে। তাদেরকে এমন ব্যবহারের কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা অশ্লীল ভিডিও ইন্টারনেটে ফাঁস হওয়ার কথা জানায়।



আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় পর্নো ছবিতে ঢাবি শিক্ষার্থীরা যুক্ত থাকবে, পর্নোছবি তৈরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খেয়ে পুলিশের কাছে প্রেপ্তার হবে। রাজধানীর নিমতলীর হোটেল সুফিয়া থেকে রাতে মোট ১১জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ জন শিক্ষার্থী ছিল। এদের মধ্যে চারজন মেয়ে ও সাতজন ছেলে । আটককৃতরা এ সময় পর্নো ছবি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছিল। পুলিশ এ সময় ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ পর্নো ভিডিও, পর্নো সিডি, পর্নো ম্যাগাজিন, পর্ন মুভি তৈরির সরঞ্জাম ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করে। এলাকাবাসী জানায়, মাঝে মাঝেই হোটেল সুফিয়াতে এ ধরনের অপকর্ম চলতো। স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে এই অপকর্ম করা হয়। এ নিয়ে হোটেল মালিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ ওই হোটেলের কারণে এলাকার যুবক ছেলে-মেয়ে গোল্লায় যাচ্ছে।



দেশে দেশে এটিএম বুথ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। বেশ কিছু দিন ধরে এই এটিএম বুথে আস্তানা খুঁজে নিয়েছে প্রেমিক-প্রেমিকারাও। অরক্ষিত এটিএম তো বটেই, বহু সময়ে নিরাপত্তাকর্মীকে টাকার বিনিময়ে সরিয়ে দিয়ে ঘুপচি ঘরে শরীরী প্রেমে মেতে উঠছেন প্রণয়ী যুগল। এমনকি, টাকা পেলে রক্ষীরা যেচে কিয়স্কের দরজার সামনে পাহারা দিতেও বসে থাকছেন বলে অভিযোগ। অন্য গ্রাহক সেই সময় এটিএম ব্যবহার করতে এলে তাঁদের ঠেকিয়ে রাখাই সেই সময়ে পাহারাদারের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রক্ষীকে সরাতে পারলেও প্রেমিকদের অজান্তে দিব্যি খোলা থেকে যাচ্ছে এটিএম-এ বসানো সিসিটিভি ক্যামেরার চোখ। আর তাতেই ধরা পড়েছে এটিএম যন্ত্রকে সাক্ষী রেখে অবাধ যৌনতার ফুটেজ।



তিন বছরের শিশু সন্তানকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রে এক প্রেমিকযুগলকে আটক করা হয়। স্কট ম্যাকমিলান নামের ওই শিশুটিকে প্রথমে ফ্রাইপ্যান দিয়ে আঘাত করেন গ্রে লি ফেলেনবাউম। পরে তাকে দড়িতে ঝুঁলিয়ে লোহার রড দিয়ে পেটানো হয। নাস্তা খাওয়া নিয়ে বায়না ধরায় তাকে শিক্ষা দিতেই এই শাস্তি। শিশুটিকে চেয়ারের সঙ্গে বেধে মারধোর করা হয়। এক পর্যায়ে তার পা দুটি নিচের দিকে ঝুঁলিয়ে সিলিংয়ের সঙ্গে বেধে ফেলেন ফেলেনবাউম। এরপর তাকে পেটাতে থাকেন। পাশবিকতার খানেই শেষ নয়। শূণ্যে ঝুলে থাকা শিশুটির মাথা বেশ কয়েকবার দেয়ালে ঠুকে দেয়া হয় সজোরে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে আসে স্কটের দেহ। এসময় তার মা জিলিয়ান টিইট(৩১) ছেলেকে রক্ষার চেষ্টা না করে সঙ্গী গ্রে লি ফেলেনবাউমের সঙ্গে মিলে হাসাহাসি করছিলেন। মৃত শিশুটিকে ফেলে রেখে তারা গাড়ি নিয়ে বাইরে বেড়াতে যান। ফেরার পথে পিৎজা কিনে আনেন এবং রাতে খাওয়া দাওয়ার পর যথারীতি বিছানায় যান এবং সেক্সও করেন। ওয়ালমার্টে কাজ করার সময় ২৩ বছর বয়সী ফেলেনবাউমের সঙ্গে দেখা হয় জিলিয়ান টিইটের। পরে তারা দুজন একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন। ফেলেনবাউমের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীও তাদের সঙ্গেই ছিলেন। ফেলেনবাউমের দুই ছেলে। তাদের বয়স যথাক্রমে ছয় ও তিন বছর। আর জিলিয়ানে রয়েছে ১১ মাস বয়সী এক মেয়ে। তারা সবাই মিলে ফিলাডেলফিয়া অঙ্গরাজ্যের কোটেসভিলে একটি ভাড়াবাসায় থাকতেন। এ পাশবিক নির্যাতন ঠেকাতে এগিয়ে আসেনি ফেলেনবাউমের সাবেক স্ত্রী আম্বের ফেলেনবাউম(২১)।



গুজরাটের ভদোদরায় ১৫ বছরের এক নাবালিকা নিজের প্রেমিকের জন্য তার বাবা-মা’কে খুন করেছে এবং প্রমাণ লোপাটের জন্য বাড়িতেই সে প্রেমিকের সঙ্গে মিলে প্রায় ৭২ দিন ধরে অ্যাসিড দিয়ে মৃতদেহ পোড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে৷ নাবালিকা তার প্রেমিকের সঙ্গে মিলে খাবারে অজ্ঞান করার ওষুধ মিলিয়ে তাদের অজ্ঞান করে এবং ফের তাদের ছুরি দিয়ে আঘাত করে খুন করে৷ অভিযুক্ত নাবালিকার বয়স ১৫ বছর এবং ওই পরিবার মেয়েটিকে দত্তক দিয়েছিল৷ নাবালিকা দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল৷ ২১ বছরের এক যুবকের সঙ্গে তার প্রেম সম্পর্ক ছিল৷ তবে প্রেমিককে পছন্দ করত না তার বাড়ির লোক৷ খুনের ঘটনা ঘটানোর পর দুই অভিযুক্ত শারীরিক সম্পর্কও স্থাপন করে নাবালিকা গর্ভবতী হয়৷ ৬৩ বছরের পুরুষোত্তম ও তার স্ত্রী স্নেহার মৃতদেহ পুলিশ ভদোদরায় তাদের বাড়ি থেকেই উদ্ধার করে৷



২০০৪ সালের ২২ আগষ্ট। রাজধানী ঢাকার অদুরে সাভারের জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গার্মেন্টস কর্মী রাহেলা আক্তার লিমা নামের ১৯ বছরের এক তরুণীকে একদল নরপশু রাতভর উপর্যুপরি ধর্ষনের পর ধারালো ছুরি দিয়ে তার শরীরকে ক্ষত বিক্ষত করে। গলা কেটে দেয়। তারপর বর্বরোচিত ভাবে তরণী রাহেলার স্পাইনাল কর্ডূ ছুরি দিয়ে ছিন্ন ভিন্ন করে ধর্ষকরা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নীরব নির্জন একটি ময়লা আবর্জনার স্তুপে রাহেলার নিথর দেহ ফেলে চলে যায় ঘাতক দুর্বৃত্তরা। তারা ভেবেছিল রাহেলা মারা গেছে। ঘটনার তিনদিন পর নরপশু ধর্ষকেরা রাহেলার মৃত দেহের হাল জানতে এসে দেখতে পায়, রাহেলা বেঁচে আছে এবং প্রচন্ড পিপাসায় পানি! পানি! বলে অস্ফুট চিৎকার করছে। রাহেলার এই জীবন্মৃত অবস্থায় ধর্ষকরা রাহেলাকে পানির পরিবর্তে তার সারা দেহে ঢেলে দেয় এসিড। মেয়েটির মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে বর্বর ধর্ষকরা স্থান ত্যাগ করে। তারপরেও কিভাবে যেন রাহেলা বেঁচে যায়। দগ্ধ,গলাকাট ও পচন ধরা দেহ নিয়ে রাহেলা বেঁচে ছিল। বার বার পানি পানি বলে চিৎকার করছিল সে। পরের দিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাগানের এক মালি স্তুপের ভেতরে নিথর,দগ্ধ,পঁচাগলা শরীরের রাহেলাকে আবিস্কার করে। তখনো রাহেলা জীবিত। এরপর পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত রাহেলাকে নিয়ে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তিন দিন পর তার জ্ঞান ফিরলে সে জবানবন্দী দেয়। কিন্তু ঘটনার ৩৩ দিনের মাথায় রাহেলা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। স্বামী তার লাশ গ্রহন করেনি, জায়গা হয়নি শুশুর বাড়ীতে।



ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূ ও তার দুই সন্তানকে হত্যা করেছে গৃহশিক্ষক তারেক। সে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েই তাদের হত্যা করেছে। তিনজনকে একাই হত্যা করে তারেক। তদন্ত টিমের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে ধর্ষণের চেষ্টা করতে গিয়ে গৃহবধূ ডলির সাথে তার ধস্তাধস্তি হয়। শিশু দুটি তখন অন্যরুমে পড়ছিল। শব্দ পেয়ে ছুটে তারা আসে। তখন তারেক তাদের অন্যরুমে আটকে রাখে। এসময় আবারো বাধা দেয় ডলি। এতেই তারেক হাতে ব্যথা পায়। একপর্যায়ে চোখ পড়ে দা ছোরার দিকে। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে প্রথমে ডলিকে হত্যা করা হয়। পরে প্রমাণ সরিয়ে ফেলার চেষ্টায় খুন করা হয় তার শিশু আলভী বিন আনোয়ার এবং কন্যা শিশু আদিবা বিনতে আনোয়ারকে। ২২ বছর বয়সী তারেক কুলগাঁও সিটি কর্পোরেশন কলেজের ছাত্র।



২০১২ সালের ৭ ডিসেম্বর, টাঙ্গাইলরে মধুপুরে এক স্কুলছাত্রীকে বন্দী করে বন্দী করে রেখে পরপর তিনদিন গণধর্ষণ করে ধর্ষকরা। মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে ১০ ডিসেম্বর ধর্ষকরা তাকে সদর উপজেলার রসুলপুর এলাকায় রেললাইনের ওপর ফেলে রেখে যায়। স্থানীয় লোকজন অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে মেয়েটিকে ঢামেক হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। ওসিসিতে চিকিত্সাধীন ওই স্কুলছাত্রীকে দেখতে এসে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পুরো বাংলাদেশ এখন ধর্ষিত।



ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন আপেল ও আয়েশা। কিন্তু বিয়ের ৪ মাসেই বখাটেদের কারণে স্বামীকে হারালেন কুমিল্লা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী আয়েশা। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় বখাটেদের ছুরিকাঘাতে আয়েশার স্বামী ছাত্রলীগ নেতা নুরুল ইসলাম আপেল দুপুরে কলেজের প্রধান গেটে খুন হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী আয়েশা আক্তারকে বেশ কিছুদিন ধরে কয়েক বখাটে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। আয়েশা বিষয়টি তার স্বামীকে জানায়। আপেল দুপুরে কলেজে গিয়ে বখাটে অপু, বিপু, দিপু, রাসেল, সুমন ও সাকিবদের কাছে জানতে চাইলে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বখাটেরা আপেলের বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়।



টঙ্গীতে আঁখি ও আলপনা নামের দুটি শিশু ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলায় স্থানীয় ব্রাক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর এগার বছর বয়সী শিশুকে প্রতিবেশী বখাটেরা গণধর্ষণ করে। বরিশালের হিজলায় বিকালে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। একই গ্রামের কবির হোসেন আকন তাকে কোড়ালিয়া গ্রামের ধলু চৌকিদারের বাগানে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।



নগ্ন ছবির ব্ল্যাকমেইলের শিকার থেকে বাঁচতে বিএম কলেজের ছাত্রী সুপর্ণা আত্মহত্যা করে। বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২য় বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে নগরীর কেডিসির বালুর মাঠ এলাকার আমিনুল ইসলাম রিয়াজের দৈহিক সম্পর্ক হয়। সুযোগ বুঝে রিয়াজ তার মোবাইল ফোনে প্রেমিকার নগ্ন ছবি ধারণ করে। মনোমালিন্য দেখা দিলে রিয়াজ ওই নগ্ন ছবির কথা উল্লেখ করে ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা চালায়। এর কয়েকমাস আগে রিয়াজের প্রথম স্ত্রী সরকারি মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী শারমিন স্বামীর বদচরিত্রের কারণে কলেজের ছাদে নিজ গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করে। বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের ছোট ভাইজোরা গ্রামে মাদরাসা ছাত্রী জেনী আক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত হয় প্রধান শিক্ষক।



২০১২ সালের ১৬-ই ডিসেম্বর সন্ধ্যেয় তেইশ বছরের এক ছাত্রী তার পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে নতুন দিল্লীর শহরতলীতে 'লাইফ অফ পাই' নামে একটি জনপ্রিয় সিনেমা দেখতে গিয়েছিল । সিনেমা শেষে দুই বন্ধুর বাসে করে ফেরার ভয়ঙ্কর বৃত্তান্ত শুধু ভারতীয়দের নয়, সারা পৃথিবীর জনসমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছে। চলতি বাসের মধ্যে ছজন যুবক মিলে মেয়েটিকে বীভৎসভাবে ধর্ষণ করে এবং তার বন্ধুকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। সেই পৈশাচিক গণধর্ষণের ফলে বারো দিনের মাথায় মেয়েটি মারা যায় । দিল্লিতে এক ছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা গোটা ভারতকেই নাড়িয়ে দেয়। এর কিছুদিন পরই ২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে (মানিকগঞ্জ এলাকায়) চলন্ত বাসে এক পোশাককর্মীকে ধর্ষণ করে দুই বাসকর্মী।



ভারতে বেশ কিছু ধর্ষণের কেস কুখ্যাত হয়েছে । যেমন ১৯৭২ সালে মহারাষ্ট্রের পুলিশ থানায় আদিবাসী মেয়ে মথুরার ধর্ষণ - ধর্ষণকারী দুই কনস্টেবল; ১৯৭৩ সালে মুম্বাইয়ের হাসপাতালের মধ্যে নার্স অরুণা শানবাগের বীভৎস ধর্ষণ - ধর্ষণকারী এক সহকর্মী; ১৯৯১ সালে কাশ্মিরে প্রায় ৫১ জন মহিলার গণধর্ষণ - ধর্ষণকারী ভারতীয় সৈন্যবাহিনী; ১৯৯২ সালে রাজস্থানে সমাজসেবী ভঁয়োরী দেবীর গণধর্ষণ - ধর্ষণকারী গ্রামের মুরুব্বী স্থানীয় ব্যক্তিরা; ১৯৯৬ সালে কেরালায় ষোল বছরের মেয়েকে চল্লিশ দিন বন্দী অবস্থায় রেখে গণধর্ষণ; ১৯৯৮ সালে কলকাতায় বাংলাদেশী পর্যটক হানুফা খাতুনের গণধর্ষণ; ২০১২ সালে কলকাতায় সুজেট জর্ডনের গণধর্ষণ, ইত্যাদি । এঁরা ছাড়াও বহু বিদেশী মহিলা ভারতে পর্যটনে এসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন । এই ভয়াবহ তালিকার শেষ নেই।



মধ্য ব্রাজিলের গোইয়ানিয়ায় ৯ মাসে ৩৯টি খুন হওয়ার পর ধরা পরে খুনি। গোটা এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করেছিল ২৬ বছর বয়সী তিয়াগো এনরিকে গোমস্ দা রোকা। রাতের বেলাতেও লোকজন একলা বেরোতে ভয় পাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ এতগুলি খুন কেনই বা করতে গেল সে? তিয়াগো জানায়, এগারো বছর বয়স পর্যন্ত আমার ছোটবেলা আর পাঁচটা সাধারণ বাচ্চার মতোই ছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন পড়শি এক মহিলা আমায় যৌন হেনস্থা করে। বয়সে ছোট ছিলাম, তার উপর সে রীতিমতো আমায় হুমকি দিত যে, কাউকে জানালে কপালে দুর্ভোগ রয়েছে। দিনের পর দিন আমি মুখ বুজে সেই অত্যাচার সহ্য করেছি। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমি প্রচুর মদ্যপান শুরু করি। সে সময়ই ধীরে ধীরে একটা দুর্দমনীয় রাগ আমার মধ্যে তৈরি হয়। যখন ২২ বছর পূর্ণ করি, তখন এই রাগকে দমন করার আর কোনও উপায় আমার কাছে ছিল না।



ভারতের উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে ধর্ষণের পর খুন করে এক কিশোরীকে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। হামিরপুরের এক নারী চার পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। নিগৃহীতা মহিলা অভিযোগ করেছেন তাঁর স্বামীর মুক্তির বিষয়ে কথা বলতে তিনি রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ পুলিশ স্টেশনে যান। সেই সময়ে থানায় এক সাব-ইন্সপেক্টর ছাড়া আর কেউই ছিল না। ওই সাব-ইন্সপেক্টর নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।



ভারতের বিহার রাজ্যে ৪৫ বছর বয়সী এক বাবা তার যৌন লালসা মেটাতে অস্বীকৃতি জানানোয় নিজের ১৯ বছর বয়সী বিবাহিত মেয়েকে হত্যা করেছেন। পেশায় কৃষি শ্রমিক রাক্তু প্রসাদ নামের ওই পাষন্ড বাবা তার খড় কাটার কাস্তে দিয়েই মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেন। ভোররাত ৪টার দিকে বিহার রাজ্যের মুজাফফর নগর জেলার মুস্তাফাগঞ্জ গ্রামে এই নারকীয় ঘটনাটি ঘটে। দুই বছর আগে নিজ স্ত্রীকেও হত্যার করে ওই নরপশু। ঘটনার চার মাস আগে প্রতিবেশি বিষ্ণুপুর গ্রামের দোকানদার রঞ্জিত কুমারের সঙ্গে নিহত মেয়েটির মেয়েটির বিয়ে দেন পাষন্ড বাবা রাক্তু প্রসাদ। মেয়েটি তার স্বামীকে নিয়ে মুস্তাফাগঞ্জে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসে।রাতে মাতাল অবস্থায় বাড়ি ফিরে রাক্তু প্রসাদ মেয়ে ও মেয়ে জামাইর সঙ্গে একই ঘরে ঘুমানোর জন্য জেদাজেদি করে। এতে তাদের মধ্যে বাক-বিতন্ডা বেঁধে যায়। এরই এক পর্যায়ে রাক্তু প্রসাদ খড় কাটার ‘দাবিয়া’ তুলে ধরে মেয়ে জামাই রঞ্জিতকে তার বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে। নয়তো তাকে খুন করা হবে বলে হুমকি দেয়।মেয়ে জামাই রঞ্জিত প্রাণ-ভয়ে সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর রাক্তু তার মেয়ের ঘরে প্রবেশ করে। এবং তার সঙ্গে সহবাসে লিপ্ত হওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে থাকে। এসময় মেয়ের প্রতিরোধ ও সাহাজ্যের জন্য চিৎকারে রাক্তু উত্তেজিত হয়ে খড় কাটার ‘দাবিয়া’ দিয়ে মেয়েটিকে কুপিয়ে হত্যা করে।নিহত মেয়েটি রাক্তুর পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ছিল। এ ঘটনার সময় রাক্তু প্রসাদের অপর চার সন্তান পাশের ঘরেই ঘুমিয়ে ছিল।



রাতে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরে ক্যামব্রিয়ান কলেজের এক ছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। বাধা দিলে লিয়াকত হোসেন লিটন নামের এক নিরাপত্তাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করে । পরদিন ভোরে গাড়িতেই ধর্ষণ করে মেয়েটিকে উত্তরা এলাকায় নামিয়ে দিয়ে যায়। মেয়েটি তাঁর হবু বর ও মায়ের সঙ্গে বাসায় ফেরার সময় একটি মাইক্রোবাসে করে দুর্বৃত্তরা আসে। তারা প্রথমে মেয়েটির মাকে পিস্তল দিয়ে আঘাত করে, তারপর মেয়েটির হবু বরকে চাপাতি দিয়ে কোপায়। এরপর পাশের একটি বাসার নিরাপত্তাকর্মী এগিয়ে এলে তাঁকে গুলি করে মেয়েটিকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তোলে। মেয়েটি জানান, গাড়িতে চালক বাদে পাঁচজন ছিল। তাঁকে গাড়িতে তোলার পরে গাড়িটি বিমানবন্দরের দিকে ছুটতে থাকে। বিমানবন্দরে দুজন নেমে যায়। এরপর গাড়িটি আরও এক জায়গায় থামে। সেখান থেকে কিছু খাবার কেনা হয়। তারপর ফ্লাইওভারের ওপরে উঠে মেয়েটির চোখ বেঁধে দেওয়া হয়। চলতি পথে অপহরণকারীরা মেয়েটির কাছে জানতে চায়, তাঁর সঙ্গের ছেলেটি কে। আরও কিছু কথা তাঁরা মেয়েটির কাছে জানতে চায়। প্রায় দুই ঘণ্টা চলার পর মেয়েটির চোখ খুলে দেওয়া হয়। মেয়েটি তখন দোকানের সাইনবোর্ডে জামালপুর, কালীগঞ্জ লেখা দেখতে পান। এরপর গাড়িটি গ্রামের মতো একটা জায়গায় থামে। দুর্বৃত্ত তিনজন একজনকে ফোন করলে টর্চ হাতে এক ব্যক্তি আসে। তারা পথ দেখিয়ে একটা ফাঁকা জায়গায় গাড়িটা নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তরা তাঁকে গাড়িতে রেখে ‘লক’ করে দিয়ে যায়। যাওয়ার সময় লম্বামতো একজন বলে যায়, চিৎকার করলে বা বের হওয়ার চেষ্টা করলে খুন করে ফেলবে। কিছুক্ষণ পরে তারা ফিরে এলে গাড়ি আবার চলতে শুরু করে। এ সময় তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকে, মেয়েটির সঙ্গে কী করা যায় সে বিষয়ে। একজন বলে পেটে ছুরি ঢুকিয়ে মেরে ফেলার কথা। আরেকজন বলে, সিএনজিতে উঠিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দে। তখন তৃতীয়জন বলে, ও তো একা বাড়িতে যেতে পারবে না। একজন মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করে, বিশ্বকাপে মেয়েটি কোন দলের সমর্থক। খেলা বোঝে না বললে একজন তাঁর গালে চড় দেয়। গাড়িচালক মেয়েটিকে বলে, সে চালককে বিয়ে করলে একটি ফ্ল্যাট উপহার দেবে। চালক এক নারীর ভিজিটিং কার্ড দেখিয়ে বলে, ‘দ্যাখ, ওর সাথে আমার প্রেম ছিল। আমাকে রেখে চলে গেছে। এ জন্য আমি মেয়েদের ঘৃণা করি।’ পুলিশ জানায়, মেয়েটি সেই কার্ডের নাম ও প্রতিষ্ঠানের নাম পুলিশকে জানিয়েছে। পুলিশ সেই নারীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, ওই দিন সন্ধ্যার দিকে একই দুর্বৃত্তরা ওই নারীকে অপহরণ করে ছেড়ে দিয়েছিল।



অসভ্যতার চূড়ান্ত সীমায় না ওঠলে কি ধর্ষণের মত জঘন্য ঘটনা ঘটতে পারে? মিরপুরের পীরেরবাগে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ছয়জন বাসায় ঢুকে কলেজপড়ুয়া এক তরুণীকে ধর্ষণ করে। রাতে রাজধানীর মগবাজারের গোল্ডেন এন প্যালেস আবাসিক হোটেলে স্বামীকে বেঁধে রেখে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন মহানগর (উত্তর) ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হোসেন ওরফে শাহীন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ইকবাল ও তাঁর সহযোগী উজ্জ্বলকে একটি ছুরিসহ গ্রেপ্তার করে।



ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় জাতি লজ্জিত। সন্তানদের কর্মকাণ্ডের দায় অভিভাকদেরও নিতে হবে। ভারতের স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। মোদি বলেন, যখন ধর্ষণের খবর শুনি তখন লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায়।শুধু আইন দিয়ে হবে না। সন্তানকে ভালো-মন্দ পার্থক্য করার শেখাতে হবে তার পিতা-মাতার।মেয়েদেরকে বাবা মা প্রশ্ন করেন, তুমি কোথায় যাচ্ছ বা কী করছ? ছেলেদেরকে কি তা জিজ্ঞেস করেন? যারা ধর্ষণ করে তারা কারো না কারো সন্তান। তাদেরকে খারাপ পথে যাওয়ার আগেই থামাতে হবে।



উল্লেখ্য ভারতে একেরপর এক ধর্ষণ চলছেই । এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি ৩০ মিনিটে দেশটিতে ১জন ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০০১ থেকে ২০১৩ সালে ২৮টি রাজ্যে ও সাতটি বিশেষ অঞ্চলে ১৩ বছরে ২,৬৪,১৩০ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। রাজধানী দিল্লিতেই কেবল ধর্ষণ ঘটেছে ৮,০৬০টি।



এক নয় দুই নয়, ১০০ জন মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্কের কথা নিজের মুখে স্বীকার করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিওর এক মর্গ রক্ষী। ওই ১০০ জন মহিলা যৌন সংসর্গের সময় জীবিত ছিলেন না। অর্থাৎ মর্গে রাখা প্রায় ১০০ টি মহিলা মৃতদেহর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। শুধু তাই নয় এই মৃতদেহগুলির মধ্যে অনেকেই খুন হয়েছিলেন। কেনেথ ডগলাস, বয়স ৬০। হ্যামিল্টনের বাসিন্দা কেনেথ ওহিওতে একটি মর্গে কাজ করতেন। ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে মর্গে রাতের শিফটে কাজ করার সময় মর্গে আসা প্রায় ১০০টি মহিলার মৃত দেহের সঙ্গে তিনি যৌন সংসর্গ করেছেন। রাতে ওই মৃতদেহগুলির মধ্যে থেকে বেছে বেছে কয়েকটি মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সংসর্গে লিপ্ত হত কেনেথ। নিউ ইয়র্ক ডেইলি পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কেনেথ যে সমস্ত মৃতদেহর সঙ্গে যৌন মিলন করেছিল তাদের মধ্যে সে সময় অন্যতন ছিলেন ২৩ বছর বয়সি চার্লিন অ্যালিংয়।যেদিন তাঁকে খুন করা হয় সেদিন রাতেই থার সঙ্গে যৌন মিলন করেন কেনেথ। সেই সময় চার্লিন ছয় মাসের অন্তঃস্বত্ত্বাও ছিলেন। ডগলাস তখনই ধরা পড়ে যায়, যখন ১৯ বছরের ক্যারেন রেঞ্জ-এর শরীরে ডগলাসের সিমেনের ডিএনএ পাওয়া যায়। আর ক্যারেনের হত্যাকারী ডেভিড স্টিফেন যখন আদালতে দাবি করেন, যে তিনি ক্যারেনকে শুধুই হত্যা করেছেন, ধর্ষণ করেননি। কিন্তু ময়নাতদন্তে খুন ও ধর্ষণ দুটোরই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। এরপর ডিএনএ পরীক্ষার পর দোষী সাব্যস্ত হন কেনেথ। এই অপরাধের জন্য কেনেথের তিন বছর জেল হয়। পরে ২০১২ সালে তিনি ফের একই ধরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন।



ভারতের হরিয়ানায় পর পর দুই বার গণধর্ষণের শিকার হয়ে নিজের বাবার হাতেই ধর্ষণের শিকার হয় এক কিশোরী। দিল্লি থেকে এক ঘণ্টারও কম দূরত্বে অবস্থিত সোনেপাত এলাকার ওই স্কুলছাত্রী পুলিশকে তার ওপর ঘটে যাওয়া নৃশংস এই অত্যাচারের কথা তুলে ধরেছে। তার গ্রামেরই একদল তরুণ গত দুই মাসে দুই বার ধর্ষণ করেছে তাকে। দিনের পর দিন নিজের বাবার বিকৃত যৌন লালসার শিকার হতে হয়েছে তাকে। মেয়েটি জানায়, গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাবা তাকে ধর্ষণ করে। এ ব্যাপারে মুখ খুললেই তাকে খুন করার হুমকিও দেয় তার বাবা। ‘আমি লেখা-পড়া করতে চাই। কিন্তু আমার বাবা আমাকে যৌন পেশা গ্রহণ করতে বাধ্য করছে। দয়া করে আমাকে বাঁচান’, পুলিশের কাছে করুণ আর্তি অসহায় কিশোরীর। স্থানীয় একটি এনজিও মেয়েটিকে পুলিশের কাছে নিয়ে এলে তার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।



ধর্ষণ ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে ভূপত তথা মামা চৌহান নামের এক তান্ত্রিক তার দুই স্ত্রী মনা ও রামার সহযোগে ২৩ বছর বয়সী এক তরুণীকে চার দিন ধরে ধর্ষণ করেছে। ঘটনাটি ভারতের গুজরাট প্রদেশের সুরত জেলার আম্রলির। ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী কিছুদিন আগে তার বাবাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে পরিচিত একজনের পরামর্শে তানি্ত্রক মামা চৌহানের সঙ্গে দেখা করেন। চৌহান তখন তাকে আশ্বাস দেয় গোপন শক্তি দিয়ে সে তার বাবাকে ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু তাকে কিছু ‘নির্দেশনা’ মেনে চলতে হবে। আর তা হলো শারীরিকভাবে একসঙ্গে থাকা। এভাবে তাকে চারদিন ধর্ষণ করে। এ ব্যাপারে চৌহানের স্ত্রী প্রথম চাপ সৃষ্টি করে এবং পুলিশকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়।



ব্রিটেনের হাজার হাজার মুসলিম বিয়ের আইনি বৈধতা নেই। ব্রিটিশ আইনে রেজিস্ট্রেশনও নেই। গত ৮ সেপ্টেম্বর বিবিসিতে প্রচারিত এক ডকুমেন্টারিতে এমন দাবিই করেন বিশিষ্ট মুসলিম পারিবারিক আইন বিশেষজ্ঞ আয়না খান। আয়না খান বর্তমানে ডানকান লুইস সলিসিটর ফার্মের ইসলামিক আইন বিভাগের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। ডানকান লুইস আইনি ফার্মের একজন সুবক্তা হিসেবেও সমাদৃত। বিবিসির এই ডকুমেন্টারির রিপোর্টার চার্লোট ক্যালেনকে আয়না খান বলেন, ‘আমি আমার কাজের মাধ্যমে অবগত হয়েছি, ব্রিটেনে ৮০ শতাংশ মুসলিম বিয়ের আইনি বৈধতা নেই, ব্রিটিশ আইনের দ্বারা রেজিস্টার্ড নয়।’



খদ্দের সেজে যৌনকর্মীর সঙ্গে প্রথমে হোটেলে সাক্ষাৎ। এরপর তাদের নৃশংসভাবে হত্যা। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্য থেকে চলতি সপ্তাহে এ রকম সাত নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের সবাইকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের শিকার সাত নারীর একজন আফ্রিকা হার্ডি (১৯)।



এই একবিংশ শতাব্দীতেও যৌন কামনা চরিতার্থ করতে এক বালিকাকে কিনে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিনেছেন ভারতের চেন্নাইয়ের এক ইঞ্জিনিয়ার। শুধু যৌন লালসা মেটাতে বাবা-মায়ের কাছ থেকে ১৬ বছরের বালিকাকে কিনে ৭ মাস ধরে ধর্ষণ করেছেন তিনি। এস কুপ্পুস্বামী নামের ওই ‘ভদ্রলোক’ পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার। বয়স ৫৪ বছর। গ্রামের বাড়িতে দালালের মাধ্যমে ১৬ বছরের ওই বালিকাকে বিয়ে করার কথা বলেন তিনি। এজন্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নগদও দিতে চান। প্রথমে রাজি না হলেও, টাকার লোভে পরে রাজি হন মেয়েটির অভিভাবক। কথা মতো জানুয়ারি মাসে স্থানীয় একটি মন্দিরে বিয়ে হয় তাদের। সপ্তাহের শেষে ফিরে স্ত্রীকে বাবা-মায়ের কাছ থেকে নিয়ে আসতেন নিজের বাড়িতে। এর পর থেকেই শুরু হয় যৌন নির্যাতন। এমনকি বিকৃত যৌনতার জন্য মেয়েটিকে ‘এক্সটাসি’ ড্রাগ নিতে বাধ্য করতেন তিনি। রাজি না হলে চলত অকথ্য অত্যাচার। এর হাত থেকে বাঁচতে আত্মহত্যার চেষ্টাও করে মেয়েটি।



মা’কে দেখার জন্য ১৯৯৫ সালের ২৪ আগষ্ট ঢাকা থেকে বাড়ী যাচ্ছিল গার্মেন্টস কর্মী কিশোরী ইয়াসমিন। পথমধ্যে ইয়াসমিনকে নির্মমভাবে ধর্ষণ করে পুলিশ, এবং তাকে হত্যা করে লাশ দিনাজপুর শহরের পাঁচ কিলোমিটার দূরে রাস্তায় ফেলে দেয়।



২৮ অক্টোবর ২০১৩, ইয়াং ওয়ান গার্মেন্টস এর এক কর্মী সকালে কর্মস্থলে যাবার উদ্দেশ্যে সাভার বাস স্ট্যান্ড থেকে আনন্দ সুপার পরিবহনের একটি গাড়িতে উঠে। ওই গার্মেন্টস কর্মী গাড়িতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অন্যযাত্রী না নিয়ে দরজা বন্ধ করে গাড়ি ছেড়ে দেয় সুপারভাইজার। গাড়িটি সাভারের আমিন কমিউনিটি সেন্টার ছেড়ে আসার পর গাড়ির হেলপার ও সুপারভাইজার গার্মেন্টস কর্মীকে জড়িয়ে ধরে তার গলায় থাকা চেইনটি ছিনিয়ে নেয়। এরপর তাকে ধর্ষণ করে।

৩০-১১-২০১২, সাজিয়া দক্ষিণখানের নোয়াপাড়া আমতলার একটা ক্লিনিকের খণ্ডকালীন চিকিৎসক ছিলেন। ঘটনার আগের রাত বৃহস্পতিবার ওই ক্লিনিকে তাঁর রাতের পালায় দায়িত্ব ছিল। কাজ শেষে রাত ১২টার দিকে ওই ক্লিনিকের বিশ্রামাগারে ঘুমাতে যান। দুর্বৃত্তরা ধর্ষণ করে হত্যা করে রাজিয়াকে।



রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুলের বসুন্ধরা শাখার বাংলা শিক্ষক পরিমল জয়ধর । নিজের ছাত্রীকে ধর্ষণ করে তার ভিডিওচিত্র ধারন করে। পরবর্তীতে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে নির্যাতিতা মেয়েটাকে আরও অনেকবার নির্যাতন করে। মেয়েটার জীবন থমকে গ্যাছে। ক্লাস এইটের মেয়ে।



বলিভিয়ায় ২২ বছরের এক তরুণ তার ২১ বছর বয়সী গার্লফ্রেন্ডকে জনসমক্ষে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। ঘটনাস্থলে প্রায় ২০ জন পথচারী জড়ো হলেও, তাদের কেউ এগিয়ে আসেননি হতভাগ্য ওই তরুণীর প্রাণ বাঁচাতে। তারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুধু তামাশা দেখেছেন। ভ্যানেসা নামের ওই তরুণীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ভিডিও করেছেন। ন্যূনতম মানবিক কোন বোধও তাদের কারও মধ্যে উঁকি দেয়নি। অন্যান্য দিনের মতোই গত মঙ্গলবার উত্তরাঞ্চলীয় ত্রিনিদাদ শহরের একটি রেস্টুরেন্টে কাজে যান ভ্যানেসা। সেখানে তার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত বয়ফ্রেন্ড ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে ভ্যানেসাকে। এ ঘটনায় মৃত্যু হয় ভ্যানেসার। ওই তরুণও আত্মহত্যার চেষ্টা করে।



মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে মোট ৮১২ জন নারী ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে ধর্ষণ-পরবর্তী সময়ে ৮৭ জনকে হত্যা করা হয় এবং আত্মহত্যা করেন ১৪ জন। এ ছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৩০৯টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সারা দেশে। এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার ৯৮ জন এবং ২৯ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়ে সাতজন আত্মহত্যা করেছেন। আরও ৪৪ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।

(চলবে)



মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৮

সরদার হারুন বলেছেন: আপনি অনেক কষ্ট করে জানোয়ারের গল্প কাহিনী শোনালেন । অনেক পরিশ্রম করে উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন । সে জন্য অাপনাকে ধন্যবাদ ।

++++++++++++++

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৫

আনিসুর রহমান এরশাদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও।

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৪

 বলেছেন: +++++

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৫

আনিসুর রহমান এরশাদ বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৪০

সকাল হাসান বলেছেন: এত কষ্ট করে জানোয়ারগুলোর কীর্তিকলাপের বিবরন দিয়ে গেলেন! একটু আধটু না - অনেক লেখা লিখেছেন! শেষে আবার চলবে. লিখেছেন - তার মানে আরো অনেক কিছু লেখার বাদ আছে আপনার!

এত বড় একটা লিখা পড়ে মাত্র দুই-তিন লাইনে মন্তব্য জানানোটা অন্যায় হবে! মন্তব্যে লেখার মত আছেও অনেক কিছু! আপনি পুরোটা শেষ করেন, পরে একবার মন্তব্য করবো!

আমাকে জানায়েন শুধু পরের পর্বটা পোষ্ট করে!

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:৫৪

আনিসুর রহমান এরশাদ বলেছেন: ঠিক আছে। জানাবো।

৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৫৮

নতুন বলেছেন: মানুষের মাথা খারাপ হইয়া যাইতেছে দিন দিন...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.