নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই সামাজিক প্রতিরোধ

২১ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:২০

বাংলাদেশে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। ধর্ষকের হাত থেকে শিশু, বৃদ্ধা, রোগী, পাগলী পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছে না। সমাজের নিম্নস্তর থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠেও অহরহ ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এই সহিংসতা আঘাত হানে তার দেহে, তার স্বাতন্ত্র্যতায়, তার সত্তায়, তার আত্মপরিচিতিতে, নিরাপত্তাজ্ঞানে ও মর্যাদাবোধে। প্রবল যৌনাত্মক নিপীড়ন, নির্যাতন ও অত্যাচারের এই বহিঃপ্রকাশ মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা ধর্ষণের ফলে ধর্ষিতার মনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, মনোরোগের লক্ষণ দেখা যায়। তার মধ্যে আত্মপীড়ন, বিষণ্নতা, হীনমন্যতাবোধ, আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া, নিজেকে গুটিয়ে নেয়া, সকল পুরুষের প্রতি অযৌক্তিক ঘৃণাবোধ ইত্যাদি দেখা যায়।

গত ১৩ জুন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া প্রতিবন্ধী স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভাওয়াল মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্র।ধর্ষকের বিরুদ্ধে ১৮ জুন (বৃহস্পতিবার) গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় মামলা হয়েছে। রাজধানীর বসিলা পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোশাররফ হোসেন তার সাবেক স্ত্রীকে ২৭ ও ২৮ মে মোহাম্মদপুরে ডেকে নিয়ে এক বাসায় রেখে ধর্ষণ করে। ৮ জুন পুনরায় বিয়ের কথা বলে ধর্ষণ করে, বিয়ে করবে না বলে তাড়িয়ে দেয়। ১০ জুন রাতে পুলিশের এক নারী কনস্টেবলকে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়া এলাকার ৮৬/৩ নম্বর বাসায় আটকে রেখে ৩ বন্ধুকে নিয়ে তার সাবেক স্বামী এএসআই কলিমুর ধর্ষণ করেন।

দেশে যেন এক ধর্ষণের মহোৎসব চলছে। কালীগঞ্জে চারজন সহকর্মী কর্তৃক এক নারী শ্রমিককে পালাক্রমে ধর্ষণ, যমুনা ফিউচার পার্কে কর্মরত গারো তরুণীকে মাইক্রোবাসে ধর্ষণ, জাবিতে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নে অপরাধে এক শিক্ষকের চাকরিচ্যুত, কালিহাতিতে একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা, পাবনায় চেয়ারম্যান ও পুলিশের সালিশে ধর্ষককে নির্দোষ ঘোষণা, দিনাজপুরে পুলিশ কর্তৃক ইয়াসমিনের ধর্ষণ, চট্টগ্রামে ধর্ষিত সীমার ধর্ষক ও হত্যাকারীরাও পার পাওয়া, আদালত প্রাঙ্গণে শিশু তানিয়ার ধর্ষিত হওয়া, সেনাকর্তৃক নারী ধর্ষিত হওয়া ইত্যাদি কিসের আলামত? চরম নৈতিক অবক্ষয় ও যৌন সহিংসতা বৃদ্ধির প্রমাণ।

যখন পুলিশের ব্যারাকেও যুবতীর লাশ পাওয়া যায় তখন নারীর অসহায়ত্ব স্পষ্টই ফুঁটে ওঠে। নারায়ণগঞ্জে নিজের স্বামীকে দিয়ে ১২ বছরের শিশুকে দুই দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করানো, দিনাজপুরে মা ও মেয়েকে ভাসুর কর্তৃক ধর্ষণ, সেনবাগে নিজ কন্যাকে পিতা কর্তৃক ধর্ষন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার পথে দুই বোন ধর্ষিত হওয়া, মানিকগঞ্জের শিবালয়ে শুকুর আলী (১৪) কর্তৃক সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ, ঢামেকের এক আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এসবই খারাপ লক্ষণ।

এখন ধর্ষণের শিকার হচ্ছে নানা বয়সী নারী। অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু কন্যারাও ধর্ষণ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) সারা দেশ থেকে গড়ে প্রতিদিনই গড়ে চার-পাঁচজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিত্সা্ নিতে আসছেন৷ অনেক সময় ধর্ষিতা কোথাও বিচার চেয়েও পায় না কিংবা চায়তেই পারে না। এমনকি ধর্ষণের দায়ভার ধর্ষিতার উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলে। সামাজিক বঞ্চনা এমন যে, একজন অবিবাহিত যুবক কোন ধর্ষিতা নারীকে বিয়ের কথা চিন্তাও করতে পারেনা।

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) সারা দেশ থেকে গড়ে প্রতিদিন চার-পাঁচজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে।

ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয় হচ্ছে, ঘটনার যথাযথ ও দ্রুত বিচার, চাঞ্চল্যকর মামলার ক্ষেত্রে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের ব্যবস্থা, সংশ্লিষ্টদের সততার সাথে দায়িত্ব পালন, আক্রান্তদের সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করা, জনগণকে সচেতন করা এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা। সম্মিলিত প্রয়াস ও সমন্বিত উদ্যোগই পারে ধর্ষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে।


মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি নিজে ঠিক আছেন তো?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.