নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঈদ শুধুই আনন্দের নয় বেদনারও

২১ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৮

আমরা বলি ঈদ মানেই খুশি, সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়া। কিন্তু আসলেই কি তাই? অসহায় পরিবারের করুণ দৃশ্য দেখলে মনে হয় ঈদ মানে শুধু আনন্দ নয়, কান্নাও। যেমন-৮ জুলাই সিলেটে নির্মমভাবে পাশবিক কায়দায় শিশু সামিউল আলম রাজনকে হত্যা করেছে নরপশুরা। রাজনের পরিবারের পক্ষে কি ঈদে আনন্দ করা কখনও সম্ভব হবে?

মানব পাচারকারী চক্রের কবলে পরে নিখোঁজের স্বজনদের উৎসবের দিনেও চোখের জলই সম্বল। প্রিয়জন কেউ বেঁচে আছে না মরে গেছে, তাও যারা জানে না তাদের কেঁদে বুক ভাসানোর জন্যেই যেন আসে ঈদ। হবিগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার শতাধিক পরিবারের বাবা-মা এবং ছেলে-মেয়েরা ছবি হাতে নিয়ে কান্নায় বুক ভাসাচ্ছেন দিনের পর দিন। মেহেরপুরের শতাধিক পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি নিখোঁজ থাকায় ‘নুন আনতে পানতা ফুরানো’ অবস্থা। সেখানে ঈদে নতুন জামা কাপড় দূরে থাক সেমাই পায়েশ কিছুই হচ্ছে না। ঈদে চোখের জলই যাদের সম্বল তাদের।

সড়ক দুর্ঘটনায় কিংবা রাজনৈতিক সহিংসতায় সন্তান হারানো মা, কারাগারে বন্দি স্বামীর স্ত্রী কি করে আনন্দ করবে? রানাপ্লাজা কিংবা তাজরিন ট্রাজেডি, রাজপথে গণপিটুনি কিংবা দুর্বৃত্তদের নির্মমতার শিকার নিহতের স্বজনেরা কিভাবে উৎসব পালন করবে? হত্যা, গণহত্যা, খুন আর গুমের কারনে হারিয়ে যাওয়া মানুষের অনুপস্থিতি তাদের পরিবারে ঈদ আনন্দের পরিবর্তে নির্মম বেদনা নিয়ে আসে।

প্রিয়জনদের কেউ ঘর ছাড়া, বাড়ি ছাড়া, পরিবার ছাড়া হলে কিংবা আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারী হলে ঈদ বেদনা বয়ে আনে। জাকাতের কাপড় আনতে গিয়ে ১০ জুলাই নিহত হওয়া ২৭ জনের (২২ জন নারী, ৫জন শিশু) পরিবারেও নেই ঈদের আনন্দ। সীমান্তে বিএসএসেফর গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানীর পরিবারসহ অন্যদের পরিবারে নেই কোনো ঈদ। উজিরপুরের ইচলাদী ট্রাজেডির ঘটনায় প্রায় ৫০টি পরিবারের জন্য এবারের ঈদ মানেই শুধু কান্না আর কান্না। ১১জুলাই ইচলাদীতে ঘাতক বাসের চাকায় প্রাণ হারানো মানুষের ১১টি পরিবারের অসহায়ত্বের চিত্র ফুটে উঠছে উজিরপুরের লোকালয় গুলোতে।

গুমের শিকার পরিবারগুলোর ঈদ নিরানন্দে ভরা। ২০১৩ সালের ৪ঠা ডিসেম্বরে ঢাকার বিভিন্ন বাসা ও রাস্তা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ৮ জনকে। তারপর থেকে থেকে আর কোন খোঁজ নেই তাদের। এসব পরিবারে ঈদের আনন্দের বদলে বিরাজ করছে অপেক্ষার দুঃসহ যন্ত্রণাময় পরিবেশ। ২০১৪ সালের ঈদ-উল ফিতরের দিনে (২৯ জুলাই) পদ্মায় বেড়াতে গিয়ে নৌকাডুবিতে নিহত হয় ১২ জন। সেই ১২ পরিবারে ঈদকে ঘিরে নেই কোনো আয়োজন, রয়েছে স্বজন হারানোর বিষাদ বেদানা।

ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধ ও বেবী হোমের আশ্রিত শিশুরা। বৃদ্ধাশ্রমের আশ্রিতদের ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, নাতী-নাতনী থেকেও আজ আপনজন বলতে তাদের কেউ নেই। তাই প্রতিবছর অসহায় নিঃসঙ্গ ওইসব আশ্রিত বৃদ্ধদের ঈদের দিনেকাটে চোখের জলে মহাকষ্টে। এমনকি ঈদের দিনও তাদের খোঁজ নিতে আসেনা পরিবারের কেউ। বেবী হোম বা এতিমখানার শিশুদের জন্য ঈদের দিন নানা উৎসবের আয়োজন করা হলেও তারা কাছে পায়না কোন আপনজনকে। অধিকাংশরা শিশুরাই জানেনা তাদের পিতা-মাতার পরিচয়।

এমনিভাবে পথশিশু,প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট দূর্যো গে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন ও তাদের স্বজনদের কাছে ঈদ কি আনন্দের বার্তা বয়ে নিয়ে আসে? দূর প্রবাসে থেকে যারা প্রিয়মুখগুলোকে ভেবে কিংবা ছবি দেখে ঈদ কাটায় তাদের কি ঈদ আনন্দ পরিপূর্ণতা পায়? পায় না। তাই ঈদ শুধু আনন্দ নয় বেদনাও বয়ে আনে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.