নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাগরিকত্ব পাওয়ার পরও সংকট কাটছে না ছিটমহলবাসীর

২৫ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৫১

ছিটমহলবাসীরা দীর্ঘ ৬৮ বছরের দুর্বিষহ জীবন শেষে নাগরিকত্ব বেছে নেয়ার ব্যাপারে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন৷ বাংলাদেশের অভ্যন্তরের ভারতীয় ছিটমহল থেকে ৯৭৯ জনের ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভারতের অভ্যন্তরের ৫১টি ছিটমহলের কোনো বাসিন্দার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।–এমন সিদ্ধান্তে তৈরি হয়েছে নানান প্রশ্ন।

এদিকে ভারতের মূল ভূখন্ডে যাওয়ার জন্য নাম লিখিয়েও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনশোর বেশি ভারতীয় ছিটমহলবাসী। পশ্চিমবঙ্গে চলে যেতে চেয়ে আবেদনকারী বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থেকে যেতে চেয়ে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন। কেননা অনেকেই আশঙ্কা করছেন তাঁরা ভারতে চলে গেলে হয় জমি দখল হবে না হয় কম দামে বিক্রি করে তবে যেতে হবে। তার মানে জমি সংক্রান্ত ভাবনাও তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করছে।

জনগণনার চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশের লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম এবং নিলফামারীতে থাকা ভারতীয় ১১১টি ছিটমহলের ৪১ হাজার ৪৪৯ জনের মধ্যে ৯৭৯ জন ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যদিকে ভারতের অভ্যন্তরের ৫১টি ছিটমহলে থাকা ১৪ হাজার মানুষের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণের আবেদন কেউ করেননি। আগামী ৩১ জুলাই ছিটমহলগুলো বিনিময় হবে। যারা ভারতে যেতে চাইবে এবং ভারত থেকে যারা বাংলাদেশে আসতে চাইবে, এই যাওয়া আসার প্রক্রিয়া ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। যাঁরা ভারতে যাবেন, তাঁরা তাঁদের জমি, সহায়সম্পদ বিক্রি করে যেতে পারবেন৷ এমনকি অস্থাবর সম্পত্তি চাইলে সাথে করেও নিয়ে যেতে পারবেন৷

দুদেশের যৌথ জরিপের পরই প্রশ্ন উঠেছে, স্বাধীনভাবে নাগরিকত্ব বেছে নেয়ার সুযোগ থাকার পরও কেন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণে ভারতের অভ্যন্তরের ৫১টি ছিটমহলের কারো আগ্রহ দেখা যায়নি। বাসিন্দারা কোন দেশের সাথে থাকবেন সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কি কোন রাষ্ট্র বেশী শক্তিশালী বা উন্নত সেটাই ভাবছেন নাকি ভাষা, ধর্ম, সাংস্কৃতিক পরিচয়কেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। এতদিনের চেনা পরিচিত পরিবেশ, বাসস্থান, কর্মসংস্থান ও আশেপাশের মানুষের মায়ার বন্ধনকে ছিন্ন করতে পারছেন নাকি পারছেন না।

বাংলাদেশে থাকা অথবা ভারতে যাওয়ার ব্যাপারে ছিটমহলবাসী তাঁদের আত্মীয়-স্বজন কোথায় আছেন এবং ভবিষ্যতের সুযোগ-সুবিধাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন৷ এমনও আছে ছিটমহলে বসবাসকারী কারো ছেলেমেয়েরা সপরিবারে ভারতে যাচ্ছেন, অথচ তিনি তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে থেকে যাচ্ছেন বাংলাদেশে৷ অনেকে আছেন যারা নিজে ভারতে যেতে আগ্রহী হলেও স্ত্রী ও সন্তানরা আগ্রহী না হওয়ায় বাংলাদেশেই থাকছেন। অনেকে বাংলাদেশেই থাকছেন আত্মীয়-স্বজন এই দেশে বসবাস করেন, তাদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার ইচ্ছার ফলে৷ ভারতীয় ছিটমহলের মানুষ অথচ বাংলাদেশে থাকতে চান এমন একজনের কথায়, বাংলাদেশেই আমার সব কিছু৷ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে আমার আত্মীয়-স্বজন আছেন৷ তাঁদের ছেড়ে আমি কোথায় যাবো?

এতদিন ছিটমহলের মানুষদের আত্মপরিচয় সংকট ছিল। ১৬২টি ছিটমহলের প্রায় ৫১ হাজার মানুষ ভৌগোলিক সীমারেখার কারণে এতদিন কার্যত বন্দি ছিল। বর্তমান জরিপে বিয়ের কারণে যেসব মেয়ে ছিটমহলের বাইরে গেছে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। যেসব মেয়ে বিয়ে হয়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে ছিটমহলে এসেছে তাদের সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে তাদের মধ্যে দুইদেশের মধ্যকার টানাপোড়ন কাটছে না, বাবা একদেশের নাগরিক মেয়ে হয়তো অন্যদেশের।

উল্লেখ্য, ভারতের মধ্যে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের আয়তন সাত হাজার ১১০ একর, অন্যদিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১টি ছিটমহলের আয়তন ১৭ হাজার ১৬০ একর। ঐতিহাসিক এ চুক্তির ফলে বাংলাদেশের সাত হাজার ১১০ একর জমির ৫১টি ছিটমহল ভারতের অন্তর্ভুক্ত হবে। উল্টো দিকে, ভারতের ১৭ হাজার ১৬০ একর জমিতে থাকা ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের আওতায় আসবে। ছিটমহল বিনিময়ে ভারত যে প্রায় ১০ হাজার একর জমি বেশি হারাবে, তার জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ পাবে না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.