নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছিটমহলবাসীর প্রকৃত মুক্তি নিশ্চিত হউক

২৬ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:২২

ছিটমহলের মানুষদের আত্মপরিচয় সংকট ছিল মানবিক সংকট। দীর্ঘ ৬৮ বছরের দুর্বিষহ জীবন শেষে ছিটমহলবাসীদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা ও বন্দীজীবনের অবসান ঘটেছে। তারা নিজ ভূমে পরবাসী থাকার জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তারা রাষ্ট্র পাচ্ছেন, স্বাধীন হচ্ছেন, নাগরিক পরিচয় পাচ্ছেন ও স্থায়ী ঠিকানাও পাচ্ছেন। কিন্তু এসবেই তাদের প্রকৃত মুক্তি মিলবে না। কয়েক দশক ধরে কার্যত বিচ্ছিন্ন থাকা এবং না থাকায় ছিটমহলগুলোতে সমস্যার শেষ নেই। ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত বাসিন্দারা। লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া।

ছিটমহলবাসীর প্রকৃত মুক্তি তখনই মিলবে যখন তারা দেশের নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ও সমান অধিকার ভোগ করবেন। চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। ভোটার হবেন, নাগরিকত্ব কার্ড পাবেন। সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিশেষ বরাদ্দ পাবেন। স্বাধীন দেশের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতকরণে স্কুল, কলেজ, রাস্তা-ঘাট ও হাসপাতাল গড়ে উঠবে। স্বাভাবিক প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে উঠবে। অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রশাসনের প্রয়োজনীয় তদারকি বাড়বে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। শিশুরা ভুগবে না পুষ্টিহীনতায়, প্রসূতি মায়েরা পর্যাপ্ত খাবার ও চিকিৎসা সেবা পাবে। আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষি কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে। স্ব্যাস্থ্যসম্মত পায়খানা ও নলকূপ হবে। দ্রুত নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ভূমি জরিপ করে জমির মালিকানা সমস্যার নিরসন করা হবে।

শুধু ছিটমহল বিনিময় আর ছিটমহলবাসীর নাগরিকত্ব পছন্দের সুযোগই সমস্যার কার্যকর সমাধান নয়। পিছিয়ে পড়া এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূলধারায় ফেরানোই উভয় দেশের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত ছিটমহলগুলো থেকে কেউ না এলেও উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের জন্যই বেশি। ছিটমহলবাসীর জীবনমান উন্নয়নে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, বরাদ্দ এবং উদ্ভূত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। ছিটমহলসংলগ্ন এলাকায় শিল্প-কারখানা স্থাপন করে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে রফতানিবান্ধব খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থাপনা দাঁড় করানো দরকার।

ছিটমহলবাসীর প্রকৃত মুক্তি নিশ্চিতকরণে কর্তৃপক্ষের করণীয় হচ্ছে, অন্যের জমিতে বাড়িঘর তুলে জীবনযাপন কারী ভূমিহীনদের মাঝে প্রভাবশালী ব্যক্তির ভোগদখলকৃত খাসজমি বন্টন করে দেওযা। ছিটমহলে সাদা কাগজে বিবাহ নিবন্ধনের ফলে বিবাহের কয়েক বছরের মধ্যেই স্বামী পরিত্যক্ত দুর্ভাগা নারীর কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসন করা। সেকেলে কৃষি ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন করা, যাতে তাদেরকে অপুষ্টিতে ভোগে জীর্ণ শরীর নিয়ে বাঁচতে না হয়। নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ ও বয়োজ্যেষ্ঠদের গণশিক্ষার ব্যবস্থা করা। বিদ্যুৎ না থাকায় পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীর জন্যে দরকার ছিটমহলসংলগ্ন এলাকায় হাই ভোল্টেজের সাব-স্টেশন স্থাপন। ছিটমহলবাসীর আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটালাইজেশনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা। উন্নয়ন পরিকল্পনায় আধুনিক মানের সড়ক নির্মাণ, পুল-কালভার্ট নির্মাণ এবং দেশের হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগ সড়কসহ অবকাঠামো নির্মাণ।

এছাড়া ছিটমহল বিনিময়ে বাংলাদেশী হয়ে যাওয়া জনসমষ্টির মৌলিক চাহিদার জোগান, নিরাপত্তা, নাগরিক সুবিধা ও সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক বিভাজন কার্যক্রম অতিদ্রুতই হাতে নেয়া দরকার। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সীমানা নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার কাঠামো তৈরি করা দরকার। প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ জনসংখ্যা ও আয়তনের ভিত্তিতে ছিটমহলের নিরাপত্তা, মানবাধিকার পরিস্থিতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার।


মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:

যারা বাংলাদেশে আসছেন, তারা পরে হতাশও হতে পারেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.