নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কর্মক্ষেত্রে আনন্দময় কর্ম পরিবেশ তৈরিতে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি

১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩১

সবার ক্ষেত্রেই নতুন অফিসে মানিয়ে নেওয়া নিয়ে শংকা থাকে। নতুন কর্মস্থল কেমন, বস কেমন, সহকর্মী কেমন, এগুলো নিয়ে। অনেক বয়স্ক মানুষও বদলী হওয়া জায়গা নিয়ে সমস্যায় থাকেন। ভিন্ন একটি অবস্থা থেকে নতুন অবস্থায় মানিয়ে নেওয়া আসলেই সহজ নয়। পুকুরে যখন মাছের পোনা ছাড়া হয় তখন পুকুরের পানির তাপমাত্রার সাথে সমন্বয় করেই পোনা ছাড়া হয়। তা না হলে পোনা মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিদেশী গরু যখন গোয়ালে তোলা হয় তখন ফ্যানের ব্যবস্থাও করা হয়। একদিনের মুরগির বাচ্চার জন্য ব্যবস্থা করা হয় তাপের। কিন্তু নতুন কর্মক্ষেত্রে মানুষের জন্যে তেমন কিছু থাকেনা। তাই প্রতিষ্ঠানে যারা আগে থেকে থাকেন তাদেরই দায়িত্ব নতুনকে সাহস প্রদান করা, উৎসাহিত করা এবং সহায়তা করা। এতে নতুনেরাও স্বল্প সময়েই পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারবে।

একনিষ্ঠতা ও পরিশ্রমপ্রিয়তা না থাকলে সৃজনশীল চিন্তা ও গঠনমূলক কাজ সঠিকভাবে সম্পাদন করা যায় না। কাজের প্রতি মনোযোগ ও স্বতঃস্ফূর্ততা তখনই থাকে যখন কর্ম ও কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ পছন্দ হয়। সমালোচনা, তিরস্কারের চাইতেও প্রশংসায় অনেক সময় কাজের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। আনন্দময় ও ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করতে পারলে কর্মক্ষেত্র যেকোন রুচিশীল ও মননশীল মানুষেরই পছন্দ হবে। পারস্পরিক সম্মানবোধটা না থাকলে কর্মক্ষেত্রটি আনন্দময় করে তোলা অসম্ভব। পাশের সহকর্মীর মন ভালো না থাকলে তাঁর মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করা, তাকে সুন্দরভাবে কাজটি করতে সহায়তা করা- উভয়ের জন্যেই ভালো লাগার কারণ। মেজাজ খারাপ থাকলেও সেটাকে সব সময় প্রকাশ করা ঠিক না। কর্মক্ষেত্রের নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে চিন্তা না করে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করার উদারতাটাও থাকতে হয়। এটাও ঠিক যে, তেল কম দিয়ে খুব বেশি মচমচা ভাজা খাওয়ার ইচ্ছা যেমন অযৌক্তিক, তেমনি ঘোড়ার চেয়ে ঘোড়ার চাবুককে বেশি গুরুত্ব দিয়েও কাঙ্খিত ফল লাভ অসম্ভব।

কর্মজীবনে খুশি থাকতে পারাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। নিজের কাজটাকে যদি খেলার মত আনন্দদায়ক হিসেবে নেয়া যায়, অন্য মানুষের আনন্দ উদ্রেককারী প্রশান্তিদায়ক পরিবেশ সুনিশ্চিত করা যায়, অন্যদের কাজে সহায়তা করতে পারলে তৃপ্তি বোধ হয়; তবে এই ধরনের মনোভঙ্গি কর্মজীবনের কাজগুলোকে আনন্দের সঙ্গে করতে সহায়তা করে। অনিচ্ছাকৃতভাবে কাজ করা, কাজগুলো অসমাপ্তভাবে করা, সবশেষে কাজের প্রশংসা না পাওয়ায় এক ধরনের নেতিবাচক চাপ তৈরি হয়। যেগুলো ব্যক্তিগত জীবনে পড়ে। সারাক্ষণ মুখ গোমড়া করে থাকায় অন্যদের মাঝে বিরক্ত সৃষ্টি করে। কর্ম ও কর্মক্ষেত্রের প্রতি সম্মান দেখানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদরে যথেষ্ট আন্তরিকতার দরকার হয়। আর হ্যাঁ, যেই সমস্যার দ্রুততর সমাধান সম্ভব তা দীর্ঘ সময় জিইয়ে রাখার অর্থ প্রতিষ্ঠানকেই ক্ষতিগ্রস্ত করা। ছোট কিংবা বড় যেকোন দল পরিচালনায় জ্ঞানগত দিকের পাশাপাশি আচরণগত জ্ঞান থাকাটা খুব জরুরী।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সততা ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা বেশ গুরুত্বর্পূণ। র্উধ্বতনদের মানুষের সংকীর্ণতা, সীমাবদ্ধতা ও অক্ষমতার চাইতে সম্ভাবনার বিকাশের দিকে মনোযোগ থাকতে হয়। কাজের দক্ষতা থাকলেই হয় না, সহকর্মীদের সঙ্গে মেশার দক্ষতাও থাকতে হয়। এটা ঠিক যে, জীবনের সবকিছুই নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী সব সময় চলে না। যেখানে কাজের পরিবেশ ভালো সেখানে যোগ্যতা বৃদ্ধি পায়। যদি সহকর্মীরা হয় চমৎকার মন মানসিকতার তবে কার না ভাল লাগে! উর্ধ্বতনরা যদি হয় সুবিবেচক, আন্তরিক, কর্মরতদের আরাম-আয়েশ ও প্রয়োজনীয়তা পূরণে যত্নশীল তবে কার না পছন্দ হয়! এসব সুন্দর কর্ম পরিবেশ যে প্রতিষ্ঠানে থাকে তা হয় ভাললাগারই একটি জায়গা।

আমি বলছি না যে অফিসের পরিবেশ একবারে ‘কাজ পরে আগে স্বাচ্ছন্দ্য’ এমন মন্ত্রে দীক্ষিত গুগলের অফিসের মতো হতে হবে। শুধু বলছি মন আর শরীর যদি চাঙ্গা থাকে কাজটা এমনিতেই বের হয়ে আসবে। পদ্ধতির বাধ্যবাধকতা গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে চাহিদামতো কাজটি সম্পন্ন হচ্ছে কি-না। কাজের গুণগত মান বজায় রাখা নির্দিষ্ট কাজ সময়মতো সম্পাদন করলেই হলো। শরীর আর মনের খেয়াল রাখার এই মন্ত্র আমার খুব পছন্দ। যদিও বাংলাদেশে এখনো অফিসে যে যত দীর্ঘ সময় অবস্থান করে তাকেই তত বেশি নিবেদিত প্রাণ বলে মনে করা হয়। এটা আমার কাছে বড্ড সেকেলে চিন্তা মনে হয়। কেননা এতে মেধা এবং ডেডিকেশন তথা সৃজনশীলতা ও কর্মক্ষমতার চাইতে শারীরিক উপস্থিতিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মানুষ ভয়ে যতটা না ত্যাগ স্বীকার করে তার চেয়ে লক্ষ কোটি গুণ বেশি ত্যাগ স্বীকার করে ভালবেসে। তাই ভালবাসতে হয়, ভালবাসতে জানতে হয়, ভালবাসাকে মূল্যায়ন করতে শিখতে হয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.