নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জড়তার কাব্য শুনি, ক্লীব লিঙ্গ বলিয়া কিছু নাই

অ রণ্য

পুলকে পুলক আর সাদা দুধ, সাদা ঘর, মেঘের দোসরযে তুমি ঘুমিয়ে আছো, যেন ঘর ছেড়ে উড়ে গেছোআরব সাগর আর যাদু-কাঠি-ঘ্রাণগাগল, পাগল আমি রাত-দিন বসে টানিযাদুর ঝালর

অ রণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্তহীন ঘুম অথবা জাগ্রত বিলাপ

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:২০

আবৃত্তির লিংক এখানে - অন্তহীন ঘুম অথবা জাগ্রত বিলাপ

আমি তো জানতাম এই রোগ সেরে গেলে
কবিতা দীর্ঘ হয়ে উঠবে আবার
তুমি তো দেখেছো কীভাবে সেই সময় অপেক্ষা করেছি
কীভাবে একটি হায়েনার সামনে বসে সারাদিন শুধু ভেবেছি
যদি সে ভোলে মাংসের স্বাদ, যদি হয়ে যায় সখ্যতা আবার
তবে ভুলে গিয়ে রক্তের বিলাপ
আমি কবিতা লিখব আবার

ঈশ্বরবিদ্যায় পারদর্শী নই আমি
তবু তো খোদা খোদা বলেই অনেক রাত কেঁদেছি
অথচ শেষ পর্যন্ত কামড়ে ধরেছে সে হায়েনাই বারবার
তুমি তো জানো, বাজারের দিকে যতবার হেঁটেছি
মাংস ভয়ে ভীত নিজেকেই শুধু বলেছি
এই সেই দুষিত রক্তের পাপ, ঘুম থেকে যা আমাকে
টেনে তোলে বারবার

প্রত্যাবর্তনের পর একেকটি সময় কেটেছে শুধু এই ভাবনায়
যতোটা ছিলো প্রয়োজন আর যতোটা খরচ করেছি দেদার
তাই আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে ঋণ, ভারী করে তুলেছে হৃদয়
ফলে নিজেরই রক্ত শুষে নেয় যে কীট. গোপনে
আমি তাকেই বাঁচিয়ে রেখেছি এতোকাল
অথচ তারপরও এই আকাশ-বাতাস-অবসর শুধুই যেন খোদার
কীট-পতঙ্গ, পশু-পাখি, জন্ত-জানোয়ার
আমার মতো, তারাও কি দাবি করে না এইসব

আমি তো ভেসেই যেতে চেয়েছি প্রতিবার
অথচ তুমি জানো কোন অভিশাপে আটকে দিয়েছো পথ
যে জীবন ভেসে যেতে চায় জলের মায়ায়
তাকে কেন আটকে রাখবে এমন, ফিরিয়ে দেবে ভার
তাই তাকে ভেসে যেতে দাও, হতে দাও রোগমুক্ত আবার
অতপর তাকে লিখতে দাও সেই কবিতা
যার শেষে দাঁড়িয়ে থাকে বিশুদ্ধ এক পাহাড়

আমি তো চাই নি হামাগুড়ি দিয়ে ফিরে যেতে মাটির গভীরে
চাই নি ফিরে পেতে কোনো দেবতার ঘ্রাণ
আমি চেয়েছি উন্মুক্ত সেই আকাশ
যেখানে ঈশ্বরবিদ্যাহীন আমি, কীট-পতঙ্গ, জন্তু-জানোয়ার
এক সাথেই দিনভর ঘুড়ি ওড়ায়
যাকে তুমি হায়েনা মানো না, বলো ধূর্ত শেয়াল
জানি না কোন সে বিদ্যার ভার এভাবে তোমাকে দিয়েছে
অনর্থক জ্ঞান, যন্ত্রণার বিকাশ
আমি রোজ আলো থেকে ফিরে এই জেনেছি আবার
একটি পথই উন্মুক্ত শুধু
একটি পথই পায় সে পাহাড়

এতো যে ক্লান্তি, এতো যে অর্থহীন অবসাদ
ভ্রান্ত ধারণাই দিল শুধু, ফিরিয়ে দিল বুদ্ধি-বৃত্তির অপবাদ
অথচ তুমিও জানো না কতোটা ক্ষয়ে যাবার পর
মানুষও হয়ে উঠে কীট অথবা জন্তু-জানোয়ার
আমাকে তুমি হায়েনার সামনে দেখো
আমি তোমাকে দেখি হায়েনার ওপারে বারবার
তুমি কি জানো, একটা গোটা জীবন তোমাকে দেখেছি
তোমার ভেতরে ডুবে ডুবে দেখেছি, কতোটা রূদ্ধ সবগুলো পথ
মুক্তি নয়, আমি তো আকাঙ্খা করেছি যা শুধুই আমার
আমি চেয়েছি অন্ধের মতো হয়ে উঠতে, আর
একটি পথের নিশানা ধরে এগিয়ে যেতে, যতোদূর যাওয়া যায়
ফিরে আসার প্রবৃত্তি আমার ক্ষয়ে গেছে অনেক আগেই
এখন কেবলই মনে হয়
একটিবারও কি সেই হায়েনার সাথে বন্ধুত্ব হবে না আমার

এতো যে অলস পথ পেরিয়ে এলাম
ভেবেছিলাম, হয়তো বা ফিরে পাবো সুর
আবারও হাতছানি দেবে কোনো এক অচিন-পুরের ডাক
কিন্তু, যতোই নিজেকে বোঝাই
এক তুমি, তুমিই শুধু বারবার আগলে রাখো পথ
এই যে লোভ, যাবতীয় ভয়ের আচার
কেন তুমি বোঝো না, একটি দীর্ঘ কবিতার কারণেই
আমি পড়ে থাকি এভাবে, মরি, বেঁচে উঠি কিংবা দম আটকে রাখি
আর যতোবার চোখ মেলে তাকাই
প্রতিবারই দূরে, অনেক দূরে দেখতে পাই অনুজ্জ্বল সকাল

কতো সময় পেরিয়ে গেলো, কতো ক্ষয়ে গেলো আয়ুর-আধার
এখনও যদি বলো, আমারই দায়, বাকি সব তোমার
তবে অনুরোধ
এই ভারী আত্নাটাকে মুক্তি দাও এবার
দু হাতে তুমি নিজেই তাকে তুলে ধরো আকাশের দিকে
আর নাটাই ধরা বালকটিকে হেসে বলো
টান দাও, জোরে ছুটে যাও
তুমি চিৎকার করতেই থাকবে, আর সেই চিৎকারে
বালকটি ফিরে পাবে আকাশ

এভাবেই তো হয়ে উঠতে পারে একটি দীর্ঘ কবিতা
এভাবেও তো তুমি বেঁচে উঠতে পারো আবার
লক্ষ্য করো, যেসব সময় আমরা পার করেছি অসুস্থতার ভেতর
সেখানে কোনো সুরই বাজে নি এভাবে আর
রোজ রোজ আমরা যে ক্ষয় করলাম এতো এতো আলো
এখন কেবলই রাত এসে থমকে থাকে, ফিরে যেতে চায় না যেন
এই কি তবে আমাদের বিলাস
ছন্দহীন তুমি-আমি, মৃতবৎ কবরের স্বপ্নে বিভোর
এমন করে কি বলো ফিরে আসা যায়
এভাবে কি আর পাওয়া যায় সেই অবকাশ
যেখানে একটি বৃক্ষ জেনেছে
কতখানি আকাশ শুধু তার

আমাকে তাই তুমি বলো
এভাবে আর কতোদিন তুমি রুখে দেবে পথের বিকাশ
এবার অন্তত তুমি ফিরিয়ে দাও আচার
একটি হায়েনার সামনে এভাবে বসে থেকে রোজ
যে পচন ধরেছে শরীরে, তা থেকে ভীষণ দুর্গন্ধ ছড়ায়
তবু্ দেখো বসে আছি ঠায়
একটি দীর্ঘ কবিতার লোভে এই যে আমি ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাই
তুমি কি সত্যিই চাও না এই রোগ সেরে যাক আমার
তারপর প্রখর রোদের ভেতরে দিয়ে হেঁটে যাব প্রাচীন বৃক্ষের ছায়ায়
যেখানে আমার সঙ্গীরা থেমেছিল, বসেছিল
কিছু সুর শুনিয়েছিল আমায়

অযথাই এতো দেরি হলো, অযথাই তুমি রুখে দিলে পথ
যে নেশায় আমি পেরিয়ে এসেছি জন্মের ক্ষত, রক্তের দাগ
তুমি জানো না সেই হায়েনাটির সাথেই যতো বৈরীতা আমার
যতোবার সে কামড়ে ধরে মাংস, ততোবারই মনে হয়
এই রোগ প্রলম্বিত হোক আরও, এই ক্ষত রয়ে যাক চিরকাল
কী সুর যেন বয়ে যায় তারপর
কী এক ঘুম যেন ছেয়ে থাকে মাথার উপর
আমার স্বস্তির নাম নেই কোনো, নেই কোনো শান্তির ঠিকানা
শুধু জানি, অনেক দূরে যে আকাশ, সেখানেই হয়তো
কখনও ছিলাম আমি, ছিল এক ঘর
অথচ প্রবল জলের তোড়ে ভেসে যায় স্বপ্নের মতো আর খড়কুটো যতো
কেমন দল বেঁধে ভেসে আসে আবার

এভাবে শ্যাওলা জমেছে বলেই তো মাঝে মাঝেই পড়ে যাই
তারপর যতো সাবধানেই উঠে দাঁড়াই না কেন, সে ঘ্রাণ কিছুতেই ছেড়ে যায় না আর
এমন অসুস্থতার মাঝেও মনে হয়
কোথাও যেন আমার মতো কেউ লিখে চলেছে দীর্ঘ কবিতা পাতার পর পাতা
আমারই স্বর অতি পোগনে আমাকে বলে যায় এইসব
আর বলে যায় এও, অহেতুক তুমি ক্ষয় করছো হৃদয়
আমি নিজেকে বোঝাতে ব্যর্থ হই অথচ তুমি কেমন বিজ্ঞের মতো বলো
এই ঠিকানা ও অসুখ শুধুই আমার

কোনো অস্তিত্বই আর আমাকে ফেরাতে পারে না ঘরে
কোনো সত্যই আমাকে পারে না দিতে এতোটুকু শান্তি আর
রোজ রোজ তাই নিজেকে শোনাই সেই দীর্ঘ কবিতার সুর
যা শুনতে শুনতে হায়েনাটি ঘুমিয়ে পড়ে নির্ভার
আর আমি তার ঘুমের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে শুধু ভাবি
এ কেমন দীর্ঘ কবিতা আমার
যার প্রতিটি লাইনের শেষে তুমি নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে পড়ো বারবার

০৬.০৯.২০



মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:১২

নেয়ামুল নাহিদ বলেছেন: কবিতার এরকম টোন আমার খুব ভালো লাগে। ভালো লিখেছেন, ধন্যবাদ।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৩

অ রণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ জানাচ্ছি

২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: অতি মনোরম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.