নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসাদুজ্জামান জুয়েল

আসাদুজ্জামান জুয়েল

রওশনারা বেগম ও আবদুর রশীদ খানের কনিষ্ঠ পুত্র আমি আসাদুজ্জামান জুয়েল। ১৯৭৮ সালের ০৫ জুন শরীয়তপুর জেলার পালং থানা পালং গ্রামের এক সাধারণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। শিক্ষা জীবন শুরু মায়ের হাতে। তুলাসার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এস.এস.সি; শরীয়তপুর সরকারী মহাবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচ.এস.সি; জাজিরা ডিগ্রী কলেজে থেকে বাণিজ্য বিভাগ হতে বি.কম পাস করার পর প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন অনুষদ হতে এলএল.বি ও এলএল.এম সম্পন্ন করি। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই কেটেছে মধুর দিনগুলো। ২০০৯ সালের ০৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভূক্ত হয়ে ২৩ ডিসেম্বর ২০০৯ ঢাকা বার এসোসিয়েশনে সদস্যভূক্ত হই। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যভূক্ত হয়ে আইন পেশার সাথে যুক্ত আছি। ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতি, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ও শরীয়তপুর জেলা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সদস্য হিসাবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছি। সাংবাদিকতা ও লেখালিখি করি মনের টানে। একই সাথে আইন পেশা ও সাংবাদিকতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিরন্তন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কর্ম জীবন শুরু লেখালিখির মাধ্যমে। দৈনিক ভোরের কাগজ দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু। এর পর দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক কালের কন্ঠ, দৈনিক গণমুক্তি সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কাজ করেছি। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৬টি। প্রবাসীদের সুখ-দুঃখ নিয়ে লেখা আমার প্রথম উপন্যাস ‘যেমন আছি লন্ডনে’ প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের একুশে বই মেলায়। দীর্ঘ বিরতির পরে ২০১৯ এর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় ভ্রমণ কাহিনী ‘কলকাতা ভ্রমণঃ জীবনে প্রথম কিছু’; প্রবন্ধ সংকলন ‘সমকালীন ভাবনা’ ও প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘হৃদয়ের শব্দক্ষরণ’। ২০২০ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় প্রবন্ধ সংকল ‘সমকালীন ভাবনা-২’ ও দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘তুই থাকিস পরাণের গহীনে’। এছাড়াও বেশ কিছু বই প্রকাশের অপেক্ষায় আছি। লেখালিখি করি বিভিন্ন ব্লগে। আমার ওয়েবসাইটঃ www.asadjewel.com, নিজস্ব ব্লগঃ www.asadjewel.blogspot.com এছাড়া www.somewhereinblog.net এ নিয়মিত লেখালিখি করি। শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে তিনবার ও লাইব্রেরী সম্পাদক হিসাবে দু্ইবার দায়িত্ব পালন করেছি। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, শরীয়তপুর জেলা ইউনিটের জীবন সদস্য। প্রগতি লেখক সংঘ, শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দ্বায়িত্বে আছি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড শরীয়তপুর, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শরীয়তপুর এর আইন উপদেষ্টা হিসাবেও কর্মরত আছি। গরীব-দুঃখীদের মামলা পরিচালনার জন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা শরীয়তপুর জেলা শাখার প্যানেল আইনজীবী হিসাবে দুস্থ্যদের আইনগত সহায়তা প্রদান কাজে নিষ্ঠার সাথে জড়িত আছি। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), শরীয়তপুর জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষানিকেতন কর্ম কেন্দ্রীক পাঠাগার, শরীয়তপুরের কার্যনির্বাহী সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি দীর্ঘদিন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও অস্ট্রেলিয়ান বার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ইনটেনসিভ ট্রায়েল এডভোকেসী ওয়ার্কশপ, ২০১০ সালে এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার এর উদ্যোগে হিউম্যান রাইটস এন্ড রুল অফ ‘ল’, ২০০২ ও ২০১০ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে শিশু ও নারী বিষয়ক রিপোর্টিং কর্মশালা, ১৯৯৯ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আয়োজিত কম্পিউটার ট্রেড প্রশিক্ষণ, ২০১০ সালে ইউএসএইড-প্রগতি-কালেরকন্ঠ আয়োজিত দুর্নীতি বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণসহ পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। লেখালিখি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে সমাজ সংস্কারে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আমার অর্ধপ্রাণ কন্যা রওশন আসাদ প্রিয়ন্তী। সহধর্মীনি মুনমুন সুলতানা লুনা পেশায় শিক্ষিকা। দুই বোন রেহানা আক্তার রেখা এবং কহিনুর আক্তার শিখা এবং একমাত্র ভাই মোহাম্মদ রুহুল আমীন খান আজাদ একজন প্রবাসী। যোগাযোগের জন্য আমাকে মেইল করতে পারেনঃ [email protected]

আসাদুজ্জামান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনা রঙ্গঃ অপূরণীয় ক্ষতির মাঝেও কিছু ভালো

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:২১


করোনা ভাইরাসের কারনে সারা বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত। মহাশক্তিধর-রাক্রমশালী রাষ্ট্র আমেরিকাও নাকানি চুবানি খাচ্ছে অদৃশ্য এক ক্ষুদ্র ভাইরাস করোনার হাতে। মৃত্যুর মিছিল দিন দিন বড় হচ্ছে। সারা বিশ্বে মৃত্যুর পরিসংখ্যান আজ যদি হয় বায়ান্ন হাজার তা কাল বেড়ে দাড়ায় পঞ্চান্ন হাজারে। কতটা ভয়াবহ আকার ধারন করেছে তা আমরা অর্থাৎ বাংলাদেশীরা চিন্তাও করতে পারছি না। কারন, বিশ্বে যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা ষাট হাজার ছুই ছুই সেখানে আমাদের দেশে মৃত্যু সংখ্যা মাত্র আট জন। মহান আল্লাহর রহমতে আমরা এখনও ভালোই আছি, কতদিন এই ভালোটা থাকতে পারবো তাও কেবল মহান আল্লাহ তায়ালাই জানেন। তবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির কারনে বিশ্বে কিছু অভাবনীয় পরিবর্তন ও উন্নতি লক্ষ্য করছেন বিশেষজ্ঞরা-বিজ্ঞানীরা। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে সারা বিশ্বে বিশেষ করে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে অভাবনীয় হারে। হয়তো আপনারা বলবেন, ঘর পুরছে আর আমি আলু পোড়া খাচ্ছি আর তার স্বাদ জানাচ্ছি। সৃষ্টির মাঝে যেমন ধ্বংস আছে তেমনি ধ্বংসের মাঝেও কিছু সৃষ্টি হয়। তাইতো করোনা রঙ্গ লিখে দুঃখের মাঝেও ভালো সংবাদ দিয়ে মনে সুখ খোজার চেষ্টা করছি।
করোনার প্রকোপের কারনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চলছে লকডাউন। গাড়ি চলাচল করছে না, বন্ধ কলকারখানা, অফিস আদালত বন্ধ, জনসমাগম নেই বললেই চলে। পৃথিবীর রাস্তাঘাট এখন জনমানবহীন। এর ফলে এক ধাক্কায় বায়ু দূষণের মাত্রা অনেকটাই কমে গেছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পরিবেশ ও ওজোন স্তরের উপর। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। ওজোন স্তরের ক্ষত সম্পূর্ণ ভাবে নিরাময় হয়ে যাচ্ছে। দূষণের ক্ষত সারিয়ে ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্চে বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর। কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ব বিদ্যালয়ের সিআইআরইএসের এক পর্যবেক্ষক এই বিষয়ে জানিয়েছেন, দক্ষিণ গোলার্ধে পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, বায়ু দূষণের ফলে ওজোন স্তরে যে গহ্বরের সৃষ্টি হয়েছিল তা ধীরে ধীরে মেরামত হচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীর পরিবেশ ও জীব জগত বড়সড় বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে। দূষণ কমছে, ধীরে ধীরে সজীব হচ্চে পৃথিবী! একই সঙ্গে দূষণের ক্ষত সারিয়ে ধীরে ধীরে ‘সুস্থ’ হয় উঠছে বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তরও।
ওজোন স্তর সম্পর্কে মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া যে ধারণা দেয় তা হলো-ওজোন স্তর (Ozone layer) হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একটি স্তর যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজোন গ্যাস থাকে। এই স্তর থাকে প্রধানতঃ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে কমবেশি ২০-৩০ কিমি উপরে অবস্থিত। এই স্তরের পুরুত্ব স্থানভেদে এবং মৌসুমভেদে কমবেশি হয়। বায়ুমণ্ডলে ওজোনের প্রায় ৯০ শতাংশ স্ট্রাটোস্ফিয়ারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওজোন কেন্দ্রীকরণ প্রায় ২০ এবং ৪০ কিলোমিটার (৬৬,০০০ এবং ১৩১,০০০ ফুট), তারা যেখানে মিলিয়ন প্রতি প্রায় ২ থেকে ৮ অংশ থেকে পরিসীমার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হয়। যদি এই ওজোনের সবটুকু অংশ সমুদ্রতল এর বায়ু চাপ দ্বারা সংকুচিত করা হয় তাহলে এটি শুধুমাত্র ৩ মিলিমিটার (১/৮ ইঞ্চি) পুরু হবে! ফরাসী পদার্থবিদ চার্লস ফ্যব্রি এবং হেনরি বুইসন ১৯৩০ সালে ওজোন স্তর আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে ব্রিটিশ আবহাওয়াবিদ জি এম বি ডবসন ওজোনস্তর নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেন। ১৯২৮ সাল থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে তিনি ওজোন পর্যবেক্ষণ স্টেশনসমূহের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেন।
ওজোন স্তরের গুরুত্বঃ ওজোনস্তরে ওজোনের ঘনত্ব খুবই কম হলেও জীবনের জন্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি এটি শোষণ করে নেয়। ওজোন স্তর সূর্যের ক্ষতিকর মধ্যম মাত্রার (তরঙ্গদৈর্ঘ্যের) শতকরা ৯৭-৯৯ অংশই শোষণ করে নেয়, যা কিনা ভূ-পৃষ্ঠে অবস্থানরত উদ্ভাসিত জীবনসমূহের সমূহ ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম। মধ্যম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সূর্যের এই অতিবেগুণী রশ্মি মানব দেহের ত্বক এমনকি হাড়ের ক্যান্সার সহ অন্যান্য মারাত্মক ব্যাধি সৃষ্টিতে সমর্থ। এই ক্ষতিকর রশ্মি পৃথিবীর জীবজগতের সকল প্রাণের প্রতি তীব্র হুমকি স্বরূপ। বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তর প্রতিনিয়তই এই মারাত্নক ক্ষতিকর অতিবেগুণী রশ্নিগুলোকে প্রতিহত করে পৃথিবীর প্রাণিকুলকে রক্ষা করছে। ওজোন স্তরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ভূমিকার জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ওজোন লেয়ার সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখটি মনোনীত করেছে।
ওজোনস্তর ক্ষয়ঃ ওজোনস্তর ক্ষয় দুটি স্বতন্ত্র কিন্তু সম্পর্কযুক্ত ঘটনা যা ১৯৭০ এর দশক থেকেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। পৃথিবীর স্ট্রাটোমণ্ডলের ওজোনস্তর আয়তনে প্রতি দশকে ৪% হ্রাস পাচ্ছে এবং এর বেশিরভাগ অংশই ঘটছে পৃথিবীর মেরু অঞ্চলের স্ট্রাটোমণ্ডল মন্ডলে। এই সাম্প্রতিক ঘটনাটি ওজোনস্তর ছিদ্র বলা হয়ে থাকে। এই ঘটনাটি ওজোনস্তরের ওজোন অণুর হ্যালোজেন দ্বারা প্রভাবকীয় ক্ষয়ের ফলে হয়ে থাকে। এই হ্যালোজেন অণুর মূল উৎস হল মানবসৃষ্ট হ্যালোকার্বণ হিমায়ন পদার্থের সালোক বিভাজন। যেমনঃ ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, ফ্রেয়ন, হ্যালোয়াঅ্যালকেন ইত্যাদি। ভূপৃষ্ঠ থেকে নির্গমনের পর এই সকল যৌগ স্ট্র্যাটোমণ্ডলে গিয়ে পৌছে। এই ঘটনাটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে হ্যালোজেন যৌগের বৃদ্ধির ফলে ঘটে থাকে। CFC (ক্লোরোফ্লুরোকার্বনস) এবং অন্যান্য ক্ষয়কারী অন্যান্য যৌগসমূহকে ওজোনস্তর ক্ষয়কারী যৌগ (ODS) হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। ওজোনস্তর ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি যেমন UVB তরঙ্গ (২৮০–৩১৫ nm) পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশে বাধা প্রদান করে। পরিলক্ষিত ওজোনক্ষয় বিশ্বে ব্যপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে যার ফলে মন্ট্রিয়াল চুক্তি গৃহীত হয়েছে, যার ফলে ক্লোরোফ্লুরোকার্বনস, হ্যালোজেন এবং অন্যান্য ওজোনস্তর ক্ষয়কারী রাসায়নিক উৎপাদন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিভিন্ন গবেষণার তথ্যানুযায়ী ধারনা করা হয় যে, ওজোনস্তরের ক্ষয়ের ফলে যে অতিবেগুনী রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করে তা ত্বকের ক্যানসার, ছানি, উদ্ভিদজগতের ক্ষতি, প্ল্যাঙ্কটন হ্রাস, সমুদ্রের জীবের হ্রাস ইত্যাদির সমস্যার কারণ হতে পারে।
করোনার কারনে সরকার দেশে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছেন, এলাকায় এলাকায় করেছেন লকডাউন। অফিস আদালত বন্ধের কারনে বিশাল সংখ্যক এসি চলে না। এসি চালালে সবচেয়ে বেশি সিএফসি গ্যাস নির্গত হয়। এছাড়া রাস্তায় গাড়ি চলাচল বেশি হলে কালো ধুয়া নির্গত হয় যার সাথে বিভিন্ন বায়ুদুষণকারী কনা থাকে। গাড়ি চলাচল কমায় বৈশ্বিক তাপমাত্রাও কমে আসছে যা আমাদের বিশ্বের জন্য এক আশীর্বাদ হয়ে দাড়িয়েছে।
সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তরের ক্লিন এয়ার অ্যান্ড সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট-সিএএসই প্রকল্পের একিউআই আর্কাইভের তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত বায়ুমান সূচকে ঢাকার বাতাসের মান ছিল ২০০ এর বেশি। কোনো কোনো দিন তা ৩০০ ছাড়িয়ে বিপদজনক মাত্রায় পৌঁছাতে দেখা গেছে। এর মধ্যে ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় একিউআই ওঠে ৩৬৩ তে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ঢাকায় মানুষ কমতে থাকে। সেইসাথে কমতে থাকে বায়ু দূষণের মাত্রা। ১৪ মার্চ ঢাকায় একিউআই নেমে আসে ১৮৩ তে, ১৫ মার্চ কমে ১৬৯ হয়। ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হলে দিনের প্রথম ভাগে রাস্তায় মানুষের চলাচল আরও কমে আসে। ২২ মার্চ সিএএসই এর প্রকাশিত বায়ুমানে ঢাকার বাতাসের একিউআই ছিল ১৫৮। ২৬ মার্চ থেকে অফিস আদালত, যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়ার পর ২৯ মার্চ ঢাকার একিউআই নেমে আসে ১২০ এ, যা চলতি বছরে ঢাকায় সবচেয়ে ভালো বায়ুমানের সূচক। পরদিনও ঢাকায় একিউআই ছিল ১৫০ এর কম।
করোনা ভাইরাসের প্রকোপের কারনে কমছে সড়ক দুর্ঘটনাও। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে, ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৭ হাজার ৮৫৫ জন আর আহত হয়েছে ১৩ হাজার ৩৩০ জন। এই সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বেশি। অবস্থা যা, তাতে ২০২০ সালের হিসাব ২০১৯ সালের চেয়ে বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। সড়ক-মহাসড়কে অপমৃত্যুর এই স্থায়ী বন্দোবস্তই যেন বাংলাদেশে নতুন স্বাভাবিকতা। এটাই যেন অলঙ্ঘনীয় নিয়তি। বছর যায়, দশক যায়, কিন্তু সড়কে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনায় সত্যিই কিছু করা হয় না। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সংগঠনের করা ২০১৯ সালের সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যানে জানাযায়, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনা ১ হাজার ৫৯৯টি বেশি হয়েছে। ২০১৮ সালে ৩ হাজার ১০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ হাজার ৩৯ জন নিহত ও ৭ হাজার ৪২৫ জন আহত হয়েছিল। আর ২০১৭ সালে ৩ হাজার ৩৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ৬৪৫ জন নিহত ও ৭ হাজার ৯০৮ জন আহত হয়েছিল।
পরিসংখ্যানে সব সময় সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসেনা, আমরা এমনটাই বিশ্বাস করি। বাস্তবতায় সংখ্যাটা অনেক কম-বেশি থাকে। যেভাবে দিলে সুবিধা হয় সেভাবেই সংখ্যা লিপিবদ্ধ করে পরিসংখ্যান। অনেক সময় পরিসংখ্যানকারীদের কাছে সব তথ্য পৌছাওনা। বাস্তবে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা থাকে অনেক বেশি। সারা দেশে এমনকি সারা বিশ্বে লকডাউন চলায় রাস্তায় পরিবহন খুব একটা চলতে দেখা যায় না। এর ফল স্বরূপ দুর্ঘটনা ও মৃত্যু একেবারেই কমে এসেছে যা স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নেয়া যায়। রাস্তায় বের হলে দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে, এটাকে আমরা নিয়তি হিসাবে মেনে নেই। কিন্তু বিগত বছরের পরিসংখ্যান যদি সামান্যতমও বিশ্বাস করি তবে তাতে আৎকে উঠার মত সংখ্যাই লিখা আছে।
করোনার কারনে সারা বিশ্বে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় যে ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে তা হলো আমরা স্বজন হারাচ্ছি। অর্থনৈতিক ক্ষতি শ্রমের বিনিময়ে পূষিয়ে নেয়া যাবে কিন্তু স্বজন হারানোর ক্ষতি কোন কিছুতেই পূরণ হবে না। লক ডাউনের কারনে কল কারখানা বন্ধ, ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ। এতে যে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তা থেকে উঠতে বিশ্বকে বেশ বেগ পেতে হবে। সামনে এক কঠিন সময় আসছে। কিভাবে মোকাবিলা করবো তা হয়তো আমাদের জানা নেই। যারা এ-নিয়ে চিন্তা করেন তারাই সেটা ভেবে ঠিক করবেন। অর্থনৈতিক ধাক্কা সামাল দেয়ার চাইতে এখন দরকার স্বজন হারানোর ধাক্কা সামাল দেয়া। সবাই ভালো থাকুক। বেঁচে থাকলে একসাথে কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে। তাই এখন সকলের ঘরে থাকাই উত্তম।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: এই ভালো আসল ভালো না।
সবার আগে মানুষ। করোনা তো মানুষ মাছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.