নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/asadali.ht

মোহাম্মদ আসাদ আলী

সাংবাদিক

মোহাম্মদ আসাদ আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে অন্ধ বিশ্বাসের স্থান নেই

০৫ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৭

আল্লাহর কোর’আন যিনি ভাসাভাসা ভাবেও একবার পড়ে গেছেন তিনিও লক্ষ্য না করে পারবেন না যে- চিন্তা-ভাবনা, যুক্তির উপর আল্লাহ কত গুরুত্ব দিয়েছেন। “তোমরা কি দেখো না? তোমরা কি চিন্তা করো না?” এমন কথা কোর’আনে এতবার আছে যে সেগুলোর উদ্ধৃতি কোনো প্রয়োজন করে না। এখানে শুধু দু’একটির কথা বলছি এর গুরুত্ব অনুধাবনের জন্য। চিন্তা-ভাবনা, কারণ ও যুক্তির উপর আল্লাহ অতখানি গুরুত্ব দেওয়া থেকেই প্রমাণ হয়ে যায় যে এই দীনে অন্ধ বিশ্বাসের কোনো স্থান নেই। তারপরও তিনি সরাসরি বলছেন-“যে বিষয়ে তোমাদের জ্ঞান নেই (অর্থাৎ বোঝ না) তা গ্রহণ ও অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই তোমাদের শোনার, দেখার ও উপলব্ধির প্রত্যেকটিকে প্রশ্ন করা হবে (কেয়ামতের দিনে) (সুরা বনি ইসরাইল ৩৬)।” কোর’আনের এ আয়াতের কোনো ব্যাখ্যা প্রয়োজন করে না। অতি সহজ ভাষায় আল্লাহ বলছেন জ্ঞান, যুক্তি-বিচার না করে কোনো কিছুই গ্রহণ না করতে। অন্য বিষয় তো কথাই নেই, সেই মহান স্রষ্টা তার নিজের অস্তিত্ব সম্বন্ধেও কোর’আনে বহুবার বহু যুক্তি দেখিয়েছেন। অথচ তাঁর নিজের সম্পর্কে বলার কোনো প্রয়োজন ছিল না, কারণ আল্লাহ কারও ঈমানের মুখাপেক্ষী নন। তারপরও তিনি তাঁর একত্ব, তিনি যে এক, তার কোনো অংশীদার, সমকক্ষ নেই, অর্থাৎ একেবারে তার ওয়াহদানিয়াত (একত্ব) ও উলুহিয়াত (সার্বভৌমত্ব) সম্পর্কেই যুক্তি তুলে ধরেছেন। বলছেন- “বল (হে মোহাম্মদ), মোশরেকরা যেমন বলে তেমনি যদি (তিনি ছাড়া) আরও সার্বভৌমত্বের অধিকারী (এলাহ) থাকত তবে তারা তাঁর সিংহাসনে (আরশে) পৌঁছতে চেষ্টা কোরত (সুরা বনি ইসরাইল ৪২)। আবার বলছেন- “আল্লাহ কোনো সন্তান জন্ম দেন নি; এবং তার সাথে আর অন্য কোনো সার্বভৌম (এলাহ) নেই, যদি থাকত তবে প্রত্যেকে যে যেটুকু সৃষ্টি করছে সে সেইটুকুর পৃষ্ঠপোষকতা করত এবং অবশ্যই কতগুলি (এলাহ-সার্বভৌম হুকুমদাতা) অন্য কতকগুলির (এলাহ) উপর প্রাধান্য বিস্তার করত (সুরা মো’মেনুন ৯১)।” এমনি আরও বহু আয়াত উল্লেখ করা যায় যেগুলিতে আল্লাহ মানুষের জ্ঞান, বিবেক, যুক্তির, চিন্তার প্রাধান্য দিয়েছেন, সব কিছুতেই ঐগুলি ব্যবহার করতে বলেছেন, চোখ-কান বুঁজে কোনো কিছুই অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ যেমন একেবারে তার নিজের অস্তিত্ব ও একত্বের ব্যাপারেও যুক্তি উপস্থাপিত করেছেন, (একটু পেছনেই যা উল্লেখ করে এলাম) তেমনি তার রসুল (দ.) তার ঈমান অর্থাৎ বিশ্বাসের ব্যাপারেও বলছেন- ‘আমার ঈমানের ভিত্তি ও শেকড় হলো যুক্তি।’ এছাড়া কোর’আনময় আল্লাহ তাঁর সার্বভৌমত্বের সম্পর্কে যুক্তি উত্থাপন করে গেছেন এবং বলেছেন এবং কারও সাধ্য থাকলে তা খণ্ডানোর আহ্বান (ঈযধষষবহমব)। তিনি যে দীন মানবজাতিকে দান করেছেন তা গ্রহণ করে নিতে তিনি মানবজাতিকে জোর না করে তিনি তাঁর দীনের শ্রেষ্ঠত্ব যুক্তিসহকারে উপস্থাপন করেছেন এবং তা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রশ্ন করেছেন, “যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি জানেন না? তিনি সূক্ষ্মতম বিষয়ও জানেন” (সুরা মূলক ১৪)।
ইসলামে অন্ধ বিশ্বাস কোনোভাবেই স্বীকৃত নয়। ইসলামের অপর নাম দীনুল ফেতরাত বা প্রাকৃতিক দীন যা স্বাভাবিককের উপর, যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। অন্ধ বিশ্বাস তো দূরের কথা আল্লাহ ও রসুলের (দ.) প্রেমে ও শ্রদ্ধায় আপ্লুত হয়েও যে যুক্তিকে ত্যাগ করা যাবে না, তা তাঁর উম্মাহকে শিখিয়ে গেছেন মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক মোহাম্মদ (দ.)। একটি মাত্র শিক্ষা এখানে উপস্থাপন করছি। ওহোদের যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় তাঁর তলোয়ার উঁচু করে ধরে বিশ্বনবী (দ.) বললেন- “যে এর হক আদায় করতে পারবে সে এটা নাও।” ওমর বিন খাত্তাব (রা.) লাফিয়ে সামনে এসে হাত বাড়িয়ে বললেন-“ইয়া রসুলাল্লাহ (দ.)! আমাকে দিন, আমি এর হক আদায় করব।” মহানবী (দ.) তাকে তলোয়ার না দিয়ে অন্যদিকে ঘুরে আবার বললেন- “যে এর হক আদায় করতে পারবে সে নাও।” এবার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহাবা যুবায়ের বিন আল আওয়াম (রা.) লাফিয়ে এসে হাত বাড়ালেন- “আমি এর হক আদায় করব।” আল্লাহর রসুল (দ.) তাকেও তলোয়ার না দিয়ে অন্যদিকে ঘুরে আবার ঐ কথা বললেন, এবার আনসারদের মধ্যে থেকে আবু দোজানা (রা.) বিশ্বনবী (দ.) সামনে এসে প্রশ্ন করলেন- “হে আল্লাহর রসুল! এই তলোয়ারের হক আদায়ের অর্থ কি?” রসুলাল্লাহ জবাব দিলেন- ‘এই তলোয়ারের হক হচ্ছে এই যে এটা দিয়ে শত্র“র সঙ্গে এমন প্রচণ্ডভাবে যুদ্ধ করা যে এটা দুমড়ে, ভেঙ্গে চুরে যাবে।” আবু দোজানা (রা.) বললেন- ‘আমায় দিন, আমি এর হক আদায় করব।” বিশ্বনবী (দ.) আবু দোজানা (রা.) হাতে তাঁর তলোয়ার উঠিয়ে দিলেন (হাদিস ও সিরাতে রসুলাল্লাহ- মোহাম্মাদ বিন এসহাক)। একটা অপূর্ব দৃষ্টান্ত- শিক্ষা যে, অন্ধবিশ্বাস ও আবেগের চেয়ে ধীর মস্তিষ্ক, যুক্তির স্থান কত ঊর্ধ্বে। ওমর (রা.) ও যুবায়ের (রা.) এসেছিলেন আবেগে, স্বয়ং নবীর (দ.) হাত থেকে তাঁরই তলোয়ার! কত বড় সম্মান, কত বড় বরকত ও সৌভাগ্য। ঠিক কথা। কিন্তু আবেগের চেয়ে বড় হলো যুক্তি, জ্ঞান। তারা আবেগে ও ভালোবাসায় জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গেলেন যে মহানবী (দ.) যে হক আদায় করার শর্ত দিচ্ছেন, সেই হকটা কী? আবু দোজানার (রা.) আবেগ ও ভালোবাসা কম ছিল না। কিন্তু তিনি আবেগে যুক্তিহীন হয়ে যান নি, প্রশ্ন করেছেন- কী ঐ তলোয়ারের হক? হকটা কী তা না জানলে কেমন করে তিনি তা আদায় করবেন? বিশ্বনবী (দ.) যা চাচ্ছিলেন আবু দোজানা (রা.) তাই করলেন। যুক্তিসঙ্গত প্রশ্ন করলেন এবং তাকেই তাঁর তলোয়ার দিয়ে সম্মানিত করলেন। এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হচ্ছে যুক্তিকে প্রাধান্য না দেওয়ায় মহানবী (দ.) প্রত্যাখ্যান করলেন কাদের? একজন তাঁর শ্বশুর এবং ভবিষ্যৎ খলিফা, অন্যজন শ্রেষ্ঠ সাহাবাদের অন্যতম, এবং দু’জনেই আশারায়ে মোবাশশারাহর অন্তর্ভুক্ত, অন্যদিকে আবু দোজানা এসব কিছুই নন, একজন সাধারণ আনসার। তবু যুক্তিকে প্রাধান্য দেয়ায় ঐ মহা সম্মানিত সাহাবাদের বাদ দিয়ে তাকেই সম্মানিত করলেন। প্রশ্ন হচ্ছে- আবু দোজানার (রা.) আবেগ, বিশ্বনবীর (দ.) প্রতি তার ভালোবাসা কি ওমর (রা.) বা যুবায়েরের (রা.) চেয়ে কম ছিল? না, কম ছিল না, তার প্রমাণ বিশ্বনবীর (দ.) দেয়া তলোয়ারের হক তিনি কেমন করে আদায় করেছিলেন তা ইতিহাস থেকে পাওয়া যায়।
আকলের বেশি কেউ কোনো পুরস্কার পাবে না:
ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেছেন- আল্লাহর রসুল (দ.) বললেন- ‘কোন মানুষ নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত, ওমরা (ইবনে ওমর (রা.) উল্লেখ করছেন যে ঐগুলি তিনি একে একে এমন বলতে লাগলেন যে, মনে হলো কোনো সওয়াবের কথাই তিনি (দ.) বাদ রাখবেন না) ইত্যাদি সবই করল, কিন্তু কেয়ামতের দিন তার আকলের বেশি তাকে পুরস্কার দেয়া হবে না (ইবনে ওমর (রা.) থেকে- আহমদ, মেশকাত)। রসুলাল্লাহ (দ.) শব্দ ব্যবহার করেছেন আকল, যে শব্দটাকে আমরা বাংলায় ব্যবহার কোরি ‘আক্কেল’ বলে, অর্থাৎ মানুষের বুদ্ধি, সাধারণজ্ঞান, যুক্তি ইত্যাদি, আবু দোজানা (রা.) যেটা ব্যবহার করে নবীকে (দ.) প্রশ্ন করেছিলেন তলোয়ারের কী হক? অর্থাৎ বিচারের দিনে মানুষের সওয়াবই শুধু আল্লাহ দেখবেন না, দেখবেন ঐ সব কাজ বুঝে করেছে, নাকি গরু-বকরীর মতো না বুঝে করে গেছে, এবং সেই মতো পুরস্কার দেবেন, কিম্বা দেবেন না। অর্থাৎ কারণ ও উদ্দেশ্য না বুঝে বে-আক্কেলের মতো নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত, ইত্যাদি সব রকম সওয়াবের কাজ শুধু সওয়াবের আশায় করে গেলে কোনো পুরস্কার দেওয়া হবে না। এই হাদিসটাকে সহজ বাংলায় উপস্থাপন করলে এই রকম দাঁড়ায়- ‘বিচারের দিনে পাক্কা নামাযীকে আল্লাহ প্রশ্ন করবেন- নামায কায়েম করেছিলে? মানুষটি জবাব দেবে-হ্যাঁ আল্লাহ! আমি সারা জীবন নামায পড়েছি। আল্লাহ বলবেন-ভাল! কেন পড়েছিলে? লোকটি জবাব দেবে- তুমি প্রভু। তোমার আদেশ, এই তো যথেষ্ট, তুমি হুকুম করেছ তাই পড়েছি। আল্লাহ বলবেন- আমি হুকুম ঠিকই করেছি। কিন্তু কেন করেছি তা কি বুঝেছ? তোমার নামাযের আমার কি দরকার ছিল? আমি কি তোমার নামাযের মুখাপেক্ষী ছিলাম বা আছি? কী উদ্দেশ্যে তোমাকে নামায পড়তে হুকুম দিয়েছিলাম তা বুঝে কি নামায পড়েছিলে?” তখন যদি ঐ লোক জবাব দেয়- না। তাতো বুঝি নি, তবে মহানবীর (দ.) কথা মোতাবেক তার ভাগ্যে নামাযের কোনো পুরস্কার জুটবে না।
নামাযের মতো আজ হজ্ব সম্বন্ধেও এই জাতির আকিদা বিকৃত হয়ে গেছে। এই বিকৃত আকিদায় হজ্ব আজ সম্পূর্ণরূপে একটি আধ্যাত্মিক ব্যাপার, আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জন করার পথ। আজকের দিনের একজন হাজীকে আল্লাহ যদি হাশরের দিনে প্রশ্ন করেন যে, “তুমি কেন হজ্ব করেছ?” তিনি নিশ্চয় জবাব দেবেন, “তোমার সান্নিধ্য লাভের জন্য হে আল্লাহ।” তখন আল্লাহ যদি পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আমি তো সর্বত্র ছিলাম এবং আছি, সৃষ্টির প্রতি অণু-পরামাণুতে আমি আছি, তবে আমাকে ডাকতে, আমার সান্নিধ্যের জন্য এত কষ্ট করে দূরে যেতে হবে কেন? আমার নিজের আত্মা তোমার দেহের মধ্যেই ছিল, আমি তো প্রতিটি মানুষের মধ্যেই বর্তমান ছিলাম, শুধু তাই নয়, আমি বলেই দিয়েছিলাম যে-নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অতি সন্নিকটে, আরও বলেছিলাম, ‘আমি (মানুষের) গলার রগের চেয়েও সন্নিকটে। তাহলে আমার সান্নিধ্য পেতে এত দূরে এত কষ্ট করে যেতে হবে কেন?” যদি ঐ হাজী বলেন যে, “আমি হজ্বে গিয়েছি, কারণ ওখানে বায়তুল্লাহ শরীফ, তোমার ঘর”। তখন আল্লাহ বলবেন, “ঘরের মালিকই যখন সঙ্গে আছেন তখন বহু দূরে তাঁর পাথরের ঘরে যাবার কী প্রয়োজন আছে? আর আসল হজ্ব তো আরাফাতের ময়দানে, আমার ঘর কাবায় নয়। আমার ঘর দেখানোই যদি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তবে কাবাকে হজ্বের আসল কেন্দ্র না করে কাবা থেকে অনেক দূরে এক খোলা মাঠকে কেন্দ্র করলাম কেন? আর যদি আমি আরাফাতের ময়দানেই বসেও থাকি, সেখানে যেয়ে আমার সামনে তোমাদের উপস্থিত হবার জন্য বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত করে দিলাম কেন? যে কেউ যখন খুশি আরাফাতের মাঠে গিয়ে ‘লাব্বায়েক’ বলে হাজিরা দিলেই তো হয়ে যেত। তা না করে আমি আদেশ দিয়েছি বছরের একটা বিশেষ মাসে, একটা বিশেষ তারিখে আমার সামনে হাজির হবার। কেন? একা একা যেয়ে আমাকে ভালোভাবে ডাকা যায়, নাকি সম্পূর্ণ অপরিচিত জায়গায়, অপরিচিত পরিবেশে, লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রচণ্ড ভিড়ের ধাক্কাধাক্কির মধ্যে দাঁড়িয়ে ভালোভাবে, মন নিবিষ্ট করে ডাকা যায়? কী উদ্দেশ্যে তোমাকে হজ্ব করতে হুকুম দিয়েছিলাম তা বুঝে কি হজ্ব করেছিলে?” তখন যদি ঐ লোক জবাব দেয়- না। তাতো বুঝি নি, তবে মহানবীর (দ.) কথা মোতাবেক তার ভাগ্যে হজ্বেরও কোনো পুরস্কার জুটবে না।
নামায এবং হজ্বের মতো অন্যান্য সব পুণ্য-সওয়াবের কাজের সম্বন্ধেও ঐ একই কথা। আর যে মানুষ আল্লাহর প্রশ্নের জবাবে বলবে- হ্যাঁ আল্লাহ, আমি বুঝেই নামায পড়েছি। তোমার রসুলকে (দ.) তুমি দুনিয়ায় পাঠিয়েছিলে সমস্ত মানব জাতির উপর তোমার দেয়া জীবন-ব্যবস্থা, দীনকে সংগ্রামের মাধ্যমে জয়ী করে পৃথিবী থেকে সব রকম অন্যায়, শোষণ, অবিচার, যুদ্ধ ও রক্তপাত দূর করে শান্তি (ইসলাম) প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব দিয়ে। তাঁর একার পক্ষে এবং এক জীবনে এ কাজ সম্ভব ছিল না। তাঁর প্রয়োজন ছিল একটা জাতির, একটা উম্মাহর, যে জাতির সাহায্যে এবং সহায়তায় তিনি তাঁর উপর দেয়া দায়িত্ব পালন করতে পারেন এবং তিনি তোমার কাছে প্রত্যাবর্তনের পর যে উম্মাহ তাঁর সংগ্রাম চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়, যে পর্যন্ত না তাঁর দায়িত্বপূর্ণ হয় এবং ইবলিস তোমাকে দুনিয়ায় মানবজাতির মধ্যে ফাসাদ আর রক্তপাতের যে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল, তাতে তুমি জয়ী হও। আমার সৌভাগ্যক্রমে, তোমার অসীম দয়ায়, আমি সেই উম্মাহর অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। তোমার আদেশ নামাযের উদ্দেশ্য ছিল আমার সেই রকম চরিত্র সৃষ্টি করা, সেই রকম আনুগত্য, শৃঙ্খলা শিক্ষা করা যে চরিত্র ও শৃঙ্খলা হলে আমি তোমার নবীর (দ.) দায়িত্ব সম্পাদনে তাঁর সাহায্যকারী হয়ে সংগ্রাম করতে পারি। তাই আমি বুঝেই নামায পড়েছি। এই লোক পাবে তার নামাযের পূর্ণ পুরস্কার। একইভাবে যে হাজী আল্লাহর প্রশ্নের জবাবে বলবে যে, “হে আল্লাহ! আমি বুঝেছি যে তোমার ঘর ক্বাবাকে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক করেছ এবং হজ্বকে করেছ মুসলিম উম্মাহর মহাসম্মেলন। তুমি চেয়েছ বছরে একবার আরাফাতের মাঠে পৃথিবীর সমস্ত মুসলিমদের নেতৃস্থানীয়রা একত্র হয়ে জাতির সর্বরকম সমস্যা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ইত্যাদি সর্বরকম সমস্যা, বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে, পরামর্শ করবে, সিদ্ধান্ত নেবে। অর্থাৎ স্থানীয় পর্যায় থেকে ক্রমশ বৃহত্তর পর্যায়ে বিকাশ করতে করতে জাতি পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু মক্কায় একত্রিত হবে। এটাই হজ্ব। এই মহাজাতিকে ঐক্যের সুদৃঢ় বন্ধনে বেঁধে রাখার জন্য হজ্ব তোমার দেওয়ার চমৎকার একটি প্রক্রিয়া। তাই আমি বুঝেই হজ্ব করেছি।” এই লোক পাবে তার হজ্বের পূর্ণ পুরস্কার। অন্যান্য সব রকম কাজের (আমলের) ব্যাপারেও তাই। কাজেই সকল আমলের পুরস্কার পেতে হলে এই দীনের যাবতীয় বিষয়ের উদ্দেশ্য, আকিদা জানা আবশ্যক।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:০৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন!!!

আপনার মতো এত সুন্দর যুক্ত দিয়ে নয় এই অনুভব হীন াসাড় নামাজ যে আল্লাহ চায়না তা বহু লোকদেখানো নামাজীদের বলেছি সূরা মাউনের অর্ত দিয়ে!

যে হায় তুমি নিজেই তেলাওয়াত করছে-

"আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচারদিবসকে মিথ্যা বলে?
সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলা ধাক্কা দেয়
এবং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না।
অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর,
যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর;
যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে
এবং নিত্য ব্যবহার্য্য বস্তু অন্যকে দেয় না।"

এত ষ্পষ্ট করে বলা কথা গুলো বলেই লোক দেখানো নামাজ পড়েন- পড়ে বেরিয়েই মসজিদের সামনে দাড়ানো অসহায় লোক গুলোকে দূর দূর করেন! বছর ভরেই তারা আপনার সামনে বিরাজ করে কিন্তু তাদের জণ্য আপনাদের হাত সংকুচিত! তাদের পুর্নবাসন হয়না!
আর আপনাদের লোক দেখানো নামাও মূল্যহীন হয়ে যায়- আল্লাহর ঘোষনা মতেই!যা আপনি নিজেও দুলে দুলে আবৃত্তি করেই নামাজ পড়েছেন!

প্রথম লাইনের প্রশ্নের উত্তর পরের দুলাইনে দিয়ে ৩য় লাইনে শাস্তির খতা বরেই নামাজের হাকিকত কি তা ৫ম লাইনে পরিস্কার ইংগিত দিয়েছেন। যা আরো বিশ্লেষন করেছেন ৬ এবং ৭ এ এসে।

অথচ আমার আতা গাছে তোতা পাখির মতো শুধুই পড়ে গেলাম! ঠোট দিয়ে অন্তরে দিয়ে অনুভবের চেষ্টা করলাম না।

++++++++++ প্রিয়তে রাখলাম।


০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:৪৭

মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ

২| ০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:২৬

রাঘব বোয়াল বলেছেন: পোস্ট +

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.