নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু বলতে চাই কিছু লিখেত চাই

মনুআউয়াল

মনুআউয়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

হত্যার রাজনীতির লোমহর্ষক তথ্য প্রকাশ করলেন শিবিরের সাবেক ‘সাথি’

২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৪



জামাতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের মানুষ হত্যার রাজনীতির লোমহর্ষক তথ্য প্রকাশ করেছেন সংগঠনটির ‘সাথি’ পরযায়ে উন্নীত একজন সাবেক শিবির কর্মী।লন্ডনের সাহিত্য বিষয়ক সংগঠন ‘পলল’ ও সপ্তক স্কুল অব পারফর্মিং আর্টসের ব্যতিক্রমী ‘তুই রাজাকার’ মঞ্চের পরিকল্পক ও নির্মাতা আব্দুস সামাদ রবিবার মঞ্চ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই লোমহর্ষক তথ্য প্রকাশ করেন।তরুণ কার্টুনিষ্ট, চিত্রশিল্পী আব্দুস সামাদ। বক্তৃতার শুরুতেই তিনি তাঁর পরিচিতি দিতে গিয়ে বলেন, আমি একজন কার্টুনিষ্ট, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একজন প্রগতিশীল কর্মী ও শিল্পকলার একজন শিক্ষক।



আমার এই পরিচিতি আপনারা অনেকেই জানেন। কিন্তু আমার আরেকটি পরিচয় আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন না। অতীত এই পরিচয়ের কারনে আমি এখনও রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনা, সবসময় এক মর্মপীড়ায় ভুগছি আমি। তিনি বলেন, আমার এতসব পরিচয়ের পরেও যে অতীত পরিচয় আমার বিবেককে দিবানিশী দংশন করে সেটি হলো আমি ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাথি পরযায়ের একজন কর্মী ছিলাম। সামাদের এই তথ্য প্রকাশের সাথে সাথেই অনুষ্ঠান নেমে আসে পিন পতন নিরবতা।



সামাদ বলেন, ২০০৪ সাল পরযন্ত সিলেটে আমি ছাত্র শিবিরের গোপন ক্যাডার সার্ভিসের একজনসক্রিয় কর্মি ছিলাম। কিন্তু আমাকে যখনসংগঠনের পক্ষ থেকে অস্ত্র চালনার ট্রেনিংনেয়ার কথা বলা হলো, তখন থেকেই শিবিরেররাজনীতি সম্পর্কে আমার ভেতরে সন্দেহ ঢুকতেথাকে। এসময় সামাদ ২০০২ সালে শিবিরের হাতে বিএনপি কর্মী দোয়েল হত্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, ২০০৪ সালের শেষের দিকে আমি শিবির ত্যাগ করলেও এর আগে আমাদেরই বন্ধুজাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কর্মী দোয়েল হত্যারপর শিবিরের আসল চেহারা আমার সামনে ধীরে ধীরে প্রকাশিত হতে থাকে। সামাদ বলেন, আমি সেই কিশোর বয়স থেকেই শিল্প কর্মের প্রতি ছিলাম অনুরক্ত। ছাত্র জীবন থেকেই এই শিল্পে আমার কাজ করার সুযোগ হয়। শিবিরের সাংগঠনিক কর্মকান্ডে সক্রিয় থাকাকালীন সিলেটে জামাত-শিবিরের সব নান্দনিক দেয়াল লিখনের দায়িত্ব আমিই পালন করেছি। আমার এই মেধা সাংগঠনিক কাজে ভালই ব্যবহার করেছে শিবির নামক মানুষ হত্যায় পারদর্শি এই সংগঠনটি। এই মেধার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে শিবির নেতারা আমাকে সাথি পরযায়ে প্রমোশন দেয়। শুধু তাই নয়, তাদের গোপন যে ক্যাডার গ্রুপ সেটিতেও আমার স্থান হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার এদের আসল চেহারা চিনতে আমার অনেক সময় চলে যায়। আমাকে যখন অস্ত্র ট্রেনিং নিতে বলা হলো তখনই শিবির সম্পর্কে আমার মনে সন্দেহ ঢুকতে থাকে, আর তাই ২০০৪ সালের শেষের দিকে আমি শিবির ত্যাগ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টে যোগ দেই। বক্তৃতা শেষে সাবেক এই শিবির কর্মীএই প্রতিবেদকের কাছে বর্ণণা করেন আরও লোমহর্ষক কিছু ঘটনা। তিনি জানান, যে বিষয়টি এখনও আমাকে মর্মপীড়ায় ভোগাচ্ছে তাহলো ২০০২ সালে ছাত্রদল কর্মী দোয়েল হত্যার সাথে যে কয়জন জড়িত ছিল তাদের সাথে একই ক্যাডার গ্রুপে আমিও ছিলাম। যদিও হত্যাকান্ডের সাথে আমি নিজে জড়িত ছিলাম না, কিন্তু এই হত্যামামলায় আমাকেও আসামী হতে হয়। আমাদের এই গ্রুপের সবাই জানতাম দোয়েলকে মারধোর করে শুধুমাত্র শায়েস্তা করা হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঠান্ডা মাথায় দুনিয়া থেকেই বিদায় করে দেয়া হয় দোয়েলকে। এই হত্যাকান্ডের কথা মনে হলে এখনও রাতে আমার ঘুম হয় না। আমি মর্মপীড়ায় ভুগি এই কারনে যে, এই হত্যাকারী গ্রুপটির সাথে আমার সম্পর্ক ছিল। সামাদ বলেন, দোয়েল হত্যামামলায় ওই গ্রুপের সাথে আমিও আসামী হলাম। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় থাকা সত্বেও ক্ষমতার পার্টনার জামাতের প্রভাবের কারনে আসামী আমরা সবাই বেখসুর খালাস হয়ে বেড়িয়ে আসি। আমি এই হত্যাকান্ডের সাথে ছিলাম না, মামলা থেকে খালাস পেয়ে ন্যায় বিচার পেয়েছি এমন ধারণা হলেও যারা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ছিল রাজনৈতিক প্রভাবে তারাও যখন নির্দোষ প্রমানিত হলো তখনই আমি বুঝলাম কোন ধোঁয়াসার মধ্যে আমি শিবির করছি। তখন থেকেই শিবিরের চেহারা আস্তে আস্তে আমার সামনে পরিস্কার হতে থাকে। সাবেক এই শিবির ‘সাথি’ বলেন, গোপন ক্যাডার হিসেবে আমাকে যখন অস্ত্র ট্রেনিং নিতে বলা হলো তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম এদের সাথে আর থাকা যায় না। ধর্মের নামে অস্ত্রবাজিসহ মানুষ হত্যা পরযন্ত যে সংগঠন করতে পারে, তাদের মুরুব্বীরা যে একাত্তরে গণহত্যাও নারী ধর্ষনের সাথ

ও জড়িত ছিল এটি পরিস্কার ভাবে প্রমানিত হয়ে যায় আমার কাছে। এরপর থেকেই শুরু হয় আমার মর্মপীড়া। শিবিরের সাথে জড়িত থেকে বিগত দিনের অপরাধবোধ থেকে নিস্কৃতি পাওয়ার পথ খুজতে থাকি। ২০০৪ সালের শেষের দিকে যোগদান করি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র্রফ্রন্টে। ছাত্রফ্রেন্টে যোগ দেয়ার পর যে মেধা খাটিয়ে নিজের হাতে সারা সিলেটে জামাত-শিবিরের পক্ষে দেয়ালিং করেছিলাম, নিজ খরচে সেই দেয়ালিং মুছে ছাত্রফ্রন্টের পক্ষে দেয়ালিং করি আবার সিলেটে। সংগঠন ত্যাগ করায় শিবির ক্ষেপে যায় আমার উপর। হুমকি ধামকি চলতে থাকে আমার পরিবারের প্রতি। আমার উপর হামলারও চেষ্টা হয় কয়েকবার। এমনিভাবে চলে আরও ৩/৪ বছর। এরপর পড়ালেখার জন্যে চলে আসি এই ব্রিটেনে। সাবেক এই শিবির নেতা বলেন, আমার মানষিক শান্তির জন্যেই আমি শিবির সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে বলতে চাই। এই সংগঠনের পিতৃ সংগঠন জামাতের যুদ্ধাপরাধী নেতাদের সর্বোচ্চ শাস্তি কারযকর হলে একাত্তরের শহীদদের আত্মাই শুধু শান্তি পাবে না, আমিও দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত বয়ে বেড়ানো একটি অপরাধবোধ থেকে নিস্কৃতি পাবো। ছাত্রদল কর্মী দোয়েলের কথা যখন আমার মনে হয়, তখন এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত না থেকেও আমি মর্মপীড়ায় ভুগি। সামাদ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামাতের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, এদের নষ্ট রাজনীতির খপপড় থেকে নতুন প্রজন্মকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যও জামাত-শিবির নিষিদ্ধ করতে হবে।







কারন আর কোন মায়ের সন্তান যেন এদের খপপড়ে পড়ে পরবর্তী জীবনে আমার মত মর্মপীড়ায় না ভোগে। সামাদ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি আদায়ে আমি আরও বেশি বেশি কিছু করতে চাই। আমি এই ঘাতকগোষ্ঠিকে তাদের স্বরূপ চেহারায় জনগনের সামনে হাজির করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আমার চিত্রকর্মের মাধ্যমে। কার্টুন, ব্যানার, ফেস্টুনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এদের চেহারা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি আমি। আমার এই চেষ্টা এদের রাজনীতি চীরতরে নিষিদ্ধ না হওয়া পরযন্ত অব্যাহত থাকবে। দেশে ফেলে আসা নিজের পরিবারের জন্যে উদ্বিগ্ন সামাদ। তিনি বলেন আমাকে না পেয়ে এখনও প্রতি মূহূর্তে আমার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে জামাত-শিবির ক্যাডাররা। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমি আমার পরিবারের নিরাপত্বা চাই

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৯

যোগী বলেছেন: শিবিরের হত্যার রাজনীতির লোমহর্ষক ব্যাপারটা আমরা সকলেই জানি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে তাদের হিংস্র রাজনিতী অনেক দেখেছি।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫০

মনুআউয়াল বলেছেন: তারপরে যেন এদের নতুন কর্মী সংগ্রহ থেমে নেই

২| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪২

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: এই ব্যাপারটা আমিও জানি... এরা কত নোংড়া। ধন্যবাদ ভাই। অনেক ভালো লিখেছেন। সাথে গুরুত্বপুর্ণ তথ্য দিয়েছেন যা অনেকেই জানেনা।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫১

মনুআউয়াল বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৭:৫৬

দীপ ইসলাম বলেছেন: নতুন প্রজন্মকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যও জামাত-শিবির নিষিদ্ধ করতে হবে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.