নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু বলতে চাই কিছু লিখেত চাই

মনুআউয়াল

মনুআউয়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাবধান, ডিজিটাল প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪২



ডাঃ এমবি জামান খুলনা নগরীর ডায়াবেটিস সেন্টারে চিকিৎসক হিসেবে চাকুরী করেন। পাশাপাশি ওমেকা এবং প্রাইমেট নামে দু’টি কোচিং সেন্টারের মালিক তিনি। গতকাল সকাল ৯টা ১৩ মিনিটে তার মোবাইল ফোনে (নম্বর ০১৭১৪-০৮৩৭৯৬) তার খালাতো ভাই সিটি গার্লস কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক মোঃ আজিজুল হকের মোবাইল ফোন (নম্বর -০১৭১১-৩৯৮৮৯৪) নম্বর থেকে একটি ম্যাসেজ আসে। ম্যাসেজে বলা হয়, আমাকে বিকাশ করে ৫ হাজার টাকা পাঠান। ০১৯৮৯-৩১২৯৭১ নম্বরে বিকাশ করে টাকা দ্রুত পাঠানোর জন্য ম্যাসেজে উল্লেখ করা হয়। ম্যাসেজে আরও বলা হয় আমাকে কল করবেন না। পরে আমি আপনাকে কল দিয়ে টাকা পরিশোধ করে দেব। ভাইয়ের কাছ থেকে ম্যাসেজ পাওয়ার সাথে সাথে অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের এক এজেন্টের কাছে গিয়ে সাথে সাথে ৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন ডাঃ জামান। কিছু সময় পর আবারও ভাই আজিজুলের নম্বর থেকে ৫ হাজার টাকা পাঠানোর জন্য ম্যাসেজ আসে ডাঃ জামানের মোবাইল ফোনে। দ্বিতীয় বার ম্যাসেজ আসায় ডাঃ জামান চিন্তিত হয়ে পড়েন। দুই দফা টাকা চেয়ে ম্যাসেজ আসছে, আবার ফোন করতে নিষেধ করছে। ঘটনাগুলো মিলাতে পারছিলেন না ডাঃ জামান। অনেক চিন্তা ভাবনার পর ডাঃ জামান তার ভাই আজিজুলের মোবাইল ফোনে কল দেন। সাথে সাথে অপর প্রান্ত থেকে কল রিসিভ করেন প্রভাষক আজিজুল হক। কল রিসিভ করার পর তার কাছে ডাঃ জামান একবার ৫ হাজার টাকা পাঠানোর পরও আবার টাকা চাওয়ার বিষয়টি জানতে চান। ঘটনা শুনে হতভম্ব হয়ে অপর প্রান্ত থেকে প্রভাষক আজিজুল হক জানান তিনি কোন ম্যাসেজ তার ভাইকে পাঠাননি। ফলে টাকা চাওয়ার তো কোন প্রশ্নই আসে না। উত্তর শুনে ডাঃ জামান দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে যান। ভাইয়ের মোবাইল নম্বর থেকে দুই দফা ম্যাসেজ আসে এবং একবার টাকা পাঠানো হলো, তারপরও ভাই আজিজুল হক বলছে সে কোন ম্যাসেজ দিয়ে টাকা চাননি। তাহলে বিষয়টি কি? আসলে মূল রহস্য এখানেই। ঘটনাটি নিয়ে খুলনা সদর থানায় একটি জিডিও করেছেন ডাঃ এমবি জামান।

খালাতো ভাই প্রভাষক আজিজুল হক আসলেই কোন ম্যাসেজ পাঠাননি। তাহলে তার মোবাইল নম্বর থেকে কিভাবে ম্যাসেজ ডাঃ জামানের মোবাইল নম্বরে গেলো এ প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। প্রকৃতপক্ষে প্রযুক্তির অপব্যবহার করে প্রতারক চক্র এ দুঃসাহসিক কাজ করে যাচ্ছে। এ চক্র শুধু খুলনাতেই নয়, সারা বাংলাদেশে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। মা-বাবা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী এবং আত্মীয়-স্বজনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে সকলকেই সাবধান হওয়া উচিত। যার নম্বর থেকে ম্যাসেজ করে টাকা চাওয়া হচ্ছে অন্তত তার সাথে কথা বলে টাকা পাঠানো উচিত

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে এক ভাইয়ের নম্বর থেকে আর ভাইয়ের মোবাইলে ম্যাসেজটি গেলো কি ভাবে। বিষয়টি হচ্ছে ওয়েব সাইটে বিভিন্ন ফ্রি এসএমএস ওয়েব পেজ রয়েছে। এ সকল ওয়েব পেইজ ব্যবহার করে যে কোন ভাই তার বোনের কাছে ম্যাসেজ পাঠালে তা সাথে সাথে পৌছে যাবে। ইন্টারনেটে গিয়ে অনেক ওয়েব পেইজ খুঁজে পাওয়া যাবে। যেমন গুগলে গিয়ে সার্চ করলে একটি ফ্রি এসএমএসর পেইজ আসবে। সেখানে বিভিন্ন দেশের নাম রয়েছে। সেখান থেকে নিজ দেশ বাংলাদেশ সিলেক্ট করা হয়। পরবর্তী অপশনে যার কাছে টাকা চাওয়া হচ্ছে তার মোবাইল নম্বর লেখা হয়। এরপর যে টাকা চাচ্ছেন তার মোবাইল নম্বর লেখার পর একটি ভেরিফিকেশন কোড হিসেবে কয়েকটি শব্দ লেখা দেখতে পাওয়া যাবে। ভেরিফিকেশন কোডের মধ্যে ওই লেখাগুলো লিখে সেন্ড করলেই চলে যাবে ম্যাসেজটি। অথচ যাকে ম্যাসেজটি পাঠানো হলো নম্বর দেখে মনে পুরোপুরি নিশ্চিত হবেন যে তার আপনজন নিজ মোবাইল থেকেই এ ম্যাসেজটি পাঠিয়েছেন। আসলে ম্যাসেজটি পাঠানো হয়েছে প্রযুক্তির অপব্যবহার করে।

প্রতারক চক্র এভাবে মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। পাশাপাশি হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশকে। প্রতারকরা তাদের প্রতারণার হাতিয়ার হিসেবে বিকাশকে বেছে নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করছে। শুধু বিকাশই নয়, এরা বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসকেও বিপাকে ফেলছে। ভুয়া ম্যাসেজ পেয়ে অনেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আর প্রতারকরা তা অনায়াসে তুলে নিচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে এ প্রতারক চক্রের নেট ওয়ার্ক রয়েছে। এ চক্রের সাথে যুক্ত রয়েছে বিভিন্ন এলাকার কিছু ইন্টারনেট সম্পর্কে ধারণা থাকা যুবকরা। এরা বিভিন্নভাবে এলাকার উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্তসহ বিভিন্ন মানুষের মোবাইল ফোন নম্বর যোগাড় করে চক্রের প্রধান হোতার কাছে দেয়। পরে ওই চক্রের হোতা এবং তার সহযোগীরা মিলে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় কাড়ি কাড়ি টাকা।

সূত্র মতে তথ্য প্রযুক্তির যুগে এভাবে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হওয়া সত্যি উদ্বেগ ও দুঃখজনক বিষয়। ফলে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতেও রয়েছে অনেক উন্নত প্রযুক্তি। আর এসকল উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসকল অপরাধীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীরা।

এব্যাপারে খুলনা সদর থানার ওসি মোঃ শাহাবুদ্দীন আজাদ জানান, ড্ঃা জামানের কাছ থেকে মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়ে টাকা নেয়া প্রতারকদের গ্রেফতারে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে পুলিশ।

এ ব্যাপারে অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের খুলনা রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার মোঃ মুর্শিদুজ্জামান জানান, প্রতারকরা ব্কিাশের মাধ্যমে টাকা প্রেরণ করতে বলে জনগণকে প্রতারিত করার বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এঘটনা প্রতিরোধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভাবছেন বলে জানান তিনি।

তথ্য সুত্রঃ সুবীর রায়

দৈনিক পূর্বাঞল

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬

ৈতয়ব খান বলেছেন: বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে এ সংবাদটি দ্রুত প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ অতীব জরুরী। যাতে আর কেউ নতুন করে একই ধরনের সমস্যায় না পড়েন।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৪

মনুআউয়াল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪

ব্রাইটসেন্ট্রাল বলেছেন: এই বেশ ভালো আছি, প্রতারনার ণীল সায়রে প্রতিনিয়ত ভাসি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.