নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মদ মজিবর রহমান

হুজুগে চেচামেচি করবেন না।

মোহাম্মদ মজিবর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অমর জিয়া।

৩০ শে মে, ২০১৩ সকাল ৯:৫৮



শহীদ রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩২তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর একাংশের ব্যর্থ অভ্যুত্থানে তিনি নির্মমভাবে নিহত হন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল বাংলাদেশের ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন।

বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী থানার বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মনসুর রহমান কলকাতায় একজন কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামে কাটিয়ে তিনি পিতার সঙ্গে কলকাতায় এবং দেশ বিভাগের পর করাচিতে চলে যান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। সামরিক জীবনে কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যেও তিনি একের পর এক কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তার কোম্পানি যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি খেতাব লাভ করে। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের কারণে তিনি নিজেও একটি পিস্তল উপহার পান। সৈনিকজীবনে তিনি যেমন চরম পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন, ঠিক তেমনি জাতীয় সংকটময় মুহূর্তগুলোতেও শক্ত হাতে হাল ধরেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার পর চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন জিয়াউর রহমান। ৯ মাসের মুক্তি সংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে সমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীরোত্তম খেতাব লাভ করেন।

১৯৭৫ সালে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থানে খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপ-প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দি করা হয়। জাতির ভাগ্যাকাশে তখন এক অনিশ্চয়তা বিরাজ করছিল। সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। অবস্থা এতটাই শোচনীয় ছিল যে, প্রকৃতপক্ষে সেই সময় দেশে কোনো সরকার ছিল না। কোথা থেকে কী হচ্ছে, তা জানতে পারছিল না কেউ। চারদিকে এক অনিশ্চয়তা-বিশৃঙ্খলার মাঝে আধিপত্যবাদের শ্যেন দৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত ছিল গোটা জাতি। ইতিহাসের সেই বিশেষ ক্ষণে সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন এবং নেতৃত্বের হাল ধরেন।

এরপর থেকে জিয়াউর রহমানকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি শুধুই এগিয়ে গেছেন। ব্যক্তিগত সততা, পরিশ্রমপ্রিয়তা, কর্তব্যনিষ্ঠা, নেতৃত্বদানের দৃঢ় যোগ্যতা, নির্লোভ, নির্মোহ, গভীর দেশপ্রেম প্রভৃতি গুণ দিয়ে তিনি জাতির মধ্যে নতুনভাবে জাগরণ সৃষ্টি করেন। তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিতে একদিকে যেমন চরম বামপন্থীরা স্থান পায়, তেমনি চরম ডানপন্থীরাও জায়গা করে নেন। একটি উদার ও মধ্যপন্থী দল হিসেবে বিএনপিকে গড়ে তোলেন তিনি, যা বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল। জিয়াউর রহমান বিভক্তির রাজনীতি দূর করে ঐক্যের রাজনীতির ডাক দেন। রাজনীতিবিদদের তিনি জনগণের দোরগোড়ায় যেতে বাধ্য করেন। বিশাল কর্মযজ্ঞের সূচনা করে জনগণের মধ্যে সাড়া জাগান। মাত্র ৬ বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পান শহীদ জিয়া। কিন্তু এই ৬ বছরেই তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ থেকে জাতিকে মুক্ত করেন। স্বজনপ্রীতি, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনসহ নানা অপকর্মে জাতির যখন ত্রাহি অবস্থা, ঠিক তখনই জিয়াউর রহমান শক্ত হাতে দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। তিনি গোটা জাতির মধ্যে এক নব জাগরণের সূচনা করেন। সাদামাটা জীবন যাপনের এমন দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ কেন, সমসাময়িক রাজনীতিবিদদের ইতিহাসে খুব বেশি নেই। তার চরিত্রে কোনো কপটতা ছিল না।

বাংলাদেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে জিয়াউর রহমান যখন অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন, বিশ্বে দ্রুত অগ্রসরমান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ হিসেবে মাত্র ৪৫ বছর বয়সে ঘাতকদের তপ্ত বুলেটে প্রাণ হারান বাংলাদেশের ইতিহাসের ক্ষণজন্মা এই দেশ প্রেমিক রাষ্ট্রনায়ক।

আজ যখন দেশে সত্য ও ন্যায় সর্বক্ষণ পরাভূত হচ্ছে প্রলোভন ও পরাক্রমের প্রতিকারহীন অপরাধে, আজ যখন আইনের শাসন হয়ে পড়েছে এক বিস্মৃত প্রায় জীবনধারা, আজ যখন সরকারি কর্মকাণ্ড দুর্নীতির গভীরতম কন্দরে নিমজ্জিত, আজ যখন স্বৈরাচারী কায়দায় গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকার সভা-সমাবেশ হচ্ছে নিষিদ্ধ, আজ যখন বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অভাবে থমকে আছে— তখন শহীদ জিয়াউর রহমানের সময়কে খুব মনে পড়ে। মনে পড়ে তাঁর উদ্দীপনাময় নেতৃত্ব ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, তাঁর সফল ও সবল রাষ্ট্র পরিচালনা, জনগণকে সম্পৃক্ত করে দেশ গড়ার তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা। তাঁর পররাষ্ট্রনীতি ছিল না নতজানু ও দেশের স্বার্থের পরিপন্থী। বিশ্বমঞ্চে তখন আমরা দাঁড়িয়েছিলাম মাথা উঁচু করে। সার্বভৌমত্ব ছিল সুরক্ষিত।

স্যলুট হে মহান নেতা।আজ বিচলিত মন নিয়ে তোমার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৩ সকাল ১০:৪৬

মীর্জা প্রীয়ম বলেছেন: জনতার জিয়া-অমর জিয়া চিরঞ্জীব হয়ে থাকবে। আজকের এই দিনে শ্রদ্ধাঞ্জলী...

২| ৩০ শে মে, ২০১৩ সকাল ১০:৪৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: তার বিদেহী আত্নার মাগফিরাত কামনা করি।

৩| ৩০ শে মে, ২০১৩ সকাল ১১:২৫

বাউল! বলেছেন: নবাব সিরাজের ইতিহাস যিনি জানেন তিনি মীর জাফরের নামও জানেন, ইতিহাসের পাতায় মীর জাফরের নামও কেউ মুছতে পারবেনা, জিয়ার নামও কেউ মুছতে পারবে না।

৩০ শে মে, ২০১৩ সকাল ১১:৩৭

মোহাম্মদ মজিবর রহমান বলেছেন: ইতিহাস ভালো করে পড়ে বুঝে নিন কে মীর জাফরের কাতারে আর কে জগৎ শেৎঠ-এর কাতারে পড়ে।

৪| ৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:০২

বাউল! বলেছেন: ছি ছি উনি জগত শেঠ হইতে যাবেন কোন দুঃখে! মীর জাফরই বা হইতে যাবেন কোন দুঃখে! উনি জিয়াউর রহমান এইটাই এনাফ।

৫| ৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:০৫

দায়িত্ববান নাগরিক বলেছেন: তাহেরের খুনী হিসেবে দ্বিতীয় মিরজাফরের ভুমিকায় ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবেন। অন্ধকারে রাখা ইতিহাস আলোর মুখ দেখছে।

৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১:৪৮

মোহাম্মদ মজিবর রহমান বলেছেন: ইতিহাস মিথ্যা বলে না।
জিয়া দেশের স্বার্থে কোন কিছুর সাথে কখনও আপোষ করেনি।

৬| ৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৬

রমিত বলেছেন: শিশুদের জিয়া

৭| ৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৭

রমিত বলেছেন: আপনার লেখাটি খুব সুন্দর হয়েছে!!!

৮| ৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:২০

ইউক্লিড রনি বলেছেন: একজন শ্রেষ্ঠ শাসক হিসেবে জিয়া বাংলার ইতিহাসে অনন্য।

৯| ৩০ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:০১

ম্রিয়মাণ বলেছেন: ভালো-মন্দ নিয়েই মানুষ। জিয়া দেবতা নন। তবে চেতনাধারীরা যেভাবে বলেন, সেরকম নরপিশাচও নন। তিনি ছিলেন দেশপ্রেমিক, আত্নমর্যাদাশীল জাতি গঠন করতে চেয়েছিলেন।

তিনি জাতীয় ঐক্য চেয়েছিলেন। তাই বাঙালী শব্দটি ব্যবহার করে দেশকে বিভক্ত করতে চান নি। শেখ মুজিবের মত চাকমা, মারমা, সাওতাল ইত্যাদি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষকে নিজেদের কৃষ্টি ভুলে বাঙালি হতে বলেন নি।

তিনি বলেছিলেন, সবার এক পরিচয়, বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশী।
জিয়ার বড় কৃতিত্ব বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। তিনি বাংলাদেশকে এক সূতোয় গাঁথতে চেয়েছিলেন।

আর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে যারা কথা বলেন, তাদের বলি জাতীয় ফল কাঁঠাল মানে কি আমের গুরুত্ব কম?

জিয়ার শাসনকালের ধারাবাহিকতাতেই আজকের বাংলাদেশ টিকে আছে।
নইলে পূর্ববঙ্গ দেখতে হত আমাদের।

তিনি বুঝেছিলেন ভারতের দাম্ভিক কর্মকর্তাদের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করে সুবিধা করা যাবে না। তাই সার্কের কথা ভেবেছিলেন।

সেদিনের ডামাডোলে যদি তাহের জিততেন, তবে জিয়ার পরিণতিও তাহেরের মতই হত।

৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ১০:১৮

মোহাম্মদ মজিবর রহমান বলেছেন: একদম সঠিক ম্রিয়মান ভাই।

১০| ৩১ শে মে, ২০১৪ রাত ১:০২

পংবাড়ী বলেছেন: জিয়া বাংগালী জাতিকে 'গলাকাটা' ক্যাপিটেলিজমের ক্রীতদাসে পরিণত করেছে; আপনার কাছে কম্প্যুটার আছে, ১৬ কোটীর কাছে নেই; কারণ জিয়া

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৬

মোহাম্মদ মজিবর রহমান বলেছেন: পংবাড়ী ভাই আপনি দলকানা লোক!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.