নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নীল সূর্য

হ্যাপী

আমি পথিক , আমি শান্ত । ধরণীর বুকে হেটে আমি হব না কভু ক্লান্ত ।

হ্যাপী › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিমী পর্ব-১

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:০৮

এক কাপ চা হাতে নিয়ে হিমী বেলকুনিতে এসে দাড়ালো। এখন কয়টা বাজে কে জানে! হিমীর মনে হচ্ছে সে অনন্ত কাল ধরে জেগে আছে। কাল একটু আগেই ঘুমিয়ে পড়েছিল। সময়ও দেখা হয়নি। বাবার চিৎকারে যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখন রাত প্রায় ১টা ১০মিনিট। হিমী চিৎকার শুনে কোন কিছু না ভেবেই সোজা দাদীর রুমে গেল। দাদীর মাথাটা মেঝ চাচার কোলে। বাবা কেমন হাত পা বিছিয়ে বাচ্চাদের মত কাদছে। হাসান আংকেল কখন এসেছিলেন কেজানে? উনি ইনজেকসন পুশ করার চেষ্টা করছেন। দেখে খুব রাগ উঠলো। এই জ্ঞাণী লোকগুলো বিপদে কেমন খেই হারিয়ে ফেলে। দাদী আরো খানিক আগে মারা গেছেন। তাই ভেইনে ইনজেকসনের লিকুইড ঢুকতে পারছে না। বিষয়টা আমি বুঝতে পারছি কিন্তু আৎকেল কেন বুঝতে পারছে না? নাকি বাবাকে শান্তনা দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।



আমি দাদীর রুমে দরজাটার কাছে দাড়িয়ে। ঠিক কতক্ষণ দাড়িয়ে ছিলাম ঠিক মনে নেই। মা এসে বলল এমন মূর্তির মত দাড়িয়ে আছিস কেন, যা বাবার পাশে গিয়ে বোস। হিমীর এখন বাবার কাছে যেতে একটুও ইচ্ছে করছে না। দাদীকে খাট থেকে নামিয়ে খাটিয়াতে তোলা হয়েছে। সাদা ধবধবে কাফনে মোড়ানো দুধে আলত গায়ের রং এর স্নিগ্ধ বৃদ্ধা যার শরীরের নীলচে রগগুলো স্পষ্ট দেখা যায়। হাড্ডিসাড় শরীরের চামড়া একদম হাড়ের সাথে লাগানো। সূচালো নাক খানিকটা চোয়াল ভাঙ্গা,চোখ অক্ষিকোটরে ঢুকে গেছে।

দাদীর মৃত্যুতে আমি আনন্দিত নাকি দুঃখিত ঠিক বুঝতে পারছি না। বেচেঁ থাকতে দাদী আমার জীবনটা অতিষ্ট করে ফেলেছিলেন। আমি তখন ক্লাস ফাইবে পড়ি বাবা যখন দাদীকে আমাদের নতুন ফ্লাটে নিয়ে এলেন। সেই থেকে আমার আতঙ্ক শুরু। দাদীর উপর নাকি জীনের আসর আছে। সারা রাত মাথার চুল উল্টো করে বসে থাকতেন। আমার প্রতি দাদীর দৃষ্টি বরাবরই রহস্যময়। আমার যখন জন্ম হলো আমার বাবা মা খুব খুশি ছিলেন। কিন্তু দাদী রেগে আগুন। বংশের বড় ছেলের প্রথম সন্তান হবে ছেলে। এই নিয়ে মাকে অনেক গঞ্জণা শুনতে হয়েছে। মা অনেক খোজাখুজি করে আমার নাম রাখলেন হিমাদ্রীতা। আর বাবর জয়নাল হাসানের থেকে হাসান। পুরো নাম হিমদ্রীতা হাসান। আর ডাক নাম হিমী। নাম শুনে তো দাদী তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন। এইটা কেমনতারার নাম রাখলি জয়নাল? নামের মইধ্যে হিন্দুয়ানী গন্ধ। বউ এর আচোল ধরে আর কত ভাদরামী করবি। বংশের প্রথম সন্তান নাম রাখবে তার দাদী। নাম রাখনের আগে আমারে কটু পুছলিও নারে বেটা? আমি ঠিক করছি তোর কন্যার নাম হবে জয়নব। জয়নালের কন্যা জয়নব। যা আকিকার ব্যবস্থা কর বেটা। বাবা কাচুমাচু করে বললেন আম্মা আকিকা তো দিয়ে ফেলছি। ওরে সারামজাদা আমার নাতিনের আকিকা আমারে না জানাইয় দিসছ?? দূর হো সামনে থিকা। তরে জানি আমার ত্রিসীমায় না দেখি। আম্মা আপনি বললে আবার আকিকা হবে। অবশ্যই হবে। দূরে যা গোলামের পুত। আমার লগে মশকরা করোছ? যা তোর বউ এর শাড়ির তলে শুইয়া থাক। আমার দ্বিতীয়বার আকিকা দিয়ে নাম রাখা হলো জয়নব। তবে সেটা কেবল দাদীর শান্তনার জন্য।



আমার ধারাবাহিক উপন্যস হিমীর প্রথম পর্ব( চলবে...)

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৯

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: হিমির প্রথম পর্ব ভাল লেগেছে ।
তবে কথক হিসেবে হিমি থেকে ''উত্তম পুরুষে '' এই ব্যাপার টা একটু খটকা লেগেছে ।
পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি ।

২| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৪৩

ইমানুয়েল নিমো বলেছেন: +++++++++++++++++

৩| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ভাল হয়েছে।২য় আকীকা দিতে হলো অবশেষে। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.