নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সম্পদহীনদের জন্য শিক্ষাই সম্পদ

চাঁদগাজী

শিক্ষা, টেকনোলোজী, সামাজিক অর্থনীতি ও রাজনীতি জাতিকে এগিয়ে নেবে।

চাঁদগাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসটাকে "৭১\'এর শহীদ দিবস" বা এই ধরণের কিছু করা হোক।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৫২



১৪ই ডিসেম্বেরকে 'শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস' হিসেবে পালন করার চেয়ে, যুদ্ধে শহীদ ৩০ লাখ মানুষের স্মরণে এই ধরণের একটি দিন পালন করাটাই বেশী লজিক্যাল। ১ হাজার বাংগালীর শহীদ হওয়াকে আলাদাভাবে দেখা ও পালন করার কোন সঠিক লজিক নেই, যেখানে ৩০ লাখ বাংগালীকে হত্যা করা হয়েছে একই কারণে: স্বাধীনতা চাওয়ায়, স্বাধীনতার পক্ষে থাকায়, স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করায়, স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করায়।

গাঁয়ের যেই কৃষক কোনদিন স্কুলে যাবার সুযোগ পাননি, তিনিও স্বাধীনতা চেয়েছিলেন, আবার ঢাকা ইউনিভার্সিটির প্রফেসরও স্বাধীনতা চেয়েছিলেন; স্বাধীনতায় সবাই অবদান রাখতে চেয়েছিলেন, সবাই ইহার অংশ ছিলেন। গ্রামের কৃষক পরিবারের ১জন মেয়ে, কিংবা শহরের ১ জন ইউনিভার্সিটির মেয়ের একই অপরাধ ছিলো, তাঁরা সবাই স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ ছিলেন।

স্বাধীনতার পরপর, ঢাকায় স্বাধীনতা নিয়ে যারা কথা বলেছেন, যারা বিবিধ প্রকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারা সকলেই শিক্ষিতদের প্রতিনিধি ছিলেন; তাতে কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের অবদানের কথা খুব একটা আসেনি; ফলে, ৩০ লক্ষ মানুষকে একই সমতলে দেখা হয়নি। আজকে খুবই পরিস্কার যে, মুক্তিযু্দ্ধ নিয়ে, তখনকার সময় অনেক বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি; আজকে সময়ের সাথে এগুলো নিয়ে সঠিকভাবে অনেক পদক্ষেপ নেয়ার দরকার।

দেশের স্বাধীনতার পক্ষের সব মানুষকে একইভাবে দেখা হয়নি বলে, শহীদ বুদ্ধিজীবি হ্ত্যা দিবসটিক আলাদাভাবে পালন করা হচ্ছে; কিন্তু ৩০ লাখ শীদের জন্য কোন বিশেষ দিন নেই, ইহা অবশ্যই সঠিক ভাবনা নয়; দিবসটিতে সব শহীদকে স্মরণের উদ্যোগ নেয়া হোক।




মন্তব্য ৪৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৪৪

বঙ্গদুলাল বলেছেন: সর্বপ্রথম কবে '১৪ ডিসেম্বর' শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উৎযাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং কবে থেকে উৎযাপন করা হচ্ছে?

বীরশ্রেষ্ঠ, বীর উত্তম, বীর বিক্রম, বীর প্রতীক এইভাবে ক্যাটাগরিক্যালি ভাগ করা গেলে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জন্যও আলাদা দিবস রাখা যায়।
কিন্তু সাধারণ সব শহীদদের জন্য কোনো দিবস নেই! সকল শহীদদের জন্য একটি দিবস হলে বাঙালির অনন্য সংগ্রাম,ত্যাগের স্মৃতি হিসেব আমরা দিনটি সর্বাত্মক স্মরণীয় করে রাখতে পারতাম।(যেহেতু ২১ ফেব্রুয়ারি কেবল ভাষাশহীদ দিবস)

(আসলে এসব ব্যাপারে কথা বলার যোগ্যতা রাখেন কেবল আমাদের গাজী মুক্তিযোদ্ধারা)।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:



কোন মুক্তিযোদ্ধা এই ব্যাপারে কিছু বলেছেন বলে আমার জানা নেই। যুদ্ধে মানুষের ক্রিটিক্যাল অবদানের জন্য খেতাব দেয়া হয়ে থাকে।
৩০ লাখ মানুষের শহীদ হওয়ার কারণ একটাই, স্বাধীনতার সংগ্রাম। সবার জন্য ১টি দিন পালন করা উচিত।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:০৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


১৯৭২ সালের জানুয়ারী মাসেই আমাদের এলাকায় শহীদ বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে মিটিং হয়েছিলো; আমাকে উপস্হিত থাকতে বলা হয়েছিলো, আমি যাইনি।

২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:২৫

জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: ১৪ ডিসেম্বর ৭১এর শহীদ দিবস বিষয়টা আবার কেমন যেন লাগছে।
২৫ মার্চ থেকে বিজয় অর্জিত হওয়া পর্যন্ত পুরো সময়টাতেই তো মানুষ শহিদ হয়েছে। সে রকম কিছু রাখতে হলে ২৫ মার্চের কালোরাত্রীর দিনটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


স্বাধীনতাকামী ৩০ লাখ মানুষকে একই কারণে প্রাণ দিতে হয়েছে, সবার জন্য ১টা দিবস পালনই সঠিক।

৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:১৭

বঙ্গদুলাল বলেছেন: আপনার জীবন প্রবাহ বলছে(প্রাথমিক জীবনে বীর মুক্তিযোদ্ধা), দেশ আপনাকে নিজের কাছেই বেশি চেয়েছিল। বিদেশ বিভূঁইয়ে চলে গেলেন কেন!আপনি মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবারেরই সন্তান ছিলেন! স্বদেশ কী কী সমস্যায় নিমজ্জিত ছিল তখন যে আপনি চলে গেলেন!(নাকি শুধুই পড়াশোনা এবং ভবিষ্যৎ ভেবে?)

মুক্তিযোদ্ধাদের মিটিং এ যোগ দেননি কেনো?

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:


মুক্তিযোদ্ধাদের মিটিং'এ যাইনি, আমি ম্যালেরিয়ায় ভুগছিলাম ও মিটিংটি ডেকেছিলো আোয়ামী লীগের লোকজন, যারা যুদ্ধে যায়নি।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ী পাঠিয়ে দেন তাজুদ্দিন সাহেব; ওদের চাকুরী কেন চলে গেলো, সেটা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিলো সরকারের লোকদের সাথে; তখন ঠিক করি যে, বিদেশে পড়বো।

৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: না আপনার সাথে একমত নই।
১৪ এবং ১৬ ডিসেম্বর যেটা আছে। ঠিকই তো আছে।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



১৬ই ডিসেম্বের বিজয়, সবার! ১৪ই ডিসেম্বর ১০০০ শহীদের, বাকী ৩০ লাখ শহীদের দিন কোনটি?

৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:১২

রাজীব নুর বলেছেন: সকল শহীদ বুদ্ধিজীবীর প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা ...

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


১ লাখ ২০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা, ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখ নির্যাতীত নারী, সবার কাছে কৃতজ্ঞ।

৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৭:৫৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: যুদ্ধের ময়দানে আপনার অভিজ্ঞতা এবং শহীদ হওয়া মানুষগুলি নিয়ে লিখতে পারেন।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:২২

চাঁদগাজী বলেছেন:



ব্লগে এসব নিয়ে লিখতে চাই না; এখানকার ব্লগারদের ভাবনাচিন্তা সেইদিকে নেই।

৭| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:০৩

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: রাতের আঁধারে যে নারী (মা ) মুক্তিযোদ্ধাদের খাইয়েছেন , তিনিও একজন মুক্তিযোদ্ধা। যে নারী সম্ভ্রম হারিয়েছেন তিনিও তো মুক্তিযোদ্ধা।
এই সহজ ভাবনা গুলো ভাবতে শিখিনি আমরা। যদিও বিজয়ের ৫০ বছর হচ্ছে। জাকজমক ভাব পালন করা হবে।
৩০ লাখ শহীদের স্মরণে আলাদা দিবস থাকতে পারে। তবে খুব একটা লাভ হবে না , যদি নিজেরা মন থেকে স্মরণ করি।


বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা রইলো মুক্তিযোদ্ধা।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



ধন্যবাদ।

১৬ই ডিসেম্বরের পরে, ইপিআর ও বেংগল রেজিমেন্ট বাদে বাকী সবাইকে তাজউদ্দিন সাহেব বাড়ী পাঠায়ে দিয়েছিলেন; এরপর আর খবর নেননি; বাকীদের কথা কি বলবো?

৮| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:০৬

বাংলার এয়ানা বলেছেন: "ব্লগে এসব নিয়ে লিখতে চাই না; এখানকার ব্লগারদের ভাবনাচিন্তা সেইদিকে নেই।"
- আসল বিষয় হলো আমদের মুক্তযুদ্ধ নিয়ে আমরা সব পক্ষই বির্তিকীত ইতিহাস প্রচার করছি।
- মূজিব নগর সরকার ও তার বিরধী পক্ষ।
- মেজর জলিল ইস্যু।
- স্যারেন্ডার এর অনুষ্টানে জেনারেল ওসমানী না থাকা।
- আরো অনেক বিষয় যার সঠিক ইতিহাস কখনোই জানা যাবে না, যখন যে ক্ষমতায় আসবে সে তার মত করে প্রচার করে আমাদের শুধু বিভক্তিই বাড়াবে।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



তাজউদ্দিন সাহবে ও শেখ সাহেব সঠিক পদক্ষেপ না নেয়াতে অনেক ইস্যুর জন্ম হয়েছিলো, সেগুলো কেহ আর সমাধান করতে পারবে না।

৯| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১৯

স্প্যানকড বলেছেন: বসু বাহিনীর প্রধান বসু কে চেনেন? যিনি নিজে বাহিনী গড়ে তুলে যুদ্ধ করেছেন। স্বাধীনতার এখন ৫০ বছর । সেখানে আমরা জানি এ ও কতজন মুক্তিযোদ্ধা ! তাঁর এসব খেতাব জুটেনি ! সত্যি সেলুকাস ! কি বিচিত্র এ দেশ।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:২৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



আমি বসু বাহিনী নামে কোন বাহিনীর নাম শুনিনি।

১০| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:২৪

নূর আলম হিরণ বলেছেন: সবাই স্বাধীনতা চেয়েছেন, একই কারনেই সবাই শহীদ হয়েছেন তবে বুদ্ধিজীবীদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞা তাদের শহীদ হওয়ার জন্য বাড়তি নিয়ামক হয়েছে। হয়তো সে জন্যই তাদের আলাদাভাবে স্মরণ করা।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:




যুদ্ধ লাগলে জাতির জন্য যুদ্ধ করতে হয়, কিংবা নিজকে রক্ষা করতে হয়, এটাই বুদ্ধিমত্তা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে কয়জন প্রফেসর, ডা:, ইন্জিনিয়ার, সরকারী চাকুরীজীবি অংশ নিয়েছিলেন?

১১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৭

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
১৬ই ডিসেম্বরের পরে, ইপিআর ও বেংগল রেজিমেন্ট বাদে বাকী সবাইকে তাজউদ্দিন সাহেব বাড়ী পাঠায়ে দিয়েছিলেন; এরপর আর খবর নেননি; বাকীদের কথা কি বলবো?

কারণ কি ? মুক্তিযোদ্ধাদের কি ভলেন্টিয়ার মনে করেছিলেন ?
আমাকে কিছু বই রেফার করতে পারবেন ?

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



মনে হয়, উনার বুদ্ধিমত্তার অভাব ছিলো।

১২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৫

জুল ভার্ন বলেছেন: শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসটাকে "৭১'এর শহীদ দিবস" বা এই ধরণের কিছু করা হোক।[/sb শিরোনামের সাথে একমত।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



ধন্যবাদ।

১৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০৪

জুল ভার্ন বলেছেন: বুদ্ধিজিবীদের নিয়ে আমার বক্তব্য নয়, এ প্রসংগে বংগবীর কাদের সিদ্দিকী এবং কবি তালিম হোসেনের একটা লেখা এখানে যোগ করলামঃ-

তালিম হোসেন এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী
----------------------------------------
"... ১৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত যারা ঢাকায় থেকে পাকিস্তানিদের সেবাযত্ন করে ১৪ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে হানাদারদের হাতে জীবন দিয়ে সবাই শহীদ বুদ্ধিজীবী হয়ে গেছেন, এটাও তো তেমন ব্যাপার। শহীদ বুদ্ধিজীবী তাদের এত বুদ্ধিই যদি থাকত তাহলে ঢাকায় থাকলেন কেন? পাকিস্তানিদের বেতন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেন কেন? শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ডিসেম্বর মাসেও পাকিস্তান সরকারের বেতন নিলেন কেন? তাই ১৪ ডিসেম্বর হানাদারদের হাতে নিহত বুদ্ধিজীবী আর হানাদারদের বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে ২৫ মার্চ পাকিস্তান হানাদারদের হাতে জীবন দেয়া শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আমি অন্তত একই রকম সম্মান করতে পারি না।

২৫ মার্চ হানাদারদের আক্রমণে যারা শহীদ হয়েছেন অথবা পরে দেশের নানা স্থানে প্রতিরোধ করতে গিয়ে হানাদারদের হাতে যারা নিহত হয়েছেন তারা আমার হৃদয়ে দেশপ্রেমিক শহীদ বুদ্ধিজীবী। আর ১৯৭১ সালে ১৪ ডিসেম্বর রাজাকার, আলবদর এবং পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে ঢাকায় যারা নিহত হয়েছেন তারা দালাল বুদ্ধিজীবী। তারা নিহত হওয়ায় তাদের প্রতি আমার গভীর সহানুভূতি আছে, তাদের পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্ততিদের প্রতিও গভীর মমতা আছে। কিন্তু যারা পাকিস্তানের বিরোধিতা করে হানাদারদের হাতে নিহত হয়েছিলেন তারা আর যারা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করেছে, পরাজিত হওয়ার মুহূর্তে হানাদাররা হত্যা করে ফেলে গেছে উভয়কেই এক মর্যাদায় বিচার করতে পারি না।

১৪ ডিসেম্বর নিহত জ্ঞানী-গুণীরা বেঁচে থাকলে আমরা এবং আমাদের সন্তানরা তাদের কাছ থেকে অবশ্যই আরও অনেক জ্ঞান অর্জন করতে পারত। সেটা নিশ্চয়ই দেশের জন্য কল্যাণকর হতো। একজন সাহিত্যিক, একজন শিক্ষক তাদের কাজ সাহিত্য রচনা, শিক্ষা দেয়া। পাকিস্তান ছিল, তারা পাকিস্তানে ছিলেন। চাকরি-বাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। তারা পাকিস্তানের হয়ে নিশ্চয়ই কোনো খুন-খারাবি করেননি। তাই তাদের গালাগাল করব কেন? তারা পাকিস্তানে থেকে পাকিস্তান রক্ষা করতে চেয়েছেন। এটা তাদের ঈমানী দায়িত্ব। কিন্তু তাদেরই মতো কেউ কেউ যখন আরাম আয়েশের সরকারি চাকরি ছেড়ে গ্রামে-গঞ্জে অথবা নির্বাসনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে, যুদ্ধ করে হানাদারদের পরাজিত করে বাংলাদেশ বানিয়েছেন, উভয়কে এক করে বিচার করি কী করে? সত্য কথা হলো, চোখে যা দেখেছি তা এড়িয়ে যেতে পারি না। এড়িয়ে গেলে পেটের ভেতর কুরকুর করে, ভাত হজম হয় না। তাই স্বাধীনতা-পরবর্তী ছোট্ট একটি ঘটনা তুলে ধরছি।

... শবনম মুশতারীর বাবা কবি তালিম হোসেন স্বাধীনতার পর কোলাবরেটর অ্যাক্টে ঢাকা জেলে ছিলেন। ... করটিয়া কলেজে নওগাঁর বদলগাছির চাকরাইলের সুসাহিত্যিক তালিম হোসেনের ভাতিজা রঞ্জু চৌধুরী আমাদের বাড়িতে জায়গির থেকে পড়তেন। নওগাঁর মানুষের ভাষা আমাদের চাইতে আলাদা। তাই স্বাভাবিক কারণেই মিষ্টি। দেখতে-শুনতে রঞ্জু চৌধুরী খুবই সুন্দর ছিলেন, ব্যবহার ছিল অমায়িক। আমার থেকে দু’চার বছরের বড়। তিনি বাড়ির ছেলের মতোই থাকতেন। জায়গিররা যেমন নিজের খরচে খায়, বিছানাপত্র নিয়ে থাকে তার তেমন ছিল না। নিজের জিনিসপত্র রাখার জন্য একটা ট্রাংক আর সুটকেস ছিল তার সম্বল। বিছানাপত্র, চকি-চৌকাঠ, চেয়ার-টেবিল, খানা-দানা সব আমাদের। চার-পাঁচ বছরে খুবই আপন হয়ে গিয়েছিলেন।
জানতাম না তিনি অতবড় সাহিত্যিক কবি তালিম হোসেনের ভাতিজা। কোনো একসময় আমাকে তালিম হোসেনের ঢাকার বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন। অফিসার্স কলোনিতে তারা থাকতেন। সন্ধ্যার দিকে তাদের বাড়ি গিয়েছিলাম। খুবই ছোট্ট বাড়ি। শবনম মুশতারী এবং তার বোন তখন খুবই ছোট্ট। কোনো কথাবার্তা হয়েছিল কিনা মনে নেই। ছোট্ট বেলায় আমি গোবদা-গাবদা, হাবা-গোবা, হগদমা ধরনের ছিলাম। রাতে খাবার খাইয়েছিলেন শবনম মুশতারীর মা। খুবই সাধারণ খাবার। অপূর্ব সুস্বাদু সে খাবার। এরপর অনেকবার সে বাসায় গিয়েছি এবং খেয়েছি।

... ’৭২-এর ফেব্রুয়ারিতে হঠাত্ করে শবনম মুশতারীর মা আমাদের টাঙ্গাইলের আকুরটাকুর পাড়ার হানাদারদের জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া ভাঙাচোরা বাড়িতে হাজির হন। তিনি খুবই জড়সড় ও দ্বিধা নিয়ে আমাদের ওখানে গিয়েছিলেন। কেবলই দেশ স্বাধীন হয়েছে। চিত্রটাই আলাদা। এক সময়ের অচেনা কাদের সিদ্দিকীর তখন সারাদেশ জোড়া পরিচিত নাম। মার কাছে বসে থাকা তালিম চাচীকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে কেন এসেছেন জিজ্ঞেস করতেই ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন। অতবড় যুদ্ধজয়ী কাদের সিদ্দিকী তাকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে পারে, পাকিস্তানের দালাল আইনে অভিযুক্ত স্বামী জেলে থাকায় ভুলেই গিয়েছিলেন।

কিছুক্ষণ কান্নাকাটি করে একটু সুস্থ হয়ে বললেন, ‘হুজুর মওলানা ভাসানীর কাছে গিয়েছিলাম। সেখান থেকেই তোমার কাছে এলাম।’ তারা তিন-চারজন ছিলেন, শবনম মুশতারী ছিল কিনা বলতে পারব না। পাকিস্তান বেতারে গান গাওয়ায় তখন শবনম মুশতারীরা সবাই ব্ল্যাকলিস্টেড। দেশের বিখ্যাত পল্লীগীতি গায়ক আবদুল আলীমও ব্ল্যাকলিস্টেড।
সারা বছর পাকিস্তানিদের বেতন খেয়ে ১৪ ডিসেম্বর নিহত হয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী আর বেঁচে থাকলে কোলাবরেটর। আমি জানতাম না কোলাবরেটর অ্যাক্টে চাচা তালিম হোসেন জেলে বন্দি।

পায়ে হাত দিয়ে সালাম টালাম করায় চাচী বেশ সাহস পেয়েছিলেন। এক সময় তিনি বললেন, ‘তোমার চাচা পাঠিয়েছেন হুজুরকে আর তোমাকে বলতে।’ সঙ্গে একটি কাগজ পাঠিয়েছেন। পাকিস্তানের পক্ষে ঢাকার বুদ্ধিজীবীদের বিবৃতি। তাতে একত্রিশ জনের স্বাক্ষর। এক নম্বরে অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী আর একত্রিশ নম্বরে কবি তালিম হোসেন। মাঝে প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ যেমন ছিলেন তেমনি জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর নামও ছিল। কারণ মুক্তিযুদ্ধের সময় ভাগ্যবান কবীর চৌধুরী বাংলা একাডেমীর ডিজি ছিলেন। আসলে একেই বলে ভাগ্য। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করে কতজন স্বাধীনতা পুরস্কার পেল? আর যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে, বঙ্গবন্ধুর কাছে লক্ষাধিক অস্ত্র জমা দিয়ে আমি এখন পাই রাজাকারের পুরস্কার!

চাচী বললেন, ‘বাবা, আমাদের সাহস ছিল না আমরা দেশ ত্যাগ করতে পারি নাই। স্বাধীনতার জন্য কোনো ভূমিকা রাখতে পারি নাই। এজন্য যা শাস্তি হওয়ার হবে তাতে কোনো ক্ষোভ দুঃখ নেই। তোমার চাচা শুধু জানতে চেয়েছে একই কাজ করে যারা মরে গেছে তারা শহীদ হলো, আর পাকিস্তানে মাত্র দু’দিন বেশি বাঁচার কারণে তোমার চাচা দালাল হলো কি করে? এটা বুঝতে পারছেন না বলে তোমার কাছে পাঠিয়েছেন। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী চাকরিরত যারা ছিলেন তারা সবাই নভেম্বর মাসের বেতন নিয়েছে, তোমার চাচাও নিয়েছে। পাকিস্তানিদের পক্ষে বুদ্ধিজীবীদের বিবৃতি দেখে, একই কাজ করে কেউ শহীদ, কেউ কোলাবরেটর হয় কি করে?’ আমি তো থ’। মা চাচী আম্মার জন্য খাবার ব্যবস্থা করছিলেন। এ সময় হুজুর মওলানা ভাসানীর দূত এসেছিল। চাচীকে নিয়েই গিয়েছিলাম সন্তোষে। গিয়ে শুনলাম তিনি কবি তালিম হোসেনের কথা বলতেই ডেকেছেন। কারণ কবি তালিম হোসেন তার খুবই অনুরক্ত ভক্ত।

হুজুর আমাকে পেয়ে বারুদের মতো জ্বলে উঠলেন। আক্রমণাত্মক সুরে বললেন, ‘কাদরী, এসব কি? স্বাধীন হয়েই সারিনি এখনই এত জুলুম? তালিম হোসেন কত বড় কবি, কত কত লেখা তার, তাকে তোমরা দালাল বলে জেল দিয়েছো! আর যারা মরেছে তাদের শহীদ বলেছো? মুক্তিযুদ্ধে কোনো রাজাকার দালাল মরে নাই? হানাদার মরে নাই? এরকম হলে পরিণতি ভালো হবে না।’ অনেকক্ষণ হুজুরের বকাঝকা শুনে কোনোভাবে তার কাছ থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে এসেছিলাম।

... জেলখানায় পুলিশের কোনো মায় মাতব্বরি নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আর জেল কর্তৃপক্ষ। সে সময় আইজি প্রিজন কে ছিলেন ৪০ বছর পরে আজ তা মনে নেই। যেতেই ৩০-৪০ জন কারারক্ষী দিয়ে গেটে গার্ড অব অনার দিলেন, ফুলের তোড়াও দিলেন। সিংহ দরজা খুলে সুপারের কক্ষে নিয়ে বসালেন। এক দুই মিনিটের মধ্যে পাকিস্তানের কোলাবরেটর অভিযোগে অভিযুক্ত কবি তালিম হোসেনকে নিয়ে আসা হলো। চাচাকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা দেখে তিনি যেমন বেকুব হলেন তেমনি জেলের বড় বড় কর্মকর্তারা অবাক হলেন। যার নামে সারাদেশ কাঁপে, দালাল আইনে গ্রেফতার একজন আসামিকে জেলের মধ্যে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করছে—এ আবার কেমন মানুষ! বসতে বসতেই চা-নাস্তা এলো। কেন জানি না স্বাধীনতার পর আমার পেটে খুব কষ্ট ছিল। হয়তো এমন হতে পারে যুদ্ধের সময় অমানুষিক পরিশ্রম করেছি। স্বাধীনতার পর সে তুলনায় কিছুটা অলস জীবন। সে জন্য অমন হতে পারে। তাই শুধু চা খেয়ে চাচার সঙ্গে কথা সারলাম।

জনাব তালিম হোসেন সত্যিই একজন জ্ঞানী-গুণী বিদগ্ধ মানুষ। তাকে চিনি অনেকদিন ধরে। কিন্তু অমন গভীরভাবে তার কথা শুনিনি কখনও। ঘণ্টাখানেক তার কাছে ছিলাম। তিনি একবারও জেলে থাকার জন্য কোনো অনুযোগ অভিযোগ করলেন না। তার স্ত্রীর মতো শুধু বললেন, ‘বাবা দেশের স্বাধীনতা কারও চাইতে কম চাইনি। কিন্তু আমরা নির্বিবাদী মানুষ। বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে অনেকের মতো ঘর ছাড়তে পারিনি। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ প্রতিরোধ গড়তে পারিনি। আগেও যেমন নিজের জগত্ নিয়ে পড়ে থেকেছি, যুদ্ধের সময়ও তাই ছিলাম। এতে যা অপরাধ হওয়ার হয়েছে। তার জন্য সবার যে শাস্তি হবে আমি সে শাস্তি মাথা পেতে নেব। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে কষ্ট হচ্ছে আমরা একসঙ্গে যারা পাকিস্তানের গোলামি করলাম, তাদের বেতন নিলাম তাদের কেউ কেউ মরে গিয়ে শহীদ হলো আমরা বেঁচে থেকে দালাল হলাম। এতে কেমন যেন স্বস্তি পাচ্ছি না। বাবা, অপরাধ যা কিছু করার আমরা একসঙ্গে করেছি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করিনি। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের চাইতে পাকিস্তান আমলে আমি মাত্র এক বা দু’দিন বেশি বেঁচেছি, চাকরি করেছি। শহীদরা ১৩ তারিখ রাতে মারা গেছে। ১৪ আর ১৫ বলতে গেলে এই দু’দিন তো পাকিস্তানিদের দৌড়াদৌড়িই সার। ওই এক-দেড় দিন আমাদের কারোরই কিছু করার ছিল না। এখন মৃত্যু ভাগ্যে জোটে নাই তার জন্য কিইবা করতে পারি? যারা মরে গেছেন তাদের চাইতে যারা বেঁচে আছে তাদের সম্মান-অসম্মানের ব্যাপারটা বড় নয় কি? তাই তোমার চাচীকে হুজুর এবং তোমার কাছে পাঠিয়েছিলাম। পারলে বঙ্গবন্ধুকে ওই বিবৃতিটা দেখিয়ে একটু জিজ্ঞেস কর। ওতে ৩১ জনের স্বাক্ষর আছে। এক নম্বরে অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, আমার নম্বর একত্রিশ-এ।’

... তালিম হোসেনের কাছে যাওয়ার আগে আমারও তাদের ওপর ক্ষোভ ছিল। এত বিদ্বান, জ্ঞানী-গুণী মানুষ তারা, যুদ্ধের পুরো সময় পাকিস্তানের সেবাদাস হিসেবে কাজ করলেন কেন? কিন্তু কবি তালিম হোসেনের কথা শুনে ও অন্যদের সঙ্গে কথা বলে আমার বেশ খটকা লেগেছিল। তাইতো, বিষয়টা একটু তলিয়ে দেখা দরকার। ১৩ তারিখ পর্যন্ত যারা অবলীলায় ঢাকায় থেকে পাকিস্তানিদের সব হুকুম হাকাম পালন করেছে, ১৪ তারিখ সুবেহ সাদেকে সেই পাকিস্তানিদের হাতে নিহত হয়ে সবাই পূতঃপবিত্র হয়ে গেল? আর যারা বেঁচে ছিল তাদের কেউ কেউ দালাল হলো? এটা কেমন বিচার? তখন অতটা বুঝিনি। এখন কিছু কিছু বুঝি আমাদের গলদ কোথায়। যারা পূর্ব পাকিস্তান প্রশাসনকে চালু রেখেছিল শিক্ষা, দীক্ষা, সংস্কৃতি সব অঙ্গনকে যে কোনোভাবেই হোক জীবিত রেখেছিল, তারা আর সব কিছু বিসর্জন দিয়ে অনিশ্চয়তার পথে যারা পা বাড়িয়েছিল তাদের স্বাধীনতার পরপরই একাকার করে ফেলা হয়েছিল। কারও কোন ত্যাগ-তিতিক্ষা আর ব্যর্থতার পার্থক্য করা হয়নি॥"
-হয়নি॥"
- বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম /( দৈনিক আমার দেশ ২৭/৯/২০১১ এবং ১১/১০/২০১১)

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



দেশের পরিচিত মুখ, যাদেরকে ঘর থেকে বা কাজের থেকে ধরে নিয়ে গেছে আলবদরেরা ও জামাতের লোকেরা, তাঁরা স্বাধীনতা যুদ্ধের ভয়ংকরতাকে অনুধাবন করে নিজকে রক্ষা করেননি সঠিকভাবে, কমপক্ষে পালিয়ে থাকার দরকার ছিলো।

১৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:২৬

প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: বুদ্ধিজীবী দিবসটি তুলে দেয়া উচিত (!?)
বুদ্ধিজীবীদের জন্য আলাদা দিন লাগলে
কৃষকদের ,শ্রমিম ,ছাত্র, .... জনতা জন্যও আলাদা দিনের দাবি যৌক্তিক
প্রথম কারণ - এই বুদ্ধিজীবীরা যুদ্ধের মাঠে কিভাবে ছিলেন জানিনা তবে - কৃষকদের ,শ্রমিম ,ছাত্র, .... জনতা জীবন মুঠোয় নিয়ে অস্র হাতে সম্মুখ সমরে ছিলেন

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


তুলে দেয়ার দরকার নেই, ইহাকে সব শহীদদের স্মরণ করার মতো নাম দেয়ার দরকার।

১৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৩৪

ঈশ্বরকণা বলেছেন: পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনই হাজারো মানুষের জীবন দানের রক্তাক্ত সংগ্রামেরে ইতিহাস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধও একই রকম রক্তাক্ত সংগ্রামের ইতিহাস। কিন্তু আপনার লেখায় আপনি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে যুক্ত একটা বড় পয়েন্ট দৃষ্টিকটু ভাবে মিস করে গেছেন। যেমন বলেছি সারা পৃথিবীর সব দেশের স্বাধীনতা আন্দলনই রক্তাক্ত যুদ্ধের ইতিহাস। একটা আধুনিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনবহুল একটা ভূখণ্ডের যুদ্ধে হতাহত সংখ্যা অনেকেই হয় । সেটা অবাক কোনো ব্যাপার না। ১৯৪৫ সালের মার্চের ৯ তারিখে মাত্র একঘন্টার মধ্যে ৩৩০টি আমেরিকান বোম্বারের ফেলা প্রায় সাত হাজার পাউন্ড নাপাম বোমায় ঝলসে যাওয়া টোকিওতে সেই এক রাত্রিতেই এক লাখেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এমন একটা ব্যাপার আছে সেটা পৃথিবীর আর কোনো দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মনে হয় আর নেই।সেটা হলো বুদ্ধিজীবী হত্যা। এই ব্যাপারটা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের খুবই ইউনিক একটা দিক। এই বুদ্ধিজীবী হত্যাই স্পষ্ট করে কি রকম অমানবিক একটা শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হয়েছিল (জুলভার্ণের মন্তব্যে কাদের সিদ্দিকীর ভাষ্য মনে রেখেও বলছি এ কথা)। আমার মতে আমাদের স্বাধীনতার দাবির ভ্যালিডিটির পক্ষে এই বুদ্ধিজীবী হত্যাই সবচেয়ে সুস্পষ্ট দলিল। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরেও এর নেগেটিভ ইফেক্ট এখনো দেশ আর জাতিকে বহন করতে হচ্ছে আর আরো অনেক দিনই বহন করতে হবে। এই দিনটা আলাদা ভাবে অবশ্যই পালন করা দরকার বলে আমার মনে হয়। আমার ব্যক্তিগত ধারণা বিজয় দিবসই আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্বরণ করার শ্রেষ্ঠ দিন। কারণ তাদের জীবন দান ছাড়া এই বিজয় এই দিনটাই অর্জিতই হতে পারতো না (আমাদের কনটেক্সটে)। বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে জাতীয় স্মৃতি সৌধে ফুল দিয়ে আমরা সেই স্বীকৃতিটার কথাই বলি। এ হলো আমাদের সরকারি ইনিশিয়েটিভের কথা। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবেও কিন্তু সেই স্বীকৃতিও আমরা দেই।যেমন উদাহরণ হিসেবে বলি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সাহিত্যগুলোতে যেমন গান,নাটক,গল্প উপন্যাসের বেশির ভাগই জুড়েই সব মুক্তিযোদ্ধা,সব শহীদদের কথাই বলা হয়েছে কোনো বিভাজন না করে। পুরো ডিসেম্বর মাস জুড়ে আমাদের দেশে স্বাধীনতার সব প্রোগ্রামে সাধারণ ভাবে সব শহীদদের কথাই আমরা বলি। তাই আমার মনে হয় মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদদের স্বরণ করার জন্য বিজয় দিবসই সেরা দিন আলাদা কোনো দিনের দরকার নেই। সব দেশেই বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানেই স্বাধীনতা সংগ্রামের মৃত্যুবরনকারী বীরদের স্বরণ করা হয় (আমেরিকার মেমোরিয়াল ডে টা একটু আলাদা ধরতে হবে)।

আপনি বুদ্ধিজীবী দিবসে ঘটা হত্যাকান্ডগুলোর প্রভাব দেশ ও জাতির ওপর কতটা সুদূর প্রসারী সেটা একেবারেই বুঝতে পারেন নি আর সেজন্যই বুদ্ধিজীবী দিবসের গুরুত্বটা আন্ডারস্কোর করতে পেরেছেন এই লেখায়। আপনার অন্য সব লেখার মতোই ব্লগার হিসেবে আপনার ভাবনার দুর্বলতাই শুধু প্রকাশ পেলো এই লেখায়। স্বাধীনতার সব শহীদদের জন্য আলাদা একটা দিন পালন করা যাবে কিনা অথবা ষোলোই ডিসেম্বরে স্বাধীনতা যুদ্ধের সব শহীদদের স্বরণে আরো ভিজুয়াল কোনো কর্মসূচি যোগ করা যায় কিনা সেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপারটাকে অন্য বিষয়ের সাথে গুলিয়ে ফেললে স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর পৈশাচিকতাই ভুলে যাবার ব্যবস্থা করা হবে।এই দিনটা আলাদাবেই পালন করা দরকার।

(জুলভার্ণের মন্তব্যে কাদের সিদ্দিকীর লেখাটা দেখেও এই মন্তব্যটা করলাম । কারণ কাদের সিদ্দিকী যেই আর্গুমেন্ট করেছেন সেটার পরেও আমার মন্তব্যের ব্যাপারটা স্বতন্ত্র বলেই আমি মনে করি।)

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:




আপনার বক্তব্য কখনো সঠিক হয় না।

১৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: ১৬ই ডিসেম্বের বিজয়, সবার! ১৪ই ডিসেম্বর ১০০০ শহীদের, বাকী ৩০ লাখ শহীদের দিন কোনটি?

১৬ ডিসেম্বর ৩০ লাখ শহীদের।
১৪ ডিসেম্বর শুধু দেশের সেরা সন্তানদের। মানে বুদ্ধিজীবিদের।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৫

চাঁদগাজী বলেছেন:




১৬ই ডিসেম্বর হলো বিজয় দিবস, যুদ্ধ জয়ের ও মুক্তির আনন্দের দিন।

১৭| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৩১

রানার ব্লগ বলেছেন: স্বাধীনতা যুদ্ধে যারাই শহীদ হয়েছিলেন তারা সবাই দেশের সেরা সন্তান !!! আলাদা করে বুদ্ধিজিবি দিবস করে বাকিদের অবমাননার কি দরকার তাও বুঝি না।

১ লাখ ২০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা, ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখ নির্যাতীত নারী এরা সবাই দেশের সর্বচ্চ সেরা সন্তান !!! এদের প্রতি শ্রধ্যা জানাই ।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:




আমিও আপনার মতো ভেবে আসছি সব সময়।

১৮| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৪৫

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:

বিিশ্বব্যাপী বুদ্ধিজীবী মাপার প্যারামিটার কি? ৫০ বছর আগের বুদ্ধিজীবীর অবদান মেপে দিবস দাড়া করেছে কারা?

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর, ইমোশানেল সময়ে এগুলো করা হয়েছে; আমাদের ৩০ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে একই কারণে।

১৯| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: যুক্তিযুক্ত। আগে কখনো ভেবে দেখা হয়নি। এখনো বুয়েট, ঢাবি, ঢামেকের কেউ মারা গেলে তাকে নিয়ে হয় আলোড়ন, আন্দোলন, কিন্তু গ্রামের কোন ছাত্র মারা গেলে তার খবর ছাপা হয় ভেতরের বা শেষের পাতায়। প্রতিটি মৃত্যুই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। বুদ্ধিজীবি ও গ্রামের শহীদ সবাইকেই আমাদের স্মরণ রাখতে হবে। সাধারণ যোদ্ধাদের গুরুত্ব বুঝতে পেরেই, আমার চাচা এরশাদ সাহেব বলেছিলেন, মুক্তিযোদ্ধারা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান। অর্থাৎ কোন সংখ্যক নির্দিষ্ট যোদ্ধা বা খেতাবপ্রাপ্তদের বোঝাননি। সবার ত্যাগের বিনিময়েই এই স্বাধীনতা...

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



ধন্যবাদ।

২০| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:২৩

বিটপি বলেছেন: যে নারী সম্ভ্রম হারিয়েছেন, তিনি যদি মুক্তিযোদ্ধা হন, তবে তো যিনি নিহত হয়েছিলেন, তিনিও মুক্তিযোদ্ধা, তাই না? আমরা মুক্তিযোদ্ধা টার্মটাকে এত জেনারেলাইজ করতে চাইনা। ভিক্টিম কখনোই যোদ্ধা নয়। মুক্তিযোদ্ধা হলেনঃ
- যারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন
- যারা তাদেরকে ট্রেনিং দিয়েছেন
- যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন
- যারা তাদেরকে সহায়তা করেছেন।

এর বাইরের কোন গ্রুপকে আমি মুক্তিযোদ্ধা বলে স্বীকার করতে রাজী না। বঙ্গবন্ধু বা তৎকালীন আওয়ামী লীগের কোন নেতাই এই মুক্তিযোদ্ধা ক্যাটাগরিতে পড়েনা।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৫৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


মুক্তিযোদ্ধা মানে যাঁরা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। আপনি যা বলেছেন, ইহা আমার আগের কোন লেখা থেকে নিয়েছেন। আপনার ইহা বলার কারণ, আার মনে হয়, শেখ সাহেবকে খাট করার জন্য।

২১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:০৭

বিটপি বলেছেন: আপনি ভুল বুঝেছেন। আমি শেখ সাহেবকে খাটো করার কোন যোগ্যতাই রাখিনা। বঙ্গবন্ধু এদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি, কিন্তু তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন।

আমি ৭ নং মন্তব্যের প্রতিউত্তরে উপরোক্ত মন্তব্য করেছি।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


উনি স্হপতিও নন, উনার অনেক আগেই মওলানা ভাসানী বলেছিলেন যে, বাংলাকে স্বাধীন করতে হবে; ইহা স্বাধীন হবে। শেখ হলেন স্বাধনীতাকামীদের নেতা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.