নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুর প্রান্তে

নিজেকে জানার চেসটা করছি, নতুন কিছু শেখার চেসটা করছি ।

ইমরান আশফাক

নিজেকে জানার ও খুজে পাওয়ার চেষ্টায় রত আমি, জানি না কবে নাগাদ সফল হবো কিংবা আদৌ হবো কিনা।

ইমরান আশফাক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গরুর মাংস, কতটুকু ক্ষতিকর? নাকি উপকারী?

২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:০৯





আমরা মোটামোটি সবাই জানি যে গরুর মাংস একটি ক্ষতিকর খাবার যা এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এটি কোলেস্টেরল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কিন্তু সত্যি কথা হলো যে, গরুর মাংসের অনেক উপকারী দিকও আছে। পরিমিত পরিমাণে সঠিক ভাবে খেলে এর থেকে যেই পরিমাণ পুষ্টি পাওয়া যায় তা সমপরিমাণ অন্য কিছু থেকে পাওয়া কঠিন। তাহলে কেন আমরা সঠিক উপায়ে খাওয়ার কথা চিন্তা না করে একে সম্পূর্ণ বর্জন করে এর খাদ্যগুন থেকে নিজেদের বঞ্চিত করবো?


কি পরিমাণ খাওয়া উচিত:

দৈনিক গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হলো, ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম। আনুমানিক একটা কম্পিউটারের মাউস বা একটি তাসের বান্ডিলের সমান টুকরাতে এই পরিমাণ মাংস পাবেন।


চর্বি ছাড়া মাংস কোথায় পাবেন:

গরুর শরীরের ২টি অংশ আছে যাতে পাবেন চর্বি ছাড়া মাংস এবং এই অংশ গুলোতে চর্বির পরিমাণ চামড়া ছাড়ানো মুরগীর থানের মাংসের চেয়েও কম। এই ২টি অংশ হলো- round এবং loin/sirloin অঞ্চল (ছবিতে দেখুন), এই অংশ গুলোতে অভ্যন্তরীন চর্বির পরিমান সর্বনিম্ন 4.2 গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ 8.2 গ্রাম যেখানে মুরগীর থানের মাংসে অভ্যন্তরীন চর্বির পরিমান 9.2 গ্রাম। তবে হ্যা, এই তুলনাটা হবে যখন আপনি মাংস থেকে দৃশ্যমান চর্বি আলাদা করে কেটে ফেলে দিবেন।


গরুর মাংস মানেই অত্যধিক ক্যালরি নয়:

আপনি যদি ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম চর্বি ছাড়া গরুর মাংস খান তাহলে এটা থেকে আপনার দৈনিক ক্যালরির চাহিদার মাত্র ১০% ক্যালরি আসবে। ( ৩ আউন্স মাংসে আছে ২০০ ক্যালরি এবং দৈনিক ক্যালরি চাহিদা ২০০০ ক্যালরি ধরে)


গরুর মাংসে কোলেস্টেরল এর মাত্রা:

৩ আউন্স sirloin অঞ্চলের মাংসে কোলেস্টেরল এর মাত্রা ৪৭ মিগ্রা এবং ৩ আউন্স round অঞ্চলের মাংসে কোলেস্টেরল এর মাত্রা ৫৩ মিগ্রা। একজন সুস্থ্য মানুষের কোলেস্টেরল এর দৈনিক নিরাপদ মাত্রা হলো ৩০০ মিগ্রা এবং হার্টের রোগীর জন্য ২০০ মিগ্রা। সুতরাং ৩ আউন্স গরুর মাংসে কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিরাপদ সীমার অনেক নীচে। তুলনাটা আরেকটু ভালো করে বুঝাতে বলি, একটি ডিমের কুসুমে আছে ২১২ মিগ্রা কোলেস্টেরল। সুতরাং সব দোষ গরুর মাংসের একার না।


গরুর মাংসে আছে পুষ্টি:

আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ৯টি পুষ্টি উপাদান আছে গরুর মাংসে।এগুলো হলো প্রোটিন, জিঙ্ক, ভিটামিন বি১২, সেলেনিয়াম,ফসফরাস, নায়াসিন, ভিটামিন বি৬, আয়রন এবং রিবোফ্লেভিন। প্রোটিন শরীরের পেষি গঠনে ভূমিকা রাখে, জিঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ফসফরাস দাত ও হাড়ের শক্তি বাড়ায়, আয়রন শরীরের পেষি গুলোতে অক্সিজেন প্রবাহে সহায়ত করে এবং ভিটামিন বি১২ খাদ্য থেকে শক্তি যোগান দেয়। ৩ আউন্স গরুর মাংস থেকে যেই পরিমাণ জিংক আসে সেই পরিমাণ জিংক পেতে আপনাকে খেতে হবে ৩ আউন্স ওজনের ১১ টুকরো টুনা মাছ, এই পরিমাণ আয়রনের জন্য খেতে হবে ৩ আউন্স ওজনের ৭ টুকরা মুরগীর বুকের মাংস, এই পরিমাণ আয়রনের জন্য খেতে হবে ৩ কাপ স্পিনাচ, এই পরিমাণ রিবোফ্লেভিন এর জন্য খেতে হবে ৩ আউন্স ওজনের আড়াই টুকরা মুরগীর বুকের মাংস এবং এই পরিমাণ থায়ামিন এর জন্য খেতে হবে ৩ আউন্স ওজনের ২ টুকরা মুরগীর বুকের মাংস।


বর্ধনশীল বাচ্চাদের জন্য গরুর মাংসের উপকারীতা:

বর্ধনশীল বাচ্চা বা টিনএজার দের সমর্থ ও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে গরুর মাংসের তুলনা নেই। শুধু শারীরিক বর্ধন নয়, বুদ্ধি-বৃত্তিক গঠন এবং রক্ত বর্ধনেও এটি ভূমিকা রাখে। ৩ আউন্স গরুর মাংসে আছে ৯-১৩ বছর বয়সী বাচ্চার দৈনিক চাহিদার ১২৫% ভিটামিন বি১২, ৯০% প্রোটিন, ৭৪% জিংক, ৪২% সেলেনিয়াম, ৩২% ভিটামিন বি৬, ৩২% আয়রন, ২৯% নায়াসিন, ২৩% রিবোফ্লেভিন এবং ১৬% ফসফরাস।


Conjugated Linoleic Acid (CLA):

গরুর মাংসে আছে Conjugated Linoleic Acid (CLA), এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ, ডায়বেটিস প্রতিরোধ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক বলে গবেষনায় প্রমাণিত হয়েছে।


সুতরাং খান তবে রয়ে সয়ে:

গরুর মাংস খেয়েও ঝুকি মুক্ত থাকতে, নীচের ব্যাপার গুলো মেনে চলুন।
-খাওয়ার জন্য বেছে নিন round এবং loin/sirloin অঞ্চলের মাংস
– দৈনিক ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রামের বেশী খাবেন না, আয়তনের দিক দিয়ে তা একটা কম্পিউটার মাউস বা একটি তাসের বান্ডিলের সমান।
-মাংস কাটার সময় দৃশ্যমান চর্বি আলাদা করে ফেলে দিন
-বেশী তেল দিয়ে ভুনা করার চাইতে বারবিকিউ, গ্রীল, কাবাব বা অল্প তেলে ঝোল করে ঝোল এড়িয়ে মাংস খেলে তা বাড়তি তেলে ক্ষতির সম্ভাবনা এড়াতে সহায়তা করবে।

বিঃদ্রঃ যাদের ডাক্তারের নিষেধ আছে গরুর মাংস খাওয়ার ব্যাপারে, তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলবেন।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:২৫

চুক্কা বাঙ্গী বলেছেন: গরুর গোস্তের সাথে আর কোন কিছুর তুলনা হয়না। ''সুতরাং খান তবে রয়ে সয়ে'' বক্তব্যের সহিত সহমত।

২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৭:১৮

ভিটামিন সি বলেছেন: বুদ্ধিজীবি পোষ্ট। গরুর মাংস যে ক্ষতিকর তা আগে জানতাম না। আপনার পোষ্টু পড়ে জানলাম। কারণ, আমি গরুর মাংস ছাড়া অন্য কিছু ভালা পাই না তো তাই এর নেতিবাচক দিকগুলি আমি জানি না বা জানতে চেষ্টাই করি না। তবে হ্যাঁ, গরুর মাংস খেলে আমার আব্বার প্রেসার হাই হয়ে যায়।

৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৫১

আমিনুর রহমান বলেছেন:




মুল পোষ্টের লিঙ্কটা দিয়ে দিতে পারতেন।


শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩১

আসাদ /পারেভজ বলেছেন: যাদের ডাক্তারের নিষেধ আছে গরুর মাংস খাওয়ার ব্যাপারে, তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলবেন ?
? ?

৫| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৩

নকি৬৯ বলেছেন: গরুর গোস্ত ছাড়া আমার চলেই না............

৬| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৫

জানা বলেছেন:

ভাল পোস্ট। সবার জন্যেই উপকারী। কেবল উৎসটি/উৎসগুলি সংযুক্ত করুন। এটি ব্লগের নীতিমালার আওতাভুক্ত।

অনেক ধন্যবাদ।

৭| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৮

কলমের কালি শেষ বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট । শেয়ারে অনেক ধন্যবাদ । :)

৮| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩০

শাহ আজিজ বলেছেন: একজন রিকশাওয়ালা , বস্তা টানা লেবার , ঠেলাগাড়ি চালকের জন্য এটা কিছুইনা। সব হচ্ছে আমার আপনার মতো কিবোর্ড ছাগুদের। খাইলেই প্রেশার !!
যাদের রক্তচাপ উচ্চে তারা খাবেন না , মাসে একদিন দুপুর বেলা , ঝোল ছাড়া, দুই টুকরা মাত্র। বার বি কিউতে তেল ঝরে যায় , ওটা উত্তম। ৬ বছর একটানা খাইনি , এখন খাই তবে অল্প এবং দাম দিয়ে চর্বিহীন মাংস কিনি। কারন আমি চাইনা আমার প্রজন্ম আমার মতো ভুগুক। গরদানের মাংস একদম না।

গরুর থেকে সুস্বাদু মাংস আর নেই।

৯| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:০৮

ইমরান আশফাক বলেছেন: হার্ট বাইপাসের পর (অবশ্য আমার হার্ট এ্যাটাক হয়নি, আগেভাগেই বাইপাস করে ফেললাম) আমাকে বলা হলো রেডমিট মাসে ৩ বারের বেশি নয়, দৃশ্যমান চর্বি বাদ, ঝোল পরিহার করতে হবে, একবারে দুই টুকরার বেশি নয় (টুকরার সাইজের কথা বলে নাই এবং এখানেই আমার স্বাধীনতা :P )। আরও বলা হলো সিনা বা গর্দান বাদ দিয়ে রানের সলিড মাংস খাওয়ার জন্য।

কথায় আছে না রাজা যা বলেন পরিষদ বলেন তার শত গুন, আমার স্বজনেরা আমার জন্য রেডমিট সম্পূর্ণ হারাম করে দিলো ম্যাগার তারা শেষরক্ষা করতে পারলো না। কারন ডাক্তারের এডভাইসের পাশাপাশি এই পোস্টটি তাদের মুখের কুলুপ আটানোর জন্য যথেষ্ট বলে মনে করি। এরপরও যদি কেউ বাড়াবাড়ি করে তবে তার দায়িত্ব আমার নয়।

তবে হ্যা, যাদের হাই প্রেশার আছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে এই আর্টিকেলটা পেয়েছি, ভবিষ্যতে লিংক দেয়ার কথা চিন্তা করে দেখব।

মন্তব্যকারী সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়বার জন্যে।

১০| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:২১

খেলাঘর বলেছেন:

সপ্তাহে ২/৩ বার খেলে ভালো।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:০২

ইমরান আশফাক বলেছেন: সবই ভাল যদি আপনি সহ্য করে নিতে পারেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.