নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এবার আসা যাক। লিখব কেন, লিখি কেন? প্রতিটি ভাষায় অজস্র মণি মুক্তো। বাংলাতে আছে এ রকমই সীমাহীন প্রাচুর্য। তাহলে লেখক আরও কেন লিখছে?
যদিও এর চেয়ে সহজ উত্তর আর হয় না যে ভাবাতে ভাবতে লেখক লিখে যায়।
সে গল্প কবিতা গান নাটক উপন্যাস প্রবন্ধ ইত্যাদি যাই লেখা হোক না কেন তার প্রধান লক্ষ্য হল নিজস্ব উপলব্ধি তুলে ধরা। সঠিক সিধান্তে লেখা এবং পাঠককে পৌঁছে দেওয়া। অনেক রহস্য কাহিনীর শেষে রহস্যভেদ করা। এই উপলব্ধি যদি পাঠকের থই না পায় তাহলে লেখার সার্থকতা আসে না।
তাই যে লেখার আগে অথবা লিখতে লিখতে অথবা লেখনীতে সেই উপলব্ধি লেখককে তৈরি করে নিতে হয়।
এই উপলব্ধিতে পৌঁছানোর সবচেয়ে সহজ অথচ কঠিন হল জীবন নিরীক্ষণ। যতটা পারপার্শ্বিকে চেনা যায় চিনে নিতে হবে। চিনতে চাইলেই চেনা যায় না তাই জীবনকে চেনার জন্য পূর্ববর্তী বা সমসাময়িক চিহ্নিতকরণীকগণের সহযোগিতা নিতে হয়। অর্থাৎ বই পড়তে হবে। তথ্যের সাথে তত্ত্বের মেলবন্ধন ঘটাতে হবে। তবেই না উপলব্ধি তৈরি হয়।
যেমন ধরুন একটা খুন হল। এখানে তিনটে পরিস্থিতি প্রথম যে খুন হয়েছে, দ্বিতীয় যে খুন করেছে তৃতীয় সামনে দেখা। লেখক বা ভাবানু কোন পথ নেবে। কেউ হঠাৎ খুন হয় না। কেউ হঠাৎ খুন করে না।সামনে যা দেখা যায় তা বুঝে ওঠা যায় না। তাহলে সবার দিক বিশ্লেষণে লেখক চাইবে গোলাপ ফোটাতে। এই গোলাপ ফোটানোর উপলব্ধি উপদেশ নির্দেশ কেউ শুনবে না। তাই চেনা ছকে অথচ অচেনা আঙিনায় তাকে তুলে ধরতে হবে।
এই তুলে ধরার উপস্থাপনাটাই আসল মুন্সিয়ানা। সেখানে ভাবুক কেরামতি। উপলব্ধির অপার আকাশ সংস্থান। সেটুকু বোঝাতে কেউ গল্পের আকারে কেউ কবিতার আকারে, কেউ উপন্যাসের আকারে লেখে। বর্তমানে শুরু হয়েছে অণু আকারে। আসলে উপলব্ধি বহুরাস্তা পেরিয়ে আরও সাবলীল সঙ্গত এবং টু দি পয়েণ্ট হয়ে উঠছে। তাই অণু এক পেরিয়ে অনেকের হাত ধরে এগিয়ে চলেছে।
শ্রদ্ধেয় বনফুল এই সঠিক উপলব্ধি কয়েকটা বাক্যেই তুলে ধরে গেছেন যা সর্বাংশে অফুরন্ত বার্তাবাহী। অণুকবিতায় তাও আভাষবিহীন অন্ধকার থাকে। কিন্তু সঠিক মুন্সিয়ানায় অণুগল্প বুকের ভেতরে আত্মপ্রসাদ দান করে।
এবার ধরা যাক আমি কেন লিখি? আমি কি সে রকম পারি? আমার প্রথম উত্তর না, একটুও পারি না। তাও কেন লিখি? আমি কি কবি সাহিত্যিক লেখক বিশারদ জ্ঞানী বুদ্ধিজীবী? না, আমি কিছুই না। তাও লিখি। কেন না আমি নিজেকে নিজে ভাবি। বিচার করি। ভুল করা বিশ্লেষণ। আবার ভুল করি। না জানা জানতে চেষ্টা করি। জানাতে চেষ্টা করি।
অবসর এলে মানুষ কি করে? আড্ডা মারে। যে যার বৃত্তে নিজস্ব তৈরি করে অবসর কাটায়। আমি সে সময়টা লিখি। আগে কাগজ নষ্ট করতাম, এখন নেট খরচ করি আর লিখি। ভুল ঠিক যাই হোক লিখি। অন্য অনেক কাজের মত এটা করি। হয়তো ভাল করতে পারি নি। কিন্তু খারাপ হয়ে যায় কি? সেটাও ভাবি লিখি।
রবীন্দ্রনাথ নজরুল সুকান্ত শীর্ষেন্দু জয় সুনীল এঁরা কেউ অনেক জানি অনেক ভাবি ভাবাব ভেবে লেখা শুরু করে নি। উপলব্ধির মাত্রায় নিজেরা নিজেদেরকে উচ্চতায় তুলে নিয়ে গেছেন। সে উচ্চতায় আমি উঠতে পারব না তাকাবও না। কিন্তু চেষ্টার মধ্যে আর যাই থাক কোন অমঙ্গল নেই। তাই লিখি। লিখতে শুরু করে পড়ি। পড়ার মাঝে নিজেকে নিজে বুঝাই। ভাঙি গড়ি। তাই আবার লিখি।
এই ভাবনার মধ্যে অন্তত একজনকেও যদি ভাবাতে পারি তাহলেও তা হবে সামাজিক মঙ্গল। যাই করি না তার মধ্যে ভাবনা আছে। ভাবানো আছে। ভাবানু আছে। তাই যে কোন কর্মের অবস্থান পারে লেখা আছে। লেখায় উপলব্ধি মিশিয়ে দেওয়া আছে। আর সেই উপলব্ধির উপস্থাপনাই আসল লেখনী। কেউ তাকে প্রকাশ করতে পারে কেউ পারে না।
তাহলে হিসেবে দাঁড়াল সবাই লেখক। তাই আমি লেখক।
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৮
দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৩৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: লিখে যান।
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৯
দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০১
শামচুল হক বলেছেন: সুন্দর কথাই লিখেছেন