নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ফারুক এহসান। পৃথিবীটাকে জানতে চায়। আমার স্বপ্নের দুনিয়াতে স্বাগতম। আরেকটা কথা আমি পৃথিবীর সকল মানুষকে ভালোবাসি। তাই আপনাকেও আমি ভালোবাসি।

ফারুক এহসান

ফারুক এহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদায়ী সাক্ষাতে যা বললেন শহীদ মুজাহিদ

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২২

আলী আহমাদ মাবরুর :
২১ নভেম্বর রাত ৮টা। আমি তখন পুরানা
পল্টনস্থ আইনজীবীদের চেম্বারে।
পরিবারের বাকি সবাই উত্তরাস্থ
বাসভবনে। হঠাৎ বাসা থেকে ফোন-
আমাদেরকে মানে পরিবারকে
নাকি
শেষ সাক্ষাতের জন্য যেতে বলেছে।
ডেপুটি জেলার শিরিন আমার বড়
ভাই
আলী আহমেদ তাজদীদকে ফোন দিয়ে
রাত ৯টার মধ্যে কারাগারে
পৌঁছতে
বলেছে। আমি সাথে সাথে
তাদেরকে
বললাম, আমি তো কাছেই আছি।
আপনারা জলদি বের হন। আমি সাথে
সাথে সংগঠনের সবাইকে অবহিত
করলাম
এবং তাদের কাছ থেকে কিছু জানার
চেষ্টা করলাম; শেষ সাক্ষাতে
কোনো
পরামর্শ আছে কি না।
আইনজীবীদেরকেও জানালাম।
তারপর
অযু করে কারাগারের উদ্দেশ্যে
রওয়ানা
দিলাম।
আমাদের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের
মোট ২৫ জন সদস্য সেদিন কারাগারে
গিয়েছিলাম। রাত ১১টার দিকে
আমরা
সেখানে পৌঁছাই। ঢোকার পরে
প্রয়োজনীয় তল্লাশি শেষে রাত
১১-২০
মিনিটে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামীদের
সেল
রজনীগন্ধায় পৌঁছাই। রজনীগন্ধায়
সেলের একেবারে ডানকোনায় ৮নং
সেলে আব্বা থাকছেন। এর আগেও
শহীদ
আব্দুল কাদের মোল্লা ও শহীদ
মুহাম্মাদ
কামারুজ্জামানও সেই ঘরটিতেই
ছিলেন।
আমরা গত কয়েক মাসেও সেখানেই
আব্বার সাথে সাক্ষাৎ করেছি।
আমার
আগে আব্বার এক নাতি, আমার আম্মা
আর বোন আব্বার ঘরে পৌঁছান। আমি

নম্বর ব্যক্তি হিসেবে পৌঁছাই,
সাথে
অন্যরাও। আমি ধারণা করেছিলাম,
যেহেতু এতো লোক যাচ্ছি শেষ
সাক্ষাৎ;
কাজেই আব্বা হয়তো আমাদের জন্য
তৈরি হয়েই বসে থাকবেন। কিন্তু
আমরা
রুমের বাইরের করিডোরে বা রুমের
ভেতরে দাঁড়ানো কোনো
অবস্থাতেই
আব্বাকে পেলাম না। ভেতরে
তাকিয়ে
দেখি, আব্বা শুয়ে আছেন। পরে বুঝলাম
গভীর ঘুমে আছেন। ডান দিকে কাত
হয়ে
গালের নীচে হাত দিয়ে সবসময়
যেভাবে
ঘুমাতে দেখেছি সেভাবেই তিনি
ঘুমাচ্ছেন। গায়ের ওপর কাঁথা নেই,
ছোট
রুমের মাটিতে জায়নামাযের ওপর
শুয়ে
আছেন। মাথার নীচে কোনো
বালিশও
নেই। আমার বোন, আমরা সবাই আব্বা
আব্বা বলে ডাকছি। আর আমার
ভাইয়ের
ছেলেরা ডাকছে দাদা দাদা বলে।
কিন্তু আব্বার কোনো সাড়া নেই।
যেন
ঘুমের সাগরে তলিয়ে আছেন তিনি।
এভাবে প্রায় মিনিট খানেক
ডাকাডাকির পর আব্বা একটু গুঙ্গিয়ে
বললেন, কে কে? তারপর আমাদের
দেখে
বললেন, “ও তোমরা এসছো। এতো
রাতে
কি ব্যাপার? তোমাদের কি কারা
কর্তৃপক্ষ ডেকেছে? এটা কি শেষ
সাক্ষাৎ?” ততক্ষণে তিনি উঠে
বসেছেন।
“আমাকে তো জেল কর্তৃপক্ষ কিছু
জানায়নি। তাওয়াক্কালতু
আলাল্লাহ।”
কিছুটা সময় তিনি বসেই থাকলেন।
মনে
হলো গভীর ঘুম থেকে উঠার জন্য,
পাশাপাশি আমাদের উদ্দেশ্যে তার
দিকনির্দেশনাগুলো গুছানোর জন্য
আল্লাহর সাহায্য চাইছেন।
আমরা তাকে উত্তর দিলাম, জ্বী
আব্বা,
আমরা আমাদের শহীদ হতে যাওয়া
বাবার কাছে এসেছি। আমরা
আমাদের
গর্বের ধনের কাছে এসেছি। আমার
বোন
বললো, আমরা আমাদের মর্যাদাবান
পিতার সাথে দেখা করতে এসেছি।
আমাদেরকে ওরা আজ শেষ বারের
জন্য
আপনাকে দেখার জন্য ডেকেছে।
তিনি
এভাবে বসে থাকলেন কিছুক্ষণ। বসে
বসেই আমাদের কথা শুনলেন। আম্মা
বললেন, উঠে এসো। সব শুনে তিনি
বললেন,
“ও আচ্ছা, আলহামদুলিল্লাহ।”
বেশ কিছুক্ষণ পর তিনি উঠলেন,
দাঁড়ালেন। ফিরোজা রং এর
গেঞ্জী,
সাদা নীলের স্ট্রাইপ পড়া
পায়জামা
পড়েছিলেন তিনি। কিছুক্ষণ
স্যান্ডেল
খুঁজলেন। পরে খুঁজে পেয়ে স্যান্ডেল
পড়ে
আমাদের সামনে দাঁড়ালেন। বললেন,
“কে
কে এসছো, কয়জন, আমিই একটু দেখি।”
সেই সময় লাইটের আলো কম থাকায়
ভেতর দিকে ভাল দেখা যাচ্ছিলো
না।
সেলের লোহার দরজার বাইরে
নেটের
দরজা লাগানো ছিল। পরে আমার বড়
ভাই
সেই দরজাটি খুলে দিলেন। আমরা
পরিবারের সদস্যরা আগে একে একে
সালাম দিলাম, তারপর আত্মীয়রা।
আমার বড় ভাইরা প্রত্যেকের নাম
বলে
দিচ্ছিলেন যে, যারা সেদিন
সাক্ষাতে
গিয়েছিল। কিন্তু আব্বা বললেন,
“দাঁড়াও
আমিই দেখে নেই।” তারপর সবাই একটু
জোরে নিজেদের নাম বলে
উপস্থিতি
জানান দিলেন। কিন্তু আব্বা আলাদা
আলাদা করে প্রত্যেককে কাছে
ডেকে
তাদের সাথে হাত মিলাতে শুরু
করলেন।
একে একে সবাই শিকের ভেতর দিয়ে
হাত
মেলালেন। প্রত্যেকের সাথে তিনি
তাদের খোঁজ-খবর নিলেন। যার যা
সমস্যা সেটা নিয়েই তিনি আলাপ
করলেন। প্রত্যেকে সেল দিয়ে বের
হয়ে
থাকা তাঁর দুটি হাত ছুয়ে সালাম
দিলেন।
কেউ বা চুমু দিলেন। শেষ করে বললেন,
“কারও সাথে মুসাবাহ করা বাদ
যায়নি
তো?”
আব্বা দাঁড়ানোর পর আমি নিজ
থেকেই
একটা সূচনা বক্তব্য দিলাম। বললাম
আব্বা আপনি শহীদ হতে যাচ্ছেন।
আপনি
এর মাধ্যমে নিজেকে ও আমাদেরকে
দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত করে
যাচ্ছেন। আপনি আমাদেরকে
দুনিয়াতেও
সম্মানিত করেছেন, আখিরাতেও
সম্মানিত করতে যাচ্ছেন। অতএব
মোটেও
দুশ্চিন্তা করবেন না। আপনাকে
আপনার
আব্বা, আমার দাদা মরহুম মাওলানা
আব্দুল আলী ইসলামী আন্দোলনের জন্য
ওয়াক্ফ করে গেছেন। আমি মনে করি
এরকম একজন ওয়াকফ হওয়া মানুষের
সর্বোত্তম ইতি আজ হতে যাচ্ছে।
কেননা
আপনি আপনার ছাত্র জীবন, যৌবন,
মাঝবয়স সব আন্দোলনের জন্য ব্যয় করে
এখন দ্বীন কায়েমের জন্য গলায়
ফাঁসির
দড়ি নিচ্ছেন। আপনার শাহাদাতে
সবচেয়ে খুশী হবেন আপনার পিতা
মরহুম
মাওলানা আব্দুল আলী। কেননা আপনি
তার রেখে যাওয়া ওয়াদা অনুযায়ী
জীবন যাপন করে আজ দুনিয়া থেকে
বিদায় নিতে যাচ্ছেন।
আব্বা এরই মধ্যে উঠে দাঁড়িয়ে
সেলের
দরজায় স্বভাবসুলভ ভংগিতে লোহার
শিক ধরে দাঁড়িয়েছেন। এরপর তিনি
প্রথম শব্দ করলেন আলহামদুল্লিাহ। প্রথম
কথা বললেন, তোমরা জেনে রাখো,
কারা কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত আমাকে
জানায়নি যে তারা আজ আমার
ফাঁসি
কার্যকর করতে যাচ্ছে। এটা কত বড়
জুলম?
তখন একটা আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি
হতে যাচ্ছিল। কিন্তু আব্বা বললেন,
কান্নাকাটির দরকার নেই। আমি কিছু
কথা বলবো।
এরপর তিনি অত্যন্ত স্বভাবসুলভ
তেজদীপ্ত বলিষ্ঠ কন্ঠে, মাথা উচু
করে
অনেকটা ভাষণের ভংগিমায় শুরু
করলেন,
“নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি আলা
রাসুলিহিল কারীম।” উপস্থিত অন্যরা
তখনও একটু আবেগ প্রকাশ করছিল, আব্বা
আবারও বললেন, “নাহমাদুহু ওয়া
নুসাল্লি
আলা রাসুলিহিল কারীম।
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন,
আসসালাতু আসসালামু আলা
সাইয়্যেদুল
মুরসালীন। ওয়ালা আলিহী ওয়া
সাহবিহী আজমাইন। আম্মা বা’আদ।
আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া।
জেল
কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ যে তারা এই
সাক্ষাতের সুযোগ করে দিয়েছেন।
জেল
কর্তৃপক্ষ আসলে অসহায়। তারা তাদের
সামর্থ্য অনুযায়ী এই পর্যন্ত আমাকে
যথেষ্ট সম্মান দিয়েছেন এবং আমার
সাথে ভাল ব্যবহার করেছেন। তারা
আমাকে একটি লিখিত আবেদনের জন্য
যথেষ্ট পীড়াপীড়ি করেন এবং বলেন
এটা না হলে তাদের অসুবিধা হয়ে
যাবে।
এক পর্যায়ে তারা বলেন, আপনার যা
বক্তব্য আছে তাই লিখে দেন। আর সেই
কারণেই এটা বলার পর আমি
কনসিকুয়েন্স
বুঝেও আমি তাদের সুবিধার জন্য
একটি
লিখিত আবেদন দিয়েছি।”
আমি প্রশ্ন করলাম, আব্বু আপনি ঐ
চিঠিতে আসলে কি লিখেছেন?
উত্তরে তিনি বললেন, “আমি
রাষ্ট্রপতিকে লিখেছি, আইসিটি
এ্যাক্ট, যদিও এটা দেশে বিদেশে
বিতর্কিত ও সংবিধানের সাথে
সাংঘর্ষিক তারপরও এই বিচারের সময়
আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সীমিত
সুযোগ দেয়া হয়েছে। আমার ক্ষেত্রে
ফৌজদারি আইন, স্বাক্ষ্য আইন প্রযোজ্য
ছিল না। সংবিধান স্বীকৃত নাগরিক
অধিকার থেকে আমাকে বঞ্চিত করা
হয়েছে।
আমাকে ট্রাইবুনাল ৬ নং চার্জে
মৃত্যুদণ্ড
দেয়নি। তারা চার্জ ১ কে চার্জ ৬ এর
সাথে মিলিয়ে চার্জ ৬ এ মৃত্যুদণ্ড
দিয়েছে। আপিল বিভাগ আমাকে
চার্জ
১ থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছে।
চার্জ
৬ এ তারা আমার মৃত্যুদণ্ড বহাল
রেখেছে।
অথচ ট্রাইবুনাল শুধু চার্জ ৬ এর জন্য
আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়নি।
এই চার্জে স্বাক্ষী মাত্র একজন। সে
বলেনি, যে কোন বুদ্ধিজীবীকে
আমি
হত্যা করেছি। কোন বুদ্ধিজীবি
পরিবারের সন্তানও এসে বলতে
পারেনি
যে, আমি কোন বুদ্ধিজীবিকে
মেরেছি
এবং কোনো বুদ্ধিজীবি পরিবার
আমার
রায়ের পরও দাবি করেনি যে, তারা
তার
পিতা হত্যার বিচার পেয়েছেন।
আমার
অপরাধ হিসেবে বলা হয়েছে যে,
আমি
নাকি আর্মী অফিসারদের সাথে
বসে
পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু যে স্বাক্ষী
এসেছে সেও বলেনি যেম আমি কবে
কোন আর্মি অফিসারের সাথে
কোথায়
বসে এই পরামর্শ করলাম?
স্বাক্ষী বলেছে আমাকে, নিজামী
সাহেব ও অধ্যাপক গোলাম আযমকে
দেখেছে। সে আমাদের চিনতো না।
পরে
আমাদের নাম শুনেছে। অথচ এই
অভিযোগটি গোলাম আযমের
সাহেবের
বিরুদ্ধে আনাই হয়নি। নিজামী
ভাইকে
যাবজ্জীবন দিয়ে শুধু আমাকে মৃত্যুদণ্ড
দেয়া হয়েছে।
আমি নিশ্চিত যে, আমার মৃত্যুদণ্ডের
রায়
কনফার্ম করে তারপর আমার বিরুদ্ধে
বিচারের নামে প্রহসন শুরু করা
হয়েছে।
(আমরা সকলে তখন চিৎকার করে
বললাম
শেম)
আমাকে আমার পরিবার, সংগঠন ও
দেশবাসীর কাছে হেয় প্রতিপন্ন
করার
জন্য, কাপুরুষ প্রমাণ করার জন্য দিনভর
রাষ্ট্রীয়ভাবে এই মিথ্যাচারের
নাটক
করা হয়েছে। এই জালিম সরকারের
কাছে
ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। (এই সময়
তার কন্ঠে প্রচন্ড রাগ ও ক্ষোভের সুর
প্রকাশ পায়)। আমি নির্দোষ,
নির্দোষ
এবং নির্দোষ। আমাদের আজ তারা
অন্যায়ভাবে হত্যা করতে যাচ্ছে।
কত বড় স্পর্ধা তাদের যে, তারা
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার
করার
দাবি করে। অথচ তাদের নিজেদের
ভেতর
মানবতা নেই। তারা ঘুমন্ত অবস্থায়
একজন
মানুষকে মধ্যরাতে তুলে তার
পরিবারের
সদস্যদের নিয়ে এসে বলে এই তাদের
শেষ
সাক্ষাৎ এবং এরপরও তাদের ফাঁসি
কার্যকর করা হবে।
তারা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর
মতো
লোককেও একইভাবে মাঝরাতে তুলে
তার
পরিবারের সাথে সাক্ষাতের জন্য
ডেকেছে। এটা কেমন মানবতা?
আমার
মতো তিনিও বিচারিক প্রক্রিয়ার
যাবতীয় ত্রুটি ও অসংগতি নিয়ে
ইংরেজিতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি
লিখেছেন।
তোমরা শুনে রাখো, তোমরা চলে
যাওয়ার পর আজ যদি আমার ফাঁসি
কার্যকর করা হয় তাহলে তা হবে
ঠান্ডা
মাথায় একজন নিরীহ মানুষকে হত্যা
করা। তোমরা প্রতিহিংসাপরায়ন
হবে
না। তোমাদের কিছুই করতে হবে না।
আজ
আমার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর এই
অন্যায় বিচারিক প্রক্রিয়ার সাথে
যারা জড়িত তাদের প্রত্যেকের
বিচার
আল্লাহর দরবারে শুরু হয়ে যাবে,
বিচার
শুরু হয়ে গেছে। তোমাদের কারও কিছু
করতে হবে না।
তোমাদেরকে আজ আমি আমার
সত্যিকারের জন্ম তারিখ বলি।
আমাদের
সময় জন্মতারিখ সঠিকভাবে লিখা
হতো
না। আমাদের শিক্ষকেরাই ছাত্রদের
জন্ম তারিখ বসিয়ে দিতেন। আমার
সত্যিকারের জন্ম তারিখ বলি। আমার
জন্ম ১৪ আগস্ট, ১৯৪৭, ২৭ রমযান। আমার
চেয়ে শেখ হাসিনা মাত্র ১ মাসের
ছোট।
তিনি আমাকে ভালভাবেই চিনেন।
তিনি
ভাল করেই জানেন আমি কোনো
অন্যায়
করিনি কেননা তার সাথে সাথে
আমার
দীর্ঘ আন্দোলনের ইতিহাস।
আমি পবিত্র মক্কা নগরীতে ওমরাহ
করেছি অসংখ্যবার। আর আল্লাহর
রহমতে হজ্ব করেছি ৭ থেকে ৮ বার।
আমার বাবার কবর পবিত্র নগরী মক্কায়
জান্নাতুল মাওয়াতে। সেখানে তার
কবর
উম্মুল মুমেনীন খাদিজার (রা:) পাশে,
বেশ কয়েকজন সাহাবীর কবর আছে
আলাদা ঘেরাও করা, তার ঠিক
পাশে।
সেখানে অনেক নবী রাসুলদের কবরও
আছে। আমি এই পর্যন্ত যতবার ওমরাহ
করেছি, যাদেরকেই সাথে নিয়েছি
তাদের প্রত্যেককেই সেই কবর
দেখানোর
চেষ্টা করেছি।”
আব্বার ছোট ভাই আলী আকরাম মো:
ওজায়ের তখন স্বাক্ষ্যে বললেন, নয়া
ভাই, আমাকেও আপনি নিয়ে গেছেন।
(উল্লেখ্য আব্বার সব ভাই-বোনেরা
তাকে নয়া ভাই বলেন। ফরিদপুরের
আঞ্চলিক ভাষায় চতুর্থ ভাইকে নয়া
ভাই
বলা হয়)
আব্বা আবার বললেন, “আমার তো ইচ্ছা
হয়, আব্বার পাশে গিয়ে আমি থাকি,
(একটু হেসে বলেন) তবে এখন সেটা
বললে
তো জেল প্রশাসন একটু বিপদে পড়েই
যাবে। যাক এই ব্যাপারে আমি তো
আমার বড় ছেলেকে দায়িত্ব
দিয়েছি,
সেই সবার সাথে আলাপ করে ঠিক
করে
নেবে। সেটাই ঠিক বলে মনে করি।”
এর মাঝেই মেঝ ছেলে তাহকীককে
ডিউটিরত ডেপুটি জেলার বার বার
সময়
নিয়ে ইংগিত করছিল। আমার মেঝ
ভাই
তাই আব্বাকে জানায় যে, আর ৫
মিনিট
সময় আছে। জেল প্রশাসন তাই বলছে।
আব্বা তখন তাদের দিকে তাকিয়ে
বললেন, আপনারা আমাকে চিনেন।
জানেন। দেখেছেনও। আজকে আমি
আপনাদের কাছ থেকে আরেকটু
মানবিক
আচরণ আশা করি। আমি আমার জরুরী
কথা হয়ে গেলে ১ মিনিটও বেশি
নিবো
না।
তখন উপস্থিত সুবেদার জানান, স্যার
আমরা স্বাক্ষ্য দিচ্ছি আপনি আমাদের
সহযোগিতা করেছেন সব সময়, আমরাও
আপনার সম্মান রাখার চেষ্টা
করেছি।
এরপর আব্বা আবার শুরু করলেন, “এখানে
আমার সন্তানেরা আছো। এখন আমি
আমার পরিবারের জন্য কিছু কথা
বলবো।
তোমরা নামাযের ব্যাপারে খুবই
সিরিয়াস থাকবা।
তোমরা সব সময় হালাল রুজির উপর
থাকবা। কষ্ট হলেও হালাল রুজির উপর
থাকবা। আমি ৫ বছর মন্ত্রী ছিলাম, ফুল
কেবিনেট মন্ত্রী ছিলাম। আল্লাহর
রহমতে, আল্লাহর রহমতে, আল্লাহর
রহমতে আমি সেখানে অত্যন্ত স্বচ্ছতার
সাথে, পরিশ্রম করে আমার দায়িত¦
পালন করেছি। কেউ আমার ব্যপারে
বলতে পারবে না যে আমি অন্যায়
করেছি। অনেক দুর্নীতির মধ্যে
থেকেও
আমার এই পেটে (নিজের শরীরের
দিকে
ইংগিত করে) এক টাকার হারামও
যায়নি।
তোমরাও হালাল পথে থাকবা।
তাতে
একটু কষ্ট হলেও আল্লাহ বরকত দিবেন।
আত্মীয়ের সাথে সম্পর্ক সিলাই
রেহীমি। আত্মীয় স্বজনের সাথে
সম্পর্ক
রক্ষা করে মিলে মিশে চলবে।
আত্মীয়দের মধ্যে অনেকেই নামায
পড়বে, অনেকেই কম। কেউ কেউ
হালাল
উপার্জনের ব্যপারে অত্যধিক কড়া
হবে
আবার কেউ কেউ একটু দুর্বল থাকবে।
শরীয়তে দুই রকম। আজিমাত এবং
রুকসাত।
আজিমাত হলো খুবই কড়া, কোনো
অবস্থাতেই সে হারামের কাছে
যাবে
না। আর রুকসাত হলো পরিবেশ ও
পরিস্থিতির জন্য একটু ঢিল দেবে। তাই
আত্মীয়দের মধ্যে কারও আয়ে সমস্যা
থাকবে, কারও নামাযে দুবর্লতা
থাকবে।
তাই আমাদের দায়িত্ব হলো
তাদেরকে
সঠিক পথে আনার জন্য সবার সাথে
সম্পর্ক ঠিক রেখে মিলে মিশে চলা।
আমি সব সময় এভাবে চলেছি এবং
তাতে
ভাল ফল পেয়েছি। হাদীসে আছে,
আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক ছিন্নকারী
ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে
পারবে
না।
প্রতিবেশীর হক আদায় করবে। আমার
ঢাকার বাসা, ফরিদপুরের বাড়ির
প্রতিবেশীদের সাথে ভাল ব্যবহার
করবে।
আমার উত্তরার বাসার ব্যাপারে তো
আমি আগেই লিখে দিয়েছি।
মৌলিক
কোনো চেঞ্জ দরকার নেই। শুধু
প্রয়োজন
অনুযায়ী মূল ভিত্তি ঠিক রেখে
তোমরা
সুবিধা মতো এদিক ওদিক চেঞ্জ করে
নিও। ফরিদপুরের বাড়ি নিয়েও
যেভাবে
বলে দিয়েছি, সেভাবেই তোমরা
কাজ
করবে। আমাদের ভাই-বোনদের মধ্যে
সম্পত্তি নিয়ে কখনো কোনো
ঝামেলা
হয় নাই। তোমরাও মিলেমিশে
থাকবে।
এসব নিয়ে কোনো সমস্যা করবানা।
শান্তির জন্য কাউকে যদি এক হাত
ছাড়তেও হয়, তাতেও কোনো
ঝামেলা
করবে না, মেনে নিবে।
বেশি বেশি করে রাসুল (সা)-এর
জীবনী
ও সাহাবীদের জীবনী পড়বে। আমি
জানি তোমরা পড়েছো, কিন্তু তাও
বার
বার পড়বে। বিশেষ করে ‘পয়গম্বর-এ-
মোহাম্মদী’, ‘মানবতার বন্ধু হযরত
মোহাম্মদ (সা:)’, ‘সীরাতে
সারওয়ারে
আলম’, ‘সীরাতুন্নবী’, ‘সীরাতে ইবনে
হিশাম’, ‘রাসুলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন’।
আর সাহাবীদের জীবনীর উপরও ভাল
বই
আছে। আগে পড়েছো জানি, তাও
তোমরা
পড়ে নিও।
আমি আমার সন্তানদের উপর সন্তুষ্ট।
তোমাদের ভুমিকার ব্যপারে সন্তুষ্ট।
দেখো আমি এখানে পেপার
পত্রিকা
নিয়মিত পাই না। তারপরও আমি যা
চাই,
যা ভাবি তোমরা তা করে ফেলো।
যেমন
আজকের সকালের প্রেস কনফারেন্স।
এটা অনেক ভাল হয়েছে। আমাকে
ছাড়াই
তোমরা যে পরামর্শ করে এতো সুন্দর
একটা কাজ করে ফেলেছো, তাতে
আমি
অনেক খুশী হয়েছি। আসলে হৃদয়ের
একটা
টান আছে। আমি এখান থেকে যা
ভাবি
তোমরা কিভাবে যেন তাই করে
ফেলো।
তোমরা এভাবেই বুদ্ধি করে মিলে
মিশে
পরামর্শ করে কাজ করবে।
আইনজীবীদেরকে আমার ধন্যবাদ ও
দোয়া দেবে। তারা অনেক পরিশ্রম
করেছেন। তাদের ভূমিকার ব্যপারে
আমি
সন্তুষ্ট। আইনজীবীরা যেভাবে
পরিশ্রম
করেছে, অবিশ্বাস্য। ওনারা যদি
টাকা
নিতো তাহলে ৫-১০ কোটি টাকার
কম
হতো না। কিন্তু তারা অলমোস্ট বিনা
পয়সায় সাহসিকতার সাথে এই আইনী
লড়াই চালিয়ে গেছেন।
আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ
জামায়াতে
ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের
মতো
এতো বড় নেয়ামত দুনিয়াতে আর
একটিও
নেই। আমার জানামতে এই সংগঠন দুটি
পৃথিবীর মধ্যে সেরা সংগঠন। এই
সংগঠনের ব্যপারে আমি সন্তুষ্ট। গত
কয়েক বছরে অনেক নেতাকর্মী শহীদ
হয়েছেন, হাজার হাজার নেতাকর্মী
আহত হয়েছেন, আমার মতো
জেলখানায়
আছে কয়েক হাজার মানুষ। বিশেষ
করে
ইসলামী ছাত্রশিবির বিগত ৫ বছরে
যে
ভূমিকা রেখেছে, যে সেক্রিফাইস
করেছে তা অতুলনীয়। আমার শাহাদাৎ
এই
দেশে ইসলামী আন্দোলনকে সহস্ত্রগুণ
বেগবান করবে এবং এর মাধ্যমে
জাতীয়
জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে
আসবে
ইনশাল্লাহ।”
তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যারা
স্বাক্ষী দিয়েছেন, তাদের মধ্যে
দু’জন
ছাড়া বাকি সবাই দরিদ্র। তারা মূলত
অভাবের তাড়নায় এবং বিপদে পড়ে
মিথ্যা স্বাক্ষ্য দিতে বাধ্য হয়েছেন।
আমি তাদের সবাইকে মাফ করে
দিলাম,
তোমরাও তাদের প্রতি কোনো
ক্ষোভ
রাখবা না।
তোমাদের আম্মাকে দেখে শুনে
রাখবে।
সে আমার চেয়ে ভাল মুসলমান, ভাল
মনের মানুষ। এই ব্যাপারে আমি
স্বাক্ষ্য
দিচ্ছি। তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে তার
সম্মানিত শ্বশুড়-শাশুড়িকে স্মরণ
করেন।”
আম্মা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি
বললেন, শ্বাশুড়ি তো মায়ের মতোই।
আপনি আমাকে যেভাবে স্নেহ
করেছেন,
তার কোনো তুলনা হয় না।
তারপর তিনি বললেন, “আমার
জানামতে
শহীদের মৃত্যুতে কষ্ট হয় না। তোমরা
দোয়া করবে যাতে আমার মৃত্যু
আসানের
সাথে হয়। আমাকে যেন আল্লাহর
ফেরেশতারা পাহাড়া দিয়ে নিয়ে
যান।
এরপর তিনি উপস্থিত সবাইকে নিয়ে
দোয়া করেন। মুনাজাতের মধ্যে
তিনি
জালিমের ধ্বংস চেয়েছেন।
পরিবারের
জন্য আল্লাহকে অভিভাবক
বানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, আল্লাহ যেন তার
রহমতের চাদর দিয়ে তার পরিবারকে
ঢেকে রাখেন।”
ছোট মেয়ে আদরের তামরীনাকে
তিনি
মা বলে সম্বোধন করেন। তাকে
উদ্দেশ্য
করে তিনি বলেন, “ওখানে আমার মা,
বাবা, ছোট ভাই শোয়ায়েব এবং বড়
মেয়ে মুমতাহিনা আছে। শোয়ায়েব
অত্যন্ত ভাল মনের মানুষ ছিল এবং
আব্বার খুব কাছাকাছি ছিল।”
আমার বোন তখন বলে, আব্বা একটু পরেই
মুমতাহিনা (বড় মেয়ে, যে আড়াই বছর
বয়সে অসুস্থতায় মারা যায়) আপনাকে
রিসিভ করতে আসবে। মেঝ ভাই
বললেন
ফুল হাতে আসবে ইনশাল্লাহ। আর তখন
আম্মা বললেন, তুমি আমার পক্ষ থেকে
ওকে আদর করে দিও।
আমার বড় ভাই তাজদীদ তখন বললেন,
আপনি তো শহীদ হতে যাচ্ছেন।
জান্নাতে শহীদের প্রবেশের সময়
অনেকের জন্য আপনার সুপারিশ করার
সুযোগ থাকবে। আপনি সেই তালিকায়
আমাদের রাখবেন।
তারপর পুত্রবধূদের উদ্দেশ্য করে আব্বা
বললেন, “আমার বউমাদের আমি
সেভাবে
আদর করতে পারিনি। বউমা’রাতো
মাইয়া
(মেয়ে)। আমাদের বাংলা ভাষায়
তো
সেভাবেই বলে, বউ-মা। এই সময়, তিনি
সকল পুত্রবধূর বাবা-মা’র খোঁজ খবর
নেন
এবং তাদের প্রত্যেককে তার পক্ষ
থেকে
সালাম জানান। পুত্রবধূদের উদ্দেশ্যে
তিনি বলেন, “আমি তোমাদের প্রতি
সেভাবে দায়িত্ব পালন করতে
পারিনি।
বিশেষ করে ছোট বউমা জেরিনকে
আমি
খুব একটা সময় দিতে পারিনি। কেননা
ওর
বিয়ের কয়েকদিন পরেই তো আমি
এখানে
চলে আসি। এই সময় তিনি সকল পুত্রবধূকে
উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি তোমাদের
প্রতি ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে
পারিনি। তোমরা আমাকে ক্ষমা
করে
দিও।
ঠিক একইভাবে আমার মেয়ে জামাই
ফুয়াদ আর মেয়েকেও আমি সেভাবে
সময়
দিতে পারিনি। ওদেরকে নিয়ে
একবেলাও একত্রে খাবার খাওয়ারও
সুযোগ হয়নি। এই সময় তিনি মেয়ে
জামাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বাবা
তোমার ভূমিকায় ও দায়িত্ব পালনে
আমি সন্তুষ্ট। তোমার মা বাবাকে
আমার
সালাম পৌঁছে দেবে।” প্রতিউত্তরে
মেয়ে জামাই বলেন, আব্বু আপনি
আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা
আমি
যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা
করবো।
জেল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার প্রতি
তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাদের
উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনাদের সাথে
আমার কোনো ভুল আচরণ হলে আপনারা
আমায় মাফ করে দেবেন।”
নারায়ণগঞ্জ
ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার
সেবকদের তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ
করেন এবং তার নিজের পিসির
টাকাগুলো সেবকদের প্রয়োজন
মাফিক
বন্টন করে দেন এবং সেই ব্যাপারে
জেল
কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
নিজামী সাহেব ও সাইদী সাহেবসহ
আরও যারা আছেন সবাইকে তিনি
সালাম পৌঁছে দিতে বলেন।
দেশবাসীকে তিনি সালাম দেন
এবং
সকলের কাছে দোয়া চান। সর্বশেষে
তিনি তার শাহাদাত কবুলিয়াতের
জন্য
দোয়া করেন। এরপর তিনি সকলের
সাথে
একে একে হাত মিলিয়ে বিদায়
জানান।
তারপর আমরা তার রুম থেকে
বেরিয়ে
আসলাম। সেই যে আসার পথে ঘুরে
তাকে
দেখে আসলাম, সেটাই আমার বাবার
শেষ জীবন্তকালীন ছবি। যা কোনদিন
ভুলতে পারবোনা। ভুলে যাবো না
ইনশাল্লাহ। ভুলে যাওয়া সম্ভবও নয়। এই
অসম্ভব স্বচ্ছ মনের মানুষটির জন্য
আপনারা দোয়া করবেন। প্রাণভরে
দোয়া
করবেন।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৭

বেরসিক কথক বলেছেন: মি, এহসান
আপনি একই পোস্ট দুবার করেছেন। মডারেশন প্যানেল এটা দেখলে আপনার আইডি ব্যান করবে। তাই একটা পোস্ট ডিলিট করুন

২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৯

জনতার রায় বলেছেন: পেস্ট করার আগে পোস্ট এডিট করে পাঠযোগ্য করা উচিত ছিল।

৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৬

গ্রিন জোন বলেছেন: যা জানতে ইচ্ছে হচ্ছিল তা জানা গেলো। অনেক তথ্য পেলাম। মনটা শান্তি পেলো।

৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৪

হোসেন মালিক বলেছেন: বেচারা মুজাহিদ
রাজনীতির কবলে পরে কি অবস্থা

৫| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৩

বাংলার ফেসবুক বলেছেন: সেভাবেই বলে, বউ-মা। এই সময়, তিনি
সকল পুত্রবধূর বাবা-মা’র খোঁজ খবর
নেন

৬| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৫

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: আমার বোন তখন বলে, আব্বা একটু পরেই
মুমতাহিনা (বড় মেয়ে, যে আড়াই বছর
বয়সে অসুস্থতায় মারা যায়) আপনাকে
রিসিভ করতে আসবে। মেঝ ভাই
বললেন
ফুল হাতে আসবে ইনশাল্লাহ। আর তখন
আম্মা বললেন, তুমি আমার পক্ষ থেকে
ওকে আদর করে দিও।

আহহহ.............অশ্রু ধরে রাখা যায়না।
এটিই জীবনের পরম সফলতা................শহিদী মউত।
আল্লাহ কবুল করুন।

৭| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২২

গেম চেঞ্জার বলেছেন: মরা মানুষ নিয়া কোনু কথা নাই থিওরী বিঃশ্বাস করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.