নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I have a dream...

নিরন্তর সত্যের উপর পথ চলি, দুমড়ে মুচড়ে দেই সব বাধা!

আব্দুল হালিম মিয়া

আব্দুল হালিম মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংলাপের সফলতা, বিফলতা কতখানি?

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৪৭

ফেসবুক খুললেই বুঝা যায়, হাজার বাঙালীর হাজার রকম মত! কারনটা বোধগম্য, সবার বুঝ, অভিজ্ঞতা, শিক্ষা একরকম নয়। সব বিষয়েই আমাদের মতামত দিতে হয়, আমরা জানি আর না জানি, বুঝি আর না বুঝি।

সে কারনেই কয়েকটা বেসিক বিষয়ে আমাদের একমত হতে হবে। একেবারেই বেসিক বিষয়ে। সংলাপের যদি প্রাথমিক সফলতা আসে, প্রয়োজনে নির্বাচন দু এক মাস পিছিয়ে দিয়ে হলেও সেই বেসিক বিষয়গুলো সংলাপে আসা দরকার এবং সেখানে জাতীয় ঐকমত্য হওয়া দরকার।

গণজাগরণ মন্চ যখন তৈরী হয়, তখন অনেকে বলেছিলেন, দেশে সরকার এবং বিরোধী উভয় পক্ষকেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির হতে হবে। আমার ধারনা নানা কায়দা কৌশলে হলেও এখন সেই অবস্হার প্রাথমিক বলয় তৈরী হওয়ার পথে। নির্ভর করছে সরকারী দলের উপর। আজকের সংলাপে বসার রাজী হবার আগ পর্যন্ত সরকারী দলের নানা শ্রেনীর নেতা নেত্রীদের বক্তব্য ছিল সেটার অন্তরায়।

তবে গতকালও যারা বলেছেন ওদের সাথে কোন সংলাপ নয়, তাদের এখন থেকে কথাবার্তা আরো সাবধানে বলা উচিত, না হলে জাতির কাছে হাস্যকর মানুষে পরিনত হবেন।

যাইহোক যেটা বলতে এই লেখা। বেসিক বিষয়গুলো নিয়ে সংলাপে একমত হতে হবে। যার প্রাথমিক ভিত্তি কিছুটা তৈরী হয়েছে। যেমন বিএনপির সিংহভাগ নেতা কর্মীর উপস্হিতিতে জয়বাংলা, জয়বঙ্গবন্ধু বলা এবং সেটাকে হজম করা, এক মন্চে মুজিব কোট পরে বক্তব্য দেয়া ইত্যাদি। অর্থাৎ যেভাবেই হোক, যে কারনেই হোক একটা সহনশীলতার পরিবেশ বিরোধী পক্ষে তৈরীর পথে। এখন এটাকে কি আঁতুর ঘরেই মেরে ফেলা হবে নাকি কন্টিনিউ করতে দিয়ে নুতন রাজনৈতিক ধারার পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে সেটা নির্ভর করছে সরকারী দলের উপর।

এ প্রসংগে অনেকের শুনতে ভাল না লাগলেও বলতেই হবে সেই এরশাদের আমলের কথা। এরশাদ সাহেব যখন প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরন করেন, উপজেলা ব্যবস্হার প্রবর্তন করেন তখন তৎকালীন বিরোধী দলগুলো সেটাকে মেনে না নিয়ে হরতাল অবরোধ করেন, যার ফলে সেলিম দেলোয়ার সহ অনেকেই অকালে প্রাণ হারান। তাদের দাবী ছিল, সবার আগে সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। পরের ইতিহাস সবার জানা। এরশাদের পতনও হলো, সংসদ নির্বাচনও হলো, দীর্ঘ ২৮ বছর পরেও সেই একই দাবীতে বিরোধী দলগুলো আজও রাজপথে। আজ একথা পরিস্কার যে বাক ব্যক্তি সংবাদের স্বাধীনতা, গনতন্ত্র, মৌলিক অধিকার, দুর্নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার যে দাবীগুলো আজকের বিরোধী দলগুলো করছেন তাতে পরিস্কারভাবে বলা যায় এরশাদের সময় যে প্রাণগুলো আত্মাহুতি দিয়েছেন তা ব্যর্থ হয়েছে, শহীদদের রক্ত বৃথা যায় না বলে দাবী করা হলেও তা বৃথাই গিয়েছে। যাদের ক্ষতি হবার তারা ক্ষতিগ্রস্হ হয়েছেন, মাঝখান থেকে কিছু লোকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। তাই জোর দিয়েই বলছি সেদিন যদি কথিত সামরিক স্বৈরাচারের প্রতিষ্ঠিত হলেও যেহেতু সেই প্রশাসন বিকেন্দ্রিকরন ছিল গণ মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ণ, সেটাকে যদি মেনে নিয়ে বরং সেটার খারাপ দিকগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষন করে যুগপোযোগী উপজেলা প্রশাসন তৈরী করতে, আরো গণমুখী ও জবাবদিহিমুলক স্হানীয় সরকার তৈরী করতে সরকারকে সহযোগীতা করা হতো তাহলে আজকে অন্তত: ঠুটো জগন্নাথ টাইপের উপজেলা প্রশাসন দেখতে হতো না। সেই উপজেলাকে যখন মেনে নেয়াই হলো, তাহলে সেটা যদি আরো গনমুখী হতো, জনগনের অংশিদারিত্বমুলক হতো তাহলে শুধুমাত্র জনগনেরই উপকার হতো।

কাজেই বলছি, এখন এই যে ডক্টর কামাল সহ স্বাধীনতার যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী কিছু লোকের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট হয়েছে সেটাকে মেনে নিয়ে এবং দরকার হলে কিছুটা নার্সারী করে তাদেরকে এগিয়ে আসতে দিলে ভালই হবে বলে আমার ধারনা।

জানি আসন্ন সংলাপে যে বিষয়টাকে সবাই প্রাধান্য দিবেন তাহলো, নিরপেক্ষ অংশগ্রহনমুলক একটা নির্বাচন এবং রাজবন্দীদের মুক্তি। কি নিয়ে আলোচনা হবে, কতটুকু আদায় হবে তা নিশ্চয়ই আমরা দেখতে পাব। তবে যে বেসিক বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হওয়া দরকার তা হলো, আমরা আসলে কি চাই, কোন ধরনের সমাজ ব্যবস্হা চাই! যেমন ধরা যাক আমরা গনতান্ত্রিক সমাজ চাই, যেখানে সকলের স্বাধীনভাবে মতামত দেবার ক্ষমতা থাকবে, কথা বলার অধিকার থাকবে, চলাফেরার স্বাধীনতা থাকবে। সেই কথা বলা, চলাফেরার অধিকার সকল নাগরিকের থাকবে। সকল নাগরিক বলতে হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান মুসলিম এবং নারী পুরুষ সকলের। দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা।

এখন যদি আমাদের আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয় যে একজন হিন্দু কথা বলতে পারবে কিন্তু মুসলিম পারবে না। কিংবা মুসলিম পারবে কিন্তু খৃষ্টান পারবে না, অথবা একজন পুরুষ দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা কোন রকম প্রশ্ন ব্যতিরেকে চলাফেরা করতে পারবে কিন্তু নারী পারবে না। তাহলেতো সেটা গনতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হলো না। নিরাপত্তার যদি অভাব কোন কারনে কারো থেকে থাকে সেটাকে আলাদাভাবে এ্যাড্রেস করতে হবে, অপরাধ সংঘটিত হলে অপরাধীকে জেলখানায় প্রেরণ করতে হবে। কিন্তু অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কিনা সেটা না দেখে যদি বলা হয়, একজন হিন্দু এটা বলতে পারেন না, কিংবা একজন নারী এত রাতে চলতে পারেন না তাহলে সেটা গনতান্ত্রিক সমাজের সাথে যায় না। এখন কেউ যদি বলেন, কিংবা আগামী সংলাপে যদি এরকম মত প্রতিষ্ঠিত হয় যে আমরা গনতান্ত্রিক সমাজ চাই না, আমরা শরীয়া ভিত্তিক সমাজ চাই কিংবা শিবসেনাদের সমাজ চাই সেটাও তাহলে পরিস্কার উল্লেখ থাকতে হবে। আধেক গনতন্ত্র, আধেক শরীয়া, কিংবা আধেক গনতান্ত্রিক আধেক স্বৈরতান্ত্রিকতো হতে পারে না। দেশের জনগনের মতকে প্রাধান্য দিয়ে বেসিক জায়গাগুলো আমাদের আরো ক্লিয়ার করা দরকার। যারা সমাজতন্ত্র কায়েম করতে চান, তারা পরিস্কার করে সমাজতন্ত্র কায়েমের জন্য নেমে পড়ুন আমার কোন সমস্যা নাই। কিন্তু গনতন্ত্রের সুবিধা নিয়ে সমাজতন্ত্রের বুলি আওরিয়ে জনগনকে বিভ্রান্ত করে ফ্যাসিবাদ কিংবা পারিবারিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার আর কোন সুযোগ থাকা উচিত নয়। পরিবারের যোগ্যরা অবশ্যই রাজনীতি করবেন, নিশ্চয়ই করবেন, অন্য দশজন সাধারন মানুষের মতই করবেন তাতে কারো নিশ্চয়ই আপত্তি থাকবে না।

মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা যদি আমরা মেনে নিই, তাহলে একজন সাধুর মৌলিক অধিকার, ডাকাতের মৌলিক অধিকার, হিন্দুর মৌলিক অধিকার, মুসলিমের মৌলিক অধিকার, নারীর মৌলিক অধিকার, পুরুষের মৌলিক অধিকার, একজন প্রগতিশীলের মৌলিক অধিকার, একজন প্রতিক্রিয়াশীলের মৌলিক অধিকার, একজন আস্তিকের মৌলিক অধিকার, একজন নাস্তিকের মৌলিক অধিকার, এমনকি একজন নেশাখোরের মৌলিক অধিকারকেও একইভাবে সমুন্নত রাখার বুঝ দেশের কতজনের আছে আমার কাছে এখনো পরিস্কার নয়।

আমাদের সমাজে একই অপরাধ কলিমুদ্দিন করলে শাস্তি চাই আবার ছলিমুদ্দিন করলে মুক্তি চাই এটা গনতান্ত্রিক সমাজ কায়েমের পরিপন্হি চাওয়া। তবে এই অবস্হা থেকে মুক্তি পেতে হলে বিচার বিভাগের উপর জনগনের শতভাগ আস্হার পরিবেশও তৈরী করতে হবে এবং সেই দায়িত্ব সংলাপকারী সকল পক্ষের।

দেখা যাক আগামী সংলাপ সফল হয় নাকি মরহুম আব্দুল জলিল আর মরহুম আব্দুল মান্নান ভুঁইয়ার সংলাপের পরিণতি হয়। সময়ের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: সংলাপের ফলাফল শূন্য।
যত যাই হোক- তাল গাছ আমার টাইপ সংলাপ হবে।

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:০৯

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: বঙ্গবন্ধু জাতির নেতা, জাতির জনক; জয়বাংলা জাতীয় শ্লোগান।

দেখা যাক, ঐক্যফ্রন্ট কতোটুকো এগুতে পারে। আওয়ামী-বিম্পির নোংরা রাজনীতি দেখতে দেখতে ক্লান্ত।

৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:২৪

শাহিন-৯৯ বলেছেন:


মান্নান-জলিলের সংলাপের চেয়ে কিছুটা ভাল হবে বলে আশা করছি।

৪| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:৫৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এখনও সময় হয়নি মন্তব্য করার। কারণ, সংলাপ হবে শেখ হাসিনার সাথে...

৫| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:১৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: ঐক্যফ্রন্ট নামটা হয়তো নতুন, কিন্তু এর পেছনের মানুষগুলো নতুন নয়। যতসব ব্যর্থ কিন্তু সুবিধাকামী/সুবিধাভোগী লোকের সমাবেশ ঘটেছে সেখানে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ, চোখে ঝাপসা দেখা এসব লোক দিয়ে কতটা কি করা যাবে সে ব্যাপারে সবারই সন্দেহ রয়েছে, কিন্তু তবুও আশাহত মানুষ আশায় বুক বেঁধে আছে নতুন একটা কিছু দেখার জন্য, চলমান পঙ্কিল রাজনীতি থেকে শ্রেয়তর কিছু দেখার জন্য। সাধারণ জনগণ বেশী কিছু চায় না। তারা সংসদ ভবনে যেতে চায় না, তারা কোন পদ পদবী চায় না, তারা হাতে আলাদীনের চিরাগ পেতে চায় না। তারা শুধু চায় দেশে একটুখানি শান্তি এবং সহনশীলতা, পথে ঘাটে চলাচলে কর্তৃপক্ষীয় নিরাপত্তা, স্বাধীনভাবে কথা বলার নিরাপত্তা, সেটা সরকারের সমালোচনা হলেও, সরকারের আচরণে ইনসাফ এবং ইনসাফের খেলাপ হলে আদালতে তার প্রতিকার পাবার সুলভ সুব্যবস্থা। একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে এসব চাওয়া তার মৌ্লিক অধিকারের মধ্যে পড়ে, যা আমাদের শাসনতন্ত্র দ্বারা স্বীকৃত।
তবে সর্বাগ্রে, একটি নিরপেক্ষ, নিষ্কলুষ বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সবাইকে একমত হতে হবে, যা হবে প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন, যেকোন রকমের সংসদীয় কিংবা প্রশাসনিক খবরদারির ঊর্ধ্বে।
আপনার আলোচনাটি ভাল লেগেছে। + +
তবে শেষের দিকে এসে আর সবার মৌলিক অধিকারের সাথে একজন ডাকাতের মৌলিক অধিকার বলতে আপনি কী বুঝিয়েছেন?

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:২৮

আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে, ভাল বলেছেন। একজন মানুষের মৌলিক অধিকার যেগুলোকে বুঝায় সেগুলোকেই আমি মিন করেছি। অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে ও শাস্তি অথবা খালাস হবে। ডাকাত হলেও তাকে আপনি বিনা বিচারে মেরে ফেলতে পারেন না, গুম করে দিতে পারেন না, না খাইয়ে মেরে ফেলতে পারেন না, আইনের বাইরে রিমান্ডে নিয়ে যা খুশী করতে পারেন না। তার যা অপরাধ হয়ে থাকবে সেই অনুযায়ী প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে এবং শাস্তি ভোগ করবে।

৬| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:২৯

পল্লব কুমার বলেছেন: সংলাপ সফল হবার কোনো আশা দেখি না। বিগত দিনগুলোতে কোনোদিন তা হয় নাই। আর সফল হইলেও তাতে সাধারণ পাবলিকের লাভ কতটুকু হবে তা বলা মুস্কিল।
সফল হোক বা না হোক, আগামী কিছুদিন এই ইস্যু আমজনতাকে বিনোদনের খোরাক যোগাবে এতে সন্দেহ নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.