নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন গাধামানব

মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন

ডাল দিয়ে ভাত খাই, রাস্তা দিয়ে হাঁটি, মানুষ আমি ভেজাল হলে'ও আমার লেখাগুলো খাঁটি ।

মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

চতুর্মুখী সংকটে বাংলার জনজীবন

০৬ ই জুন, ২০১৯ রাত ৩:৪৯


সংকট-১ঃ

সংক্রামক ব্যাধি কমার বিশেষ লক্ষণ নেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবাণুর বৃদ্ধি সীমাহীন গতিতে চলছে, মানুষকে রক্ষার আয়োজন সেই তুলনায় নগণ্য। কলেরার মতো রোগ অধিকাংশ সভ্য দেশে জাদুঘরে ঠাই পেয়েছে, বাংলাদেশে সেই রোগ বছরে একবার হলেও সবার বাড়িতে হানা দেয়। চারপাশে পানি অথচ সুপেয় পানি নাই। এ তো শুধু পানিবাহিত রোগের কথা, অজস্র সংক্রামক ব্যাধিতে দেশের মানুষ ধুঁকছে। প্রতিষেধক যে এন্টিবায়োটিক- সেটারও কার্যকারিতা বাংলাদেশে কমে আসছে। জীবাণুর শক্তি বাড়ছে, জীবন হয়ে উঠছে দুর্বল থেকে দুর্বলতর

সংকট-২ঃ

খাবারে ভেজাল থেকে শুরু করে নিঃশ্বাসের দূষিত বাতাস, সেই সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর নিম্নমানের জীবন। বাড়ছে ক্যান্সারের মতো অজস্র অসংক্রামক ব্যাধি। ঘরে বাইরে অশান্তি, অসুস্থ প্রতিযোগিতা, নেই আনন্দে বাঁচার আয়োজন। ফলে বাড়ছে মানসিক রোগের প্রকোপ। এইসব রোগ একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় না বটে, কিন্তু একজনের রোগ হলে পুরো পরিবারকে ভুগতে হয়। অধিকাংশ গরীব দেশের মতো বাংলাদেশে এই সংক্রামক ব্যাধির দায় দিন দিন বাড়ছে।

সংকট-৩ঃ

সুস্থ থাকার যেসব নিয়ামক প্রয়োজন- সেগুলো বাংলার সামাজিক জীবনে সবার কাছে সমানভাবে নেই। ধনী-গরীব, শহুরে-গ্রাম্য, নারী-পুরুষ এরকম অজস্র বিভাজনে সমাজ দ্বিধাবিভক্ত। রোগেরা ভেদাভেগ করে না, করে মানুষ। ফলে একই রোগ নিয়ে কেউ চিকিৎসা পায়, কেউ পায়না। একই শহরে কেউ পাঁচ-তারকা হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসা পায়, আবার কেউ রোগ গায়ে পুষে ভিক্ষে করতে বাধ্য হয়। একই পরিবারে কর্তা নিয়মিত ওষুধ খান, গৃহপালিত পশুর মতো অবলা নারী চরিত্রটি বুকে শ্বাসকষ্ট নিয়েও চুলায় আগুন জ্বালান। এইসব অসাম্যের আগুনে ধিকিধিকি জ্বলতে থাকে বাংলার কোটি মানুষের জীবন। রোগ আর স্বাস্থ্য- দুয়ের মাঝে ব্যবধান বাড়িয়ে দেয় এই তৃতীয় সংকট- অসাম্য।

সংকট-৪ঃ

উপরের তিন সংকট বুঝতে না পারা কিংবা বুঝেও কিছু না করা- এই হচ্ছে চতুর্থ সংকট। আমজনতা বুঝতে পারেন না, ফলে তারা সয়ে নেন অমানবিক জীবন। যারা "জানেন এবং বোঝেন"- তারা হয় শিক্ষিত, নয়তো ক্ষমতাবান। এই শিক্ষিতশ্রেণী কেবল নিজের ভালো থাকা নিয়ে সচেষ্ট, ফলে তাদের পক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কাজ করার ইচ্ছে তেমন দেখা যায় না। কেউ দেখালেও তাকে দ্রুত "সাইজ" করা হয়। বাকিরা এমনিতেই সাইজে থাকে, পা চেটে আর বাড়ি-গাড়ি করে এরা খুশি থাকে। আরেক শ্রেণী হচ্ছে ক্ষমতাবান, দেশের পঁচানব্বইভাগ লোক মরে গেলেও তাদের কোন সমস্যা নেই, কারন তাদের পরিবারে উন্নত আবাসন-শিক্ষা-চিকিৎসা সবই বিদেশে হয়। মজার ব্যাপার- সেটার খরচ আসবে সেই মরে যাওয়া পঁচানব্বইভাগের রক্ত বিক্রি করে। একাত্তরের রক্ত বিক্রি করে স্বাধীন দেশ পাওয়া গেছে, এখন আমজনতার রক্ত বিক্রি করে সেই ক্ষমতাবানেরা পেয়ে গেছে ভালো থাকার অবাধ সুযোগ। আজকের বাংলাদেশে এটাই কাঠামো, ইংরেজিতে গালভরা শব্দ "System"- যা আগের তিন সংকটকে বাড়তে দেয় প্রতিনিয়ত।

এই চতুর্মুখী সংকটে আমাদের দেশ ও দেশের মানুষ মরেছে এবং মরছে।
মৃত্যুর এই মিছিল দিনে দিনে আরও বাড়বে, যদি আমরা না জাগি।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জুন, ২০১৯ ভোর ৪:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:

আপনি বলেছেন, যদি আমরা না জাগি"।

-আমি তো বেশীর ভাগ সময় জেগেই থাকি, রাতে ঘুম কম হয়

২| ০৬ ই জুন, ২০১৯ ভোর ৬:৪৬

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: সবই নেতিবাচক, ইতিবাচক কিছুই কি নেই!

৩| ০৬ ই জুন, ২০১৯ সকাল ১১:০২

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের আশাবাদী হতে হবে।

৪| ০৬ ই জুন, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৫

মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: এই শিক্ষিতশ্রেণী কেবল নিজের ভালো থাকা নিয়ে সচেষ্ট, ফলে তাদের পক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কাজ করার ইচ্ছে তেমন দেখা যায় না। লাইনটা ভালো লেগেছে। সমস্যা সব জায়গাতেই কম বেশী থাকে,তবে আমরা যদি চেষ্টা করি তাহলে সবি সম্ভব।

৫| ০৬ ই জুন, ২০১৯ দুপুর ২:৪১

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ইতিবাচক কিছু আছে।
মাতৃমৃত্যু ও শিশুর মৃত্যুর হার অনেক কমেছে। গড় আয়ু ভারত-পাকিদের চেয়ে বেশী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.