নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন গাধামানব

মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন

ডাল দিয়ে ভাত খাই, রাস্তা দিয়ে হাঁটি, মানুষ আমি ভেজাল হলে'ও আমার লেখাগুলো খাঁটি ।

মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একনজরে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ও কিছু করণীয়

০১ লা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:০১

১.
সমস্যাঃ প্রচুর রোগী আসছেন হাসপাতালগুলোতে। এমনিতেই সরকারী হাসপাতালে বেড, আনুসঙ্গিক রসদ, ও জনবলের বিরাট সংকট আছে। সেখানে ডেঙ্গি রোগীর স্থান-সংকুলান করা কঠিন।

সম্ভাব্য সমাধানঃ সকল রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার দরকার হয় না, বিশেষত গুরুতর লক্ষণসমূহ (রক্তক্ষরণ, বারবার বমি, অজ্ঞান বা খিঁচুনি হওয়া ইত্যাদি) দেখা না দিলে হাসপাতালে গিয়ে লাভ নেই। বরং ক্ষতি আছে। আমাদের হাসপাতালগুলো রোগের আখড়া, নানা জীবাণুর বসতবাড়ি বলা যায়। সুস্থ লোক কিছুদিন থাকলে অসুস্থ হয়ে যাবে অধিকাংশ সরকারী হাসপাতালেই এমন পরিস্থিতি। কাজেই নিকটস্থ এমবিবিএস চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে বাড়িতে যথাযথ চিকিৎসায় থাকলে রোগী ভালো থাকবে। দরকার হলে হাসপাতালে যাবেন, অন্যথায় দৌড়াদৌড়ি করে নিজের, রোগীর, ও অন্যদের কষ্ট দেবেন না।

২.
সমস্যাঃ সরকার ডেঙ্গি রোগ নির্ণয়ের খরচ বেঁধে দিয়েছে। ফলে বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো ওর বেশি টাকা নিতে পারছে না। তাতে অবশ্য লম্পটদের লাম্পট্য থেমে থাকছে না। পয়সা মারা হচ্ছে অন্য কায়দায়। প্রথমত- টেস্ট না করেই রিপোর্ট দেয়া (তাতে অল্প টাকা পাওয়া গেলেও পুরোটাই লাভ)। দ্বিতীয়ত, প্যাথলজিস্ট/মাইক্রোবায়োলজিস্টদের দিয়ে রিপোর্ট না করিয়ে টেকনিশিয়ানদের দিয়ে করানো (এতেও পয়সা সাশ্রয় হয়)। এটা অবশ্য আমাদের বেসরকারি খাতের মহাজনেরা নিয়মিতই করেন, প্রকাশ্যে কেউ এ নিয়ে কথা বলে না। তৃতীয়ত, (এবং আসল জায়গা) রোগীকে দীর্ঘদিন হাসপাতালে রেখে আজকে স্যালাইন কালকে ব্লাড দিতে থাকা। নির্দিষ্ট লক্ষণ না থাকলে স্যালাইন/ব্লাড/প্লেইটলেট কিছুই দিতে হবে না। মুখে তরল খাবার ও কয়েকদিন বিশ্রামই অধিকাংশ রোগীকে সুস্থ করে তুলবে- এই সত্য জেনেও দেশের বেসরকারী হাসপাতাল মালিকেরা মহামারীকে জিম্মি করে ফায়দা নিচ্ছে।

সম্ভাব্য সমাধানঃ বেসরকারী হাসপাতালে ডেঙ্গি চিকিৎসার সকল খরচ (ভর্তি, থাকা, ও অন্যান্য ব্যায়) সরকারীভাবে ঠিক করে দেয়া, যাতে রোগীদের উটকো পয়সা না গুণতে হয়। সেইসঙ্গে ডেঙ্গি টেস্টের কোয়ালিটি (সঠিকভাবে ও সঠিক বিশেষজ্ঞের তত্তাবধানে) নিশ্চিত করা। এই দুটো না করলে মানুষের ভোগান্তি বাড়বে। এই প্রসঙ্গে যারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কাজ করেন তাদের দ্রুত উদ্যোগী ভূমিকা রাখতে হবে।

৩.
সমস্যাঃ দেশে মশক নিধন ও প্রতিরোধসামগ্রীর দাম বেড়ে গেছে। যুদ্ধ কিংবা দুর্ভিক্ষের সময় ভারতবর্ষের দুর্বৃত্ত ব্যবসায়ীরা অমানবিকভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিতেন, কাজেই আজকের মূল্যবৃদ্ধি নতুন কিছু নয়। এই ব্যবসায়ীরা আমাদের সমাজেরই অংশ। একটু আগে যেই ক্লিনিক ব্যবসায়ীদের আলোচনা করলাম- তারাও। কাজেই জনগণের বিপদের ফায়দা এরা তুলবেই। ২০ টাকার ক্রিমের দাম নিবে ২০০ টাকা, ৫০ টাকার ওষুধ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ৫০০ টাকায় বেচবে।

সমাধানঃ গত ঈদে আড়ংয়ে একজন ম্যাজিস্ট্রেট বেশি দামে জিনিস বিক্রি করায় জরিমানা করেছিলেন, তাতে মিডিয়ায় বেশ হইচই পড়ে গিয়েছিল। যাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আছে, তারা নিজ নিজ জায়গা থেকে ঝটিকা অভিযান চালাতে পারেন। এতে জনগণকে পাশে পাবেন, দেশের বড়ো উপকার হবে।

৪.
সমস্যাঃ আমাদের ডোবা-নালা ও বাড়ির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা এত সুন্দর যে রাতারাতি বৈপ্লবিক পরিবর্তন করা কঠিন। সেগুলোতে মশা মারতে গেলে যে উপকরণ, প্রশিক্ষণ, জনবল ইত্যাদি দরকার, সিটি/পৌর কর্পোরেশনগুলোর তা নেই।

সমাধানঃ আমাদের দেশে প্রচুর বেকার মানুষ আছে, আছে ছোট ছোট এলাকাভিত্তিক সংগঠন। এখন খুব সম্ভবত আমরা একটি আদর্শ সময় পার করছি "পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ" এবং "কমিউনিটি ভলান্টারিজম" চর্চা করার। বুদ্ধিটা সহজ- এলাকার/শহরের ব্যবসাদার প্রতিষ্ঠানগুলো সিটি/পৌর কর্পোরেশনগুলোকে মশা মারার যন্ত্র/উপকরণ দেবে। কর্পোরেশনগুলো ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেবে, দ্রুত প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের সহায়তায় মশক নিধন ও প্রতিরোধমূলক কর্মসূচী নেবে। বড়োজোর ১৫ দিনের কাজ, শেষে একটা করে সার্টিফিকেট/সম্মাননা দেয়া যেতে পারে। ওতে ছেলেপেলে ও তরুণেরা অনুপ্রাণিত হবে, অনেক কিছু শিখবে, দেশের কাজে হাত লাগাবার অভ্যেস গড়ে উঠবে।
-----------------
আরও অনেক সমস্যা আছে, সব লেখা সম্ভবও না, প্রয়োজনও নেই। দরকার সদিচ্ছা। তাহলে বিদ্যমান সমস্যা দূর হবে, নতুন সমস্যার জন্ম কমে আসবে। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মশা মরা কঠিন, কারন তাঁর হাত দুইটা, আর মশা অগণিত। ভালো কাজে কারো আদেশ দরকার নাই, কারন বঙ্গবন্ধু নিজেই বলে গেছেন-
" আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি... প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল... তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে"

এখন সময় মোকাবেলার।
ডেঙ্গি থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করবার।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:১৯

জাহিদ হাসান বলেছেন: ডেঙ্গু মশা নিধনের ঔষধ এখনো আনা হয়নি।
ডেঙ্গু মোকাবিলা করবেন কি দিয়ে?

২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৩৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



সব কাজ যখন শেখ হাসিনা একা করে থাকেন, মশাও উনি মারুক।

৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:০৩

মা.হাসান বলেছেন: খুব সুন্দর , গোছানো, যৌক্তিক কথায় লেখা পোস্ট। সমস্যা- করে কে!!
অনেক ধন্যবাদ।

৪| ০১ লা আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৫৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
প্রথমবার ডেঙ্গু হয়েছিল এমন কেউ এবার ২য় বার আক্রান্ত হলে সেটাই বিপদজনক। শুধু তাদেরই হাসপাতালে যাওয়া উচিত।
বাকিদের বা সামান্য জর হলেই হাসপাতালে যেয়ে ভিড় বাড়ানো ঠিক না।
তবে শিশু বয়েসিরা আক্রান্ত হলে হাসপাতালে যেতে পারে।
এব্যাপারটি মিডিয়াগুলো তুলে না ধরে অকারন আতংক ছড়াচ্ছে।

২০১৮ সালে ১০ হাজার ১৪৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত বা ডেঙ্গু সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।
এবার ১৪ হাজার ৯০০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত বা ডেঙ্গু সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
রক্তে ডেঙ্গু নেই বা ডেঙ্গু চিকিৎসা শেষে ভালহয়ে যে ১২ ২৬৬ জন হাসপাতাল ছেড়েছে, সে তথ্যটি সন্তর্পনে গোপন রেখেছে হলুদ মিডিয়াগুলো বলছে ১৫ হাজার হাসপাতালে।
অতচ বর্তমান ভর্তি কতজন? ১৪৯০০-১২২৬৬ = ২৬৩৬ জন।

৫| ০২ রা আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: সরকার স্বীকার করুক বা না করুক বর্তমানে বাংলাদেশ বিশেষ করে ঢাকার ডেঙ্গু পরিস্থিতি বেশ নাজুক। খোদ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গননা অনুসারে গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৭১২ জন হয়। বেসরকারী হিসাব বাদ দিলেও এই সংখ্যাটি যথেষ্ট আতংকের।

৬| ০২ রা আগস্ট, ২০১৯ সকাল ১১:৩১

আমি নই বলেছেন: হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
প্রথমবার ডেঙ্গু হয়েছিল এমন কেউ এবার ২য় বার আক্রান্ত হলে সেটাই বিপদজনক। শুধু তাদেরই হাসপাতালে যাওয়া উচিত।
বাকিদের বা সামান্য জর হলেই হাসপাতালে যেয়ে ভিড় বাড়ানো ঠিক না।
তবে শিশু বয়েসিরা আক্রান্ত হলে হাসপাতালে যেতে পারে।
এব্যাপারটি মিডিয়াগুলো তুলে না ধরে অকারন আতংক ছড়াচ্ছে।

২০১৮ সালে ১০ হাজার ১৪৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত বা ডেঙ্গু সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।
এবার ১৪ হাজার ৯০০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত বা ডেঙ্গু সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
রক্তে ডেঙ্গু নেই বা ডেঙ্গু চিকিৎসা শেষে ভালহয়ে যে ১২ ২৬৬ জন হাসপাতাল ছেড়েছে, সে তথ্যটি সন্তর্পনে গোপন রেখেছে হলুদ মিডিয়াগুলো বলছে ১৫ হাজার হাসপাতালে।
অতচ বর্তমান ভর্তি কতজন? ১৪৯০০-১২২৬৬ = ২৬৩৬ জন।

একটু কনফিউজড, বুঝলাম বাংলাদেশের সকল মিডিয়াই হলুদ এবং ধরে নিলাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গননাও ভুল, তাহলে হাসপাতালে গিয়ে বারান্দাতেও যায়গা মিলছেনা কেন? রাজধানির দুই চারটা হাসপাতালে গিয়েছিলেন নিজে? যদি আপনার কথাই সত্য হয়ে থাকে তাহলে মাত্র ২৬৩৬ জনকেও সরকার ঠিকমত সেবা দিতে পারছেনা কেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.