নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময় সীমাহীন

হুমায়রা হারুন

তিমির ঘন আঁধারে জ্বলিছে ধ্রুবতারা

হুমায়রা হারুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিঃসঙ্গ কোয়্যাসার

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৫৫


মহাকাশে উজ্জ্বলতম জ্যোতিষ্কের মাঝে ভাস্বররূপে যে ছায়াপথটি এখন প্রতিভাত হয়েছে তা আমাদের অবস্থান থেকে ১২.৪ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। জ্যোতিস্কমন্ডলীর ক্যাটালগে এটিকে W2246-0526 নামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রতিদিন জ্যোতিস্ক সমূহের চিত্র সম্বলিত তথ্যাদি Wide–field Infrared Survey Explorer (WISE) ক্যাটালগে সংযুক্ত হচ্ছে। এসকল উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা উপনীত হচ্ছেন অসামান্য তথ্যবহুল জগতের অন্তহীন বিস্ময়ের সাগরে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে এই গ্যালাক্সীটি একটি সর্বোচ্চ শক্তি ধারণক্ষম সমৃদ্ধ ছায়াপথ। অতিসঞ্চিত শক্তির ক্রমবর্ধমান রূপ যেন তার নিজের মাঝেই তৈরি করে যাচ্ছে উচ্চ মাত্রার তেজস্ক্রিয় বিকিরণ। সে নিজের শক্তিচ্ছটায় তীব্রগতিতে নিক্ষিপ্ত করছে নিজের অভ্যন্তরস্থ গ্যাসীয় কণা। আর তাই অতিরিক্ত আলোকচ্ছটায় এর ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০০ ট্রিলিয়ন সূর্যের মত। তাপশক্তি নির্গত করে এবং আলো বিকিরণ করে এক পর্যায়ে এই ছায়াপথ গ্যাসীয় আবরণমুক্ত হয়ে পরিণত হবে দিপ্তীহীন ইনফ্রারেড তরঙ্গ উৎপাদক কোয়্যাসারে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান এই জ্যোতিষ্কের মাঝে রয়েছে বিশাল কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব।

কোয়্যাসার (Quasar) বা Quasi Stellar Radio Source নভোমন্ডলের জ্যোতিষ্কের মাঝে একটি বিশেষ ধরণের অতি উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। এটি যেমন শক্তি নিঃসরণ করে ক্রমান্বয়ে দীপ্তিহীন শীতল জ্যোতিষ্কে পরিণত হয় তেমনি এর কেন্দ্রস্থ অঞ্চলটি খুবই সক্রিয় বেগে গ্যাসীয় পিন্ড, ধূলিকণা এবং উচ্চ তাপমাত্রার বিকিরণ জনিত শক্তি নিঃসরণের মাধ্যমেই দীপ্তিহীন শীতল হবার পূর্বে সক্রিয় জ্যোতিষ্করূপে মহাকাশে আবির্ভূত হয়। অত্যাধিক চাপে রাসায়নিক উপাদান সমূহ সংযোজিত হয়ে কেন্দ্র হতে দ্রুতবেগে উতক্ষিপ্ত করে উচ্চমাত্রার বিকিরণ। এজন্যই বিলিয়ন বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও প্রজ্জ্বলভাবে প্রতিভাত এই জ্যোতিষ্কগুলো কোয়াসার শ্রেণিতে স্থান পায়। এই সকল তথ্য বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট সেই ছায়াপথের গঠন, বয়স এবং রাসায়নিক উপাদানের মিথস্ক্রিয়া সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায়। বৃক্ষ যেমন ক্রমশঃ বৃদ্ধিপ্রাপ্তির সময়ে তার কান্ডের চারিপাশে চক্রাকারে পরিধির ব্যাপ্তি ঘটায়, ছায়াপথগুলোও অনুরূপ বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে তার কেন্দ্রের চারিপাশে চক্রাকারে পরিধির ব্যাপ্তি ঘটায়। তারা কেন্দ্র হতে পরিধির দিকে বিস্তৃতি লাভের সময়ে পরতে পরতে রেখে যায় বিবর্ধনের চিহ্ন। দেখা মেলে ছায়াপথটির জন্ম লগ্ন থেকে এ অব্দি অতিক্রান্ত সময়ের পরিমাপ। বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যবেক্ষণে ধারণা পাওয়া যায় নভোমন্ডলে ছায়াপথের অবস্থানের পদচিহ্ন।

চিত্রে শিল্পীর তুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে কোয়্যাসার W2246-0526, যার অবস্থানের তথ্য আমাদের কাছে পৌঁছেছে ১২.৪ বিলিয়ন আলোকবর্ষ পাড়ি দিতে আলোর যতটুকু সময় লাগে ততটুকু সময় পরে। সাড়ে তের বিলিয়ন বছর আগে ঘটে যাওয়া বিগ ব্যাং এর প্রায় এক বিলিয়ন বছর পরের সময় থেকে এই চিত্রটি প্রাপ্ত। তখন বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির মাত্র ১০ শতাংশ সময় অতিক্রান্ত হয়েছে।তাই আজ হতে ১২.৪ বিলিয়ন বছর পূর্বে আমাদের নবীন বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কেমন ছিল তারই তথ্য কোয়াসারের চিত্রটি প্রদান করছে। এত সময় পরও আজ এই কোয়্যাসারটি কেমন আছে, তা হয়তোবা বিজ্ঞানীরা জানতে পারবেন যখন বর্তমান সময়ের চিত্রটি দূরবীণে এসে ধরা দেবে ১২.৪ বিলিয়ন আলোকবর্ষ অতিক্রম করে আসতে আলোর যে সময়টুকু লাগে সে সময়টুকু পরে। তবে একথা নিশ্চয়ই ধারণা করা যেতে পারে যে, কোয়্যাসারটি তার সকল শক্তি গত ১২.৪ বিলিময় বছরের মাঝে নিঃসরণ করে দীর্ঘ ভ্রমণে ক্লান্ত একটি জ্যোতিষ্কে পরিণত হয়েছে। স্পন্দনহীন দীপ্তি শূন্য হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে একাকী নিঃসঙ্গ অসীমের মাঝে।

তথ্য সূত্রঃ নাসা, astronomy.com

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ২:৩৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনার লেখায়, আমি বিভ্রান্ত হয়ে গেছি:
প্রশ্ন, "যে কো্যাস্যারের কথা বলছেন, সেটা কি W2246-0526 ছায়াপথে?

এই কোয়াস্যার কখন উজ্বল ছিলো, এখন কি সে আলোকহীন?

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৬

হুমায়রা হারুন বলেছেন: জ্বী চাঁদ্গাজী ভাই। এতদিনে সে শক্তি নিঃসরণ করে দিপ্তীহীন, ম্লান, বিবর্ণ। কিছুটা ক্লান্ত। :(

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ২:৩৮

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: নাসার কামকাজ কিছু বুঝি না, কোথা থেকে কি কি যে হাঙ্কিপাঙ্কি খুঁজে খুঁজে বের করে? ১২ বিলিয়ন বছর বসে থাকতে হবে, আমি মাঝে মাঝে নাসার বিজ্ঞানীগুলো কি রিলেটিভিটি কি পড়ে নাই? আলোর কাছাকাছি বেগে ঐ কোয়াসারের দিকে সিগনাল পাঠালেই তো সময় কিছু কমে যায় :)
আসলে আমার এত জ্ঞ্যান দেখেই বাংলাদেশে পরে আছি। B:-/

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৫২

হুমায়রা হারুন বলেছেন: একদম :)

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: বিশাল মহাকাশ বিশাল রহস্যের মধ্যে সব চাইতে রহস্যময় কোয়াসার।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৫১

হুমায়রা হারুন বলেছেন: ঠিক। কেমন আছেন?

৪| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৪৬

শায়মা বলেছেন: তুমি তো হারিয়েই গেলে আপু।

কোথায় আছো?

কেমন আছো?

০৫ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:১৪

হুমায়রা হারুন বলেছেন: আমি ফেসবুকে আছি আমার গ্রুপের লিংকview this link
হারিয়ে যাই নি আপু। তোমার লেখায় ভরপুর আমার নজরুল সংখ্যা এখনো খুব জনপ্রিয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.