নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইকবাল সুমন। মাঝে মাঝে টুকটাক লিখা লিখি করি। এছাড়া কোন কিছু করি না।
সম্ববত, ২০১০ সালের ঘটনা।
সংসদ ভবনের সামনে আমাদের ৫/৬ জন বন্ধু আড্ডা দিচ্ছিলাম। ওই দিন ওফ-ডে ছিল না।
আসে-পাশে অনেক ভিক্ষুক ঘুরঘুর করছিল। হটাত করে আমার মনে একটা খায়েশ হল এবং ওদের বল্লাম, "চল এক ভিক্ষুকের Interview নিই"। যেই ভাবা সেই কাজ।
আমার দোস্ত আসিক তার স্বভাবসুলব গর্জন দিয়ে আমাদের ঠিক সামনে যে ভিক্ষুকটি দাড়িয়ে ছিল তাকে বলল, "অই দাড়া, তর পুটলার ভিতর কি আছে ওগুলা বাইর কর"
প্রথমে ভিক্ষুকটি কিছু বুঝে উঠতে পারেনি। যখন বুঝলো তখন সে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো এবং বলল, "স্যার, আমার কোন দোষ নাই। আমি নিতে চাইনি"
আমরা একে অপরের দিকে তাকালাম, বুঝলাম, কেঁচো খুজতে যাইয়া সাপ বের হয়ে আসতেছে।
এরপর পুঁটলিটা থেকে আরো ২ টা ক্ষুদ্রাকৃতির পুঁটলী বের হল।
আমরা সবাই আমার দোস্ত শামিমের দিকে তাকালাম, ও আবার বিলাতি কুকুরের নাসিক্য ইন্দ্রিয় নিয়ে চলাফেরা করে।
ও আমাদের দিকে তাকিয়ে তার সুমিষ্ট দাঁতগুলো প্রদর্শিত করলো। যা বুঝার নিজ দায়িত্বে বুঝে নিলাম,
"আধুনিক পিস্তল বিড়ির পুরাতন ভার্সন"
এরপর একে একে ব্যাগ থেকে ২৪০ টাকার মত বের হল।
লুঙ্গির প্যাচ এবং পাঞ্জাবির পকেট থেকে আরও টাকা বের হল। মোট টাকার পরিমান ছিল ৪৪১ টাকা।
তখন সকাল ৯ টা ১৫ মিনিট। ও স্বীকার করে নিয়েছে, সকাল ৬ টা থেকে ভিক্ষা শুরু করেছিল এবং পুরা ৪৪১ টাকাই ওই দিনের ভিক্ষা ছিল।
ভিক্ষুকটা আমাদেরকে তার সব টাকা পয়সা রেখে তাকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেছিল। কারন তার ধারনা ছিল, আমরা তাকে পুলিশে দিয়ে দেব। আমরা তার কথা রাখতে পারিনি, তাকে টাকাসহ ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু পুঁটলী ২ টা রেখে দিয়েছিলাম। কিন্তু ওগুলো কে নিয়ে গেছে বলব না। ..
( আমি বেক্তিগতভাবে চা, সিগার, পান এবং যে কোন ড্রাগ মুক্ত )
আমার কিছু কথা...
১. সকাল ১০ টার পরে আমার মনে কোন ভিক্ষুকের প্রতি যদি ঐশ্বরিক কৃপা না হয়, তাহলে আমি ভিক্ষা দেই না।
২. কোন শক্ত সামর্থ্য পুরুষ কিংবা মহিলা ভিক্ষুককে ভিক্ষা দিয়ে আমি শুধু শুধু পাপ করি না। কারন সস্তা পাপের জায়গা আরো অনেক আছে।
৩. ভিক্ষা দেয়াটাকে আমি ফ্যাশন ভাবি না।
৪. ভিক্ষা দেয়াটা যেহেতু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বাধ্যতামুলক না। শুধুমাত্র কিছু সওআবের বেপার থাকে। সুতরাং এই বেপারে আমি সবসময় একটু উদাসীন।
এবং কিছু কথা....
১. তিন ঘন্টা ১৫ মিনিটের মধ্যে যদি একজন শক্ত সামর্থ্য ভিক্ষুক ৪৪১ টাকা নীট আয় করে, তাহলে তার সারাদিন ভিক্ষা করার প্রয়োজন কি? এই টাকা দিয়েই তো ও তার পরিবারসুদ্ধ ভাল ভাবে চলতে পারে, নয় কি?
২. আমরা যেন অপ্রয়োজনীয় ভিক্ষা না দিয়ে সমাজ থেকে এই কেন্সারটাকে সমূলে উচ্ছেদ করতে পারি।
৩. আজ থেকে শক্ত সামর্থ্য ভিক্ষুককে ভিক্ষা দেয়া ছেড়ে দেন। দেখবেন পেটের দায়ে কাজ করা শুরু করেছে।
প্রাগৈতিহাসিক এর ভিখু আর আমাদের ভিক্ষুকদের মধ্যে সময়গত পার্থক্য ছাড়া তেমন কোন পার্থক্য নাই।
সমাজের অন্য বড় কেন্সারগুলুকে লাগব করার সামর্থ্য যেহেতু আমাদের কম। সেহেতু ছোট কেন্সার গুলোকে সমূলে শেষ করে দেই।
ছোট্ট একটি প্রমিস করা কি যায় না...
"আজ থেকে আমরা অপ্রয়োজনীয় ভিক্ষা দেব না"
আমরা মনে রাখব, "এটা মানসিকভাবে একটু নিষ্ঠুর মনে হলেও, নৈতিকভাবে কখনোই না।
২| ১৩ ই জুলাই, ২০১৪ ভোর ৪:৪৬
ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: এতোদিন পাঠক হিসেবে ছিলাম। এখন চেষ্টা করব সবার মাঝে একজন হতে।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৭
আহসানের ব্লগ বলেছেন: সামহোয়্যার ইন ব্লগে আপনাকে আমন্ত্রন।
এখানে লিখুন পড়ুন আর প্রাণবন্ত আড্ডায় মেতে থাকুন।
এটাই হউক আপনার ঠিকানা।