নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইকবাল সুমন

"ঘোড়ার ডিমের খোঁজে নয়, ডিমওয়ালা-ঘোড়ার খোঁজে...

ইকবাল হোসাইন সুমন

আমি ইকবাল সুমন। মাঝে মাঝে টুকটাক লিখা লিখি করি। এছাড়া কোন কিছু করি না।

ইকবাল হোসাইন সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গিনিপিগদের সুখ দুঃখঃ ( পর্ব-৬ )

২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৩০




রহিম বলল, “মামা, নীলা মামী ফোন দিছে মনে হয়”
-তুই রিচিভ কর। রিচিভ করে কথা বল।

গায়ের কম্পন থামাতে পারছিলাম না। পানি এত ঠাণ্ডা হয়! একটু তাকিয়ে দেখলাম, রহিম নীলার সাথে খুব হেসে হেসে ফোনে কথা বলছে। কিন্তু ঠাণ্ডায় অনেকটা কাঁপছে। ওদের সম্পর্কটা দেখে আমার রীতিমত হিংসে হয়। মাঝে মাঝে আড় চোখে দেখি আর মনে মনে চিন্তা করি, যদি পৃথিবীর অপরিচিতদের সাথে অপরিচিতদের সম্পর্ক যদি এমন হত।
-মামা, নীলা মামী আপনার সাথে কথা বলতে চাইছে। এই বলে রহিম ফোনটা আমার কাছে নিয়ে এলো।

“তুমি নিজে পানির মধ্যে নেমেছ , সাথে রহিমকে নামিয়েছ। তোমাদের ঠাণ্ডা লেগে যাবে তো”। নীলা আমাকে প্রায় দমকের সূরে বলল।
-আরে, ঠাণ্ডার কি আর কোন কাজ নাই। লাগবে না। আমরা ব্যাপক মজায় আছি। তুমিও এসে পড়। সাথে জামা কাপড় নিয়ে এসো। তোমাকেও পানির মধ্যে নামতে হবে।
-আমার আর কোন কাজ নাই, না?
-তোমাকে এই সাত সকালে ঠাণ্ডা পানিতে নামার বুদ্ধিটা কে দিছে?
-আমি কি কারো বুদ্ধিতে চলি নাকি। সকাল বেলা রহিমকে ঘুম থেকে উঠিয়ে নিয়ে এসেছি। আসতে চায়নি, বলল, পানি নাকি খুব ঠাণ্ডা। এক প্রকার জোর করে নিয়ে এসেছি। এখন রহিমও খুব মজায় আছে। এই বলে হি হি করে হাসলাম।

নীলাকে ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়ে দিতে আমার অনেক মজা লাগে। কিন্তু বেশির ভাগ সময় ও আমাকে হতাশ করে দিয়ে আমি যে কাজটি করি সেও সে কাজটির সমর্থন দেয় অথবা করে বসে।

-আমি তোয়ালে নিয়ে আসতে ভুলে গেছি। plz তুমি তাড়াতাড়ি একটা তোয়ালে নিয়ে আসতো। আমি নীলাকে বললাম।
-ঠিক আছে। তুমি এখনি পানি থেকে উঠ, সাথে রহিম কেও নিয়ে উঠ। আমি এখনি আসতেছি।
- আদেশ শিরোধার্য মহাশয়া। আমি তো এখন উঠেই আছি। আর নামব না। এই বলে আমি ফোনটা কেটে দিয়ে রহিমকে নিয়ে চন্দ্রিমা উদ্যানের পাশের লেকটার মধ্যে আবার জাম্প দিলাম। নিশ্চিত থাকলাম। আগামী ২৫ মিনিট নীলা অতি ভালবাসায় আর জ্বালাচ্ছে না।

২০ মিনিটের মাথায় নীলা এসে পড়ল। গাড়ি থেকে নেমে সোজা আমাদের দিকে আসল। হাতে একই ধরণের ২ টা তোয়ালে। তখনো আমি এবং রহিম পানিতে লম্পজম্প করছিলাম। নীলাকে আসতে দেখে আমি রহিমকে বললাম। তাড়াতাড়ি উঠ তোর মামী আসতেছে। রহিম আর আমি লেকের সিঁড়ি বেঁয়ে নীলার কাছে চলে আসলাম। অনেকটা ভয়ের অভিনয় করে আমি নীলার দিকে তাকালাম। দেখলাম নীলার চাহনিতে তেমন মারাত্মক কোন বিরক্তি নাই। নীলা আমার হাতে একটা তোয়ালে ধরিয়ে দিল। আসলে শরীরটা বেশ ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। সর্দি কাশি লেগে যায় কিনা কে জানে। তাড়াতাড়ি তোয়ালে দিয়ে গা মুছে কাপড় চোপড় পড়তে লাগলাম।
একটু দূরে রহিম, নীলা গল্পে বেশ মশগুল হয়ে আছে মনে হয়। তাদের দুজনের এক আধটু হাসির শব্দও আমার কানে আসতেছে। নীলা তোয়ালে দিয়ে রহিমের মাথা মুছে দিচ্ছে আর রহিম অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে। মনে হয়, আজকের সকাল থেকে যা যা হয়েছে তাই বলে যাচ্ছে আর হাসছে। নীলা মাঝে মাঝে আমার দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে আর মুস্কি মুস্কি হাসছে সেটাও খেয়াল করলাম। আমি ও একটু করে হাসি দিয়ে তার প্রতিউত্তর দেয়ার চেষ্টা করলাম। ইচ্ছে করেই আস্তে আস্তে কাপড় পরিবর্তন করছিলাম। কারণ দূর থেকে রহিম নীলার অস্পষ্ট হাসিগুলো শুনতে ভাল লাগছিল।
তখনো নীলা রহিমের মাথা মুছে দিচ্ছে। আমি যখন দূর থেকে তাদেরকে দেখছিলাম আমার মনে হচ্ছিল তাদের থেকে আমি শত শত মাইল দূরের মানুষ। তাদের একে অন্যের উপর মমতার কাছে আমি যেন অনেকটা অসহায়। আমার কেন জানি মনে হয়, পৃথিবীর সমস্ত সুন্দর হাসির প্রতিনিধি হিসেবে রহিমের জন্ম হয়েছে। শ্যামলা এ চেহারাটার মধ্যে এমন একটা ব্যাপার আছে যা ভালবাসা কিংবা মমতারও ঊর্ধ্বে। আমার ধারণা ছিল, আমিই রহিমকে পৃথিবীর সবচে ভাল বুঝতাম, কিন্তু আমার সে ধারণা এখন আর নাই, অনেকদিন আগেই আমি নীলার কাছে পরাজিত হয়েছি। কিন্তু এ পরাজয়টা আমার আনন্দের। রহিমের প্রতি আমার মমতার পুরো জায়গাটাও যদি নীলা দখল করে ফেলে, সেটাও আমার আনন্দের। কারণ আমার বরাদ্দকৃত মমতার সবটুকু নীলাকে দেয়া হয়ে গেছে।

-মামা, আমাকে দোকানে যেতে হবে।

রহিমের কথা শুনে আমার যেন তন্দ্রা ভঙ্গ হল।
আমি অনেকটা হেটে ওদের কাছে আসলাম।

-তাহলে রহিমকে ছেড়ে দেয়ই। নীলা বলল।
-ঠিক আছে। রহিম তুই যা। ভাল মত কাজ করবি। রাতে এসে পড়তে বসবি। আমি কিন্তু তোর মামাকে জিজ্ঞাসা করব পড়তে বসছিস কিনা।

রহিম দাঁত বের করে হাসল এবং ভোঁ দৌড় দিল।
এখান থেকে একটু গেলেই তার দোকান যেখানে রহিম কাজ করে।

এখনো সকাল ৮ টা বাজেনি। ঘর থেকে মানুষ যারা বের হয়েছে তারা মোটামুটি ব্যায়ামের উদ্দেশেই বের হয়েছে। খুব সকালে চন্দ্রিমা উদ্যানের এই দিকটা অনেকটা গ্রামের ছোঁয়া পাওয়া যায়। আশে পাশে সংসদ ভবন ছাড়া বড় কোন বিল্ডিং নাই। এইদিকে ময়লা আবর্জনার পরিমাণটাও একটু কম। তাছাড়া কুয়াশা পড়ায় বাতাসে ধুলাবালি নেই বললেই চলে।

-তুমি তাড়াতাড়ি আসত। নীলা আমাকে বলল।
-কই যাব? আমি জিজ্ঞাসা করলাম।
-আসতো, কোন কথা বল না।

আমি অনেকটা নিরুপায় হয়ে গাড়ির কাছে আসলাম। আমার পরনে একটা হাল্কা পেন্ট পড়া ছিলাম। আর আরেক হাতে পলিথিনে মোড়ানো ভিজা পেন্ট এবং টি-শার্ট। আর পরনে একটা শাল। আমি অনেকটা বাধ্য হয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম। নীলার সাথে কখন আমি গাড়িতে উঠলে সাধারণত আমি গাড়ির সামনেই বসি, ড্রাইভারের সাথে। নীলা পিছনে বসে।

আসলাম ভাই, আপনি elephant road চলেন। নীলা ড্রাইভারকে বলল।

আমি নীলার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। কিন্তু কিচ্ছু বললাম না। কারন আমি জানি বললেও কোন লাভ নাই। নীলা আমাকে সাধারণত কোন ধরনের জোর করে না। কিন্তু যখন কোন একটা কাজ করার ব্যাপারে জোর দেয়, তাহলে আমি বুঝে নেয়ই, নীলা নিশ্চয় কোন কিছু ভেবেই করছে। তাই আমি সব সময় নীলার সে কাজটি শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করি।
আমরা সাড়ে ৮ টার দিকে elephant road এ আজিজ ভাইয়ের দোকানের সামনে এসে পৌঁছলাম। দেখলাম আজিজ ভাই দোকান খুলতেছে। আমি অনেকটা অবাক হলাম। কারণ এত তাড়াতাড়ি দোকান খুলার কথা না। হয়ত দোকানদারের সাথে নীলা আগে থেকে যোগাযোগ করে রেখেছে।
নীলা আর আমি দুজনেই দোকানের ভিতর ঢুকলাম। আজিজ ভাই অনেকটা অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসল। আজিজ ভাই একটা ব্যাগ নীলার হাতে দিল। নীলা ওই ব্যাগ থেকে বের করে আরেকটা ব্যাগ আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল, তুমি Change করে আস। আমি কিছু বুঝতে পারছিলাম না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও ট্রায়াল রুমে গেলাম। দেখলাম কড়া লাল একটা শার্ট, কিন্তু অনেকটা পতুয়া ধরনের, হাল্কা নীল রঙের একটা গাবারিং পেন্ট কিন্তু দেখতে অনেকটা জিন্সের মত। আর পাঞ্জাবির সাথে পরা যায় এই ধরনের একজোড়া স্যান্ডেল। কি আর করা, পটাপট পরে ফেললাম সবগুলো। সবগুলো একদম ভালভাবে ফিট হয়ে গেছে।
আমরা কারো গায়ের মধ্যে কেমন শার্ট লাগবে এটা অনেকটা ধারনা করে বলে দিতে পারি, কিন্তু কোমরটা সব সময় মেপে দেখতে হয়। এমন কি, পেন্ট কেনার সময় নিজের কোমরটা পর্যন্ত মেপে দেখতে হয়। কিন্তু নীলা এ পর্যন্ত আমাকে যতগুলো পেন্ট কিনে দিয়েছে বা ওকে আমি টাকা দিয়েছি কেনার জন্য, ও কখনই আমাকে পেন্টের কোমরের মাপ জিজ্ঞাসা করেনি। কিন্তু ঠিকেই সব ফিটফাট হয়ে যেত। আজো তার ব্যতিক্রম হয়নি।
নীলা আমার পরনের কাপড়গুলো ব্যাগের মধ্যে রেখে দিল।
আমি দেখলাম, নীলা আজিজ ভাইকে আমার ডেবিট কার্ডটা দিয়ে payment করছে। আমি তো অবাক হলাম। payment শেষে আমার হাতে payment slip আর ডেবিট কার্ডটা দিয়ে বলল, “এখন চল”।

আমি নীলার পিছনে পিছনে বের হলাম। মনে মনে বললাম, তাকে ডেবিট কার্ডটা দেয়াই উচিত হয়নি। গত বিশ তারিখ থেকে আমার একমাত্র জীবন ধারণের অবলম্বন DBBL ডেবিট কার্ডটা নীলার কাছে ছিল। কি কারণে যেন তাকে দিয়েছিলাম। কিন্তু তখন কার্ডে কোন টাকা ছিল না। গতকাল মাসের ৩ তারিখ ছিল। বাবা আমার account এ টাকা পাঠিয়েছিল। আমি নীলাকে বাবা টাকা পাঠানোর কথা বলেছিলাম। সেটাই আমার কাল হল। ৮০৫০ টাকা আমার শপিঙয়ের পিছনে খরচ করিয়ে দিল নীলা। এখন চিন্তা করতে হবে পুরো-মাস কিভাবে চলব। কয়েকদিন আগে বাবা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে হারছে। এখন যদি আমি বাবার কাছে টাকা চাইতে যাই, বাবা আমাকে নির্গত উনার নির্বাচনী প্রতিপক্ষ ভাবতে পারে। আমি আর কিছু ভাবতে পারছিলাম না। চোখের সামনে সেলিম ভাইয়ের চেহারাটা বার বার মনে আসিতেছিল। মনে হয়, গত মাসের ধার পরিশোধ না করে আবার সেলিম ভাই থেকে ধার করতে হবে। আর সেলিম ভাই যে মানুষ, ধার দিতে পারলে ব্যাপক খুশি হয়। মনে হয় যেন পাওনাদার থেকে টাকা পাইছে।

“গাড়িতে উঠ” নীলা বলল।
আমি বললাম, কই যাব?
-পরে বলছি, আগে গাড়িতে উঠ।
আমি যেয়ে ড্রাইভার এর পাসে সামনের সিটে বসলাম। নীলাও গাড়িতে পিছনের সিটে বসল। কি মনে করে আমি পিছন ফিরে নীলার দিকে তাকালাম। দেখলাম নীলাও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। অতি নিরব একটা চাহনী। কিন্তু কিছু বলছিল না। আমি কি মনে করে যেন সামনের সিট থেকে উঠে পিচনের সিটে এসে নীলার পাশে বসলাম। এবার নীলার মুখে প্রশান্তির একটা ছায়া দেখলাম।

ড্রাইভার মনে হয় কথাও চা সিগারেট খেতে গেছে। আশেপাশে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।

-রাগ করেছো? নীলা আমাকে জিজ্ঞাসা করল।
-কেন? আমি বললাম।
-এই যে তোমার এতগুলো টাকা খরচ করে দিলাম। এই বলে নীলা একটু মৃদু হাসল।

আমি কিছু বললাম না। কারণ আমি যদি বলি, আমি রাগ করিনি। তাহলে এটা মিথ্যা বলা হবে। এই টাকাগুলো খরচ হওয়ার পর আমার হাতে থাকবে এর ৬০০০ থেকে ৭০০০ টাকা এ নিয়ে আমি পুরো মাস কখনই চালাতে পারব না।

-তুমি তো তোমার বাবা থেকে আরও কিছু বেশি টাকা চাইতে পারো। উনি কি টাকা চাইলে তোমাকে দেবেন না? নাকি তোমার বাবার সামর্থ্য নাই? কেন তুমি শুধু শুধু এত কষ্ট করো। তুমি কি জান কতদিন তুমি ভাল জামা কিননি?। কেন যখন তখন একে ওকে সাহায্য করে বেড়াও। নীলা অনেকটা কান্নাজরিত কণ্ঠে আমাকে বলল।

আমি একটু করে মৃদু হেসে, ইশারায় নীলাকে কাছে আসতে বললাম। নীলা কিছুটা ভয় পেয়ে গেল। তাও একটু কাছে আসল। আমি আমার মুখতা নীলার কানের কাছে নিয়ে এসে বললাম, “আমার ইচ্ছাকৃত কিছু পাগলামি আছে, আমার জীবনে আমি ইচ্ছাকৃত কিছু ক্রাইসিস সৃষ্টি করে রেখেছি, ইচ্ছাকৃত অপ্রয়োজনীয় কিছু কাজ করি। কিন্তু এ সব পাগলামি করার পিছনে সব কিছুর পাশাপাশি একটা অন্য কারণ আছে, মহৎ একটা উদ্দেশ্য আছে, ভয়ঙ্কর একটা স্বার্থ আছে। সেটা কি জান?

নীলা চুপচাপ আমার কথা শুনছিল।
“সেটা হল, “নীলাকে আমার মত করে আমার জীবনে ধরে রাখা । আমি জানি, আমার নীলা আমার এই ক্রাইসিসের মধ্যেই সবচে ভাল নিঃশ্বাস নিতে পারবে, আমার পাগলামির মধ্যেই জীবনের অর্থ খুঁজে পাবে। আমি যদি কখনো এগুলো ছেড়ে দেয়ই। সেদিনই নীলা আমার জীবন থেকে হারিয়ে যাবে। তো আমি এ ঝুঁকি নেব কেন?”।

নীলা আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল। চোখের কোণে কিছু পুঞ্জিভূত অশ্রু জমা হল তার। আমি ইচ্ছে করে তার অশ্রুটা মুছে দিলাম না। কারণ পুঞ্জিভূত অশ্রুটা গত ৪ বছরে অণু অণু পরিমাণ জমা হয়ে আজ এ অবস্থায় এসেছে। ওখানে হাত দেয়ার অনুমতি বা অধিকার আমার নেই।
আমি জানি প্রত্যেকটা মেয়ে তার প্রেমিক থেকে কি আশা করে। তারা চায় তার প্রেমিক হবে আভিজাত্য, গুছানো, এবভিচাস ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আমি ঠিক তার উলটো পথে চলেছি। আর নীলাও বেতিক্রম ধরনের একটা মানুষ। তাই হয়ত নীলাও আমার মধ্যে তার ছায়া খুজে পেয়েছে।

নীলা মাথাটা নিছু করেছিল। আমি আমার ২ হাত দিয়ে তার মাথাটা আলতো করে তুললাম, দেখলাম অশ্রুটা এখনো শুকায়নি। আমি সরাসরি তার চেহারার দিকে তাকিয়ে একটু মৃদু হেসে জিজ্ঞাসা করলাম, “আমার মধ্যে তো কিছু পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নাই, তো তুমি আমার মধ্যে পড়ে আছ কেন?”

নীলা আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলল, "আমার মধ্যে যে পাগলামি আছে, সে পাগলামি তোমার পাগলামিকে সঙ্গ দেয়ার জন্য”

আমরা দুজনে মিলে একটু করে হেসে উঠলাম।

-এখন মহাশয়া, আপনি বলেন আপনি আমার এতগুলো টাকা খরচ করিয়ে দিয়েছেন। এটার মধ্যে আমি প্রথম থেকেই অন্য একটা রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি। ঘটনাটা এখনই খুলে বলেন।
-জি জনাব, একটা ঘটনা তো অবশ্যই আছে। এবং সেটা হল। আপনার DNF scholarship টা অনুমোদন হয়ে গেছে। আগামি ১৬ তারিখে আপনি টাকাটা পেয়ে যাচ্ছেন।
আমি সত্যি চিন্তা করছিলাম। এর পেছনে নিশ্চয় কোন ঘটনা আছে। নতুবা নীলা এই পাগলামিটা করত না। যাক, এ মাসে সেলিম ভাই থেকে ধার করতে হইবে না, এই চিন্তা করেই অন্তত কিছুটা ভাল লাগছে।

এর মধ্যে নীলার ড্রাইভার চলে আসল।
-আপা, কোন দিকে যাইবেন? ড্রাইভার নীলাকে জিজ্ঞাসা করল।
-হাতির ঝিলের দিকে চলেন? নীলা বলল
-হাতির ঝিলের কি কাজ? আমি নীলাকে জিজ্ঞাসা করলাম।ল
-রহিম যে তিনটা বেলুন দেখেছে, তার মধ্যে নাকি ২ টা বেলুন ফরহাদ ভাই আনতে পেরেছে। আর একটা বেলুন তো ওখানে রয়ে গেছে। চল দেখে আসি, বেলুনটা আছে কিনা...

আমরা হাতির ঝিলের দিকে রওয়ানা দিলাম রহিমের ৩ রহস্য বেলুনের মধ্যে ৩য় নাম্বার বেলুনটা আছে কিনা দেখার জন্য।

নীলা এবং আমি গাড়ি স্ট্যার্ট দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছি....

(চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.