নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুবায়ের সুহান

সুহান সুহান

দ্বিধান্বিত

সুহান সুহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

না পাঠানো চিঠি

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৭

রানু!!! কি ভেবে তোকে চিঠি লিখছি জানি না। মনের শান্তির জন্যেই হবে। এই চিঠি তো আর কখনো তোকে পাঠানো হবে না। রানু!!! আমার অসুখ হয়েছে। তেমন বড় কিছু না। মনের অসুখ। কিন্তু এই অসুখ থেকে যে কিভাবে মুক্তি পাব তা বুঝতে পারছি না।



আমি মানুষটা খুবই একঘেয়ে। একই কথা বার বার বলে যাই। আমি নিজেও তা বুঝি কিন্তু তাও একই কথা বারবার বলা হয়। যে কথাগুলো বার বার বলি তা আমার খুব প্রিয় কথা। যে ধৈর্য ধরে শোনে, গুরুত্ব দেয়। সে আমার খুব প্রিয় মানুষ হয়।



তোর আমার সম্পর্কের শুরুতেও খুঁত ছিল। শেষটাও খুঁতে ভরা। খুঁতে ভরা একটা সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়াটাই সবার জন্য ভালো ছিল। কিন্তু আমার অসুখটা সব গোলমাল করে দিচ্ছে। তোকে দূরে ঠেলে আমি যে খুব খারাপ ছিলাম তা কিন্তু না। কিন্তু তোকে অন্য কারো সাথে দেখাটা যে এইভাবে আমার উপর সুনামি হয়ে পড়বে তা কে জানত!! আমি এই বুড়ো বয়সে এই প্রথম সুনামির সম্মুখীন হলাম। টের পেলাম অসহায়তা কাকে বলে।



আমি মানুষ হিসেবে অনেক বদমেজাজি। কিন্তু সব সময় চাই নিজের আত্মার কাছে যেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সৎ থাকতে পারি। সেটাই তোর আর আমার জন্য কাল হলো। ভনিতা, লোক দেখানো ব্যাপার স্যাপারে কখনোই মন থেকে সায় পেতাম না। তাই করতামও না। কিন্তু সেই ছোট-খাটো ব্যাপারগুলিও যে তোর কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝতে চাইতাম না। ইচ্ছাও পোষণ করতাম না। যতটুকুই দিতাম তার মধ্যে এতটুকু খুঁত থাকত না। ভাবতাম! এইটুকুই অনেক। কিন্তু আজকালকার মেয়ে তুই। তোর কি এতটুকু তে হয়!!



তোকে আমি খুব ভালো বুঝতাম। একটা ছোট শিশুর মতই ছিলি তুই আমার কাছে। অবাধ্য ছোট শিশুরা যেমন প্রচণ্ড রকমের বেয়াদপ হয়। তুইও সেরকমই ছিলি। আমি বুঝতাম। বুঝেও তোকে আস্কারা দিতাম না। এতে আমার আত্ম-অহমিকায় বাঁধত। কিন্তু একটু পরেই মন নরম হয়ে যেত। তোকে আদর করতাম। সেই আদরটুকুও হয়তো যথেষ্ট হত না তোর কাছে।



এরকম ছোট খাট অনেক ঘটনার পর যখন বুঝলাম যে তুই কোনদিন আমার সাথে সুখী হবি না। তখন কঠিন সিদ্ধান্তে আসতেই হইল। আমি আর সবকিছু মানতে পারব কিন্তু এটা কখনোই মানতে পারব না যে আমার সাথে তুই ভালো নাই। আমি অনেক খারাপ। অনেক কিছুই তোকে দিতে পারিনি। এতে নিজে নিজে তো কম দগ্ধ হতাম না। তারপরেও যদি পাশের মানুষটা অসুখী তা কিভাবে মানা যায়!! মানা যায় না। আমি মানতে পারিনি। কখনো পারতামও না।



আমি সেই দলের মানুষ যার অনেক ইতিবাচকতা দরকার। কারণ আমি নিজে নেতিবাচকতার একটা সমুদ্রে বসবাস করি। তাই চাই আশেপাশের মানুষরা যেন না চাইতেও আমাকে সহ্য করে। আমাকে আমি যেমন তেমন করেই ভালোবাসে। ‘সমঝোতা’ শব্দটা কখনোই আমার প্রিয় ছিল না। এই নীতিতেও আমি চলতে পারতাম না। মনের সাথে মিল হয়নি এমন মানুষের সাথে আমি মনের মিল করার কখনো কোন চেষ্টা করিনি। তাতে আমার যত ক্ষতি-ই হোক না কেন।



সেই দলের মানুষ হয়ে আমার যতটুকু দেয়া তার সবটুকুই বোধহয় তোকে দিয়েছি। তাও এত কম হয়ে গেল দেওয়াটা যে নিজেকে বড় ছোট মনে হল।



আমি জানতাম তুই অবুঝ ছোট মানুষ, আমার উপর অভিমান করে খুব অল্প সময়েই আমাকে ভুলে যাবি। কিন্তু আকাল হলো তোকে অন্যের সাথে দেখা। তোকে দূরে ঠেলার কষ্টের চেয়েও এই কষ্ট যেন হাজার গুণ হয়ে ভর করল। সুনামি। হা! হা! হা!



অসহায় হয়ে আবার তোর কাছেই গেলাম। তুই আমাকে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করলি। আমার অসুখ হল। কত কি আকাশ পাতাল মাথায় ভর করত। অনেক দিন পর কিছুটা ধাতস্থ হয়ে খুব অপমান করে তোকে এসএমএস করলাম। ভেবেছিলাম এতে মনে হয় অসুখ ভালো হবে। কিন্তু অসুখ তো ভালো হয় না। থেকে থেকে খোঁচায়। তুই জানবিও না কখনো। বুঝবিও না কখনো। অসুখটা খুব ভোগায়।



মনের একটা অংশ যেন তোর কাছে পরে থাকে। কিন্তু তোর কাছে কখনো তা স্বীকার করব না। তুই এখনো সেই অবুঝ বেয়াদপ ছোট মানুষ। তোর কাছে আর যাই হোক ছোট হওয়া যায় না। এই জায়গাতেই আমাদের সম্পর্কটা পোকায় কাটা ছিল।



উপন্যাস পড়ছিলাম। নাম ‘পূর্ব-পশ্চিম’- সুনীল এর লেখা। এখানের একটা চরিত্রের নাম প্রতাপ। সে তাঁর ছেলে বাবলুকে দুষ্টুমির জন্যে মারে। পরে আবার ছেলেকে আবেগপ্রবণ হয়ে জড়ায় ধরে। আমার কাছে তুই সবসময় বাবলু-ই ছিলি। তুলনাটা কিরকম হাস্যকর হয়ে গেল। তাই না? প্রেমিকার সাথে ছোট ছেলের তুলনা!!!! হা! হা! হা!!



তুই আর তুই নেই। অসুখটা শেষ হয়ে গেলে আমিও আর আমি থাকব না। যে স্মৃতিগুলোর ভয়ে তুই দূরে যেতে চাইতি না। সেই স্মৃতিগুলোই আমার অসুখটাকে দিনকে দিন রাতকে রাত বাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এখন তোর ১-২ সপ্তাহের কষ্ট এতকাল ধরে বুঝে যাচ্ছি।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৮

বটের ফল বলেছেন: কাজে ব্যস্ত রাখেন নিজেকে। জীবনের লক্ষ ঠিক করুন, মা-বাবার কথা বেশি করে ভাবুন। একই সাথে সেবামুলক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। আর প্রার্থনা করুন স্রষ্টার নিকট নিয়মিত ভাবে। দেখুন সব কেমন বাস্পের মত উড়ে গেছে। জীবনটা হয়ে উঠছে আনন্দময়।

ভালো থাকুন সুহান সুহান। শুভকামনা রইল।

২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৫

স্বপনচারিণী বলেছেন: জানিনা এটা আপনিই নাকি এটা শুধুই আপনার অন্যসব রচনার মত একটি। যেটাই হোক আপনি সুস্থ থাকুন আপনার জন্য, সবার জন্য, আমাদের জন্য।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৭

সুহান সুহান বলেছেন: অন্য সব রচনার মতই একটি। পত্র সাহিত্য বলতে পারেন। তবে লেখা লেখি তো সব জীবন থেকেই নিতে হয়। কখনো নিজের কখনো অন্যের। আপনিও ভালো থাকুন।

৩| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩৯

মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন: হুমম। আমিও চিঠি লিখছিলাম। চিঠি লিখলে মন হালকা হয়। ওর কাছে হয়তো পৌছাবেনা। তাও।

৪| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:২১

িট্রপ্ত বলেছেন: কেন যেন এরকম সুন্দর চিঠি পাই না !! ধন্যবাদ

২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৪

সুহান সুহান বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.