নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুবায়ের সুহান

সুহান সুহান

দ্বিধান্বিত

সুহান সুহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অদ্ভুত প্রেমের গল্প- (পর্ব ২৩)

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৪

খুব জোরে দৌড়াচ্ছে পুলক। ভোরবেলার পার্ক। বয়স্ক থেকে মধ্য বয়স্ক নারী-পুরুষরা উদ্দীপনার সাথে হাঁটছে। পুলকের বয়সী কিছু মানুষদেরও দেখা যাচ্ছে। কেউ খুব জোরে হাঁটছে। কেউ বা দৌড়াচ্ছে। বেশ ভালো স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। পুলক সবাইকে পিছন ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে। বেশীক্ষণ দম ধরে রাখতে পারছে না সে। তখন সে হাঁটছে। আবার দম নিয়ে দৌড়াচ্ছে। ইদানীং সকালে হাঁটতে বের হচ্ছে পুলক। জীবনটার মধ্যে যেন নেতিবাচকতা ভরে গেছে। কিছুটা ইতিবাচকতা না আনলে মরে যাওয়া উচিৎ। ধুঁকে ধুঁকে আর বেঁচে থাকতে ভালো লাগছে না পুলকের। তাই সকালের এই বের হওয়া।



অনেকক্ষণ দৌড়ানোর পর পুলক একটু বসল।

-anything wrong? (মেয়েলী কণ্ঠ)

পুলক হাঁপাতে হাঁপাতে পিছনে ঘুরে তাকাল। সকালের অনেক স্বাস্থ্যসচেতন নারীদের মধ্যে একজন।

পুলক জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাঁর দিকে তাকাল। মুখে কিছু বলল না।

-না আপনি কি রকম উদ্ভ্রান্তের মত দৌড়াচ্ছিলেন। তাই জিজ্ঞেস করলাম।

পুলক নিজের মনে খুব হাসল। এরকম কতবার মনে মনে কল্পনা করত যে কোথাও বসে আছে আর একটা মেয়ে নিজে থেকে এসে কথা বলবে তাঁর সাথে। পুলকের পক্ষে আগ বাড়িয়ে কথা বলা সম্ভব ছিল না তখন। বাসে কোথাও একলা যাচ্ছে। মনে মনে ভাবতে ভালো লাগত যে আহা কোন মেয়ে যদি পাশের সীটে বসত!!! কিন্তু দেখা যেত পাশের সীটে মোটাসোটা কোন লোক বসত। আর আজকে একটা নিজে থেকে এই ভোরবেলায় তাঁকে জিজ্ঞেস করছে anything wrong!!! দারুণ!! এই ঘটনাই আরো কয়েক বছর আগে ঘটলে হয়ত এর রোমাঞ্চ অন্যরকম হত। এখন তেমন কিছু হচ্ছে না।

-নাহ! সব ঠিক আছে।

মেয়েটাও একটু দূরে বসল। পুলক আড়চোখে মেয়েটাকে একটু পরখ করে নিতে চাইল। ঢোলা ট্রাউজার। সাদা গেঞ্জি পড়া। উপরে ওড়নাও দেয়া আছে। ওই ওড়নাই হল মধ্যবিত্ততার প্রতীক। বয়স বোঝা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে তার সমান বা বড়ও হতে পারে।



মেয়েটা উঠে দাঁড়ালো। একটা বেশ সুঠাম শরীরের ছেলে এসে মেয়েটার পাশে এসে দাঁড়ালো। মেয়েটা বেশ সপ্রতিভভাবে পুলককে বিদায় জানাল।

-আচ্ছা আসি।

পুলকও সৌজন্য হাসি ফেরত দিল। তাঁর মনটা অল্প খারাপ হয়ে গেছে। দুনিয়ার তাবৎ পুরুষের এই সময়ে মন খারাপ হয়। যখন আপাতদৃষ্টিতে একা থাকা মেয়েটা কোন পুরুষের সাথে চলে যায়। তাও সে পুরুষ যদি সুদর্শন হয়। নিজের মনের কথা নিজেই বুঝতে পেরে খুবই মজা লাগল তাঁর। রীতা থাকতে যে সে অন্য মেয়েদের দেখত না এমন না। কিন্তু তাঁদের পেতে ইচ্ছা তাঁর হত না। হয়তো তাঁদের সুন্দর শরীরটায় একটু চোখ বুলিয়ে নিত। রীতার সাথে সে এসব নিয়ে গল্পও করতে পারত। রীতা একটু পাগল কিসিমের ছিল। এসব বেশ আগ্রহ নিয়ে শুনত। মজাও পেত। অন্য বন্ধুদের কাছে তো গল্প শুনত সে। ওঁদের বান্ধবীরা কিরকম দারোগা গোছের একেকজন। কোন মেয়ের কথা ওঁদের সামনে বলাই যেত না। বললেই শেষ। হিন্দুরা মরলে যেমন বলে ‘রাম নাম সত্য হে’। অন্য কোন মেয়ের নাম বান্ধবীর সামনে বলা মানে ব্যাকগ্রাউন্ড এ ‘রাম নাম সত্য হে’ বাজা স্টার্ট হয়ে যাওয়া।



হায়রে!!! আবার রীতা!! ধুর!! এর থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায়!!! পুলক আবার উঠে দাঁড়ালো। জোরে দৌড় দিতে হবে। এত জোরে যেন স্মৃতিগুলোও যেন পিছু নিতে না পারে। দেখাক তাঁকে উদ্ভ্রান্তের মত। সে তো উদ্ভ্রান্তই।



বাসায় ফিরে গোসল। নাস্তা। অফিস এর জন্য রেডি হওয়া। মা তাঁর সাথে কয়েকদিন ধরে কথা বলছে না। নাস্তার টেবিলে নাস্তা দেয়া থাকে। সে আসে না। পুলক তাও মায়ের ঘরে যায়। মা হু হাঁ করে উত্তর দেয়।



ওইদিন পুলককে না বলে মেয়ে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিল আফরোজা আক্তার। মেয়েটাকে পুলকের সাথে কথা বলতে দিয়ে ওরা বেশ চালাকির সাথে বসার ঘরে এসে বসল। হঠাৎ করে মেয়ে দৌড় দিয়ে ঘরে ঢুকে গেল। কী হল!! আফরোজা দৌড়ে গিয়ে ছেলেকে জিজ্ঞেস করল।

-পুলক!! কি হয়েছে রে!!

-কই কিছু না তো!! ওঁর মনে হয় বাথরুম লেগেছে। তাই ওভাবে দৌড় দিল। বাচ্চা মেয়ে তো!! (পুলকের হাসি হাসি মুখ)

-ঠিক করে বল!!

-আরে!! আমি কী ভুল করে বলছি নাকি!! চল। চল। কালকে অফিস আছে আমার!



আফরোজা পরে শুনেছে মেয়ের মায়ের কাছ থেকে। পুলক মেয়েকে বলেছে ওঁর নাকি মাথার ঠিক নেই। যে কোন সময় ধরে যে কাউকে আছাড় দিতে পারে। বসায় নাকি মাকেও দুয়েক বার দিয়েছে। ব্যাথা বেশি লাগে না। এইসব কথা শুনে মেয়ে খুবই ভয় পেয়েছে। মেয়ে বলেছে সে মরে যাবে। তাও এই লোককে বিয়ে করবে না।



ঘটনাটার কথা মনে করলেই পুলকের হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে যায়। সকালে অফিস এ গিয়ে সে এভাবেই হাসছিল। এক কলিগ ঢুকে ওকে জিজ্ঞেস করল।

-এভাবে পাগলের মতও হাসতেস কেন?

এই ধরনের হাসি হঠাৎ করে আটকানো খুবই কঠিন। সে অনেক চেষ্টা করে হাসি থামাল।

-না কিছু না।

তাঁর বলতে ইচ্ছা করছিল। ভাই!! আপনাকে একটা আছাড় দিলে কি আপনি খুব রাগ করবেন? ভাবতে ভাবতেই আবার হাসি শুরু হয়ে গেল। রক্ষা এই যে ততক্ষনে কলিগ বের হয়ে গেছে। নইলে তাঁকে পাগল টাগল ভাবত।



পর্ব-১ Click This Link পর্ব-২ Click This Link পর্ব-৩ Click This Link পর্ব-৪ Click This Link পর্ব-৫ Click This Link পর্ব-৬ Click This Link পর্ব-৭ Click This Link পর্ব-৮ Click This Link পর্ব-৯ Click This Link পর্ব-১০ Click This Link পর্ব-১১ Click This Link পর্ব-১২ Click This Link পর্ব-১৩ Click This Link পর্ব-১৪ Click This Link পর্ব-১৫ Click This Link পর্ব-১৬ Click This Link পর্ব-১৭ Click This Link পর্ব-১৮ Click This Link পর্ব-১৯ Click This Link পর্ব-২০ Click This Link পর্ব-২১ Click This Link পর্ব-২২ Click This Link

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৬

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: ভালো লাগলো কারণ ভালো লিখেছেন অন্য পর্বগুলোর মতোই......

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৩

সুহান সুহান বলেছেন: :)

২| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৮

ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: হা হা হা... ... মাঝে মাঝে যে এমন মজা করি না তা না... সেটা যে কেউ ই হতে পারে তবে এর মাঝে কেবল অফিসের বস বাদ আর কি... ... বাবাকেও মাঝে মাঝে এমন কনফিউস করে দিতে মজাই লাগে।। ... পর্ব ভালো লেগেছে আর অনুরোধ রাখার জন্য ধন্যবাদ......

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৪

সুহান সুহান বলেছেন: :)

৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫১

স্বপ্ন নীল বলেছেন: =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~

৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৫

স্বপনচারিণী বলেছেন: বেশি নাটকীয় হয়ে গেল না? অন্যের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ এভাবে বলতে পারে? তাও আবার মাকে আছাড়! আসলেই মাথা ঠিক নেই।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৭

সুহান সুহান বলেছেন: :প

৫| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৩

ডরোথী সুমী বলেছেন: পুলক পাগল হয়ে গেছে। তারমানে ও আবার সুস্থ হয়ে গেছে আগের মতো।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৫

সুহান সুহান বলেছেন: হাহাহাহা!!! এটা খুবই ভালো বলেছেন।

৬| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮

অর্ধমানব ও অর্ধযন্র বলেছেন: টানা পড়ে গেলাম। ভালো লাগল। আপনার লেখা দেখে মনে হলো নিজের কাহিনী টাও লেখা যায় ব্লগে। পরের পর্বের প্রতীক্ষায়। ভালো থাকবেন। আর দ্রুত লিখবেন প্লিজ।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৬

সুহান সুহান বলেছেন: এই রে!!!! দ্রুত লিখতে বলছেন!!! গতির দিক দিয়ে আমি খুবই দুর্বল। :( তাও চেষ্টা করব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.