নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ সত্য বাকী সব মিথ্যা

মোঃ শওকত হোসেন বিপু

আমি মনের আনন্দে লিখি তাতে কেহ খুশি হতে পারে আবার নাও হতে পারেন তাতে এই অধমের কিছু আসে যায়না।

মোঃ শওকত হোসেন বিপু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবগারি শুল্ক নিয়ে কিছু কথা

১৭ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৬

গত ১লা জুন মাননীয় অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত সংসদে ২০১৭-১৮ সালের বাজেট পেশ করেন। বাজেটের আকার ৪,০০,২৬৬ কোটি টাকা, যার মধ্যে আয় ধরা হয়েছে ২,৯৩,৪৯৪ কোটি টাকা এবং ঘাটতি ১,০৬,৭৭২ কোটি টাকা। তন্মধ্যে উন্নয়ন বাজেট ধরা হয়েছে ১,৫৩,৩৩১ কোটি টাকা।

এত এত লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট পেশ করা হয়েছে, যেখানে আলাপ হবে লক্ষ কোটি টাকার নাহলে আলাপ হবে হাজার কোটি টাকার। কিন্তু বেশীরভাগ মানুষের আলোচনার বিষয়বস্তু হলো ব্যাংকের আমানত স্থিতির উপর আরোপিত আবগারি শুল্ক সম্পর্কিত। আর্থিক মূল্যে যার প্রাপ্তি মাত্র ২০০ কোটি টাকা যা মোট রাজস্ব আয়ের মাত্র ০.০৭% অর্থ্যাৎ এক হাজারের একভাগেরও কম।

কিন্তু মানুষ কেন হঠাৎ করে এত বাজেট সচেতন হয়ে উঠলো? বা ব্যাংকে টাকা রাখা নিয়ে এত আতঙ্কিতই বা হয়ে উঠলো কেন???? এর কারন হলো মাননীয় অর্থমন্ত্রী (!)। আমার যতটুকু মনে পরে বিগত কয়েক বছর বাজেট বক্তব্যে ব্যাংক আমানতের উপর আবগারি শুল্ক নিয়ে কোন কথা বলা হয়নি, এজন্য মানুষের এই বিষয় নিয়ে এত মাথা ব্যথা ছিলনা। অর্থমন্ত্রী এইবার বাজেট বক্তব্যে বিষয়টি উল্লেখ করেই যত সমস্যার সৃষ্টি।অথচ আবগারি শুল্ক ১৯৪৭ সাল থাকে কার্যকর ছিল এবং এখনও আছে।

এটা অনেকটা "তাল দেখিনা তিল দেখি" এর মতো অবস্থা। বাজেটে এত বড় বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, যেমন- ঢালাওভাবে সম্পূরক শুল্ক আরোপ, সর্বক্ষেত্রে ভ্যাট হার ১৫ শতাংশ করা, বার বার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া, উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা ইত্যাদি ইত্যাদি। এইসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বাদ দিয়ে দেখি অনেক অনেক নামকরা অর্থনীতিবিদরা শুধুমাত্র এই একটা বিষয় নিয়ে খুব জোরালো মতামত দেন কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে এমনটা নয়। বিষয়টা কি অর্থনৈতিক না রাজনৈতিক?

বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রসমূহে ব্যাংক আমানতের উপর আবগারি শুল্ক আছে কিনা, আমি এই বিতর্কে যেতে চাচ্ছিনা কিন্তু মানুষজন যে পরিমান ভয় পাচ্ছেন আবগারি শুল্ক আরোপ নিয়ে, যেমনঃ সরকার সব টাকা নিয়ে যাবে বা ব্যাংকে টাকা রাখা যাবেনা, বিষয়টা আসলে সে রকম কিছু নয় বরং সরকার ক্ষুদ্র আমানতদারীদের কিছু ক্ষেত্রে ছাড়ও দিয়েছে।

আবগারি শুল্ক আগেও ছিল, এখনও আছে, পার্থক্য শুধু আগের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। যেমনঃ ক.বছরে যে কোন সময় যার ব্যাংকে স্থিতি থাকবে ১ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা সে ব্যক্তি আগে দিত ৫০০ টাকা, এখন দিবে ৮০০ টাকা। খ. বছরে যে কোন সময় যার ব্যাংকে স্থিতি থাকবে ১০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা সে ব্যক্তি আগে দিত ১,৫০০ টাকা, এখন দিবে ২,৫০০ টাকা। গ.বছরে যে কোন সময় যার ব্যাংকে স্থিতি থাকবে ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা সে ব্যক্তি আগে দিত ৭,৫০০ টাকা, এখন দিবে ১২,০০০ টাকা। ঘ. আবার বছরের যে কোন সময় যার ব্যাংকে স্থিতি থাকবে ৫ কোটি টাকার উপর সে ব্যক্তি আগে দিত ১৫,০০০ টাকা, এখন দিবে ২৫,০০০ টাকা।

এখানে লক্ষ্যনীয় যে, যাদের ব্যাংকে স্থিতি থাকবে ১ লক্ষ টাকার কম তাদেরকে কোন আবগারি শুল্ক দিতে হবেনা, আগে যেটা ছিল ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আগে ২০,০০১ টাকা হতে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যাদের ব্যাংকে স্থিতি থাকতো তাদরেকেও আবগারি শুল্ক দিতে হতো, যেটা এখন দিতে হবেনা। সুতারাং ব্যাংকে যেসব ক্ষুদ্র আমানতকারী আছে বা যাদের ব্যাংকে আমানত ১ লক্ষ টাকার কম থাকবে, তাদেরকে এখন আর আবগারী শুল্ক দিতে হবেনা। আর ব্যাংকে এই রকম হিসাবধারীর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশী।

আর একটা বিষয় - আমানতের স্থিতির উপর ভিত্তি করে বছরে একবারেই আবগারী শুল্কের টাকা কাটা হয়। সুতারাং বছরের আপনি যতবারে লেনদেন করেন না কেন টাকা কাটা হবে একবার। দরুন বছরে আপনার হিসাবে মোট ১০০ দিনই ১ লক্ষ টাকার স্থিতি অতিক্রম করে ৫ বা ৬ বা ৭ লক্ষ টাকা হয়েছে, আপনাকে আবগারী শুল্ক দিতে হবে বছরে একবারই এবং তা ৮০০ টাকা। আবার আপনি যদি বছরে অনেক লেনদেন করেন কিন্তু কোন সময়ই আপনার ব্যাংক আমানতের স্থিতি ১ লক্ষ টাকার বেশী না হয়, তাহলে আপনার উপর কোন শুল্ক আরোপ করা হবেনা।

সুতারাং যারা এই আবগারী শুল্ক নিয়ে প্রচন্ড মানসিক চাপে ছিলেন, আশা করি তারা কিছুটা ভার মুক্ত হবেন।ইদানীং আবার আবগারী শুল্ক আগের মত রাখার জন্য অনেকে অনুরোধ, আবদার, সুপারিশ করছেন। সরকার হয়ত সবার অনুরোধে এটা নাও বাড়াতে পারে। আমার কথা হলো - আবগারী শুল্ক আগের মত থাকলে যেমন কোন অসুবিধা নাই আবার বাজেটের বক্তব্য অনুযায়ী আবগারী শুল্ক বাড়ানো হলেও আতন্কিত হওয়ার কোন কারন নাই।

মোঃ শওকত হোসেন বিপু
১৭.০৬.২০১৭

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:০৫

মামুন মেহেদী বলেছেন: আবগারী শুল্কটা সমস্যা না। কিন্তু দেশের অনেক মানুষই সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে অর্জিত মুনাফা দিয়ে তাদের সংসার চালায়। বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত স্বামীর বয়স্কা স্ত্রী। এদের আয় বাড়ানোর আর কোনো মাধ্যম নেই। অথচ তাদের আয়টা কমে যাচ্ছে এর মাধ্যমে।

১৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:৪৯

মোঃ শওকত হোসেন বিপু বলেছেন: সেটা সত্যি যে, সরকার সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর চিন্তা-ভাবনা করছে, যেটা অপ্রত্যাশিত। কারন অনেক মানুষ বৃদ্ধ বয়সে একমাত্র সঞ্চয়পত্রের সুদের উপর নির্ভরশীল। তবে আবগারী শুল্ক সঞ্চয়পত্রের উপর প্রযোজ্য নয়।

২| ১৭ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:৪১

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমাদের স্বভাবটাই এমন। বছরে মাত্র ৮০০ টাকার জন্য গলা ফাটাই অথচ আরো কত খাতে যে ব্যয় বৃদ্ধি হবে সেই দিকে খেয়াল নেই...

১৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:৫৩

মোঃ শওকত হোসেন বিপু বলেছেন: আমাদের স্বভাবই এইরকম। অনেকটা নারিকেল দেখিনা, সুপারি দেখি এর মত অবস্থা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.