নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হেয়ালি

জসীম উদ্দিন রাসেল

জসীম উদ্দিন রাসেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুঘল-ই-আজম: ইনডিয়ান মুভি ইতিহাসের অন্যতম সফল মুভি

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬

ইনডিয়ান মুভি ইতিহাসের সবচেয়ে সফল মুভির নাম যদি বলা হয় তাহলে নিন্দেহে সবার চোখের সামনে যে নামটি ভেসে উঠবে তা হলো মুঘল-ই-আজম। যারা অনেক আগে থেকেই মুভি দেখেন তারা মুভির কথা উঠলেই এখনও মুঘল-ই-আজম মুভির নাম তুলতে সুখানুভব করেন। মুভিটি নাম নেওয়ার কারন হলো মুভিটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শককে টানা বসিয়ে রাখতে সফল হবে।

এ মুভি এতো জনপ্রিয় হওয়ার পিছনে কারনও আছে অনেক। মুভিটি তৈরি করতে লেগেছে অনেক সময়, অর্থ এবং তার সাথে ধৈর্য। কারন ধৈর্য না থাকলে কোন ভালো কাজই হয় না। দেখা যায় বিগ বাজেটের অনেক মুভিও সফলতা অর্জন করতে পারেনা। এর পিছনে কারন হলো মুভির প্রতি সময় না দেওয়া, মুভির ভিতরে ঢুকতে না পারা। আবার কাহীনি ভালো কিন্তু মুভিটি সেভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেনা। এর সব কারনই হলো একটি কাজের প্রতি আন্তরিকাতা আর নিষ্টার অভাব।

সে যাই হোক, এই মাস্টার পিস মুভিটি তৈরি করেছেন কে. আসিফ ১৯৬০ সালে। তখন তিনি মুভিটি তৈরি করতে দীর্ঘ নয় বছর সময় নিয়েছিলেন। ১৯৫১ সালে কালার মুভি তৈরি করার জ্বর শুরু হয়েছিলো। কিন্তু প্রডিউসারদের অনিহার কারনে তা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি। পরে শুধু একটি গান এবং ৩০ মিনিটের কিছু ক্লাইমেক্স শট কালারে ধারন করা হয়েছিলো। মুভিটির কাহীনি এর পূর্বে লাভস অফ অ্যা মুঘল প্রিন্স(১৯২৮) এবং আনারকলি(১৯৫৩)-তে এসেছিলো। সম্রাট আকবরের ছেলে মুঘল প্রিন্স সেলিমের কাহীনির উপর নির্ভর করেই মুভিটি তৈরি করা হয়েছে। প্রিন্স সেলিম নর্তকি আনারকলিকে ভালোবাসে। এবং ভালোবাসার পরিনতিসরুপ সেলিম তাকে বিয়ে করতে চায়। কিন্ত এতে রাজি নয় সম্রাট আকবর। এর ফল সরুপ আনারকলিকে বন্দি করা হয়। এদিকে সেলিম তার বাবার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। কিন্তু পরাজিত হন। এর ফলে সেলিমের মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। এভাবেই মুভির প্রেম কাহীনি বা বিরহ কাহীনি চলতে থাকে। সেলিম চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিলিপ কুমার, আনারকলি চরিত্রে মধুবালা, আকবর চরিত্রে পৃথিরাজ কাপুর। প্রত্যেকের পারফর্মেন্সই চমৎকার হয়েছে। না হওহায় কোন কারনও নেই। কারন সবাই তার অভিনয়ের প্রতি ছিলেন অনেস্ট। যেমন পৃথীরাজ কাপুর প্রতিটি শট দেওয়ার পূর্বে নিজেকে আয়নায় দেখে নিতেন। ডিরেক্টর যখন তাকে এর কারন জিগ্ঞেস করলেন তখন তিনি বলেন, আমি চরিত্রের গভীরে ঢুকতে চাই।

মুভিটি রিলিজ হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি আয় করতে সফল হয়েছে ১৯৭৫ সালে শোলে মুভি রিলিজ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। তবে ২০০৪ সালে যখন মুভিটি আবার কালার হয়ে রি-রিলিজ হয় তখন তা আবার সবার উপরে উঠে আসতে সক্ষম হয়। কালার ভার্সনে রি-রিলিজ পাওয়া মুভির মধ্যে এটই হলো ওয়ার্ল্ড রেকর্ড। কারন এখন পর্যন্ত কোন কালার ভার্সনে রি-রিলিজ হয়নি। হলিউডে যা হয়েছে তা কেবল হোম বিডিওর ক্ষেত্রে হয়েছে। এখন মুভিটিকে কালার ফর্মাটে নিয়ে আসতে ও অনেক সময় এবং অর্থ ব্যায় করতে হয়েছে। এই টাইমলেস ক্লাসিক মুভিটি কালার ফর্মাটে আনতে কাজ করেছে দি ইনডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড অ্যানিমেশন। ৫০ জন ইনডিয়ান টেকনিসিয়ান কাজ করেছেন এর জন্য এবং খরচ করেছেন প্রায় তিন কোটি রুপি। শেষ পর্যন্ত কে.আসিফের ইচ্ছা সফল হলো। যদি ও তিনি এখন তা আর দেখতে পেলেন না।

মুভিটি এখনও এতো আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুর কারন কেন? এর উত্তর খুজতে হলে আমাদের চলে যেতে হবে এর পিছনের ইতিহাস জানার জন্য। যে কোন একটি কাজের কিছু বিষয় চিরদিন মানুষ মনে রাখে। এখন মুঘল-ই-আজম মুভিটির কোন সিকোয়েন্সটি মানুষ মনে রাখবে তা যদি বলা হয় তা হলে অবশ্যই শীষ মহলে আনারকলির গানটির কথা বলবেন। এটা আসলে ভুলার মতো বিষয়ও নয়। তবে এই গানটির পিছনে রয়েছে অনেক চেষ্ঠা, অর্থ এবং সাধনা। গানটির গীতিকার শাকিল বিদওয়ানকে ১০৫ বার এই গানটির লিরিক লেখতে হয়েছিলো। ১০৫ বারের মাথায় মিউজিক ডিরেক্টর গানটির অনুমোদন দেন। এই গানটি ধারন করতে ব্যায় হয়েছে তখনকার ১০ মিলিয়ন রুপি। তখন একটি মুভির পেছনেই খরচ হতো না ১ মিলিয়ন রুপি। লাহোর ফোর্টে যেখানে গানটি ধারন করা হয়েছিলো সেখানকার প্রতিটি আয়নায় তা রিফ্লেক্ট হয়েছে। এতো চমৎকার কাজ মনে না রাখার কোন কারন অবশ্য নেই। মুভিটিতে মিউজিক ডিরেক্টরের কাজ করেছেন নওশাদ। এটাকে বলা হয় ইনডিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভালো সাউন্ডট্রেক।

মুভিটিতে যে কস্টিউম ব্যবহার করা হয়েছে তাতে কাজ করার জন্য দিল্লী থেকে আনা হয়েছে টেইলর, এম্বয়ডারির কাজ করার জন্য সুরাট-খম্বাট থেকে আনা হয়েছিলো কিছু স্পেশালিস্ট, হায়দারাবাদের স্বর্ণাকররা তৈরি করেছেন জুয়েলারী, অস্র এসেছে রাজস্থান থেকে। মুভিটিকে যতোটুকু সম্ভব বাস্তবধর্মী করার চেষ্টা করা হয়েছে। আর এতো কিছু বাস্তবে রূপদিতে প্রডিউসারকে খরচ করতে হয়েছে দেড় কোটি রুপি এখন যা ৩৮.২৯ কোটি রুপির সমান।

মুভিটি দীর্ঘ হলেও সময় যে কখন চলে যাবে তা টেরও পাওয়া যাবেনা এটা নিশ্চিত। ড্রামা, অয়ার, রোমান্স নির্ভর মুভিটি তিনটি পুরস্কার এবং পাচটি নমিনেশন পেয়েছে।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০০

মামুন রশিদ বলেছেন: পেয়্যার কিয়াতো ডরন্যা কিয়া জব,, মধুবালা দিলীপ কুমারের অসাধারণ রসায়ন!

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০৩

জসীম উদ্দিন রাসেল বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। ধন্যবাদ।

২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০২

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: এখন ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই একটি চলচিত্র তৈরী হয়ে যায় আর এটি তৈরী করতে সময় লেগেছে ৯ বছর, ভাল তো হবেই। মুভিটার একটা লিংক দিলে পারতেন।







আসেন আড্ডাই

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০৭

জসীম উদ্দিন রাসেল বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন। এতো অল্প সময়ে মুভি তৈরি করা হ্য় বলেই ভালো হ্য় না। আর মানুষ মনেও রাখে না।

ভাই লিংক জানা থাকলে দিতাম। সরি। যদি কোনো ব্লগার ভাই জানেন তাহলে লিংকটা শেয়ার করতে পারেন।

৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১৩

ঢাকাবাসী বলেছেন: মুঘলে আযম একটা সুপার হিট ছবি, বহুকাল একে মানুষ মনে রেখেছে।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১৮

জসীম উদ্দিন রাসেল বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৪৩

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: হিন্দি ছবির ফ্যান না । তবে দেখবো এটা , অনেকেই ভালো বলল তাই ।

শুভেচ্ছা :)

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫২

জসীম উদ্দিন রাসেল বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৪

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: আমারও প্রিয় ছবি....এরকম ঐতিহাসিক ছবি নিয়ে আরো পোস্ট চাই, সর্বোপরি আপনাকে ধন্যবাদ।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৮

জসীম উদ্দিন রাসেল বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

৬| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৭

ভিটামিন সি বলেছেন: হিন্দী ছবি বাদ দিয়ে আমাদের দেশের ধারাবাহিক নাটকগুলো দেখুন। টিভিতে নয় ইউটিউবে। সবই খারাপ না, কিছু কিছু ভালো সিরিয়াল ও পাবেন।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৮

জসীম উদ্দিন রাসেল বলেছেন: আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।

৭| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৯

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: মুঘল-ই-আজম এর ইউ টিউব লিংক


কাজ হয় কিনা দেখতে পারেন।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৩০

জসীম উদ্দিন রাসেল বলেছেন: আপনার আন্তরিক চেষ্টার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৮| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১০

কসমিক- ট্রাভেলার বলেছেন:

+++++++++++

৯| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২

সাফকাত আজিজ বলেছেন: আমার অনেক পছন্দের একটা মুভি ! আমার মনে হয়, সম্রাট আকবরের সাম্রাজ্য যেমন টাকার অঙ্কে অর্জন করা অসম্ভব তেমনি মুঘল -ই-আযম আবার তৈরী করা সম্ভব নয়.... বিশেষত আমি এই মুভি দেখেই আকবরের ফ্যান হই !

১০| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩৮

আলম দীপ্র বলেছেন: আমার দেখা হয়নি ! :(
পোস্টে +++++++++++++++++++++++

১১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৭

সোহেল মাহমুদ বলেছেন: অসাধারণ একটা মুভি।

পোস্টের জন্য+++্

১২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:০১

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: আমিও অপূর্ণ রায়হান -এর মত হিন্দি ছবি দেখি না । বাংলা ভাষার এত সুন্দর ভাষা ভারত উপমহাদেশে আর দ্বিতীয়টি নেই । ইনডিয়ায় ভালো মুভি বানায় তবে বেশীর ভাগই হিন্দি ভাষায়। এজন্যই ইন্ডিয়ান মুভি আমি বেশী দেখি না । ভাষার দিক দিয়ে মন ভরে না তাই ।

তবে মূঘল-ই-আজম একোটি অসাধারন মুভি। আমি দেখেছি । এর ঐতিহাসিক কাহিনী, চিত্র নাট্য, অভিনয় আর রূপসী মধুবালার অভিনয় সেই সাথে তার অভিনয়ের সাথে গানগুলো সত্যি হৃদয় ছুয়ে যায়।

১৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৬

পার্সিয়াস রিবর্ণ বলেছেন: আমার মা-বাবার কাছে এই ছবির গল্প অজস্রবার শুনেছি । তারা নাকি হলে গিয়ে এই ছবি দেখেছিলেন । আমি অবশ্য ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল চ্যানেলে ছোটবেলায় দেখেছিলাম ।

নিঃসন্দেহে হিন্দী মুভির ইতিহাসে এই ছবি একটি মাইলফলক ।

ভালোলাগা । :)

১৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৩

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অনেক কিছু জানতে পারলাম মুভিটা সম্পর্কে। নয় বছর লাগিয়ে একটা কাজ ,কতটা নিষ্ঠার সঙ্গে করা হয়েছে। এখন এত ডেডিকেশন কারো নেই, তাই যা উৎপাদন হয় বছর ঘোরার আগে সবাই ভুলে যায়।

১৫| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৬

আহলান বলেছেন: হুমম .... চরম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.