নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জয় পাঠক

সহজ আলোয় দেখা...

জয় পাঠক

যন্ত্রের জন্যে পদ্য, মানুষের জন্যে গদ্য - এই নিয়ে ভাবাভাবির সারাবেলা

জয় পাঠক › বিস্তারিত পোস্টঃ

খাদ্যে ভেজালঃ ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এখনই, নয়ত কখনোই নয়

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:০০

স্থানের অভাবের কারণে আজিমপুর গণ গোরস্থানে কোন কবর দেয়ার ছয় মাস পর একই জায়গায় নতুন কবর দেয়া হয়। কিছুদিন আগ পর্যন্ত এ রকমই নিয়ম ছিল। এখন ছয় মাসের বদলে কবর প্রতিস্থাপনের নতুন নিয়ম করা হয়েছে নয় মাস। কারণ আর কিছুই না, ইদানীং দেখা যাচ্ছে, ছয় মাস গেলেও মৃতদেহ মাটির সাথে মিশছে না। অনেকের ধারণা এর কারণ ফরমালিন। খাদ্যে পঁচনরোধী করার এই মারাত্মক রাসায়নিক জীবদ্দশায় হাজার অসুখের কারণ ঘটায়, এমনকি মরেও বেচারী ভোক্তাদের শান্তি নেই।



সিঙ্গাপুরে নাম করা হাসপাতালগুলোতে বাংলাদেশী রোগীদের আনা-নেয়া ও চিকিৎসা তদারকি করার জন্যে আলাদাভাবে বাংলাদেশী কর্মকর্তা বা এজেন্ট থাকে। এ রকম পেশার পরিচিত একাধিক মানুষ বললেন, বাংলাদেশ থেকে নানা-রকম জটিল রোগ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা প্রতি বছরই আশংকাজনক হারে বাড়ছে। বলা-বাহুল্য এই রোগীদের প্রায় সবাই অর্থনৈতিকভাবে কোটিপতি শ্রেনীর (কোন রকমে নিরানব্বই লাখ পর্যন্ত পৌঁছে কোটিপতি না, কোটি টাকা যাদের জন্যে "স্মার্ট" একটা এমাউন্ট!)। দুঃখের বিষয় এদের একটা বড় অংশ রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে একটা পর্যায়ে পথে বসার উপক্রম হয়।



এ থেকে মোটা-মুটি ধারণা করা যায় দেশের সাধারণ মানুষদের কি অবস্থা হতে পারে বা হতে যাচ্ছে। দেশে থাকতে ডাক্তারদের কাছে শুনেছি এমন বিচিত্র ও মারাত্মক অসুখ-বিসুখ তারা ইদানীং দেখছেন, যেগুলো আগে কখনো দেখা যায়নি।



গত কয়েক বছরে খাদ্যের এই ভেজাল মোটামুটি মহামারীর পর্যায়ে চলে গিয়েছে। দেশে আমার পরিচিতদের মধ্যে খুব ক্ষমতাধর একজন ব্যক্তিকে একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম, খাদ্যে ভেজাল রোধে আপনারা শক্ত হাতে কিছু করছেন না কেন। তিনি হতাশ হয়ে বললেন, "ভেজালটা ৫%-১০% হলে কিছু করা যেত, কিন্তু এটা এতো গভীরে বিস্তৃত হয়ে গেছে, সে রকম পর্যায়ে কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে ঠক বাছতে গাঁ উজাড় করতে হবে, সে ক্ষেত্রে সবাইকে না খেয়ে মরতে হবে। দেশের সবাই মিলে সচেতন না হলে আক্ষরিক অর্থেই কিছু করা সম্ভব না।" দুঃখের বিষয় এর কিছু দিন পর তাঁর খুব প্রিয় একজন মানুষের মৃত্যু হয় দুরারোগ্য ব্যাধিতে।



ভেজালের বিষক্রিয়ার একটা সমস্যা হলো ভোক্তার শরীরে ক্ষতি করতে এটা সাধারণত কয়েক বছর সময় নেয়, ধীরে ধীরে নিঃশব্দ ঘাতকের মতো কিডনী, হার্ট, পাকস্থলী অকেজো করতে থাকে। যদি ধরে নেয়া যায়, আজ থেকে পাঁচ বছর আগে থেকে ভেজালের এই মহমারী পর্যায়ে বিস্তার শুরু হয়েছে, তাহলে আগামী দিনগুলোর প্রতি বছরেই আমাদের অনেককে, অনেকের প্রিয়জনকে হারিয়ে যেতে দেখা যাবে অকাল মৃত্যু নিয়ে। ভয়াবহ রকমের এই মহামারী যদি এখনই শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ না করা যায়, আজ থেকে দশ বছর পরে পুরো দেশে সুস্থ একজন মানুষ খুঁজে পাওয়া মিরাকল হিসেবে গন্য করতে হবে!



আমাদের দেশের মানুষ কতো সুইট। এতো হাজারো সমস্যার মধ্যেও আমরা পৃথিবির অন্যতম সুখী জাতি। বাসে পেট্রোল বোমায় পুড়তে পারে জেনেও হাসি-হাসি মুখে অফিসে যাবো, চায়ের আড্ডায় রাজনৈতিক দল গুলোর নানা-মুখী কর্মকান্ডের গঠনমূলক-অগঠনমূলক আলোচনা করে যাবো। কিন্তু কিভাবে নিজেদের ভেতর ভেজাল বিরোধী সচেতনতা তৈরি করা যায়, সেটা নিয়ে মাথা ঘামাবো না।



আমরা এতো সুইট যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নাইলে ধর্ম উদ্ধারে ফেসবুক-ব্লগে জীবন দিয়ে দেবো। অথচ এটা বুঝতে চাইবো না একটা মানুষের সত্যি কারের দেশপ্রেম বা ধর্মীয় চেতনা তখনই সার্থক হয় যখন সেটার মাধ্যমে তার পাশের মানুষটা কিংবা নিজে কোন উপকার পায় বা কোন ক্ষতি থেকে বাঁচে।



রোকনুদ্দৌলার মতো সৎ এবং ভেজাল বিরোধী একজন মেজিস্ট্রেট নয়, আমাদের দরকার এরকম হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু আমরা এতোই সুইট যে, এই রকম মানুষ কিভাবে সবার আড়ালে চলে গেলেন খেয়ালই করলাম না।



জাতি হিসেবে এতো সুইট না হয়ে একটু সাওয়ার হলে মনে হয় ভালো হতো।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:২৭

তারেক রহমান বলেছেন: চরম সত্য কথা বলেছেন ভাই, আমি খাদ্দ্য ভেজালের ভয়ে বাহিরের ফলমূল খাওয়া প্রায় বন্ধ দিয়েছি। কিন্তু কি করার ভাই, এখন তো সব কিছুর ভিতর ই ভেজাল, এখন না খেয়ে বেচে থাকা তো সমভব না

১৩ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:০৭

জয় পাঠক বলেছেন: :-(

২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:২১

ভিটামিন সি বলেছেন: রোকনুদ্দৌল্লাহকে তার দায়িত্ব থেকে কেন সরিয়ে দেয়া হয়েছে? এই ভেজাল বাজারকারীদের বাজার বিস্তৃত করার জন্যই তো।

১৩ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:০৭

জয় পাঠক বলেছেন: :(

৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৫৫

রোজেল০০৭ বলেছেন: সহ মত !!

১৩ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:০৬

জয় পাঠক বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.