নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জয় পাঠক

সহজ আলোয় দেখা...

জয় পাঠক

যন্ত্রের জন্যে পদ্য, মানুষের জন্যে গদ্য - এই নিয়ে ভাবাভাবির সারাবেলা

জয় পাঠক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওগো বিদেশীনি!

০২ রা মে, ২০১৪ সকাল ৯:১৬





আমার এক সুইডিশ বন্ধু প্রায় অর্ধশতাধিক প্রেম করার পর ঘোষণা দিল, অবশেষে সে তার হৃদয়ের কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁচেছে। এটা শুনে আমরা তার শুভাকাঙ্খিরা আনন্দিত হলাম। হৃদয়ের কাঙ্খিত গন্তব্যের সন্ধান ও অর্জন সোজা কথা নয়। যে বালিকাটি তার হৃদয়হরণ করেছে সে সিঙ্গাপুরিয়ান, বিশ্ববিদ্যালয়ে একসাথে পড়তে গিয়ে পরিচয়। সেখান থেকে প্রণয়। ছেলেটি মেয়েটির পরিবারের নানা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। নানা হৈ হুল্লোড় করে। মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা প্রথম প্রথম খানিকটা বাঁকা চোখে দেখে। তারা বিয়ে-শাদী কবে করছে মুরুব্বি স্থানীয়দের এই জাতীয় প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। ছেলেটির বাবা-মাও পুত্রের এশিয়ান সঙ্গীনি দেখে চোখ কপালে তোলে। তবে বছর দুয়েকের মধ্যে দু’জনের পরিবারই তাদের সম্পর্কটি স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়।



কিছু দিনের মধ্যে আবিস্কার করলাম ইউরোপিয়ান ছেলে আর সিঙ্গাপুরিয়ান কন্যার এই জুটি প্রথা সিঙ্গাপুরে কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আমার অফিসে কমপক্ষে দু’জন ইউরোপিয়ান সহকর্মীর সিঙ্গাপুরিয়ান সঙ্গীনি আছে। প্রতিবেশীদের মধ্যে না ইউরোপিয়ান, না-এশিয়ান সন্তান-সন্ততির দম্পতির সংখ্যাও কম না। রাস্তা-ঘাট, শপিং মলেও এই ধরণের জুটি অহরহই দেখা যায়।



গত কয়েক বছরে সিঙ্গাপুরে ব্যাপারটা এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, এখানকার সমাজবিজ্ঞানী, সমাজকর্মীরা এটা নিয়ে নানা গবেষণা শুরু করে দিয়েছে। তাতে পাওয়া গেল বেশ মজার মজার কিছু তথ্য। এর মধ্যে একটা হলো, এশিয়ান রক্ষণশীল সংস্কৃতির কারণে সিঙ্গাপুরিয়ান ছেলেদের স্বভাবসুলভ লাজুকতা। সে তুলনায় মাল্টিকালচারাল দেশ সিঙ্গাপুরে চাকরি-ব্যবসার সুবাদে আসা ইউরোপিয়ানরা অনেক দিলখোলা। সিঙ্গাপুরিয়ান মেয়েদের ভাষ্য “ইউরোপিয়ানরা অনেক রোমান্টিক। তুমি আমাকে পছন্দ করলে সেটা সুন্দর করে বলতে হবে। পেটের মধ্যে রেখে দিলেতো হবেনা।“ এক পত্রিকার সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য ইউরোপিয়ান সঙ্গীর এক সিঙ্গাপুরিয়ান কন্যার।



কথাটা মনে হয় কম বেশী সত্য। আমার এক সিঙ্গাপুরিয়ান বন্ধুর বয়েস ৩৫ ছাড়িয়েছে বহু আগেই। এখনো বিয়ে-শাদী বা কোন সঙ্গীনি জোটাতে পারেনি কেন জিজ্ঞেস করলে বেচারা লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। তার অবসর কাটায় নানা-ধরণের কয়েকশ’ মেয়ে পুতুল দিয়ে, যার কোন কোনটির দাম কয়েকশত ডলার পর্যন্ত। মুচকি হেসে একদিন জিজ্ঞেস করলাম ডলগুলো তার গার্লফ্রেন্ড কিনা। জবাবে গম্ভীর হয়ে বলল, এগুলোকে সে তার কন্যার মতোই দেখে। তার উত্তর শুনে মনে হলো এশিয়ানদের ছেলেদের মধ্যে প্রেমিক স্বত্ত্বার চেয়ে বাবা ভাবই প্রবল। কি জানি, ধারণাটা ভুলও হতে পারে।



প্রেমের বাজারে ইউরোপিয়ানদের এইরকম আধিপত্য সব সিঙ্গাপুরয়ান বালকরা মেয়ে পুতুল দিয়ে মেনে নেয়, তা নয়। কয়েকদিন আগে সিঙ্গাপুরে থাকা ও সিঙ্গাপুরিয়ান বিয়ে করা এক বড় চাকুরে ইউরোপিয়ান বিশাল এক ঝামেলায় পড়ে গিয়েছিল। তার দামী মার্সিডিজটি বিকল থাকার কারণে তার ৫ বছরের না এশিয়ান, না ইউরোপিয়ান পুত্রকে নিয়ে মেট্রো রেলে উঠেছে। মেট্রো রেল বেশীর ভাগ সিঙ্গাপুরিয়ানের প্রধান বাহন। জীবনে প্রথমবার পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ওঠা ছেলেটির প্রশ্ন, “বাবা, এখানে এতো গরীব মানুষ কেন?”। পুত্রের এমন কথায় আমোদিত হয়ে ছেলের উক্তি সহ ছবি ফেসবুকে আপলোড করে দিলেন ভদ্রলোক। আর তাতেই কাল হলো ভদ্রলোকের। সিঙ্গাপুরের সাধারণ মানুষেরা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাল নানা মিডিয়ায়।



ভালবাসায় এশিয়ান বালকেরা হয়তবা লাজুক হতে পারে, কিন্তু প্রশ্ন যখন আত্মসম্মানের, যুদ্ধ তখন অনিবার্য।



ফেসবুকে আমি

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৪ সকাল ১১:৫৮

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: সুন্দর একটি ব্লগ পোষ্ট।
শুনুন, আত্মসম্মান পুরুষের বড় গুণ। অতএব...

০২ রা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫

জয় পাঠক বলেছেন: কথা সত্য!

২| ০২ রা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৪

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: লেখা ভালো লেগেছে। মইনুল ভাই এর সাথে সহমত।

০২ রা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯

জয় পাঠক বলেছেন: ভাইরে আজকালদিনে মার্কেটিং ছাড়া কিছুই চলে না। এই লাজুকতার জন্যে শুধু প্রেমের ক্ষেত্রেই নয়, ব্যবসা-বানিজ্যেও পশ্চিমাদের থেকে আমরা পিছিয়ে আছি। আত্মসম্মান নিয়ে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে... হা হা হা!

৩| ০২ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৫:০৫

এনামুল রেজা বলেছেন: লেখাটা চমৎকার। এশিয়ান আত্মসম্মানবোধ বলে কথা!

০২ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৫:০৭

জয় পাঠক বলেছেন: :) মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ!

৪| ০২ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৩

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: এখনতো ক্র্যাশের যুগ !!!

০২ রা মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৫

জয় পাঠক বলেছেন: :-) আপনার কোন গল্প থাকলে আমাদের বলেন।

৫| ০২ রা মে, ২০১৪ রাত ৮:১৩

তাসজিদ বলেছেন: জীবনের কত রূপ, কত বিচিত্রতা

লেখায় ++++++++++++

৬| ০২ রা মে, ২০১৪ রাত ১০:৪৪

মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন: তাই বলে ছেলেরাও পুতুলকে সঙ্গীনী বানাবে ???

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.