নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অবিনশ্বর ছায়া, রহস্য ঘেরা, অতি সাধারণ সামান্য মানুষ !জন্ম-জন্মান্তর পৃথিবীতেই পরে আছি !!

জে আর সিকদার

আমার অচেনা আমি

জে আর সিকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

হঠাৎ প্রেমের বছর পেড়িয়ে পর্ব ২

১৭ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:১৬



কর্ম হীন দিন কাটছে জনির, ৬ মাসেরও বেশী সময় ধরে জেরিন নামের মেয়েটিকে নিয়ে সপ্ন দেখছে সে। মন খুলে এখনও কথা বলে নি দুজন। জেরিন কি ভুলে গেছে জনির কথা ? জনির পাঠানো চিঠিটা কি পেয়েছে জেরিন? যদি পায় তবে ভুলে যাবার কথা নয়।
জেরিনের দেওয়া মোবাইল নম্বরে নেট থেকে কল দেয় জনি। যে নাম্বারটা সবসময়ই বন্ধ থাকে, আজ নাম্বারটা খোলা ! কল যাচ্ছে, জনির ভাবনা গভীর হচ্ছে। অচেনা বিদেশী নাম্বার থেকে কল পেয়ে অবাক হয়। তার পরিচিত কেউ বিদেশে না থাকায় সে কখনই দেশের বাইরে থাকা কারও সাথে ফোন কথা বলে নাই। কল রিসিভ করে টানা ২ মিনিট চুপ করে ছিল। জনি ১ মিনিট চুপ থেকে , নিজের পরিচয় দিল।
সাধারন আলাপনে কথা শুরু হল, ২ জনের আলাপ লম্বা সময় ধরে চলল । গভীর আলাপনের শেষে দুজন দুজনের সাথে দেখা করবে প্রমিজ করল।
প্রবাসী জিবনে অতিষ্ঠ জনি, খুব শিঘ্রই সে দেশে ফিরবে। তার দেশে ফেরার কারন শুধুই জেরিন । তবে সে দেশে ফিরে কি করবে? সে জেরিনকে বিয়ে করবে , যদি জেরিন রাজী হয়। বিয়ে করার পর দরকার হলে আবার সে বিদেশ আসবে। অদ্ভুত এক ভাবনা জনির মাথায় , বিয়ে করে বিদেশ থাকলে প্রবাস জীবনের একাকীত্ব কিছুটা কমবে । অন্তত মোবাইলে মন খুলে কথা বলতে পারবে জীবন সঙ্গীর সাথে। ২৫ দিন হয়ে গেলো দুজন মোবাইলে কথা বলেছিলো। আজ দেশে ফিরছে জনি। জেরিনেকে জানাতেই তারা দিন ক্ষন ঠিক করে ফেলল, দেখা করবে তারা। ৩ দিনের মাথায় দেখা করলো, জেরিনের জন্য বিদেশ থেকে কেনা আংটি দিয়ে প্রপোজ করলো জনি । জেরিন জনির ভালবাসা সাদরে গ্রহন করলো। জেরিন জনিকে জানালো কিছু শপিং করতে , জনিকে সাথে নিয়ে যেতে চায় সে। জনি রাজি হলো, জেরিনকে মনের মত শপিং করে দিলো। মুহূর্তেই ভালোবাসা রূপ নিল যুগ যুগের গভীরতম ভালোবাসায়। চলতে থাকলো আনলিমিটেড ফোন আলাপ। অতি দ্রুত গভীর সম্পর্কে জরিয়ে যায় দুজন। জেরিনের সাথে দেখা করার পর থেকেই সম্পর্কের পরিনতি নিয়ে ভাবতে থাকে জনি, দুজনের আলাপে সবকিছু বদলে যায় সময়ের চেয়ে দ্রুত! চলতে থাকে তাদের ভালোবাসার ট্রেন।
দিন বিশেক পরেই জনি আবার বিদেশ যাবে। এবার জনি বিদেশ যাবে দেশে না ফেরার ইচ্ছা নিয়ে। হঠাৎ দেশে ফেরায় জনি ব্যাক্তিগত ভাবে নানান সমস্যায় পরে। সমস্যা দূর করতেই জনির এই সিদ্ধান্ত। জেরিনকে ব্যাপার গুলো কিছুটা খুলে বললো, সেই সাথে জনি জেরিনকে বিয়ে করতে চায় জানালো। বিয়ে প্রসঙ্গে জেরিন তেমন মতভেদ করলো না , শুধু জানতে চাইলো দেনমহর কত হবে, বিয়ের ব্যাপারটা কতদিন গোপন থাকবে? জনি জানা-জানি করেই বিয়ে করতে চাচ্ছিল কিন্তু জেরিন রাজি না হওয়ায় গোপনেই বিয়ে করবে বলে জনি রাজি হলো। ৫ লক্ষ টাকা দেনমহর দেবে জনি, জেরিন তাতেই খুশি। মোবাইল আলাপনে ২জন সবকিছু ফাইনাল করে নিলো।
এখন অবধি তাদের দেখা হয়েছে ২ বার , ৩য় বার দেখা হবে তাদের বিয়ের দিন।
৩ জন সাক্ষী লাগবে বিয়েতে, পরিচিত হুজুরের সাথে কথা বলে জনি জেনে নিয়েছে। জেরিন আসবে তার এক বান্ধবীকে নিয়ে। হুজুর বলছে , দুজন মেয়ে মানুষ মিলে একজন সাক্ষী হয়। জনি তার ২ বন্ধু ও ২ জন বান্ধবীকে বিয়েতে থাকতে বলেছে। বিয়ে বলতে কাবিন হবে না, শুধু কবুল । নিয়ম মেনে কবুল বললেই ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী বিয়ে হয়। গোপনে বিয়ে পড়ার জন্য জায়গাই খুজে পাওয়া কঠিন হচ্ছিল। গোপনিয়তা বজায় রাখতে পরিচিত কারও বাসায় যাওয়াও সম্ভব হচ্ছিল না। একটা রেস্টুরেন্ট ঠিক করা হয়, নির্ধারিত সময়ে হুজুর আসে, ১০ মিনিটের মধ্যেই বিয়ের কবুল পরানো হয়ে যায়। সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া সেরে, নব বিবাহিতদের জন্য দোয়া করে। শুভ কামনা জানিয়ে বিদায় নেয় সবাই। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, জেরিন শপিং করার কথা বলে দুপুরে থানা থেকে ছুটি নিয়েছে । সন্ধার আগেই থানায় ফিরতে হবে তাকে। জনি জেরিনকে কিছু শপিং করে , থানায় পৌঁছে দেয়। তাদের এ হঠাৎ প্রেমের হঠাৎ পরিনিতি অনেকটাই অনাকাঙ্ক্ষিত ।
বিয়ে করেই বাসর করতে হবে , এক সাথে ঘুমাতে হবে এসব যুক্তি আমলে নেয় না জনি। জনি কদিন বাদেই বিদেশ যাচ্ছে , দেশে ফিরে জেরিনকে পনরায় পারিবারিক ভাবে বিয়ে করবে জনি। তারপর সব হবে, যা যা হবার কথা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। জনি, বিদেশ যাবার আগেই ৭ দিনের ছুটি পাচ্ছে জেরিন। দুজন এই ৭ দিনে হয়ত মিলিত হবে এক বারের জন্য হলেও। গোপন বিয়েতে জনির আগ্রহ থাকলেও গোপন মিলনে তার কোন আগ্রহ নেই। জেরিন নানান ভাবে জনিকে মিলিত হবার আমন্ত্রণ জানালো, জনি অদ্ভুত এক শর্ত জুড়ে দিল। জেরিন যদি তার পরিবারে বিয়ের কথা জানায় তবেই জনি মিলিত হবে জেরিনের সাথে । শুধুমাত্র ফোন আলাপের মধ্যে দিয়েই চললো তাদের বিবাহিত প্রেম সম্পর্ক। দেখতে দেখতে জেরিনের ছুটির ৬ দিন চলে গেল। ছুটি শেষ হবার ১ দিন আগেই জেরিন তার বাড়ি রংপুর থেকে ঢাকায় আসতেছে, মোবাইলে জনিকে সে জানিয়েছে আজ রাত সে তার সাথে থাকবে। জনি এ হঠাৎ সিদ্ধান্তে কেন যেন সায় দিল।
জনির বাড়িতে কেউ নেই , দুদিন ধরে জনির বাসায় জনি একা। বাসার সবাই জনির নানা বাড়িতে বেড়াতে গেছে, জনি বিদেশ যাবার জন্য কিছু কাজ নিয়ে খুব ব্যাস্ত দিন পার করছে। জেরিনের সাথে মোবাইলে আলাপও ইদানিং কমে গেছে। আজ কেন যেন জেরিনকে খুব কাছে পেতে চাচ্ছে জনি। রাত ৮ বাজতেই জনি জেরিনকে ফোন করে , এবার সে শিউর হয় জেরিন আজ রাত তার সাথে থাকবে। নিজেকে খুব স্বাভাবিক রেখে , জেরিনকে বাস স্ট্যান্ড থেকে এগিয়ে নিয়ে আসে। রিক্সা করে জনির বাসায় ফেরার পথে চতুর্থ বারের মতো জেরিনের হাত ধরে। এখন ও তারা দুজন দুজনকে চেনে না পরোপুরি চেনে না। জনি, বাসায় ফিরে জেরিনকে একটা রুম দেখিয়ে বললো আমি পাশের রুমে আছি, কিছু লাগলে বলবে। গোসল করে ফ্রেস হয়ে খেয়ে নাও, আমি খাবার রেডি করছি।
দুজন দুজনের পরিবার সম্পর্কে আলাপ করতে করতে ডিনার শেষ করেই বিছানায় গেল জনি, জেরিন তখনও সোপায় বসা । আমি কি পাশের রুমে থাকবো? জেরিন জানতে চাইলো, জনি বললো তোমার ইচ্ছা। জনির রুমে লাইট তখনও জ্বলছে, জেরিনকে বাল্ব এর সুইচটা অফ করে দিয়ে যেতে বললো। জেরিন বাল্ব এর সুইচ অফ করে দিল , রুমে তখন ঘুটঘুটে অন্ধকার । জনি মোবাইলে টাইম দেখে নিল, রাত ১২ঃ১০ ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে জেরিনকে বিদায় করতে হবে, আশেপাশের কেঊ দেখলেই খবর আছে। সবাই জানে জনি এখনও অবিবাহিত ( চলবে)
১ম পর্বের লিঙ্ক Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.