নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অবিনশ্বর ছায়া, রহস্য ঘেরা, অতি সাধারণ সামান্য মানুষ !জন্ম-জন্মান্তর পৃথিবীতেই পরে আছি !!

জে আর সিকদার

আমার অচেনা আমি

জে আর সিকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সূফী,সন্যাস,সাধু ভাবনা

২২ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:১৫


মডেলঃ সফিক সিকদার

চাইলেই কিন্তু পারি, আমরা কি আগামীর দিনের সূফী,সন্যাস,সাধু হতে পারি না ? কোটিতে গুটি মেলে ১টা।
আগামী পঞ্চাশ বছরের মধ্যে সন্যাসের অনেক ধারা এমনিতেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এবং পৃথিবীর যে কোন জায়গায় সন্যাসিদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। এ কারণে আমার নিজের উপলব্ধি হলো যে, সন্যাসির মত একটা মহামূল্যবান ফুলের ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। সন্যাসিদের আশ্রমগুলো অন্তর্হিত হতে পারে কিন্তু সন্যাসের অন্তর্ধান হওয়া ঠিক হবে না।
সুতরাং এটাকে রক্ষা করার একটাই পথ, আর তা হলো, একজন সন্যাসি জীবন বিমুখ হয়ে ত্যাগ করে সংসার ছেড়ে পালাবেন না, কিন্তু জীবনের মাঝে অবস্থান করে সন্যাসি হবেন। তিনি দোকানে বসবেন, দৈহিক শ্রম দেবেন, অফিসে কাজ করবেন। তিনি মোটেও জীবন থেকে পালাবেন না, তাঁর জীবনধারণের জন্য সমাজের অন্য মানুষের উপর নির্ভর করবেন না।
তিনি যেই হন, যেখানেই থাকুন, সেখানেই তার সন্যাস যাপন করা উচিত হবে। সুতরাং এই একুশ জনকে এই ধারায় দীক্ষিত করা হয়েছে। তারা অফিসে কাজ করবেন, স্কুলে পড়াবেন, দোকানদারী করবেন এবং সন্যাসির জীবন যাপন করবেন।
তার সুফল হবে দ্বিগুণ। প্রথম সুফল হিসেবে সন্যাসিদের আর শোষক শ্রেণি মনে হবে না, তাঁকে আর কারো উপর নির্ভরশীল হতে দেখা যাবে না। এটা সন্যাসিদের জন্য সুবিধাজনক হবে, কারণ সন্যাসিদের পুরোন ঐতিহ্য যারা সমাজের উপর নির্ভরশীল, সেটা প্রতিয়মান হোক বা না হোক সন্যাসিদের কৃতদাসে পরিণত করে।
সন্যাসিগণ সমাজের দাসত্ব স্বীকার করে বাঁচতে শুরু করে। এবং আমরা যাদের জীবিকা দি, তাদের আত্মাও কিনে নি। যে কারণে একজন সন্যাসির বিদ্রোহী হওয়া উচিত কিন্তু হতে পারেন না কারণ যারা তার জীবিকা দেয় তাকে তাদের দাসত্ব করে চলতে হয়।
তিনি কেবল সেই বিষয়গুলোকেই বলে চলেন যা আপনি পছন্দ করেন কারণ আপনার উপর তার জীবিকা নির্ভর করে। সন্যাস গ্রহণ একটা বৈপ্লবিক ঘটনা। তার জন্য একজনকে অর্থনৈতিকভাবে মনস্তাত্ত্বিকভাবে নিজের উপর আস্থাশীল হওয়া অপরিহার্য।
সর্বাগ্রে আমি প্রতিটি বাড়িতে একজনকে সন্যাসি রূপান্তরে সচেষ্ট হবো।
এর আর একটি বড় সুফল হবে যে সন্যাসিগণ গৃহ ত্যাগ করে পালিয়ে যাচ্ছেন এমনটি ঘটবে না এবং এই সন্যাসিদের জীবনমুখী হওয়ার সুবিধে হলো এই ক্ষয়প্রাপ্ত, নষ্ট পৃথিবীতে ফিরে আসা। যখন ভালো মানুষেরা এই পৃথিবী ত্যাগ করে, তখন এই পৃথিবী মন্দ লোকেদের হাতে চলে যায়।
এটা পৃথিবীর জন্য একটা ক্ষতি। আমার মতে, যদি কারো জীবনে সদগুণের ফুল ফোটে তবে তার উচিত হবে বাজারের মাঝখানে বসা, যাতে তার সে সৌরভ বাজারময় ছড়িয়ে পড়ে। অন্যথায় যদি তিনি পলায়নপর হন তবে সেখানে দুর্গন্ধ ছড়ানো মন্দ লোকে বসবে।
সুতরাং প্রতিটি বাড়িতে একজন সন্যাসি থাকা উচিত। তিনি তার লেবাস বদলাতে পারেন, তিনি তার সব শক্তি ঈশ্বরের দিকে স্থাপন করতে পারেন, কিন্তু তার পালিয়ে যাওয়া বা ত্যাগ করা উচিত হবে না। গতকাল পর্যন্ত তিনি যে সমস্ত গৃহকাজ করছিলেন, তার উচিত হবে এখনও সে সব কাজ করে যাওয়া, নিজেকে ঈশ্বরের বাহন ভেবে সব কাজ করে যাওয়া উচিত।
না তার স্ত্রীকে ত্যাগ করা উচিত হবে, না তার গৃহ, না তার সন্তান। এখন তার সকল কাজকে ঈশ্বরের কাজ মনে করে নীরবে সে সব কাজ সমাপন করে চলতে হবে। তার আর কর্তাভাবে থাকা উচিত হবে না—তার কেবল একজন সাক্ষীভাবে থাকা উচিত হবে।
আমার মনে হয় এই ধরণের সন্যাস গ্রহণে হাজারো মানুষ আগ্রহী হবে। যারা কখনও গৃহ ত্যাগের চিন্তাও করেন না। এমনকি তাদের জীবনেও পরম সুখময় অবস্থা আসবে এবং তাদের জীবনও বিকশিত হবে। যদি সন্যাসিগণ রাস্তায়, বাজারে, বাড়িতে, অফিসে সর্বত্র প্রাপণীয় হন, তবে তাদের পোষাক, তাদের স্মরণ, তাদের বিদ্যমান অবস্থা, তাদের আচরণ সমগ্র প্রাণ এবং পরিবেশের মাঝে প্রভাব বিস্তার করবে।
আমার উপলব্ধি হলো কারো উচিত হবে না সারা জীবনের জন্য সন্যাস গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া। আজ আপনি একটা সিদ্ধান্ত নেবেন; হয়ত ছয় মাস পর আপনার মনে হবে যে এটা ভুল ছিল, সুতরাং অবশ্যই আপনার ফিরে আসার পথ খোলা থাকা উচিত, অন্যথায় সন্যাস গ্রহণও গুরুভার হয়ে উঠতে পারে।
যখন আমরা কাউকে সন্যাস প্রদান করি তখন আশা করি যে তিনি সারাজীবন সন্যাসি থাকবেন। হয়ত তিনি এক বছর পর মনে করলেন যে এটা ভুল ছিল, সুতরাং প্রতি ক্ষেত্রে দোষারোপ ছাড়াই তার ফিরে আসার পথ খোলা থাকা উচিত। এ কারণে আমি বলেছি যে, সন্যাস হলো সাময়িক।
যেদিন আপনি চান, ফিরে আসতে পারেন। এর জন্য আপনার উপর কোন বাধ্যবাধকতা নেই। বার্মা এবং থাইল্যান্ডে এই ধরণের সন্যাসের চর্চা দেখা যায় এবং তার ফলে তাদের জীবনে একটা পার্থক্য দেখা যায়। প্রতিটি মানুষ জীবনের কোন এক সময় কিছুদিনের জন্য সন্যাস গ্রহণ করেন। যদি কোন মানুষের বছরে দু মাস সময় থাকে, তবে তিনি সেই সময়ের জন্য সন্যাস গ্রহণ করবেন, তারপর আবার গৃহে ফিরে যাবেন।
ব্যাক্তিটি রূপান্তরিত হবেন। দু মাস কাল সন্যাস যাপনের পর আর তিনি আগের মানুষটি থাকতে পারেন না তিনি যেমন ছিলেন। তার মাঝের সবকিছু রূপান্তরিত হয়ে যায়। যদি তার জন্য সুবিধাজনক হয় তবে আবার এক বা দু বছর পর দু মাসের জন্য সন্যাস গ্রহণ করেন।
সে কারণে আমি অন্য আর একটি ধারার সূচনা করেছি, যে যদি কেউ সীমিত সময়ের জন্য সন্যাস গ্রহণ করতে চান তবে করতে পারেন এবং প্রখ করে দেখতে পারেন। যদি তাদের জীবনের সুখাবস্থা বৃদ্ধি পায়, তবে তারা তাদের এই সন্যাস যাপনের সময়টা বাড়াতে পারেন, আর যদি মনে করেন এ পথ তাদের জন্য নয়, তবে তারা সম্পূর্ণরূপে ফিরে যেতে পারেন।
এটার দ্বিগুণ সুফল আছে। সন্যাস কোন বাধ্যবাধকতা নয়, সন্যাস হলো স্বাধীনতা—সে কারণে এখানে কোন বাধ্যবাধকতা থাকা উচিত নয়। বর্তমানে আমাদের সন্যাসিরা শৃঙ্খলাবদ্ধ বন্দী।
প্রথম বিষয় হলো সন্যাস কোন বাধ্যবাধকতা নয়, এবং দ্বিতীয় বিষয় হলো সকলের জন্যই সন্যাস গ্রহণ করার সুযোগ থাকবে—এমনকি যদি খুব অল্প সময়ের জন্যও হয়। যদি কোন ব্যক্তি তার সত্তর বছরের জীবনে পাঁচ বারের জন্য দু মাস করে সন্যাস গ্রহণ করে, তবে তার মৃত্যুর সময় তিনি এক ভিন্ন মানুষে পরিণত হবেন।
তিনি সেই একই মানুষ হতে পারেন না। সর্বাধিক মানুষ সন্যাসি হওয়ার সুযোগ পাবেন, সর্বাধিক মানুষ তাদের জীবনে এই পরম সুখাবস্থা এবং সন্যাস্যার জীবন পরখ করে দেখতে পারবেন।
এবং এটা আমার বুঝাবুঝি যে, যিনি একবার সন্যাস জীবনযাপনের জন্য গেছেন, তিনি আর ফিরে আসবেন না। এই ফিরে না আসা নিয়ম হওয়া উচিত নয়, কিন্তু সন্যাস যাপনের পরম সুখাবস্থা থেকে হওয়া উচিত, এবং সর্বদা ফিরে আসার স্বাধীনতা থাকা উচিত।
অনুবাদিত OSHO ,
কৃতজ্ঞতা - Torifa Najmina

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:২৫

জুন বলেছেন: সুন্দর শেয়ার

২৪ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:১০

জে আর সিকদার বলেছেন: মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.